অর্থনীতি
ইলেক্ট্রিক্যাল পণ্যের বাজারে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য

বাংলাদেশের ‘ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ এবং লাইটিং পণ্যের ওপর সম্প্রতি দেশব্যাপী একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে মার্কেটিং ওয়াচ বাংলাদেশ (এমডব্লিউবি)। গবেষণায় উঠে এসেছে, বর্তমান এই শিল্পে দেশীয় কোম্পানিগুলো বাজারে ব্যাপকভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমডব্লিউবির গবেষণার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়। গবেষণার ফলাফল এবং দিক-নিদেশনা তুলে ধরেন মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডব্লিউবির সহ-প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান এবং অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হোসাইন।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণার আওতায় আনা পণ্যগুলো ছিল- সুইচ, সকেট, হোল্ডার, মাল্টি-প্লাগ, সার্কিট ব্রেকার, মিটার এবং বিভিন্ন হালকা পণ্য যেমন এলইডি লাক্স, এলইডি টিউব, এলইডি প্যানেল, ব্র্যাকেট এলইডি, জিএলএস, এনার্জি এফিশিয়েন্সি বাল্ব, ইমার্জেন্সি লাইটিং অপশনস।
প্রতিবেদন অনুসারে, এটি একটি বড় এবং অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। বর্তমানে দেশজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার খুচরা বিক্রেতা এবং ২ হাজার ৫০০ উদ্যোক্তাসহ মোট ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। দুই ক্যাটাগরির পণ্যের সম্মিলিত বাজার আকার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ পণ্যের বাজার প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি এবং লাইটিং পণ্যের বাজার প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আশাব্যাঞ্জক তথ্য হলো- উভয় পণ্যের বাজার গত দুই দশক ধরে অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যের গড় প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১০ শতাংশ (প্রায়) এবং ১৩ শতাংশ (প্রায়)। যদি আগামী দিনগুলোতে এই প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকে তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই খাতটি একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বড় খাত হিসাবে আবির্ভূত হবে।
এই বাজারের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, মোট মার্কেট শেয়ারের প্রায় অর্ধেক নন ব্যান্ডেড অর্থাৎ নিম্নমানের নকল ও অনুমোদনবিহীন পণ্য দখল করে আছে। যেহেতু দেশীয় কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধির হার অনেক বেশি, তাই আগামী দিনগুলোতে দেশীয় কোম্পানিগুলো বাজারে আরও বেশি আধিপত্য বিস্তার করবে।
গবেষণায় দেখা যায়, দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সুপারস্টার গ্রুপ উভয় প্রকার পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। গবেষণা অনুসারে, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ব্যান্ডেড পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৯ শতাংশ, ওয়ালটন ১৭ শতাংশ, ক্লিক ১৭ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৯ শতাংশ, ওসাকা শতাংশ এবং ব্লিঙ্ক, এমইপি ও লাক্সারি প্রত্যেকে ৩ শতাংশ করে বাজার দখল করে আছে। অন্যদিকে ব্রান্ডেড লাইটিং পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ক্লিক ১৩ শতাংশ, ওয়ালটন ১২ শতাংশ, ট্রান্সটেক ১০ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৮ শতাংশ এবং ফিলিপস ৭ শতাংশ বাজার দখল করে আছে।
এই শিল্পের অগ্রগতির পেছনে মূলত গত ২৫ বছরে ব্যাপক বিদ্যুতায়ন, অব্যাহত জিডিপি প্রবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান আয়, দ্রুত ও পরিকল্পিত নগরায়ণ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সরকারের গৃহীত সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে।
দুর্দান্ত সম্ভাবনাময় এই শিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য গ্রে-মার্কেটের কার্যক্রম হ্রাসে সরকারের তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। একই সাথে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারের বিদ্যমান ট্যাক্স পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন করতে হবে যাতে কোম্পানিগুলো কম ব্যয়ে পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে পারে। পাশাপাশি এ সমস্ত শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে তোলার জন্য সরকার এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে নিরাপদ ও মানসম্মত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
ঋণের ৫ শতাংশ অর্থ দিলেই মিলবে এক্সিট সুবিধা

ঋণ থেকে মুক্ত হতে এক্সিট (বন্ধ) পলিসিতে বিশাল সুবিধা দিয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন কsরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আওতায় খেলাপি গ্রাহকরা এখন মাত্র ৫ শতাংশ এককালিন পরিশোধ (ডাউন পেমেন্ট) দিয়ে তিন বছরের মধ্যে পুরো ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন গ্রাহক।
গত ৮ জুলাই জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ছিল মোট ঋণের ১০ শতাংশ। বিদ্যমান ঋণস্থিতির ন্যূনতম ৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধ করে এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করবে গ্রাহক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংক এ ধরনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে সর্বোচ্চ ৬০ দিন সুযোগ পাবে। নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট ঋণ কোন অবস্থাতে সেই পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করার সুযোগ পাবেন না গ্রাহক।
এ নিয়ে সোমবার (১০ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অনেক গ্রাহক তাদের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কিংবা বিরূপ আর্থিক অবস্থায় ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, কিংবা খেলাপি হয়ে যায়। নতুন এ সুবিধার মাধ্যমে খেলাপি গ্রাহকরা ব্যাংকগুলোর থেকে এককালীন বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। কিংবা ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের মাধ্যমে সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে একাধিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন।
ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখা ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে এ নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এক্সিটের আওতায় ঋণ আদায় ও সমন্বয়ের কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যাংকগুলো এক্সিটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন মানদণ্ড অনুসরণ করছে। তাই এমন নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এই সার্কুলার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, নতুন এ নীতিমালার আওতায় ছোট-বড় গ্রাহক সুবিধা পাবেন। ব্যাংকের নিয়মিত কিংবা খেলাপি গ্রাহকও এক্সিট পলিসির মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারবেন। নীতিমালাটি দীর্ঘদিন পরিকল্পনাধীন ছিল। যদিও এতোদিন একেক ব্যাংক একেক নিয়ম অনুসরণ করতো। এখন নির্দিষ্ট নীতিমালা করা হয়েছে, যার কারণে নির্দিষ্ট সীমার বেশি সুবিধা কোনো গ্রাহক নিতে পারবেন না।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, নতুন এ নীতিমালা এক্সিট প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। নীতিমালার সঙ্গে মিল রেখে ব্যাংকগুলো এক্সিট সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত হবে। ব্যাংক কর্তৃক প্রণীতব্য নীতিমালায় প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত শর্তাদির চেয়ে কোন নমনীয় শর্ত যুক্ত করা যাবে না। ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এরূপ বিরূপমানে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা কর্তৃক ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের এক্সিট সুবিধা প্রদান করা যাবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান ঋণস্থিতির ন্যূনতম ৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধপূর্বক এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক এক্সিট সুবিধা অনুমোদিত হতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃক তা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মূল ঋণ অনূর্ধ্ব ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত এক্সিট সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অর্পণ করা যাবে। এতোদিনে যা ছিল ১০ লাখ টাকা। তাছাড়া মওকুফযোগ্য সুদ পৃথক ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পর ব্লকড হিসাবে রক্ষিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে গণ্য হবে।
নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধসূচি প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের অধিক হবে না। তবে পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসঙ্গত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরো এক বছর সময় বৃদ্ধি করতে পারবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এলডিসি উত্তরণে আরও ২-৩ বছর সময় প্রয়োজন: ডিসিসিআই

বিদ্যমান বৈশ্বিক ও স্থানীয় অর্থনৈতিক বাস্তবতা, শিল্পখাতে জ্বালানি সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও পণ্য আমদানিতে উচ্চ শুল্ক, উচ্চ সুদহার ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের স্বল্পতা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে দেশের ব্যবসায়ীরা প্রচণ্ড প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ কমপক্ষে ২-৩ বছর পিছিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ।
সোমবার (১০ মার্চ) ডিসিসিআই এবং সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাপোর্ট টু সাসটেইন্যাবল গ্রাজুয়েশন প্রজেক্ট (এসএসজিপি) যৌথভাবে ‘এলডিসি উত্তরণে মসৃণ রূপান্তর কৌশল (এসটিএস) বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইআরডি-এর সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
বেসরকারি খাতের পক্ষে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অস্থিরতা, শিল্পখাতে জ্বালানি সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও পণ্য আমদানিতে উচ্চ শুল্ক, উচ্চ সুদহার ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের স্বল্পতা ইত্যাদি নানা কারণে আমাদের বেসরকারি খাত প্রচণ্ড প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ কমপক্ষে ২-৩ বছর পিছিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশ, যেখানে উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে ৫টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ‘মসৃণ রূপান্তর কৌশল (এসটিএস)’ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ফ্রেমওয়ার্কের বাস্তবায়ন, শক্তিশালী নেতৃত্ব ও অঙ্গীকার, অংশীদারত্ব ও সহমর্মিতা, নীতির সমন্বয়, অর্থায়ন নিশ্চিতকরণে কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তাবয়ন এবং সর্বোপরি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন একান্ত অপরিহার্য।
এর পাশাপাশি বিশেষ করে এসএমই খাতে দক্ষতা উন্নয়ন ও সিঙ্গেল ডিজিটে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের রপ্তানি সম্প্রসারণে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণে অবকাঠামো উন্নয়ন, রাজস্বসহ সংশ্লিষ্ট নীতিমালার সংষ্কারের ওপর তিনি জোরা দেন।
এছাড়াও তিনি তৈরি পোশাক খাতের বাইরে রপ্তানির সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাত যেমন: ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, সেমিকন্ডাক্টর, হালকা-প্রকৌশল এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতে রপ্তানি বাড়াতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তাবায়নের আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য সুবিধা চলে যাওয়ার প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সব স্তরে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের প্রয়োজন নির্ধারণ ও সমাধানের লক্ষ্যে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি প্রণয়ন করা হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, স্থানীয়ভাবে পণ্য উৎপাদনে ব্যয় বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। তবে চলতি হিসাব এবং আর্থিক হিসাবের বর্তমান অবস্থার বেশ উন্নতি হওয়ায় এক্ষেত্রে আশার সঞ্চার হচ্ছে। তথ্যগত বিভ্রান্তি ও ব্যবধান দূর করতে সরকারকে ইউএনএসক্যাপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন কারিগরি সহায়তা করবে।
ইআরডি সচিব জানান, সরকারের সব স্তরের কার্যক্রম ডিজিটাল সেবার আওতায় নিয়ে আসতে দক্ষিণ কোরিয়া আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শুরু থেকেই যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ঘাটতি ছিল। তবে বেসরকারি খাতের মতামতের ভিত্তিতে কতটুকু টেকসই উপায়ে এলডিসি উত্তরণ প্রক্রিয়াকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যাবে, তার দিকে বেশি আলোকপাত করতে হবে।
তিনি তৈরি পোষাক খাতের পণ্যের বহুমুখীকরণের পাশাপাশি প্যাকেজিং খাতের উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার জন্য বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান।
স্বাগত বক্তব্যে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ও এসএসজিপির প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম জাহাঙ্গীর বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে আমাদের বেসরকারি খাত। এই অবস্থায় বেসরকারি খাতের সহায়তার পাশাপাশি এলডিসি উত্তরণে সার্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রণীত এসটিএস বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিত কার্যক্রম একান্ত অপরিহার্য।
এলডিসির স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি বিষয়ে এসএসজিপির কম্পোনেন্ট ম্যানেজার ড. মোস্তফা আবিদ খান বলেন, আমাদের মোট রপ্তানির প্রায় ৭৩ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে। যা এলডিসি পরবর্তী সময়ে আমরা গ্রহণ করতে পারব না। তাছাড়া বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা থেকেও আমরা বঞ্চিত হব।
সেই সঙ্গে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীতার স্বল্পতাও আমাদের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ এবং এর আশু পরিবর্তন আবশ্যক বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি তিনি মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করেন।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় এসএসজিপির কম্পোনেন্ট ম্যানেজার ড. মো. রেজাউল বাসার সিদ্দিকী, ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ও ইটিবিএল হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান রাহমান, আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআইয়ের প্রাক্তন পরিচালক মনোয়ার হোসেন, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএর প্রাক্তন পরিচালক আসিফ আশরাফ এবং সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী অংশ নেন।
এসএসজিপির কম্পোনেন্ট ম্যানেজার ড. মো. রেজাউল বাসার সিদ্দিকী বলেন, এসটিএস বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব। এলডিসি উত্তোরণের সব সূচকে আমরা এখনো বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছি।
তিনি জানান, এসটিএস-এর অ্যাকশন ম্যাট্রিক্স বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের কাজ চলছে। তিনি অ্যাকশন ম্যাট্রিক্স বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের সহযোগিতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর জোরারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত সিএমএসএমই থেকে ‘মধ্যম’ কে আলাদা করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা প্রকৃত নীতি সহায়তার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
এসএমই ডেটাবেইজ প্রণয়নে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার ওপর তিনি জোরারোপ করেন। দেশের ব্যবসায়ীরা এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য এখনও প্রস্তুত নয় উল্লেখ করে সরকারকে এ ব্যাপারে বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনাপূর্বক সিদ্ধান্ত নিতেও জোর দেন তিনি।
আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বলেন, অবকাঠামো খাতে আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি। এছাড়াও ইস্পাত ও সিমেন্ট শিল্প-কারখানায় প্রয়োজনীয় গ্যাসের অভাবে উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে সমগ্র অর্থনীতিতে। এলডিসি গ্রাজুয়েশন সম্পর্কে তিনি বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত দেশের আমদানির চাইতে রপ্তানি বেশি হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এর জন্য প্রস্তুত নই।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ২০২২ সাল থেকে আমরা অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করছি। এর সঙ্গে রয়েছে রপ্তানি আয়ের তথ্য বিভ্রান্তি। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কিছু নীতি আমাদের রপ্তানি খাতের বিরুদ্ধে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ইডিএফ ফান্ডসহ আরও কিছু তহবিল সহায়তা বন্ধ করা হয়েছে এবং ঋণের উচ্চ সুদহার এ অবস্থাকে আরও অসহনীয় করে তুলছে।
বিজিএমইএর প্রাক্তন পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, এ মুহুর্তে আমরা এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য প্রস্তুত নই।
তিনি জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে এখন থেকেই উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, পাট খাতে বহুমুখীকরণের জন্য সরকারের প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা একান্ত প্রয়োজন।
ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মানসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এবং সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঈদে আসবে না ‘নতুন নোট’

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মাঝে নতুন নোট বিনিময় স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঈদ উপলক্ষে ১৯ মার্চ থেকে জনসাধারণের মধ্যে যে নতুন টাকা ছাড়ার কথা ছিল তা স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উপর্যুক্ত বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক জানানো যাচ্ছে যে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর-২০২৫ উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে ফ্রেশ নোট বা নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
এজন্য যেসব ব্যাংকের শাখায় ফ্রেশ নোট গচ্ছিত রয়েছে, সেসব ব্যাংককে তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট দ্বারা সব নগদ লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মার্চের ৮ দিনেই রেমিট্যান্স এলো ৯ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা

চলতি মাস মার্চের প্রথম ৮ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮১ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৯ হাজার ৯৩৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ১০ কোটি ১৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
সোমবার (১০ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, মার্চের প্রথম ৮ দিনে দেশে এসেছে ৮১ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারির একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল যথাক্রমে ৬৭ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ৫৩ কোটি ৫২ লাখ ডলার। এ হিসাবে মার্চে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
মার্চের প্রথম ৮ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৩ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫১ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, ২ থেকে ৮ মার্চ দেশে এসেছে ৭৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। আর ১ মার্চ রেমিট্যান্স এসেছে ৩ কোটি ৮০ হাজার ডলার।
এদিকে, গত ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারি মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল যথাক্রমে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার ও ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার।
আর সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৬৮৮ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার, মে মাসে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার, জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ, জুলাইতে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার, আগস্টে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮ হাজার, নভেম্বরে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার ও ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংক খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে ১২.৯০ শতাংশ

দেশের অন্যান্য পেশার মতো আর্থিক খাতেও নারীরা তাদের প্রতিভার সাক্ষর রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন। দিন দিন কর্মক্ষেত্রে তাদের পদচারণা বাড়ছে। বর্তমানে ব্যাংক খাতের মোট কর্মীর ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। ব্যাংকের মোট কর্মী ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ বাড়লেও নারী কর্মী সংখ্যা বেড়েছে ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলছেন, ভালো পরিবেশ, স্ট্যান্ডার্ড বেতন কাঠামো, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ নানা সুবিধা থাকায় ব্যাংকের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন নারীরা। কমবেশি সব চাকরিতে চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও দিন দিন সেবা খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। তারা কাজও করছেন সুনামের সঙ্গে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ওপর ভর করে ব্যাংক খাতে মোট নারী কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৩ সালে ব্যাংক খাতের মোট নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩৩ হাজার ৩৪৬ জন। ২০২৪ সাল শেষে নারীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৬৪৯ জনে। সেই হিসাবে এক বছরে নারী কর্মী বৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ। আর একই সময়ে ব্যাংকের মোট কর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ৬৯৬ জন থেকে ২ লাখ ১৪ হাজার ২৪৫ জনে।
প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে ব্যাংক খাতের প্রারম্ভিক পর্যায়ে কাজ করছেন, এমন নারীর সংখ্যা ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছেন ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আর ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে নারী কর্মীর অংশগ্রহণ ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ব্যাংকে তিনস্তরে নারী কর্মীর অংশগ্রহণে এ সংখ্যা গত তিন বছরে ধারাবাহিক বেড়েছে। ২০২৪ সালের শেষে ব্যাংকের বোর্ড বা পরিচালনা পর্ষদে নারীর অংশগ্রহণ কিছুটা বেড়ে ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২৩ সালের শেষে এ হার ছিল ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।
কর্মস্থলে নারীর কর্মপরিবেশ তৈরিতে দেশে বর্তমানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১১৯টি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারিভাবে কিছু শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। কর্মজীবী নারী যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজেদের ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্য ১৯৯১ সালে সরকারিভাবে প্রথমবার ডে কেয়ার সেন্টার চালু করা হয়। বেসরকারি মালিকানায় বেশকিছু ডে কেয়ার সেন্টার গড়ে উঠেছে। সব বাধা পেরিয়েই নারীরা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন। অবদান রাখছেন ব্যাংক-আর্থিক খাতসহ সার্বিক উন্নয়নে।