জাতীয়
রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেছেন। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।
একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালাম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে উপকূলীয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুস সালাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সামনে যেহেতু বর্ষার মৌসুম, তাই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো দ্রুত মেরামত করতে হবে।’ তিনি জানান, পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়াতে না পারে, সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে রাতভর ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।’ তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী একনেক সভায় জানান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনহ সরকারের সকল সংস্থা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথেষ্ট সতর্ক থাকায় ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি কম হয়েছে।
পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার জানান, একনেক সভায় মোট ১১ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৪ হাজার ৩৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৫৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৭ হাজার ৮৭৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৮৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং একইসাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের দুর্যোগকালে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের পাশাপাশি ল্যান্ডফোন চালু রাখার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্টেকহোল্ডারদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে, পোর্টফোলিও নির্বিশেষে সকল পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়ানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে প্রাণহানি ও সম্পদের কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাঁর হিসাব করতে বলেছেন এবং আগামী রোববারের মধ্যে সেটা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
একনেক সভায় রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে ৮ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে দু’টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়নে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হোস্ট অ্যান্ড ফোরসিবিলি ডিসপ্লেসড মিয়ানমার ন্যাশনালস’(এফডিএমএন)/ ‘ডিসপ্লেসড রোহিঙ্গা পপুলেশন ইনহ্যান্সমেন্ট অব লিভস থ্রো এ মাল্টি-সেক্টোরাল এপ্রোচ প্রজেক্ট ইনফ্রাস্টকচার রিলেটেড’ প্রকল্প এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ৪ হাজার ৪০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরটুনিটিস ফর হোস্ট কমুনিটিজ অ্যান্ড এফডিএমএন পপুলেশন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনা সচিব বলেন, ‘রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য নেওয়া প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক এক বছরের জন্য অনুদান দেবে। এছাড়া কিছু ঋণও দেওয়া হবে। শুরুতে বিশ্বব্যাংক ও উন্নয়ন সহযোগিরা শুধু রোহিঙ্গাদের জন্য দিতে চেয়েছিল, পরে আলাপ করে সেখানকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যও চাওয়া হলে তা দিতে রাজি হয়েছে। এসব টাকায় যোগাযোগ তথা রাস্তা, রেলপথ নির্মাণ করা হবে। যে বন ও পাহাড় নষ্ট হয়েছে তাঁর উন্নয়ন করা হবে। এসব বাস্তবায়ন করতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগবে। রোহিঙ্গারা আসায় যে বনাঞ্চল নষ্ট হয়েছে তা উন্নয়নে কাজ করা হবে।’ সত্যজিত বলেন, এই দুই প্রকল্প প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট প্লানিং সিস্টেম (পিপিএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনুমোদন করেছেন, যা পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে। প্রধানমন্ত্রী এই দুই প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ভাবন মানসিকতা প্রদর্শন এবং আন্তরিকভাবে কাজ করতে বলেছেন।
একনেকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার কর্ণফুলী নদী এবং সংযুক্ত খালসমূহের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন রোধকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্প। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প। নওগাঁ জেলার মহদেবপুর উপজেলায় ৪৮০০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চালের আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প- ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স ফর রিপারপাসিং অব এগ্রিকালচারাল পাবলিক সাপোর্ট টুওয়ার্ডস এ সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প।
বিআইডব্লিউটিসি’র জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক ও ৮টি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং ২টি স্লিপওয়ে নির্মাণ প্রকল্প। কুমিল্লা-লালমাই-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-বেগমগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা এবং বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ী-রামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ৪ লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর এ পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্প।
কাফি

জাতীয়
কালোটাকা সাদা করার বিধান সংস্কারের মূল লক্ষ্যের বিপরীত: টিআইবি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারের এ উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করে বলেছে, বিষয়টিকে রাষ্ট্রীয় সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের মূল উদ্দেশের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত একই সঙ্গে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি।
সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্র সংস্কার—বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যকে রীতিমতো উপেক্ষা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে রিয়েল এস্টেট লবির ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। করহার যা-ই হোক না কেন, এটি সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে অনুপার্জিত আয় অবৈধ হবে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ একইসঙ্গে বৈষম্যমূলক, কারণ এ সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে অবৈধ অর্থের মালিকদের অধিকতর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সৎ উপার্জনকারীদের ফ্ল্যাট বা ভবনের অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সবচেয়ে আশঙ্কা ও হতাশার ব্যাপার হলো, সরকারের এ সিদ্ধান্ত দুর্নীতিকে উৎসাহ দেবে। এর মাধ্যমে সরকার বাস্তবে পুরো বছরজুড়ে অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ অর্জনের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করছে এবং বছর শেষে কালো টাকাকে বৈধতা দেওয়ার অঙ্গীকার করছে। বৈধতা দেওয়ার অজুহাত হিসেবে যে খাতের তোষণ করা হচ্ছে, সে আবাসন খাতই দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের একটি হিসেবে চিহ্নিত। অবিলম্বে কালো টাকা সাদা করার এ দুর্নীতিবান্ধব সুযোগ চিরতরে বাতিল করার জোর দাবি জানাই আমরা, যার সূচনা হওয়া উচিত সংশোধিত বাজেটে এ সুযোগ রহিত করার মাধ্যমে। পাশাপাশি, কালো টাকার উৎস অনুসন্ধান করে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা, করব্যবস্থায় সমতা ও ন্যায় নিশ্চিতের দাবি জানাই আমরা।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, সরকার যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান বাস্তব ও কার্যকর বলে দাবি করতে চায়, তবে কালোটাকা বৈধ করার যাবতীয় পথ চিরতরে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম ও নীতিনির্ধারণী উদ্যোগগুলোকে জনগণ শুধুই লোকদেখানো মনে করবে, যার পরিণতিতে দুর্নীতির স্বাভাবিকতার সংস্কৃতি আরও গভীরতর হবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র লোক দেখানো হিসেবেই থেকে যাবে। মনে রাখতে হবে এ সরকার কর্তৃক গঠিত দুদক সংস্কার কমিশনের অন্যতম সুপারিশ হচ্ছে কালোটাকাকে বৈধতা দেওয়ার সব পথ চিরতরে রুদ্ধ করা, যার প্রতি এরই মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অথচ, অন্তর্বর্তী সরকার এর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে স্ববিরোধিতা করছে, সরকার নিজেকে বিব্রত করছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, একইভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ বাজেটে প্রত্যাশা ছিল, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারে কতটা অগ্রগতি হলো তার একটি ধারণা দেওয়া হবে। কিন্তু সে ব্যাপারে মাত্র একটি বাক্য ব্যবহার করেই দায় সেরেছেন অর্থ উপদেষ্টা। আবার দেশ থেকে অর্থসম্পদ পাচার করেছেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন, এমন ব্যক্তিদের অর্থ-সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান করা হয়েছে। কিন্তু কী প্রক্রিয়ায় তা বাস্তবায়ন করা হবে- তাও পরিষ্কার করা হয়নি। এর বাইরে রাজস্ব আদায় বাড়াতে এর ব্যবস্থাপনা থেকে নীতিকে আলাদা করার সঙ্গে এ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের কৌশলগুলো কী হবে- সে উত্তরও পাওয়া যায়নি বাজেট বক্তৃতায়, যা সত্যিই হতাশার বলে মনে করে টিআইবি।
কাফি
জাতীয়
জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকে প্রথম পর্ব শেষ হলো।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিতে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদল। বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি সারা দিনে যত মিটিং করি, যত মিটিং করে এসেছি, তখন সবচাইতে আনন্দ পাই যখন এরকম বসার সুযোগ পাই। এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে, সেই রকম কাজে আমি যুক্ত হতে পেরেছি।
তিনি বলেন, সংস্কার করার জন্য আমার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কোথায় থেকে শুরু করব। প্রথমে নানা আলাপের মাধ্যমে ঠিক হলো যে, আমরা কয়েকটি কমিশন করে দেব। তারা ভেতরে গিয়ে প্রকৃত জিনিসটা তৈরি করবে। আমরা কমিশন গঠন করলাম। দ্রুত গতিতে কাজ করার জন্য তাদেরকে ৯০ দিন আমরা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। আমরা খুব আনন্দিত তারা করতে পেরেছে। কয়েকটা কমিশন বেশি সময় হয়েছে তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
‘কমিশন থেকে রিপোর্ট আসলো তারপর আমরা ঐকমত্য গঠন করতে চাচ্ছি এটা কীভাবে হবে, সেখান থেকে একটা আইডিয়া আসলো যে আলাদা একটা ঐকমত্য কমিশনের কথা। সেটা ফলপ্রসূ হয়েছে। আলী রীয়াজ সাহেব যখনই আমার সঙ্গে বৈঠক করেন তখন খুব আনন্দিত হই।’
দ্বিতীয় পর্বে কী হবে তা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অনেকগুলো বিষয় কাছাকাছি এসে গেছে। আরেকটু হলে আমাদের তালিকায় আরেকটি সুপারিশ যুক্ত হবে, সেটা হচ্ছে ঐকমত্যের সুপারিশ। সেই সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি। আমাদের জুলাই সনদের যতগুলো বিষয় আছে তাতে যদি আরও কিছু যুক্ত করতে পারি, দেখতে সুন্দর লাগবে। জাতীয় একটা সনদ হলো। অনেকগুলো বিষয়ে আমরা এক হতে পেরেছি। জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত হতে পারি। আমরা বিভক্তিকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রাজনীতি সৃষ্টি করেনি। আমরা দেশের উন্নতির জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছি।
কাফি
জাতীয়
‘বাজেট ধনী ও গরীবের মধ্যে বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দেয়’

জাতীয়
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বিকেলে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ দ্বিতীয় দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এতে চলমান রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে আলোচনা হবে।
রবিবার (১ জুন) রাজধানীতে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সোমবার (২ জুন) আবারও বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকটি বিকেল সাড়ে ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই উপপ্রেস বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই সংলাপের মধ্যে দিয়ে জুলাই সনদ ঘোষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হওয়া যাবে বলে আশা করছি।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আরও বলেন, ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে। সোমবার ছাড়াও ঈদের আগে-পরে আরও দু-একটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম দফার আলোচনা শেষ হয় ১৯ মে। প্রথম দফায় কমিশনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দফায় বৈঠক শুরু হতে যাচ্ছে আজ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়।
সেই সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জাতীয়
ট্রেনে ফিরতি যাত্রা: আজ বিক্রি হবে ১২ জুনের টিকিট

ঈদুল আজহা শেষে ঘরমুখো মানুষের ফেরার সুবিধার্থে আন্তঃনগর ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আজ বিক্রি করা হবে আগামী ১২ জুনের ট্রেনের টিকিট।
সোমবার (২ জুন) সকাল ৮টায় বিক্রি শুরু হবে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট। এবং দুপুর ২টায় বিক্রি শুরু হবে পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
ঈদ উপলক্ষ্যে রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে জানা গেছে, আন্তঃনগর ট্রেনের ৯ জুনের আসনের টিকিট ৩০ মে বিক্রি হয়েছে; ১০ জুনের আসনের টিকিট ৩১ মে বিক্রি হয়েছে; ১১ জুনের আসনের টিকিট ১ জুন বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ১৩ জুনের আসনের টিকিট ৩ জুন; ১৪ জুনের আসনের টিকিট ৪ জুন এবং ১৫ জুনের আসনের টিকিট ৫ জুন বিক্রি হবে।
আরও জানা গেছে, ঈদের পরে ৭ দিনের ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। এসময় কেনা টিকিটগুলো যাত্রীরা রেলওয়েকে ফেরত দিতে পারবেন না। প্রতিজন টিকিটপ্রত্যাশী ৪টি আসনের টিকিট একবারে একসঙ্গে কিনতে পারবেন। একটির বেশি আসনের টিকিট কিনলে সহযাত্রীদের নাম টিকিট কেনার সময় লিখতে হবে।