আন্তর্জাতিক
সিঙ্গাপুরের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বাড়ছে চীনে
বিদেশী বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক উদ্যোগকে সমর্থন জানাতে সম্প্রতি অবকাঠামো ও নীতিগত সুবিধা বিস্তৃত করেছে চীন। শ্রমশক্তি ও ভোক্তার সংখ্যায়ও এগিয়ে রয়েছে দেশটি। এশিয়ার বৃহত্তম এ অর্থনীতি ভূরাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন পক্ষ থেকে কোণঠাসা হয়ে পড়লেও এর বিপরীতে ব্যবসায়িক সুবিধাগুলো অনেক দেশের কাছে এখন লোভনীয়। বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে চীনকে ঘিরে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে এশিয়ার আরেক দেশ সিঙ্গাপুর।
সিঙ্গাপুরের কোম্পানিগুলোকে বিদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়তা দেয় এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুর (এন্টারপ্রাইজএসজি)। গত দুই বছরে তিন শতাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে চীনের বাজারে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি বাড়াতে সাহায্য করেছে সরকারি সংস্থাটি।
চীনের প্রতি সিঙ্গাপুরের সাম্প্রতিক এ আগ্রহ নিয়ে এন্টারপ্রাইজএসজির নির্বাহী পরিচালক (চীন) সিম চুন সিওং বলেন, চীনে শক্তিশালী সরবরাহ চেইন অবকাঠামো ও দক্ষ কর্মী বাহিনী রয়েছে। এখানে ডিজিটাল অর্থনীতি, সবুজ অর্থনীতির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবার মতো ক্ষেত্রে নতুন কাজের সুযোগ রয়েছে।
চীনের বাজারে প্রবেশের জন্য ২০২৩ সালে ২৫০টি সংস্থা এন্টারপ্রাইজএসজির মার্কেট রেডিনেস অ্যাসিস্ট্যান্স গ্র্যান্ট নামের সহায়তা পেয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি।
সাংহাই ও চেংদুর সিঙ্গাপুর চায়নিজ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিঙ্গাপুর এন্টারপ্রাইজ সেন্টারের সঙ্গে কাজ করছে এন্টারপ্রাইজএসজি। সিম চুন সিওং জানান, চীনের বাজার সম্পর্কে সিঙ্গাপুরে আগ্রহ বেড়েছে। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে এ ধরনের অনুসন্ধান ছিল ৫০ শতাংশ বেশি।
চীনে বাজারের নতুন উপস্থিতি ও ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের (এসবিএফ) প্রধান নির্বাহী কোক পিং সুন। তিনি বলেন, পুরোপুরি প্রতিযোগিতামূলক বা তুলনামূলক সুবিধার ওপর ভিত্তি করে নয়, এখন ভূরাজনৈতিকভাবে যুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বিনিয়োগ বরাদ্দ ও বাণিজ্যপ্রবাহ আরো বেশি কেন্দ্রীভূত হয়ে উঠছে। এর মধ্যে চীন এখনো সিঙ্গাপুরের অনেক কোম্পানির জন্য আসিয়ানের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার।
বিদেশী কোম্পানি ও বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার জন্য সম্প্রতি নীতিগত সুবিধা প্রবর্তন করেছে বেইজিং। এর মধ্যে বাজারে প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণ ও উৎপাদন খাতে বিদেশী বিনিয়োগের বাধা দূরীকরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালে স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে পরিষেবা খাতে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো সুবিধা পাচ্ছে।
কোক পিং সুন জানান, নির্মাণ, খুচরা ও পাইকারি, স্থাপত্য ও নগর পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তি পরিষেবার মতো কোম্পানি বিদেশী ইকুইটি সীমার অধীন হবে না। বরং সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারী ও পরিষেবাদাতারা সংশোধিত চুক্তির অধীনে আরো উদার ও স্বচ্ছ নিয়ম উপভোগ করবেন।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন কভিড-১৯-পরবর্তী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় নানাভাবে হোঁচট খেলেও চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে পূর্বাভাসের চেয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। রয়টার্স জরিপে বিশ্লেষকরা ৪ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও এ প্রান্তিকে অর্থনীতি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি প্রস্তুতকারক ডুরাপাওয়ার হোল্ডিংস চীনে বিস্তৃত পরিসরে ব্যবসা করছে। গত মার্চে সুঝোতে একটি ৩২ হাজার ৫০০ বর্গমিটার আয়তনের কারখানা তৈরি করেছে, যা ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে শেষ হবে। কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেলভিন লিম বলেন, এ সম্প্রসারণ ডুরাপাওয়ারকে চীনা ও আঞ্চলিক চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সিঙ্গাপুরের ওসিবিসি ব্যাংক চীনের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোয় নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। দেশটির ১৪টি শহরে ১৬টি শাখা ও উপশাখা চালু করেছে। ওসিবিসি চীনের প্রধান নির্বাহী আং ইং সিওং জানান, আসিয়ান সদস্যকে সুযোগ দিয়ে থাকে চীন। সে সুযোগ কাছে লাগাচ্ছে সিঙ্গাপুর।
তিনি বলেন, অঞ্চল হিসেবে আসিয়ান চীনের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। আসিয়ান বৃহত্তর চীনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগপ্রবাহ আমাদের জন্য বিশাল সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগানো আমাদের করপোরেট কৌশলের মূল স্তম্ভগুলোর অন্যতম।
সিঙ্গাপুরকে কেন্দ্র করে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো আসিয়ান দেশে কাজ করে এমন চীনা কোম্পানিগুলোকে পরিষেবা দেয় ওসিবিসি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালে বলেছিল, আসিয়ান ও বৃহত্তর চীনকে লক্ষ রেখে ২০২৫ সালের মধ্যে আয় ৩০০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে চায়।
আং ইং সিওং জানান, কর্মীর প্রাচুর্য চীনে বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। বর্তমানে দেশটির শ্রমশক্তি ৮০ কোটির বেশি। ২০২৪ সালে এখানকার প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করবেন।
তিনি বলেন, চীন গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতেও প্রস্তুত। এখানে বিনিয়োগের প্রধান দিক হলো ডিজিটাল ও সবুজ অর্থনীতি। চীনের শক্তিশালী উৎপাদনক্ষমতা ও বিস্তৃত ভোক্তা বাজার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের সুযোগ দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
এমনকি আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমাদের আর্থিক বাজারের সততা রক্ষার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
অভিযোগ করা হয়েছে, ঘুষকাণ্ড এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেই একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কর্মী সংকটে অতিরিক্ত দুই লাখ ভিসা দেবে জার্মানি
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে কর্মী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনবল সংকট কাটাতে এবার আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
২০২৩ সালে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, চলতি বছর এই ভিসার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানে ভিসাসংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জার্মানিতে বিভিন্ন চাকরিতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার পদ খালি রয়েছে। এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরও বেশি হতে পারতো বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশিরা।
ভাষার দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং কম বয়সের ভিত্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি। এজন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ চালু করেছে দেশটি৷ এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা ও চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষরাও সরাসরি জার্মানিতে যেতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষ কর্মী ভিসার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান সরকার। আগামী ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণ। ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
এমআই