ধর্ম ও জীবন
ঈদের দিনের ১০ আমল
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। আর এ ঈদ হলো মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঈদ বছরে দুবার আসে। আরবি শব্দ ‘ঈদ’-এর অর্থ ফিরে আসা। যেহেতু প্রতিবছরই এটা ফিরে আসে তাই, একে ঈদ বলা হয়। পুরো এক মাস রমজানের সংযম শেষে পালিত হয় ঈদুল ফিতর। আবার জিলহজ মাসের দশম দিনে পালিত হয় ঈদুল আজহা।
ঈদ উদযাপন কি দামি পোশাক, রঙিন জামা-জুতা, সুস্বাদু খাবার আর নানা ধরনের আনন্দ-উৎসবের নাম? নাকি শুধু ঈদের নামাজেই ধনী-গরিবকে এক কাতারে দাঁড় করানো? না, আসলে তা নয়। মূলত তাদের মধ্যে বৈষম্য দূর করা ঈদের অন্যতম উদ্দেশ্য। ঈদের উদ্দেশ্য কী তা আল্লাহ তা’আলা নিম্নোক্ত আয়াতের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন-
সুরা বাকারার ১৮৫ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যেন তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করতে পারো এবং তোমাদের যে সুপথ দেখিয়েছেন, তার জন্যে তোমরা আল্লাহর মমত্ব-বড়ত্ব প্রকাশ করো এবং তার কৃতজ্ঞ হও।’
এই আয়াত থেকে প্রমাণিত হচ্ছে ঈদের উদ্দেশ্য হলো দুটি- আল্লাহর বড়ত্ব, মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা; আল্লাহ যে নেয়ামত দান করেছেন তার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা।
ঈদে আমাদের যা করণীয়
রাসুল (স.) ও তার সাহাবারা তাদের জীবনে দেখিয়েছেন এ উৎসবের তাৎপর্য। কীভাবে তারা ঈদ পালন করতেন এবং কীভাবে ঈদের দিন সময় কাটাতেন, সেদিকে তাকালেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়।
কুরবানির দিন মুসলমানদের প্রথম ও প্রধান আমল হলো ঈদের নামাজ আদায় করা। এরপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান কোরবানি করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আজকের দিনে আমরা সর্বপ্রথম ঈদের নামাজ আদায় করব। এরপর ফিরে এসে কোরবানি করব।’ (বুখারি: ৯৬৮)
অন্যদিনের তুলনায় ঈদের দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া। (বায়হাকি : ৬১২৬)ে
এক. গোসল করা ও পবিত্রতা অর্জন করা
ঈদের নামাজের জন্য গোসল করা ও মিসওয়াক করা সুন্নাত। হাদিস বর্ণিত আছে, ইবনু আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা: ঈদুল ফিতর ও আজহার দিন গোসল করতেন। (বুখারি: ১/১৩০)
দুই. সুন্দর ও উত্তম পোষাক পরিধান করা
মুসলমানদের প্রধান দুই ধর্মীয় উৎসব তথা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন সুন্দর ও সাধ্যের ভেতর সবচেয়ে উত্তম পোষাক পরিধান করা সুন্নত। ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেছেন, নবীজি দুই ঈদের দিন সবচেয়ে সুন্দর ও উত্তম জামাটি পরিধান করতেন।
তার একটা বিশেষ স্যুট ছিল, যা তিনি দুই ঈদে ও জুমাতে পরতেন। হাদিস বর্ণিত আছে, নবী করিম (সা.) প্রতিটি ঈদে ডোরা-কাটা পোষাক পরিধান করতেন। (সুনানু বায়হাকি, হাদিস: ৬৩৬৩)
তিন. ঈদগাহে যাওয়ার আগে পানাহার থেকে বিরত থাকা
ঈদুল আজহার দিনের সুন্নত হলো, পানাহার ছাড়া ঈদগাহে যাওয়া এবং নামাজের পর নিজের কোরবানির গোশত দিয়ে প্রথম খাবার গ্রহণ করা। নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না আর কুরবানির দিন নামাজের পূর্বে খেতেন না। (তিরমিজি: ৫৪২ ও সহিহ ইবনে হিব্বান: ২৮১৪)
চার. ঈদগাহে যাওয়ার সময় তাকবির বলা
ঈদের দিন বেশি বেশি তাকবির পাঠ করে আল্লাহকে ডাকার মধ্যেই প্রকৃত আনন্দ। ঈদগাহে যাওয়ার সময় ও ঈদের দিন পুরুষরা উচ্চস্বরে তাকবির পাঠ করবে। আর মেয়েরা পাঠ করবে নীরবে।
পবিত্র কুরআন কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যাতে তোমরা গণনা পূর্ণ কোরো এবং তোমাদের হেদায়াত দান করার দরুণ আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব বর্ণনা করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
জিলহজের ৯ তারিখ ফজরের পর থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজ পর্যন্ত মোট পাঁচ দিন তাকবির পাঠ করবে। (হিদায়া ও ফাতহুল বারি: ২/৫৮৯)
তাকবির হলো, ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’ (ফাতহুল কাদির: ২/৮২)
পাঁচ : ঈদগাহে আসা-যাওয়ার রাস্তা পরিবর্তন করা
ঈদগাহে যাতায়াতের রাস্তা পরিবর্তন করা সুন্নাত। যাওয়ার সময় এক রাস্তা দিয়ে গমন করা এবং ফেরার সময় অন্য রাস্তা ব্যবহার করা সুন্নত। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবি সা(সা.) ঈদের দিন ঈদগাহে যাওয়া-আসার রাস্তা পরিবর্তন করতেন। (বুখারি: ৯৮৬)
ছয়. পায়ে হেঁটে ঈদগাহে গমন করা
কোনো ধরনের অপারগতা ও অক্ষমতা না থাকলে, পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত। আবদুল্লাহ ইবনু উমর রা: বর্ণনা করেছেন, রাসুল সা: পায়ে হেঁটে ঈদগাহে গমন করতেন এবং পায়ে হেঁটে ঈদগাহ থেকে ফিরতেন। (তিরমিজি: ১২৯৫)
সাত. ঈদগাহে শিশুদের নিয়ে যাওয়া
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) দুই ঈদের দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময় ফজল ইবনু আব্বাস, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস, আব্বাস, আলি, জাফর, হাসান, হোসাইন, উসামা ইবনু জায়েদ, জায়েদ ইবনু হারিসা, আয়মান ইবনু উম্মু আয়মান (রা.)-কে সাথে নিয়ে উচ্চস্বরে তাকবির ও তাহলিল পাঠ করতে করতে বের হতেন।
অতঃপর কামারদের রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে উপস্থিত হতেন, ফেরার সময় মুচিদের রাস্তা দিয়ে ঘরে আসতেন তিনি। (সুনানে কুবরা বায়হাকি: ৬৩৪৯)
আট. ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা
ঈদের দিন একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে শুভেচ্ছা বিনিময় করা সুন্নত। হাদিসে বর্ণিত আছে, জুবাইর ইবনু নুফাইর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) সাহাবোয়ে কেরাম ঈদের দিন পরস্পর সাক্ষাৎ হলে বলতেন ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’। এর অর্থ হলো, আল্লাহ আমার ও আপনার যাবতীয় ভাল কাজ কবুল করুক। (ফাতহুল কাদির, ২ খণ্ড, ৫১৭)
নয়. ঈদের খুতবা শোনা
ঈদের নামাজের পর খুতবা প্রদান করা সুন্নাত। আর উপস্থিত মুসল্লিদের ওপর তা শোনা ওয়াজিব। আবদুল্লাহ ইবনু সায়িব বর্ণনা করেছেন, নবিজি (সা.)এর সঙ্গে আমি ঈদগাহে উপস্থিত হয়েছি। তিনি আমাদের নামাজ পড়িয়েছেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘আমরা নামাজ শেষ করেছি। যার ইচ্ছা সে খুতবা শোনার জন্যে বসবে। আর যে চলে যেতে চায়, সে চলে যাবে।’ (সুনানু ইবনু মাজাহ: ১০৭৩)
জুমার নামাজের মতো ঈদের নামাজেও দুই খুতবা রয়েছে। আর দুই খুতবার মধ্যখানে বসা সুন্নাত। আবদুল্লাহ ইবনু উবায়দুল্লাহ বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, ‘সুন্নাত হচ্ছে ইমাম ঈদে দুটি খুতবা দেবেন। দুই খুতবার মাঝে বসে একটিকে অন্যটি থেকে আলাদা করবেন।’ (সুনানে কুবরা বায়হাকি: ৬২১৩)
দশ. ঈদগাহ থেকে ফিরে নফল আদায় করা
ঈদের নামাজের আগে-পরে ঈদের নামাজের স্থানে নফল নামাজ আদায় করা মাকরুহ। ঈদের নামাজের পরে ঈদগাহ থেকে বাড়ি ফিরে দুই রাকাত নফল পড়া সুন্নত। আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা: ঈদের নামাজের আগে কোনো নামাজ পড়তেন না। তবে নামাজের পর ঘরে ফিরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১২৯৩)
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি নিয়ে যা বললেন আহমাদুল্লাহ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত পাঠ্যপুস্তকের সমন্বয় কমিটি নিয়ে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ। এ সময় কমিটিতে ধর্মবিদ্বেষীরা রয়েছে দাবি করে কড়া বার্তাও দেন তিনি।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে তিনি এই বার্তা দেন।
যেখানে শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, ধর্মপ্রাণ মানুষের সন্তানরা কী পড়বে, তা ঠিক করবে চিহ্নিত ধর্মবিদ্বেষীরা! এটা শহীদদের রক্তের সঙ্গে সুস্পষ্ট বেইমানি।
একই সঙ্গে সেই পোস্টের কমেন্টে গিয়ে একাধিক স্ক্রিনশটও দেন ইসলামী এই আলোচক। এক কমেন্টে তিনি বলেন, অবাক করা ব্যাপার হলো, এসব ধর্মবিদ্বেষীরা কেউ কারিকুলাম বা পাঠ্যপুস্তক বিশেষজ্ঞও না। তবুও এদেরকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমাদের ওপর।
এ সময় শায়খ আহমাদুল্লাহ কামরুল ইসলাম মামুন ও সামিনা লুতফার নাম লিখে তাদের অনতিবিলম্বে অপসারণ করারও দাবি তুলেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত ও মুদ্রিত সকল পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে সমন্বয় কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
সরকারি টাকায় হজ বন্ধ চেয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
সরকারি টাকায় হজ করাকে বিলাসিতা বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানে শায়খ আহমাদুল্লাহ। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন তিনি। পোস্ট করার ৪০ মিনিটেই তাতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ২০ হাজারের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী।
পোস্টে জনপ্রিয় এ আলেম লিখেছেন, ‘সরকারি টাকায় হজ করা এক ধরনের বিলাসিতা। প্রতিবছর অনেক ক্ষমতাসীন রাজনীতিক ও সরকারের পছন্দের মানুষ রাষ্ট্রের টাকায় হজে যান। এটা শরয়ী এবং নৈতিক কোনো দিক থেকেই সিদ্ধ নয়। এতে একদিকে যেমন দেশের টাকার অসদ্ব্যবহার হয়, পাশাপাশি এসব লোকের পেছনে হজ অফিসকে বাড়তি মনোযোগ দিতে হয় এবং ব্যস্ত থাকতে হয়। এর ফলে সাধারণ হাজিরা তাদের যথাযথ সেবা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি টাকা মানে জনগণের টাকা। জনগণ তো কাউকে হজের জন্য টাকা দেয় না। একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জনগণের টাকায় হজ করছেন, এর মধ্যে কোনো গৌরব নেই। আছে প্রচ্ছন্ন লাঞ্ছনা। ‘অতএব এই প্রথা চিরতরে বন্ধ হওয়া উচিত। তবে হ্যাঁ, সরকারের তরফ থেকে নিয়োজিত ডাক্তার, হজ গাইড ও অন্য হজসংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কথা ভিন্ন।’
ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে তিনি আরো লিখেছেন, ‘সরকারি হাজিদের সেবায় যারা সৌদি যান, তাদের বেশির ভাগই নিজের হজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অনেকে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটান। সরকারি হাজিদের অবস্থা থাকে অনেকটা মা-বাপ ছাড়া সন্তানের মতো।
তাদের দেখার যেন কেউ থাকে না। সরকারি হাজিদের অসহায়ত্ব ও দুরবস্থা দেখে প্রতিবছরই কষ্ট হয়।’
“এ অবস্থারও অবসান হওয়া দরকার। হাজিদের সার্ভিস দেওয়ার নাম করে সেখানে হজ করতে যাওয়াও অনুচিত, যদি সেই হজ পালনের ফলে হাজিদের সেবাদানে ত্রুটি হয়। সুতরাং ‘পরিচিত’ কোটায় সেবার জন্য হজে যাওয়াও বন্ধ হওয়া উচিত।”
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির দায়িত্বে সাইফুল ইসলাম
অতিরিক্ত হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পালন করবেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, নিয়মিত মহাপরিচালক যোগদান না করা পর্যন্ত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংস্থা ও আইন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলামকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মহা. বশিরুল আলমকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাকে পরবর্তী পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ন্যস্ত করা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিনকে অপসারণ
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মো. রুহুল আমিনকে অপসারণ করা হয়েছে। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক স্বাক্ষরিত এ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মো. রুহুল আমিনকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে খতিবের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে৷
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর খতিব মো. রুহুল আমিন অনুপস্থিত ছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজ শুরুর আগে বায়তুল মোকাররমের বর্তমান খতিব হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খানের অনুসারীদের সাথে তার অনুসারীরা হাতাহাতি করেন।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খতিব মুফতি রুহুল আমিন নামাজ না পড়িয়ে মসজিদ ত্যাগ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনের গুনাহ মাফ হওয়ার ৮ আমল
ইসলামে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে জুমার দিন দ্রুত মসজিদে গমনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া হাদিসে গুরুত্বপূর্ণ আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন নামাজের আজান হলে তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাবিক্রি বন্ধ কোরো, তা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝো।
এরপর নামাজ শেষ হলে ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) অনুসন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ৯-১০) জুমার দিনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো—
১. জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা
আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো—এক. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। দুই. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন।
তিন. এই দিনে আদম (আ.)-কে মৃত্যু দিয়েছেন। চার. এই দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা দেবেন। যতক্ষণ সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না। পাঁচ. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৫)
২. জুমার নামাজ আদায়
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান মধ্যবর্তী সময়ের পাপ মোচন করে; যদি সেই ব্যক্তি সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
৩. জুমার দিন গোসল করা
জুমার দিন গোসল করা ও আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আউস বিন আউস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনল, তাঁর জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)
৪. মসজিদে প্রথমে প্রবেশ করা
জুমার দিন মসজিদে আগে প্রবেশ করা ও মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনার বিশেষ গুরুত্ব আছে।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, অতঃপর প্রথমে মসজিদে গেল সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে এরপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল। আর যে এরপর ঢুকল, সে যেন ছাগল কোরবানি করল, এরপর যে ঢুকল সে যেন মুরগি কোরবানি করল, আর যে এরপর ঢুকল সে ডিম সদকা করল। অতঃপর ইমাম খুতবার জন্য এলে ফেরেশতারা আলোচনা শোনা শুরু করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪১)
৫. জুমার দিন দোয়া কবুল হয়
জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আসরের পর অনুসন্ধান কোরো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান কোরো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
৬. সুরা কাহাফ পাঠ
জুমার অন্যতম আমল সুরা কাহাফ পাঠ করা। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সহিহ তারগিব, হাদিস : ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক : ২/৩৯৯)
৭. ইমামের কথা শোনা
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
৮. দরুদ পাঠ
জুমার দিন নবীজি (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। আউস বিন আবি আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং এই দিনে সবাইকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব, তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণ দরুদ পড়ো। কারণ জুমার দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।’ সাহাবারা বললেন, আমাদের দরুদ আপনার কাছে কিভাবে পেশ করা হবে, অথচ আপনার দেহ একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে? তিনি বলেন, ‘আল্লাহ জমিনের জন্য আমার দেহের ভক্ষণ নিষিদ্ধ করেছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
এমআই