অর্থনীতি
বাড়লো সিগারেট-জর্দার দাম

আগামী বাজেটে বিড়ি-সিগারেট ও জর্দা-গুলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় এ প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সিগারেট মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি পণ্য। এ জাতীয় ক্ষতিকর পণ্যের ব্যবহার কমানো ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এর ওপর সম্পূরক শুল্কের হার ৬৫ শতাংশের পরিবর্তে ৬৬ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।
বাজেট প্রস্তাবনায় মন্ত্রী বলেন, সিগারেটের নিম্নস্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর ৫০ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ ধার্যের প্রস্তাব করছি। এছাড়া মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর ৭০ টাকা ও তদূর্ধ্ব, উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর ১২০ টাকা ও তদূর্ধ্ব, অতি-উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর ১৬০ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং এই তিনটি স্তরের সম্পূরক শুল্ক ৬৫.৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।
জর্দার বিষয়ে বাজেটে মন্ত্রী বলেন, প্রতি দশ গ্রাম জর্দার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৪৮ টাকা এবং প্রতি দশ গ্রাম গুলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।
এ ছাড়া সিগারেট ও বিড়ির কাগজের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূসকের হার সাড়ে ৭ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
এ বাজেট দেশের ৫৩তম বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট।
এমআই

অর্থনীতি
ইন্দোনেশিয়া থেকে ২৫ হাজার টন অকটেন কিনছে সরকার

ইন্দোনেশিয়া থেকে ২৫ হাজার টন গ্যাসোলিন ৯৫ আনলেডেড (অকটেন) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এই অকটেন আনতে ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ২৪তম সভায় এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, হরমুজ প্রণালির কারণে কোনো প্রভাব পড়েনি। যুদ্ধের ভেতরেও জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে সাশ্রয় হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর আগে যে প্রাইস ছিল সেটা, যুদ্ধ বন্ধের পর প্রাইস কমেছে। ইমিডিয়েটলি আমরা রিটেন্ডার করে ৫ থেকে ১০ ডলার কম পেয়েছি। সেখানে প্রায় ৭০-৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এটা এনার্জি মিনিস্ট্রির একটা ক্রেডিট। মরক্কো, তিউনিশিয়া থেকে আসা সারের দাম কিছুটা বেড়েছে। এখানে কোনো উপায় ছিল না।
বিজ্ঞাপন
এ বৈঠকে উপস্থাপন করা ৭টি প্রস্তাবই অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৩টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে ৩টি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব রয়েছে।
জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জুন ২০২৫ মাসে ২৫ হাজার টন গ্যাসোলিন ৯৫ আনলেডেড (অকটেন) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
ইন্দোনেশিয়ার পিটি বুমি সিয়াক পুসাকো জাপিন (বিএসপি) থেকে এই অকটেন আমদানিতে ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। প্রতি ব্যারেলের প্রিমিয়াম প্রাইস ৫.৯৩ মার্কিন ডলার এবং রেফারেন্স প্রাইস ৭৩.৬১০ মার্কিন ডলার।
এছাড়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জিটুজি মেয়াদি চুক্তির আওতায় পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৫ সময়ের প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইস অনুযায়ী ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
কাফি
অর্থনীতি
আরব আমিরাত থেকে ৫০ হাজার টন গম কিনবে সরকার

সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সুসংহত রাখার লক্ষ্যে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন গম ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এই গম আনতে ব্যয় হবে ১৬৮ কোটি ৮২ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ২৪তম সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ক্রয় কমিটির বৈঠকে গম কেনা হয়েছে। ফরচুনেটলি গমের দাম কমে গেছে। এই কেনাকাটায় ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। চাল গমের যে রিজার্ভ আছে সেটা এখনও সন্তোষজনক। তবুও আমরা বলেছি ৫০ হাজার টন গম এনে রাখার জন্য। যাতে খাদ্যের কোনো শর্টেজ না হয়।
তিনি বলেন, হরমুজ প্রণালীর কারণে কোনো প্রভাব পড়ে নাই। যুদ্ধের ভেতরেও জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে সাশ্রয় হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর আগে যে প্রাইস ছিল সেটা, যুদ্ধ বন্ধের পর প্রাইস কমেছে। ইমিডিয়েটলি আমরা রিটেন্ডার করে ৫ থেকে ১০ ডলার কম পেয়েছি। সেখানে প্রায় ৭০/৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এটা এনার্জি মিনিস্ট্রির একটা ক্রেডিট। মরক্কো, তিউনিশিয়া থেকে আসা সারের দাম কিছুটা বেড়েছে। এখানে কোনো উপায় ছিল না।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সর্বমোট ৭টি প্রস্তাব উপস্থাপিত হলে সবকয়টি প্রস্তাবই অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৩টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে ৩টি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব রয়েছে।
জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-১ এর আওতায় ৫০ হাজার টন গম ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মেসার্স সিরিয়াল ক্রপস ট্রেডিং এলএলসি থেকে এই গম ক্রয়ে ব্যয় হবে ১৬৮ কোটি ৮২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রতি টন গমের দাম পড়বে ২৭৫.০০ মার্কিন ডলার।
এরআগর গত (২০ মে) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখকে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গম আমদানি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জিটুজি ভিত্তিতে গম ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৮৩ (১) (ক) মোতাবেক আন্তর্জাতিক দরপত্রে ক্রয় প্রক্রিয়ায় সময় হ্রাস করার প্রস্তাব দেওয়া হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা অনুমোদন দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সুসংহত রাখার লক্ষ্যে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গম আমদানি করা আবশ্যক।
এ অবস্থায়, রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬ এর ধারা ৬৮(১) এবং পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুসরণে রপ্তানিকারক দেশ থেকে জিটুজি ভিত্তিতে ৩ লাখ টন গম কেনা এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ টন গম আমদানির লক্ষ্যে পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৮৩ এর (১) (ক) অনুযায়ী দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকা বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৭ লাখ ২৫ হাজার টন এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ২৫ হাজার টন গম সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থনীতি
৯ মাসের অভিযানে এনবিআরের রাজস্ব আদায় ৯৯৪ কোটি টাকা

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের মে মাস অর্থাৎ ৯ মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অভিযান চালিয়ে ৯৯৪ কোটি টাকা রাজস্ব/কর আদায় করেছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন শেখ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দুই অনুবিভাগের (কাস্টমস ও আয়কর) মাঠ পর্যায়ের দপ্তর এবং গোয়েন্দা সংস্থা ১৬ হাজার ৫৭২টি কর/রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটনে অভিযান চালিয়েছে। এসব ঘটনায় ৬ হাজার ২৪৬ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে ৯৯৪ কোটি টাকা আদায় করা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এই সময়ে বিভিন্ন কাস্টম হাউজ মোট ২ হাজার ২১৫টি অভিযান পরিচালনা করে; যাতে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ ছিল ১৮৩ কোটি টাকা। এর পুরোটাই আদায় করা হয়েছে।
এনবিআরের এই কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট মোট ৬৮০৩ টি রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটনের অভিযান পরিচালনা করেছে যাতে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৫১৩ কোটি এবং আদায় হয়েছে মোট ৮৯ কোটি টাকা। নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, এছাড়া মূল্য সংযোজন কর, ঢাকা (ভ্যাট গোয়েন্দা) ২৩১টি রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটনের অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ ছিল ১৬৩৯ কোটি এবং আদায় হয়েছে মোট ২৪০ কোটি টাকা। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এ সময়ে রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটনের অভিযান পরিচালনা করে মোট ৭৩ কোটি টাকা আদায় করেছে।
অপরদিকে, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) ১৮১টি কর ফাঁকি উদঘাটনে অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৩৬৬ কোটি টাকা এবং আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ ১৯৪ কোটি টাকা। আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট মোট ১৭০টি কর ফাঁকি উদঘাটনে অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ১,৮৭৪ কোটি টাকা এবং আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ ১১০ কোটি টাকা। এছাড়া, বিভিন্ন কর অঞ্চল মোট ৬, ৯৭২ টি কর ফাঁকি উদঘাটনে অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ১, ৫৮৮ কোটি টাকা এবং আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ ১০৫ কোটি টাকা।
বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
অর্থনীতি
নতুন দামে সোনা বিক্রি শুরু

দেশের বাজারে নতুন করে সোনার দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বুধবার (২৫ জুন) থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হচ্ছে। নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আজ থেকে। এ হিসেবে ভরি প্রতি ১ হাজার ৬৬৮ টাকা কমেছে সোনার দাম।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, গত ১৪ জুন, ৬ জুন, ২২ মে ও ১৮ মে দেশের বাজারে চার দফা বেড়েছিল সোনার দাম। এর মধ্যে সবশেষ ১৪ জুন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১৮২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ১০০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৮০৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতনী প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৫২৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকা। গতকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত এই দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে দেশের বাজারে।
তবে, এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৬৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৫৯৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৩৭৬ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতনী প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২ টাকা।
এদিকে সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত আছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপা এখন দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতনী এক ভরি রূপার দাম ১ হাজার ৭২৬ টাকা।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ একসঙ্গে পেল বাংলাদেশ। চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় এটি তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এ অর্থ যোগ হয়েছে। ফলে মোট রিজার্ভ ফের ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দিন শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রোস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, ২২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এর বাহিরে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখন প্রায় ১৭ বিলিয়ন।
মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হলো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন ডলারে ঘরে আছে। প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়।
চলতি মাসের শুরুতে অর্থাৎ (৪ জুন) পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মোট বা গ্রোস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার আর ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ছিল ১৬ বিলিয়নের ঘরে।
এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় রাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় এবং তা অনুমোদন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নজিরবিহীন অর্থপাচার ও বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতিও বেড়েছিল বাংলাদেশের। ডলারের বিপরীতে টাকা দর অবনমন হতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে। সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে। ফলে আস্তে আস্তে তলানিতে নামে রিজার্ভ। ওই সময় রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা নিতে আইএমএফ এর কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়ে ২০২২ সালের জুলাইতে আবেদন করে বাংলাদেশ।
এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে ৩ বছর মেয়াদি এই ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ কর্মসূচি অনুমোদনের সময় আইএমএফ জানিয়েছিল, এই সহায়তা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে।
মূলত চলতি হিসাবে বড় ধরনের ঘাটতি, টাকার অবমূল্যায়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফের কাছে এই ঋণ সহায়তা চায়।
মোট ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ১৪০ কোটি ডলার অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখযোগ্যভাবে, আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই প্রথমবারের মতো ঋণ পেয়েছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ পেয়েছে। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। দুই কিস্তির প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার পর বাকি থাকবে ১২৯ কোটি ডলার, যা পাওয়া যাবে আরও দুই কিস্তিতে।
এদিকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগানের চেষ্টা করছে। ফলে আস্তে আস্তে আবার রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে।