অর্থনীতি
নিম্নআয়ের হয়েও আমরা বিলাসী দেশে পরিণত হয়েছি: সিপিডি

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, আমাদের আয় না বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে। খাদ্য ব্যয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে গিয়ে সরকার নিত্যপণ্যকে বিলাসীপণ্য বানিয়ে ফেলছে। আমরা নিম্নআয়ের হয়েও বিলাসী দেশে পরিণত হয়েছি।
সরকারের ক্রয় কাজে স্বচ্ছতা আনা না হলে সরকারি ব্যয় কমিয়ে আনার সম্ভাবনাও কম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সিপিডির এই গবেষণা পরিচালক বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পেয়ে থাকেন। তাদের জন্য প্রকল্পের সময়, ব্যয় ও বরাদ্দ বাড়ানো হয়। এসব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনা গেলে ব্যয় কমিয়ে আনাও সম্ভব হবে।
রোববার (২ জুন) দুপুরে ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৩-২৪ : তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, মানুষের আয় কম, কিন্তু খাবারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হয়। যার ভুক্তভোগী গরিব ও সাধারণ মানুষ। ধনী ও গরিবের বৈষম্য বেড়েছে। গরিবের আয় বাড়েনি। জিডিপিতে জাতীয় আয় বাড়ছে, কিন্তু কর্মসংস্থানের ভূমিকা রাখতে পারছে না।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিম্নআয়ের দেশ হয়েও আমরা বিলাসী দেশে পরিণত হয়েছি। আমরা আয় করি কম, কিন্তু খাবারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হয়। আমরা কোন অর্থনীতির দেশে রয়েছি? সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে। অনেক সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক ট্যারিফ কমিয়ে দেয়, তার সুফল তোলেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা।
বর্তমান মূল্যস্ফীতি শ্রীলঙ্কার চেয়েও বেশি জানিয়ে সিপিডির এ গবেষণা পরিচালক বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা সরকারের জন্য বড় ধরনের ব্যর্থতা। যেমন- ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ, পাইজাম ১৫ ও মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ, মুনাফাখোররা বেশি লাভ সেখানেই করছে, যেসব পণ্য গরিব ও মধ্যবিত্তরা কেনেন এবং বাজারে বেশি বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি গত পাঁচ বছরে মসুর ডাল ৯৫, আটা ৪০, ময়দা ৬০, খোলা সয়াবিন ৮৪, বোতলজাত সয়াবিন ৫৬ ও পামওয়েলের দাম ১০৬ শতাশ পর্যন্ত বেড়েছে। গরুর মাংসের দামও বেশি। ব্রয়লার ৬০, চিনি ১৫২, গুঁড়া দুধ ৪৬-৮০, পেঁয়াজ ১৬৪, রসুন ৩১০ ও শুকনা মরিচের দাম ১০৫ শতাংশ বেড়েছে। যা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থায় দুর্বলতা দেখতে পাচ্ছি।
ধনী ও গরিবের বৈষম্য বেড়েছে উল্লেখ করে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বর্তমানে মাথাপিছু অভ্যন্তরীণ আয় ২৬৭৫ মার্কিন ডলার, আর মাথাপিছু জাতীয় আয় ২৭৮৪ ডলার। মাথাপিছু গড় আয় যতটুকু পেয়েছি, সেটা মূলত যারা উচ্চ আয় করেন তাদের কারণে। গরিব মানুষদের কথা বিবেচনা করলে তাদের আয় কমে গেছে। এখানে বৈষম্য বেড়েছে। গরিবদের কোনো উন্নতি হয়নি।
রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ে ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি, যা গত বছরের জুলাই-জানুয়ারির চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। গত বছর রাজস্ব আদায় নেতিবাচক ছিল। সেখান থেকে ইতিবাচক ধারায় ফিরে এসেছি, সেটা ভালো দিক। যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হয়, তাহলে ৬৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। যা প্রায় অসম্ভব।
তিনি বলেন, বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে সরকার অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ সুদে ঋণ নিচ্ছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিচ্ছে, ফলে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধে রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে। এটা ভবিষ্যৎ মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।
কাফি

অর্থনীতি
বাজারে আসছে নতুন ডিজাইনের আরও ৬ নোট

নতুন ডিজাইনের ৫০০, ২০০, ১০০ ও ১০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট এবং ৫ ও ২ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোট পর্যায়ক্রমে বাজারে আসছে। প্রথম দফায় ১০০০ টাকা, ৫০ টাকা ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট বাজারে আসার পর নতুন এই ছয়টি নোট বাজারে আসছে। নতুন এই ছয় নোটেও থাকছে না শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।
রোববার (১ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসব নোট ইস্যুর তারিখ এবং মুদ্রিত নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য পরবর্তীতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনসাধারণকে অবহিত করা হবে। উল্লিখিত মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে।
বাজারে আসার অপেক্ষায় ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্তিক স্থাপত্য’ শীর্ষক নতুন ডিজাইনের নোটগুলো হলো:
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাক্ষরিত ৫০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫২ মি.মি. × ৬৫ মি.মি.। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটের পেছনভাগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি থাকবে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ’, মূল্যমান ‘৫০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাক্ষরিত ২০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৬ মি.মি. × ৬৩ মি.মি.। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার ছবি এবং মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটের পেছনভাগে জুলাই-২০২৪ গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা একটি গ্রাফিতি ‘গ্রাফিতি-২০২৪’ মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে হলুদ রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ’, মূল্যমান ‘২০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাক্ষরিত ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ মি.মি. × ৬২ মি.মি.। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে ষাট গম্বুজ মসজিদ, বাগেরহাটের ছবি এবং মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটের পেছনভাগে বাংলাদেশের সুন্দরবনের ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে নীল রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ’, মূল্যমান ‘১০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাক্ষরিত ১০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৩ মি.মি. × ৬০ মি.মি.। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের ছবি এবং মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটের পেছনভাগে জুলাই-২০২৪ গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা একটি গ্রাফিতি ‘গ্রাফিতি ২০২৪’ মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে গোলাপি রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ’, ‘মূল্যমান ১০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ থাকবে।
অর্থসচিব স্বাক্ষরিত ৫ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ মি.মি. × ৬০ মি.মি.। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে তারা মসজিদ, ঢাকা এর ছবি এবং মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটের পেছনভাগে জুলাই-২০২৪ গণঅভ্যুত্থান এর সময় ছাত্রদের আঁকা একটি গ্রাফিতি ‘গ্রাফিতি-২০২৪’ মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে গোলাপি রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ’, মূল্যমান ‘৫’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রাম’ থাকবে।
অর্থসচিব স্বাক্ষরিত ২ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ মি.মি. × ৬০ মি.মি.। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, মিরপুর, ঢাকা-এর ছবি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ ছবি থাকবে। নোটটিতে হালকা সবুজ রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, মূল্যমান ‘২’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রাম’ থাকবে।
কাফি
অর্থনীতি
মে মাসে রেমিট্যান্স এলো ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা

দেশের ইতিহাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসায় একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। সর্বোচ্চ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই। সদ্য বিদায়ী মে মাসে ২৯৭ কোটি বা ২.৯৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা।
প্রতিদিন গড়ে আসছে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা ১১৬৯ কোটি টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।
এর আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত এপ্রিল মাসে, সে রেকর্ড ভেঙে দিল সদ্য বিদায়ী মে মাস। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সে এসেছিল গত মার্চ মাসে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বর্তমানে দেশ থেকে অর্থপাচার বন্ধ হয়েছে। একইভাবে হুন্ডির দৌরাত্ম্যও কমেছে। তাছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্সের দরও ভালো এবং নিরাপদ রয়েছে। এসব কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতি মাসেই দুই বিলিয়ন ছাড়াচ্ছে রেমিট্যান্স। এখন পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে (প্রথম ১১ মাসে) মোট ২ হাজার ৭৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) এসেছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৬.১৩ বিলিয়ন ডলার বা ৬১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, মে মাসের পুরো সময়ে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বা ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত মাস এপ্রিলের চেয়ে ২২ কোটি ডলার বেশি এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে প্রায় ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার এবং সবশেষ এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
কাফি
অর্থনীতি
বাজেট ঘোষণা আগামীকাল, সব তথ্য পাওয়া যাবে যেসব ওয়েবসাইটে

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আগামীকাল সোমবার (২ জুন) ঘোষণা করতে যাচ্ছে। নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। চলতি বাজেটের থেকে আগামী বাজেট ছোট হচ্ছে। ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতা সমাপ্তির পরপরই এ সংক্রান্ত সব তথ্য অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে।
বিকেল ৪টায় ধারণ করা বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচার করা হবে। সংসদ না থাকায় ধারণকৃত জাতীয় বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ফিড নিয়ে অন্য সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে একই সময়ে প্রচারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পরে তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাশ হবে।
প্রস্তাবিত এই বাজেট পাস হলে এটি হবে দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চলতি বাজেটের চেয়েও ছোট বাজেট দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
এসএম
অর্থনীতি
নতুন ডিজাইনের ৩ নোট বাজারে আসছে আজ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন নকশা ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট রবিবার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে আসছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য অফিসগুলো থেকে এই নোটগুলো ইস্যু করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সব মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট আজ রোববার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে দেওয়া হবে। বর্ণিত নোটসমূহ ওই তারিখে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে।
এসব মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া, মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা টাকা জাদুঘর, মিরপুর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটের ডিজাইন:
১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬০ মি.মি.×৭০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘১০০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে বেগুনি রঙের আধিক্য রয়েছে।
নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সাভার এর ছবি ও মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (এক হাজার টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে নোটের মূল্যমান ‘১০০০’, ডানকোণে ‘১০০০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের ওপরে বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৫ মি.মি. চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং ‘১০০০ টাকা’ খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা’ অংশে একটি উজ্জ্বল রংধনু বার ওপর থেকে নিচে উঠানামা করে।
এছাড়া, নোটের ডানদিকের কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘১০০০’ রং পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি (ওভিএমআই) দ্বারা মুদ্রিত। যাতে নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং ম্যাজেন্টা থেকে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং মূল্যমানের ভেতরে কোনাকুনিভাবে মুদ্রিত ‘১০০০’ লেখাটি দৃশ্যমান হয়। পাশাপাশি, নোটের সম্মুখভাগের পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা দ্বারা মুদ্রিত যা ইউভি ডিটেক্টর মেশিন দ্বারা দৃষ্টিগোচর হয়।
৫০ টাকা মূল্যমানের নোট:
৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘৫০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংককের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে গাঢ় বাদামি রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা- লেখাটি উভয় পাশে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পেছনভাগের বামদিকের ওপরে ‘৫০’ ও নিচে ‘৫০’ লেখা ব্যাকগ্রাউন্ডে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে যথাক্রমে “50 TAKA’ এবং BANGLADESHBANK’ মুদ্রিত রয়েছে।
২০ টাকা মূল্যমানের নোট:
২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৭ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘২০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুরের ছবি এবং নোটের মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (বিশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা’র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে মূল্যমান ‘২০’, ডানকোণে ‘২০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳২০’ মুদ্রিত রয়েছে।
অর্থনীতি
বিজিএমইএ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল ফোরাম, সভাপতি হচ্ছেন বাবু

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর (বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে ফোরাম জোট বেশি সংখ্যক পদের জয় পেয়েছে।
ঢাকায় পরিচালকের ২৬টি পদের মধ্যে ২৫ তাদের প্রার্থী জয়ী হয়েছে। আর চট্টগ্রামে পরিচালকের ৯টি পদের মধ্যে তারা ৬টি পদে জয় পেয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সবমিলেয়ে ৩৫টি পদের বিপরীতে ৩১ জন ফোরাম প্যানেলের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সম্মিলিত পরিষদের ঢাকায় একজন ও চট্টগ্রামে রয়েছেন ৩ জন জয়ী হয়েছেন। সে হিসেবে সম্মিলিত পরিষদের মোট ৪ জন জয়ী হয়েছেন।
আগামী ২ জুন নির্বাচিত পরিচালকরা নিজেদের মধ্য থেকে সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচন করবেন।
এবারের নির্বাচনে প্যানেল লিডার হিসেবে ফোরাম জোটের নেতৃত্ব দিয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। ফোরাম সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় বিজিএমইএর পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) ঢাকায় ও চট্টগ্রামে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ১৫ মিনিট বাড়িয়ে বিকেল সোয়া ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই ভোট গণনা শুরু হয়।
বিজিএমইএর ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক তিন জোট– ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তবে ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে। এই দুই প্যানেল ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব পদে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে ঐক্য পরিষদের প্রার্থী মাত্র ছয়জন। অর্থাৎ ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৭৬ জন প্রার্থী লড়াই করেন।
বিজিএমইএর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে ভোটার ছিল মোট ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ ও চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে মোট ভোট দিয়েছেন ১৬৩১ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ভোট দিয়েছেন ১৩৭৭ জন ভোটার, যা মোট ভোটারের ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ। অপরদিকে চট্টগ্রামে ভোট দিয়েছেন মোট ২৫৪ জন, যা সেখানকার মোট ভোটারের ৮৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বিজিএমইএ নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল।