অর্থনীতি
ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে প্রবাসীরা যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
রিয়েল এস্টেট, স্টক মার্কেট, স্টার্ট-আপ বা ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলো বিনিয়োগের অনুকূল দিগন্ত উন্মোচন করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। মার্কিন ডলারের হার বেড়ে যাওয়ার ধারাবাহিকতায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ে বিনিয়োগের বিনিময় হারে। অন্যদিকে, উচ্চ মূল্যের ডলার আয়ের সঙ্গে উন্নত হয় রেমিটেন্স ক্রয় ক্ষমতা। প্রবাসীদের এই অর্থ দেশে থাকা তাদের পরিবারের জন্য যেমন সহায়ক হয়, তেমনি সম্ভাবনা তৈরি হয় দেশের বাজারে আরও বিনিয়োগের। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের উপায় বাংলাদেশ সরকারের নন-রেসিডেন্স বাংলাদেশি (এনআরবি) বন্ডগুলো। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ইউ.এস. ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড বা ইউএসডিআইবি।চলুন, এই বন্ডে বিনিয়োগের পদ্ধতি সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড কী
সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই এনআরবি বন্ড ইস্যু করা হয় মার্কিন ডলারে।
এটি মূলত রেমিটেন্সের বিপরীতে ফরেন কারেন্সি (এফসি) বা বৈদেশিক মুদ্রার অ্যাকাউন্টধারীদের জন্য নিবেদিত একটি সঞ্চয় প্রকল্প। অন্যান্য অধিকাংশ বন্ডের মতো এই বন্ডেও রয়েছে মুনাফা লাভ এবং সুদাসলের উপর কর-মুক্তির সুবিধা।
ইউ.এস. ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের বৈশিষ্ট্য
– এই বিনিয়োগ সুবিধাটি অনিবাসী বাংলাদেশি বা বাংলাদেশে বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিকদের জন্য
– বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের এই বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে তাদের এফসি অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হয়
– বন্ডের মূল্য রেমিটেন্সের উপর মার্কিন ডলারে যে কোনো মূল্যের হয়ে থাকে
– বন্ডের মেয়াদ ৩ বছর
– বর্তমানে সাধারণত ৫০০, ১ হাজার, ৫ হাজার, ১০ হাজার, এবং ৫০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যমানের ইউএসডিআইবি ইস্যু করা হয়
ইউ.এস. ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড কেনার উপায়
– বৈধ পাসপোর্টের অনুলিপি (বাংলাদেশে অবস্থান করলে দেশে আগমন ও প্রস্থানের সিলসহ পৃষ্ঠা প্রদর্শন করতে হবে)
– সম্প্রতি তোলা আবেদনকারি এবং নমিনি উভয়ের এক কপি করে পাসপোর্ট আকারের ছবি
– ওয়ার্ক পারমিট অথবা ভিসার অনুলিপি
– তহবিলের উৎস সম্পর্কিত কাগজপত্র (চাকরির পরিচয়পত্র বা বেতন প্রাপ্তির স্লিপ)
– অন্য কেউ স্পন্সর করে থাকলে তার পাসপোর্টের অনুলিপি এবং আয় সংক্রান্ত নথি
– সম্পূর্ণ পূরণকৃত এবং স্ব-হস্তে স্বাক্ষরকৃত আবেদনপত্র
বন্ড ক্রয় পদ্ধতি
বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বা আভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের ওয়েব পোর্টাল থেকে বন্ড ক্রয়ের আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করা যায়।
এছাড়া দেশে বা বিদেশে এই বন্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও বিনামূল্যেই এই ফর্ম বিতরণ করে থাকে।
আরও পড়ুন: ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে ২৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ
ফর্ম পূরনের পর ফর্ম সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি যে কোনো ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানে ইমেল করতে হবে। উপরোক্ত নথিপত্র ছাড়াও বন্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও কিছু দরকারি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফিরতি ইমেলে এনআরবি গ্রাহককে অবহিত করবেন।
এরপর স্ব-হস্তে স্বাক্ষরকৃত আবেদন ফর্মসহ যাবতীয় কাগজপত্র কুরিয়ারের মাধ্যমে সেই প্রতিষ্ঠানের ঠিকানায় পাঠাতে হবে। তারপর আবেদনকারির বন্ডের মূল্য পরিশোধের সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বন্ড ইস্যু করবেন। পরিশেষে ক্রয়কৃত বন্ডের পরিচিতি স্বরূপ একটি অ্যাডভাইস কপি গ্রাহককে প্রেরণ করা হবে।
যে প্রতিষ্ঠানগুলো এই বন্ড ইস্যু করে থাকে, সেগুলো হলো:
– বাংলাদেশ ব্যাংক
– দেশের ভেতর ও বাইরে অবস্থিত বাংলাদেশের তফসিলভুক্ত ব্যাংকগুলোর এডি (অনুমোদিত ডিলার) শাখা
– প্রতিনিধি অফিস, ফরেন করেসপন্ডেন্ট
– শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক ছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য তফসিলি ব্যাংকগুলোর এক্সচেঞ্জ হাউস
বন্ড ক্রয়ের জন্য আবেদন পদ্ধতি
নিম্নের লিঙ্ক থেকে বন্ডে বিনিয়োগের আবেদন ফর্মটি সরাসরি ডাউনলোড করে পূরণ করা যাবে। ফর্ম পূরণে যে তথ্যগুলো প্রয়োজন হয়, তা হলো:
– আবেদনকারী বা বন্ড ক্রেতা এবং তার নমিনির নাম ও ঠিকানা
– নমিনির সঙ্গে আবেদনকারীর সম্পর্ক
– বন্ড ক্রেতার পাসপোর্ট নম্বর
– বন্ডের মূল্য
– এফসি অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং যেই ব্যাংকের যে শাখাতে অ্যাকাউন্টটি রয়েছে, তার নাম ও ঠিকানা
– আবেদনকারীর পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্ট ইস্যুর স্থান, এবং পাসপোর্ট অনুযায়ী জন্ম তারিখ
– বন্ড ক্রেতার চাকরির পদবি, কোম্পানির নাম
– বন্ড ক্রেতার বাংলাদেশ ও বিদেশের ঠিকানা
– সবশেষে আবেদনকারীর সই
অর্থপ্রদানের মাধ্যম
এনআরবি গ্রাহক বিদেশ থেকে তার এফসি অ্যাকাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে প্রেরিত অর্থ দিয়ে বন্ডের ক্রয়মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। বৈদেশিক মুদ্রায় ইএফটি (ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার), চেক বা ড্রাফটের মাধ্যমে বন্ডের দাম পরিশোধ করা যাবে।
১ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ
– বিনিয়োগের ১ বছরের পর থেকে অনূর্ধ্ব ২ বছর পর্যন্ত ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ
– ২ বছরের পর থেকে অনূর্ধ্ব ৩ বছর পর্যন্ত ৬ শতাংশ
– ৩ বছর মেয়াদপূর্তীতে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ
১ লাখের পর থেকে ৫ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ
এই ক্যাটাগরিতে সুদের হার-
– ১ বছর পর থেকে ২ বছরের আগ পর্যন্ত ৪ শতাংশ
– ২ বছর পর থেকে ৩ বছরের আগ পর্যন্ত ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ
– ৩ বছর শেষে ৫ শতাংশ
৫ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ
– ১ বছর পর থেকে অনূর্ধ্ব ২ বছর পর্যন্ত ৩ শতাংশ
– ২ বছর পর থেকে অনূর্ধ্ব ৩ বছর পর্যন্ত ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ
– ৩ বছর মেয়াদপূর্তীর পর ৪ শতাংশ
এখানে উল্লেখ্য, বন্ডে বিনিয়োগের পর থেকে ১ বছরের আগেই নগদায়ন করলে কোনো সুদ পাওয়া যায় না। সরল মুনাফা পদ্ধতিতে ধার্যকৃত মুনাফা দেওয়া হয় প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর।
উদাহরণস্বরূপ, ২ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করলে ১ বছর পর থেকে প্রতি ৬ মাসে পাওয়া যাবে ৮ হাজার মার্কিন ডলার করে। দ্বিতীয় বছর পর ১৮ হাজার এবং একই ভাবে ৩ বছর পর লাভের পরিমাণ দাড়াবে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। ইউএসডিআইবি’তে বিনিয়োগের কোনো সর্বোচ্চ সীমা নেই।
মার্কিন ডলার বিনিয়োগ বন্ডের সুবিধা
– বন্ডের নমিনি বা উত্তরাধিকার বন্ডে বিনিয়োগকারীর মৃত্যুর পর বিনিয়োগের পরিমাণের উপর ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ মৃত্যু-ঝুঁকি সুবিধা পাবেন।
– বিনিয়োগকৃত পরিমাণ এবং অর্জিত সুদ ছাড়াও মৃত্যু-ঝুঁকি বাবদ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশে ফেরত পাঠানো যায়।
– এই বন্ড থেকে প্রাপ্ত সুদ-আসল আয়কর-মুক্ত।
– বন্ড ক্রেতা যে কোনো সময় ইস্যুকারী অফিসকে অবহিত করে আগের নমিনিকে প্রত্যাহার করে নতুন নমিনি নিযুক্ত করতে পারেন।
– বন্ড ক্রেতা তার এনআরবি স্ট্যাটাস বজায় রাখার শর্তে মেয়াদপূর্তির পর এই বন্ডে পুনঃবিনিয়োগ করতে পারবেন।
– বাংলাদেশে যে কোনো তফসিলি ব্যাংক থেকে এই বন্ড মূল্যের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করা যাবে।
– মেয়াদপূর্তির পর বিনিয়োগকৃত মূলধন এবং অর্জিত সুদের অর্থ যে কোনো সময় বিদেশে ফেরত পাঠানো যাবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কলমানি সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো
ব্যাংক খাতে কলমানি সুদহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য ধার নেওয়া টাকার গড় সুদহার উঠেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে। ১৩ নভেম্বর থেকে এই সুদহার ১০ শতাংশ বা তার ওপরে রয়েছে। কলমানি বাজারে সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে সুদহার ১০ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। আবার চার দিন ও সাত দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার আরও বেশি। গতকাল চার দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল সোয়া ১২ শতাংশ। আর সাত দিনের ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তবে কলমানিতে বিভিন্ন মেয়াদে ধারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা লেনদেন হয় এক দিনের ধার হিসেবে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সাল থেকে কলমানি বাজারের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের পর গতকালই প্রথম কলমানিতে এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিন এক দিনের জন্য কলমানিতে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, যার সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১১ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে কলমানিতে গড় সুদহার প্রথম ১০ শতাংশে উন্নীত হয় ১৩ নভেম্বর। ওই দিন এই বাজারে এক দিনের জন্য ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে কিছু ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকটে রয়েছে। এসব ব্যাংকের সংকট এতটাই প্রকট যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আবার সরকারি ট্রেজারি বিল–বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক বেশি লাভের আশায় কলমানির বদলে বিল–বন্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে কলমানিতে টাকা ধার দেওয়া বা এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যা নিরসনে বিআইএ’র সভা
দেশের নন-লাইফ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর সমস্যা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেস রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিভিন্ন নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ৪২ জন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইএ’র নন-লাইফ টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক ও রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উপদেষ্টা পি কে রায়।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ (পাভেল) ও প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট হোসেন আখতার সভায় বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈদয় বদরুল আলম, সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান, মো. ইমাম শাহীন।
সভায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করেন এবং এসব সমস্যা নিরসনের জন্য নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট, প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী কমিটির সদস্যরা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুডিসের রেটিংয়ে সঠিক চিত্র উঠে আসেনি দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
ঋণমান নির্ণয়কারী মার্কিন এজেন্সি মুডিস রেটিংয়ে বাংলাদেশের আর্থ-রাজনৈতিক অবস্থার সঠিক চিত্র উঠে আসেনি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানোর মাত্র দুদিনের মাথায় ছটি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণমান কমানোর পর বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে এমন দাবি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি একটি বড় রূপান্তরের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। এর ইতিবাচক ফল পেতে আরও সময় লাগবে। দেশি-বিদেশি অংশীদারদের সমর্থন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াবে।
এর আগে, গত বুধবার (২১ নভেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে মুডিস।
একই সময়ে মুডিস ছটি ব্যাংকের এলটি ডিপোজিট বা দীর্ঘমেয়াদি আমানতের রেটিং পূর্বাভাস পরিবর্তন করে স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক করেছে।
এমআই