জাতীয়
এলপি গ্যাসের দাম কমলো

ভোক্তাপর্যায়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৩৯৩ টাকা থেকে ৩০ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৩৬৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এলপিজির নতুন এ দর আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।
ঘোষণায় জানানো হয়, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১১৩ টাকা ৫৫ পয়সায় সমন্বয় করা হয়েছে। এছাড়া, রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১০৯ টাকা ৭২ পয়সায় সমন্বয় করা হয়েছে।
পাশাপাশি ভোক্তাপর্যায়ে অটোগ্যাসের দাম মূসকসহ প্রতি লিটারের মূল্য ৬২ টাকা ৫৩ পয়সায় সমন্বয় করা হয়েছে।
এর আগে, গত মে মাসে ভোক্তাপর্যায়ে কমানো হয় এলপিজির দাম। সেবার ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪৯ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
একই সঙ্গে অটোগ্যাসের দামও কমায় বিইআরসি। ফেব্রুয়ারি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার নির্ধারণ করা হয় ৬৩ টাকা ৯২ পয়সা।

জাতীয়
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতে না যাওয়ার পরামর্শ

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সেসব দেশে ভ্রমণ না করার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। সংস্থাটির রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পক্ষ থেকে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে, করোনার ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের সব স্থল, নৌ এবং বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। করোনার ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতেও বলা হয়েছে সেখানে।
নির্দেশনায় বলা হয়, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সাব ভেরিয়েন্ট, বিশেষ করে অমিক্রন এলএফ. ৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারত ও অন্যান্য সংক্রামক দেশ এবং বাংলাদেশ থেকে ভারত এবং অন্যান্য সংক্রামক দেশে ভ্রমণকারী নাগরিকদের জন্য দেশের সব স্থল, নৌ, বিমানবন্দরের আইএইচআর ডেস্কে নজরদারি জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় কিছু কার্যক্রম নিতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক না হলেও দেশে এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে। আইসিডিডিআরবির গবেষকেরা করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্তের কথা বলছেন। এর নাম এক্সএফজি। এর পাশাপাশি এক্সএফসি ধরনটিও পাওয়া গেছে। দুটোই করোনার শক্তিশালী ধরন অমিক্রনের জেএন-১ ভ্যারিয়েন্টের উপধরন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনা হলো—
- সাতবার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত ২৩ সেকেন্ড)।
- নাক-মুখ ঢাকায় জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
- আক্রান্ত ব্যক্তি হতে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে
- অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না
- হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু, কাপড় দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।
দেশে প্রবেশের পথের জন্য নির্দেশনা—
- দেশের বিভিন্ন স্থল, নৌ, বিমান বন্দরসমূহে আইএইচআর (IHR-2005) স্বাস্থ্য ডেস্কসমূহে সতর্ক থাকা, হেলথ স্ক্রিনিং এবং সার্ভেল্যান্স জোরদার করুন।
- দেশের পয়েন্টস অব এন্ট্রি সমূহে থার্মাল স্কান্যার, ডিজিটাল হেন্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে নন টাচ টেকনিকে তাপমাত্রা নির্ণয় করুন।
- চিকিৎসা কাজে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক, গ্লাভস এবং রোগ প্রতিরোধী পোশাক মজুত রাখুন (পিপিই)।
- ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোগ প্রতিরোধ নির্দেশনা সমূহ প্রচার করুন।
- জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ভারত ও অন্যান্য আক্রান্ত দেশসমূহে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।
সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়—
- অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, মারাত্মক অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
- রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।
- প্রয়োজন হলে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন (০১৪০১-১৯৬২৯৩)।
জাতীয়
যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা

চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমিরাতের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, এই সফরে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।
সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
গুরুত্ব পাবে রাজনৈতিক সমর্থন আদায়
ধারণা করা হচ্ছে, বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে অবস্থানের প্রেক্ষাপটে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রসঙ্গ আলোচনায় তুলবে ঢাকা। অন্যদিকে, বিগত সরকারের সময়ে বাংলাদেশকে চারটি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল ব্রিটেন, সেটি ঢাকাকে মনে করিয়ে দিতে পারে দেশটি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লন্ডন সফরকালে ড. ইউনূস যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আর প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ১২ জুন বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ড. ইউনূস। ওইদিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করার কথা সরকারপ্রধানের। আগামী ১১ জুন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। এছাড়া, তিনি যুক্তরাজ্যের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা-লন্ডনের কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ইউনূস-স্টারমারের বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা, বিনিয়োগ ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানো, রোহিঙ্গা সংকটের মতো বিষয়গুলো আলোচনায় আসতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক সমর্থনের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কার, নির্বাচন, জুলাই-আগস্টের নৃশংসতার বিচারসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে যুক্তরাজ্য সরকারকে পাশে চাইবে ঢাকা।
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে দেশ থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। যাদের অনেকে যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি কেনার তথ্য সরকারের কাছে আছে। দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা চাইতে পারেন ড. ইউনূস।
অন্যদিকে, বিগত সরকারের সময়ে বাংলাদেশকে চারটি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল ব্রিটেন, সেটি ঢাকাকে মনে করিয়ে দিতে পারে দেশটি। ফের আলোচনা শুরুর জন্য তাগিদ দিতে পারে ব্রিটেন।
স্মরণ করা যেতে পারে, বিগত সরকারের সময়ে ইউরোপীয় কোম্পানি এয়ারবাস থেকে ১০টি উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ব্রিটেন থেকে চারটি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব ছিল। ব্রিটেনের প্রস্তাব নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছিল। তবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বিগত সময়ের অনেক সিদ্ধান্ত থমকে আছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়ার পর গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেন তিনি। এরপর নভেম্বরে আজারবাইজানে কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। গত ডিসেম্বরে ড. ইউনূস ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশর সফর করেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। এরপর মার্চে চীন সফর করেন ড. ইউনূস। এপ্রিলে থাইল্যান্ড সফর এবং কাতার ও ভ্যাটিকান সিটিতে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদান করেন প্রধান উপদেষ্টা।
সবশেষ, গত মাসের (মে) শেষের দিকে জাপান সফর করেন সরকারপ্রধান।
জাতীয়
আরআরএজি’র অধিকাংশ দাবি বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা

নয়াদিল্লিভিত্তিক সংস্থা ‘রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালাইসিস গ্রুপ’ (আরআরএজি) কর্তৃক প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত বেশিরভাগ দাবিই বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তব তথ্য দ্বারা সমর্থিত নয় বলে দাবি করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টস।
সোমবার (৯ জুন) বিকেলে এক পোস্টে এই দাবি করা হয়।
পোস্টে বলা হয়, নয়াদিল্লি ভিত্তিক সংস্থা ‘রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালাইসিস গ্রুপ’ (আরআরএজি) ৬ জুন একটি মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরআরএজি-র প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ৫ আগস্ট, ২০২৪ থেকে ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শাসনামলে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর কমপক্ষে ১২৩ জন সদস্য… টার্গেটেড হত্যার শিকার হয়েছেন। আরআরএজি এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে ড. ইউনূসের সমর্থকদের প্রতিশোধমূলক আক্রমণ হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
আরআরএজি আরও মিথ্যা দাবি করেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ওএইচসিএইচআরকে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি স্বাধীন তথ্য অনুসন্ধান তদন্ত পরিচালনা করতে’ সীমাবদ্ধ করেছে। তবে, আরআরএজি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত বেশিরভাগ দাবিই বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তব তথ্য দ্বারা সমর্থিত নয়।
আরআরএজি কথিত টার্গেটেড হত্যার নির্দিষ্ট ঘটনাগুলো উদ্ধৃত করেছে। তবে, উদ্ধৃত ঘটনার নিবিড় পরীক্ষা থেকে জানা যায়, সাধারণ অপরাধমূলক বা স্থানীয় উদ্দেশ্য— টার্গেটেড রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়। স্থানীয় মিডিয়া এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রকাশিত মূল বিবরণ সরাসরি আরআরএজি-এর বর্ণনার বিরোধিতা করে, যা নিচে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
নাচোল জোড়া খুন (১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪)
আরআরএজি দাবি করেছে ‘জয় বাংলা’ লেখার জন্য ইউনূসের সমর্থকরা মাসুদ এবং রায়হান নামে দুই যুবককে হত্যা করেছে। বাস্তবে, এটি রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, একটি স্থানীয় বিরোধ। ভুক্তভোগীদের পরিবার প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বর্ণনা অস্বীকার করে স্পষ্ট করে বলেছে, ‘ছাত্রলীগের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না’ এবং দুটি পাড়ার কিশোর গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে তাদের হত্যা করা হয়েছিল। ভুক্তভোগীর বাবা বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবিগুলি সম্পূর্ণ বানোয়াট।
আরিনা বেগমের হত্যা (৫ ডিসেম্বর, ২০২৪)
আরআরএজি অভিযোগ করেছে, ৪৫ বছর বয়সী মা আরিনাকে ‘শুধুমাত্র তার ছেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ সভাপতি এবং আত্মগোপনে থাকার কারণে’ কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। প্রমাণগুলো বরং ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যের দিকে ইঙ্গিত করে। হত্যার পর পুলিশ দ্রুত তার স্বামীকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে। তদন্তকারী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা সন্দেহ করছেন, হত্যার পেছনে রাজনীতি নয়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।
তোফাজ্জলের মৃত্যু (১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪)
আরআরএজি দাবি করেছে, বরগুনার ইউনিয়ন পর্যায়ের ছাত্রলীগ নেতা তোফাজ্জলকে ঢাবিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলায় ছাত্রদের দ্বারা পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে, এখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট বাদ দেওয়া হয়েছে। তোফাজ্জল মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং ক্যাম্পাসে কোনো সংঘর্ষের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে, ফজলুল হক হলের ঢাবি ছাত্ররা তাকে চোর ভেবে ভুল করে আটক করে এবং অসংলগ্ন উত্তর দিলে তাকে মারাত্মকভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। মরণোত্তরভাবে তার পরিচয় পাওয়া যায়— তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং প্রায়শই ঢাবির ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতেন। এটি মোটেও লক্ষ্যবস্তু রাজনৈতিক হত্যা ছিল না। এটি ছিল ছাত্রদের (বিদ্রূপাত্মকভাবে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ছাত্রলীগ সদস্য বলে জানা গেছে) দ্বারা একটি দুঃখজনক গণ-অবিচার, যারা তাকে মিথ্যাভাবে চোর বলে চিহ্নিত করেছিল।
আবদুল্লাহ আল মাসুদকে পিটিয়ে মৃত্যু (৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪)
আরআরএজি ইঙ্গিত দেয়, রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা সত্ত্বেও মাসুদ, একজন প্রতিবন্ধী প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা, তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। হ্যাঁ, অভ্যুত্থান-পরবর্তী উত্তেজনার মধ্যে রাজশাহীতে জনতা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। ৩৫ বছর বয়সী এই যুবক তার নবজাতকের জন্য ওষুধ কিনতে গেলে স্থানীয়রা ৫ আগস্ট তাকে বিক্ষোভকারীদের ওপর আক্রমণ করার জন্য ভুলভাবে অভিযুক্ত করে। যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না, জনতা তাকে মারাত্মকভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।
বগুড়ায় বাবর আলীর হত্যা (১৩ আগস্ট, ২০২৪)
আরআরএজি বাবর আলীকে (৫০-এর দশক) একজন আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে বর্ণনা করেছে, যাকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং তার গলা কেটে হত্যা করা হয়েছিল। এটি ঘটেছিল, তবে স্থানীয় প্রমাণগলো রাজনৈতিক আঘাত নয়, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার ইঙ্গিত দেয়। বাবর আলী বগুড়া শহরের একটি ছোট মুদি দোকানের মালিক ছিলেন। ১৩ আগস্ট, বেশ কয়েকজন যুবক তাকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায় এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে যায়; পরের দিন সকালে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। নিহতের মেয়ে বিনা আক্তার সাক্ষ্য দিয়েছেন যে তার বাবার মুদি ব্যবসা নিয়ে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল এবং তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে তারা সেই বিরোধের কারণেই তাকে হত্যা করেছে। পুলিশ পূর্বশত্রুতাকে সম্ভাব্য উদ্দেশ্য হিসেবেও ইঙ্গিত করেছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করার জন্য তদন্ত শুরু করেছে।
আরআরএজি সম্পূর্ণ প্রতিবেদনের একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ বর্তমানে চলছে এবং যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
পোস্টে আরও বলা হয়, আরআরএজি মিথ্যা দাবি করেছে— অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকে সীমাবদ্ধ করেছে। বাস্তবে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ওএইচসিএইচআর’কে আমন্ত্রণ জানান এবং পূর্ণ সহযোগিতা করেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি ওএইচসিএইচআর রিপোর্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পূর্ববর্তী সরকারকে মারাত্মক ক্র্যাকডাউনের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছিল, যাতে ১৪০০ জন পর্যন্ত মানুষ মারা গিয়েছিল।
আরআরএজি-এর দাবির বিপরীতে, প্রতিবেদনে বলা হয়নি যে বেশিরভাগ ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ সমর্থক ছিলেন, অথবা আত্মীয়স্বজনদের ভয়ে চুপ করে রাখা হয়েছিল। তথ্য-পরীক্ষকরা নিশ্চিত করেছেন আরআরএজি-এর “৭৫০ আওয়ামী লীগ মৃত্যুর” দাবিটি একটি জাল জাতিসংঘের তালিকার ওপর ভিত্তি করে তৈরি। আওয়ামী লীগ কর্তৃক জমা দেওয়া ১৪৪ জনের তালিকাটি লক্ষ্য করা গেছে কিন্তু জাতিসংঘ কর্তৃক যাচাই করা হয়নি। আরআরএজি এই তথ্যগুলোকে বিকৃত করে নিপীড়নের একটি মিথ্যা বর্ণনা তৈরি করেছে।
আরআরএজি-এর এই বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন নতুন কিছু নয়। আরআরএজি এবং এর পরিচালক সুহাস চাকমার পতনশীল আওয়ামী লীগের পক্ষে বাংলাদেশ বিরোধী বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার অতীত রয়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসে আরআরএজি মিথ্যা দাবি করে, ৬৪০ জন সাংবাদিককে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল; সরকার এটিকে বিভ্রান্তিকর বলে প্রত্যাখ্যান করে, স্পষ্ট করে আইনি পদক্ষেপগুলো বেশিরভাগই পূর্ববর্তী শাসনামলে প্রণীত আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল এবং কোনো পদ্ধতিগত মিডিয়া দমন-পীড়ন নেই।
অন্য একটি ক্ষেত্রে আরআরএজি পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা অতিরঞ্জিত করেছে। ৯ জন আদিবাসীর মৃত্যুর দাবি করেছে, যা একটি সহযোগী গোষ্ঠী ৬৭ জনে বাড়িয়ে জানিয়েছে, যেখানে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনে মাত্র ৪ জন নিশ্চিত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত হত্যা অভিযানের আরআরএজি-এর দাবি বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খায় না বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
জাতীয়
খুলনায় ৩ লাখ ২৬ হাজার চামড়া সংরক্ষণ

খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মাদরাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে এ বছর কোরবানির ৩ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৪টি গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করে লবন দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে গরু ও মহিষের চামড়ার সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ১১২টি, ছাগলের চামড়ার সংখ্যা ২ লাখ ৭ হাজার ৬৮২টি। খুলনা বিভাগ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুমে পাঠানো তথ্য থেকে এ চিত্র দেখা গেছে।
জেলাগুলোর মধ্যে খুলনায় সংগ্রহ করা চামড়ার সংখ্যা ২২ হাজার ৭৪২টি, যশোরে ৭৫ হাজার ১৮৫টি, চুয়াডাঙ্গায় ৬ হাজার ৭২টি, বাগেরহাটে ১৩ হাজার ৫৭টি, নড়াইলে ৩০ হাজার ৭১৫টি, মাগুরায় ৭ হাজার ১৫২টি, মেহেরপুরে ১৮ হাজার ৮৫টি, ঝিনাইদহে ৯৩ হাজার ৭৩৬টি, কুষ্টিয়ায় ৩৬ হাজার ৭৩৭টি এবং সাতক্ষীরা জেলায় ২৩ হাজার ৩১৩টি।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে এসব চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে সরকার সরবরাহ করা বিনামূল্যের লবণ দিয়ে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর কোরবানির চামড়ার মূল্যবৃদ্ধি এবং এতিমদের হক আদায়ের উদ্দেশে সরকারের পক্ষ থেকে দেশের এতিমখানা, মসজিদ ও মাদ্রাসাগুলোতে বিনামূল্যে ৩০ হাজার মেট্রিকটন লবণ সরবারহ করা হয়। যাতে করে স্থানীয়ভাবে দুই থেকে তিন মাস চামড়া সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।
জাতীয়
এপ্রিলেই নির্বাচন কেন, ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে—অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া এমন ঘোষণা নিয়ে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
প্রধান উপদেষ্টার এ ঘোষণায় জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সমমনা কিছু দল খুশি হলেও ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবিতে অনড় বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এপ্রিলকে নির্বাচনের জন্য কোনোভাবেই অনুকূল সময় মনে করছেন না তারা। কেউ কেউ বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা ভালোভাবে ভেবেচিন্তে সময়টা নির্ধারণ করেননি। কেউবা আবার ড. ইউনূসের কোনও দুরভিসন্ধি আছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলছেন।
এরই মধ্যে এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা সব দিক ভালোভাবে বিবেচনা করেই এপ্রিলের প্রথমার্ধকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নিয়েছেন। এপ্রিলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণের পেছনে তিনটি কারণের কথাও উল্লেখ করেছেন প্রেস সচিব। এগুলো হলো—সংস্কার, বিচার (ট্রায়াল) এবং নির্বাচন।
রবিবার (৯ জুন) রাতে গণমাধ্যমকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন তিনি।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে ১২ থেকে ১৫টি কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং তাদের রিপোর্ট আসছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, আরেকটা হচ্ছে ট্রায়াল। জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার করা। এই সময়টায় ভয়ানক রকম একটা হত্যাযজ্ঞ হয়েছে। চার বছর ছয় বছরের শিশুরাও মারা গেছে। ট্রায়াল হওয়াটা খুবই জরুরি। তবে ট্রায়ালটা এমনভাবে হওয়া উচিত, যেটা ডিউ প্রসেস এবং ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে।
প্রেস সচিব বলেন, এগুলোর জন্য সময় প্রয়োজন। পাশাপাশি ইলেকশনটা যেন খুবই নিরপেক্ষ, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়, সেটার জন্য আয়োজনের একটা বিষয় আছে। এই প্রতিটি জিনিস লক্ষ করে চিফ অ্যাডভাইজার এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় দিয়েছেন।
কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ওই সময়ের আবহাওয়া নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয় বলে প্রশ্ন তুলেছেন, এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, আমরা আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহে টেম্পারেচার বেশি থাকে; দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহে বেশি। তৃতীয় সপ্তাহ থেকে চতুর্থ সপ্তাহে টেম্পারেচার বেশি থাকে। তারা বলেছেন, প্রথম ১০ দিন টেম্পারেচার মোটামুটি ঠিক থাকে। এই সময়টায় এত হিট ওয়েভ থাকে না যে ইলেকশন করা যাবে না।
কালবৈশাখীর বিষয়ে তিনি বলেন, কালবৈশাখী শব্দটার মধ্যেই বৈশাখ মাস আছে। বৈশাখ মাসেই এটা বেশি হয়। আবহাওয়াবিদদরাও বলেছেন এপ্রিল মাসের প্রথম নয়টা দিন কালবৈশাখী হয়। তা-ও এটা খুব লোকালাইজড হয়, দেশব্যাপী হয় না। এটাও হয় এপ্রিল মাসের সেকেন্ড হাফে বেশি। যখন বৈশাখ মাসটা শুরু হয়ে যায়। সত্যিকার অর্থে এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধটা একটা ফ্যান্টাস্টিক টাইম।