আন্তর্জাতিক
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বাংলাদেশকে ইউয়ান ব্যবহারের প্রস্তাব চীনের

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলারের পরিবর্তে চীন তাদের বিনিময় মুদ্রা ইউয়ান বা আরএমবি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে। গত মাসের ২৯–৩০ তারিখে ব্যাংক অব হুজো আয়োজিত ‘প্রমোশন অব ক্রস বর্ডার আরএমবি সেটেলমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ প্রস্তাব দিয়েছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়না।
অনুষ্ঠানে ডলারের বদলে ইউয়ানে লেনদেন নিষ্পত্তি করলে পারস্পরিক কী সুবিধা হতে পারে, তা তুলে ধরেন চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি।
চীন থেকে আমদানি বাবদ বাংলাদেশকে প্রতিবছর প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়, যা মোট আমদানির প্রায় ৪০ শতাংশ। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি ব্যাখ্যা করেন যে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক এ লেনদেন যদি ইউয়ান বা আরএমবিতে করা হয়, তাহলে বেশ কিছু সুবিধা পেতে পারে বাংলাদেশ। এর মধ্যে অন্তত ছয়টি সুবিধার কথা উল্লেখ করেন চীনা প্রতিনিধি।
প্রথমত, বাংলাদেশের রিজার্ভের ডলারের ওপর চাপ কমবে; দ্বিতীয়ত, আমেরিকান ক্লিয়ারিং সিস্টেম ব্যবহারের জন্য ঋণপত্র বা এলসিপ্রতি মাশুল বাবদ এখন যে ১৮০–২০০ ডলার দিতে হয়, সরাসরি টাকা-আরএমবি লেনদেনে এ অতিরিক্ত খরচ ব্যবসায়ীদের বহন করতে হবে না; তৃতীয়ত, চীন থেকে আমদানি ক্ষেত্রে উপযুক্ত মূল্যে লেনদেনের নিশ্চয়তা বাড়বে; চতুর্থত, আরএমবি হিসাবের জমা থেকে লেনদেন নিষ্পত্তি হলে বিনিময় ঝুঁকি দূর হবে; পঞ্চমত, হংকং, সাংহাই, সিঙ্গাপুরের মুদ্রাবাজারে আরএমবি সম্পদে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে। সর্বপোরি যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা স্যাংশন ঝুঁকিও এড়ানো সম্ভব হবে।
চীন বাংলাদেশে আরএমবিতে হিসাব খোলা এবং বাণিজ্যিক লেনদেন সম্পন্ন করার কথা বলেছে। এ জন্য আরএমবি লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা ক্রস বর্ডার ইন্টারব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেম বা সিআইপিএসে যোগ দিতে হবে। এ নিকাশ ব্যবস্থায় চীনের সঙ্গে এখন যুক্ত আছে হংকং, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমার।
বাংলাদেশে অবশ্য এখনই আরএমবিতে হিসাব খোলা যায় এবং আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে আরটিজিএস (রিয়াল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট, যেটি এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে তাৎক্ষণিক তহবিল স্থানান্তর ব্যবস্থা) নিকাশ ব্যবস্থায় স্থানীয় লেনদেনও নিষ্পত্তি করা যায়। এদিক থেকে বাংলাদেশের নীতি-কাঠামো অনেক দূর এগিয়ে আছে। ইউয়ানে বাণিজ্য নিষ্পত্তি করতে হলে এখন দরকার হবে আরএমবির জোগান এবং সিআইপিএস ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ।
দুই দেশের বাণিজ্য ভারসাম্যে বাংলাদেশ বিপুলভাবে পিছিয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে ঘাটতি ২৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তবে চীনে মজুরি বাড়ার কারণে শ্রমঘন শিল্প, যেমন তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি আমরা সরাসরি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরএমবিকে গ্রহণ করতে পারি, তাহলে এটি সহজ হতে পারে। বিনিয়োগ বাড়লে তারল্যও বাড়বে।
চীনা অর্থনীতি এখন আরও বেশি বাইরে আসতে চাইছে, বিদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের জন্য উদারনীতি গ্রহণ করেছে। ২০১৫ সালে আরএমবিকে এসডিআর বাস্কেটে যুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মধ্য দিয়ে আরএমবির আন্তর্জাতিকীকরণের পথে এগিয়ে গেছে চীন। টাকা-আরএমবি বিনিময় ব্যবস্থা চালু হলে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে রুবল, রুপি নয়, বরং ডলারের বিকল্প মুদ্রা হয়ে উঠবে আরএমবি। চীনের এ বদলে যাওয়া আশীর্বাদ হয়ে আসতে পারে বাংলাদেশের জন্য।
বাংলাদেশের সঙ্গে লেনদেনে আরএমবি প্রচলনের চীনা প্রস্তাব ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের উচ্চমধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য পূরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা যথেষ্ট। সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুযোগ কাজে লাগানো যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক
অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা ভারতে নেই: মোদি

পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে শুক্রবার রাজ্যে নির্বাচনী সভা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজ্যের শিল্পশহর দুর্গাপুরে বিজেপির ‘পরিবর্তন সংকল্প সভা’য় অংশ নিয়ে তৃণমূল সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে মোদি বলেন, বাংলা পরিবর্তন চায়, দুর্নীতিমুক্ত সরকার চায়, বিজেপিকে চায়।
তিনি বলেন, কেউ বাংলায় কথা বলুক কিংবা না বলুক, ভারতীয় নন এমন অনুপ্রবেশকারীদের যেভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে। অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা নেই।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। বাংলায় এবার বিজেপির সরকার গঠন করতে হবে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৯৪টি আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে আজকের সভায় তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার ডাক দেন তিনি।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও নারীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মোদি। তৃণমূলকে সমর্থন না দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে একবার সরকার গঠনের সুযোগ দিতে রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, একসময় গোটা দেশের মানুষ কাজের জন্য বাংলায় আসত। আজ এই বাংলার মানুষই কাজের খোঁজে অন্য রাজ্যে যায়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আবার সেই দিন ফিরবে।
বিজেপি সবসময় বাংলা ভাষাকে সম্মান জানিয়েছে দাবি করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সব বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষা সম্মানের সঙ্গে স্বীকৃত। তাই বিজেপিই এই বাংলাকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন। সেই ভোটের আগেই নরেন্দ্র মোদির সভা দিয়ে বিজেপি ভোট প্রচার শুরু করল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আন্তর্জাতিক
পরিকল্পিতভাবে গাজার সব ভবন ধ্বংস করে দিচ্ছে ইসরায়েল: বিবিসি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাজার হাজার বেসামরিক ভবন পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে স্যাটেলাইট চিত্র, যাচাই করা ভিডিও ফুটেজ ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে। মার্চ মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহারের পর থেকে এই ধ্বংসযজ্ঞ চলছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সম্প্রতি প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, গাজার বহু শহর ও উপশহরের অধিকাংশই এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এসব এলাকায় একসময় হাজার হাজার মানুষের বসবাস ছিল। ইসরায়েল দাবি করছে, এই এলাকাগুলো বর্তমানে তাদের ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে।
পরিকল্পিতভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে স্কুল, হাসপাতাল ও আবাসিক ভবন
বিবিসির যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভবন ধসে পড়ছে, বাতাসে উড়ছে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষ। শুধু যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে, তা নয় বরং অক্ষত ভবনগুলোকেও ইচ্ছা করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছে গাজার স্কুল, হাসপাতাল, টাওয়ার ব্লক, এমনকি শিশুদের জন্য পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রও।
রাফাহ শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত টেল আল-সুলতান এলাকায় অবস্থিত একমাত্র মাতৃসদন হাসপাতাল ও অনাথ শিশুদের যত্নকেন্দ্রসহ প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, এই এলাকার অধিকাংশ ভবন আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি নাগাদ পুরো এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কেবল একটি হাসপাতাল এখনো টিকে আছে।
এছাড়া রাফাহ’র সৌদিপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি বুলডোজার ও ট্যাংকের উপস্থিতি দেখা গেছে। ভিডিওতে ধরা পড়েছে, রাস্তার পাশে খননযন্ত্র দিয়ে ভবন গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা।
টেল আল-সুলতান এলাকার বাসিন্দা মুয়াতাজ ইউসুফ আহমেদ আল-আবসি বলেন, যুদ্ধ শুরুর মাত্র এক বছর আগে আমি আমার নতুন ঘরে উঠেছিলাম। ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন আমার সেই ঘর নেই, কোনো আশ্রয়ও নেই।
কৃষি শহরও রেহাই পায়নি
গাজা সীমান্ত থেকে মাত্র ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কৃষিনির্ভর শহর খুজা’আতেও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। টমেটো, গম ও জলপাই চাষের জন্য বিখ্যাত এই শহরের ১২০০টিরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ধ্বংস করা ভবনগুলো ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’র অংশ।
পাশের শহর আবাসান আল-কবিরা, যেখানে যুদ্ধের আগে প্রায় ২৭ হাজার মানুষের বাস ছিল, সেখানেও মে ও জুলাইয়ের মধ্যে মাত্র ৩৮ দিনে একটি বিশাল এলাকা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।
‘নিরাপত্তা করিডোর’ ও ‘বাফার জোন’ তৈরির অভিযোগ
ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন অংশকে বিভক্ত করে নিরাপত্তা করিডোর তৈরি করছে, আর এসব করিডোর বরাবর ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে আলাদা করতে এক বিশাল করিডোর নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া কিজান আবু রাশওয়ান নামক একটি গ্রামে, যা ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে- ১৭ মে’র পর থেকে প্রায় সব ভবন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, একত্রে থাকা বেশ কয়েকটি টাওয়ার ব্লক একযোগে বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের অবস্থান ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রশ্ন
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বিবিসির প্রশ্নের উত্তরে জানায়, তারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কাজ করছে ও হামাস মূলত বেসামরিক এলাকায় তাদের সামরিক স্থাপনা গোপন করে রাখে। সেনাবাহিনী কেবল তখনই ভবন ধ্বংস করে, যখন তা সামরিক প্রয়োজনে একান্ত জরুরি হয়ে ওঠে।
তবে মানবাধিকার আইনজীবীরা বলছেন, ইসরায়েলের এই ধ্বংসযজ্ঞ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও বিশেষ করে চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
জেরুজালেমভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সংস্থা ডায়াকোনিয়ার সিনিয়র আইনি বিশ্লেষক ইইতান ডায়মন্ড বলেন, আবশ্যিক সামরিক প্রয়োজন ছাড়া এ ধরনের পরিকল্পিত ধ্বংস আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। ভবিষ্যতে ব্যবহার হতে পারে- এই আশঙ্কায় কোনো স্থাপনা ধ্বংস করা আইনত বৈধ নয়।
‘মানবিক শহর’ না ‘ঘেটো’?
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ রাফাহ শহরের ধ্বংসাবশেষের ওপর ছয় লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থানান্তর করে একটি তথাকথিত ‘মানবিক শহর’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট এই পরিকল্পনাকে ‘একটি ঘেটোর মতো’ আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
‘ঘেটো’ শব্দটি সাধারণত শহরের এমন একটি এলাকাকে বোঝায় যেখানে কোনো একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ, বিশেষ করে সামাজিক, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক কারণে একত্র বসবাস করে। এটি প্রায়শই দরিদ্র এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়।
ধ্বংস যেন শেষ হচ্ছে না
সম্প্রতি ইসরায়েলি মিডিয়া জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে ডজনখানেক ডি-৯ বুলডোজার ইসরায়েল সেনাবাহিনীর হাতে পৌঁছেছে, যা আগে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে স্থগিত ছিল। সেইসঙ্গে মে মাস থেকে ইসরায়েলি ফেসবুক গ্রুপগুলোতে গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে ভবন ভাঙার জন্য কন্ট্রাক্টর নিয়োগের বিজ্ঞাপনও লক্ষ্য করা গেছে।
এ বিষয়ে একজন নিয়োগকারীর মন্তব্য চাইলে তিনি কটূ ভাষায় উত্তর দেন, তোমরা আর গাজা- দুজনই ধ্বংস হও।
সূত্র: বিবিসি
আন্তর্জাতিক
ভয়ংকর বজ্রপাত ভারতের বিহারে, নিহত ১৯

ভয়াবহ বজ্রপাতের সাক্ষী হয়েছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহার। এই বজ্রপাতের শিকার হয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যটিতে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাজ্যটির নালন্দা জেলায়।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বিহার রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় বজ্রপাতে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে নালন্দা জেলায়। এরপর ভৈরালি জেলায় ৪ জন, পাটনা ও বাঁকা জেলায় ২ জন করে এবং শেখপুরা, নওয়াদা, জেহানাবাদ, আওরঙ্গাবাদ, জামুই ও সমস্তিপুর জেলায় একজন করে মারা গেছেন।
নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এ ছাড়া, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৪ লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি খারাপ আবহাওয়ার সময় সকলকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে চলতি মৌসুমে বিহারে বজ্রপাতের আশঙ্কা বেশি থাকায় জনসাধারণকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
চীনের জ্বালানি তেল আমদানি বেড়েছে ৭ শতাংশ

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনে গত জুন মাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। দেশটির শুল্ক দপ্তর জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জুনে চীন মোট ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা দৈনিক হিসেবে প্রায় ১ কোটি ২১ লাখ ব্যারেল।
এই আমদানি পরিমাণ মে মাসের তুলনায় ৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরব ও ইরান থেকে আমদানি বাড়ানো এবং দেশের তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনরায় পূর্ণমাত্রায় কার্যক্রম শুরু করাই এই প্রবৃদ্ধির মূল কারণ।
বিশ্ববিখ্যাত ডেটা বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের জ্বালানি বিশ্লেষক মুইউ জু জানান, চীনে বসন্তকালীন রক্ষণাবেক্ষণ শেষে বেশিরভাগ পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান পুনরায় উৎপাদনে ফিরেছে। ফলে জুনে দৈনিক জ্বালানি তেলের চাহিদা মে মাসের ১ কোটি ৪৮ লাখ ব্যারেল থেকে বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল।
চীনের এই আমদানি প্রবণতা বৈশ্বিক তেলবাজারে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য এটি একটি বড় বাজার-সংকেত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক
ইরাকে শপিং মলে ভয়াবহ আগুন, নিহত বেড়ে ৬০

ইরাকের পূর্বাঞ্চলীয় কুত শহরের একটি হাইপারমার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৫৯টি মৃতদেহ শনাক্ত করতে পেরেছি। তবে একটি মরদেহ এতটাই পুড়ে গেছে যে, শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।’
কুত শহরের এক কর্মকর্তা আলি আল-মায়াহি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মৃতদেহ থাকতে পারে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পাঁচতলা একটি ভবনে আগুন লেগে ছড়িয়ে পড়েছে, দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
ওয়াসজিত প্রদেশের গভর্নর মোহাম্মদ আল-মায়াহি জানান, আগুন একটি হাইপারমার্কেট ও রেস্তোরাঁয় ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার সময় অনেক পরিবার সেখানে কেনাকাটা ও রাতের খাবার খাচ্ছিলেন।
গভর্নর জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন এবং পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য এক মর্মান্তিক বিপর্যয়।
এ ঘটনায় ভবন ও শপিং মলের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।