অর্থনীতি
সিআইপি সম্মাননা পেলেন ১৮৪ ব্যবসায়ী

রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৮৪ ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ঢাকার ওয়াটার গার্ডেনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে সিআইপি কার্ড তুলে দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে সিআইপি কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান।
অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতনামা রপ্তানিকারকদের সিআইপি (রপ্তানি ও টেড) কার্ড প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের যে অর্জন, বিশেষ করে ২০০৯ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের যে অর্জন তা সারা পৃথিবীতে স্বীকৃত। বাংলাদেশ এ জায়গায় পৌঁছাবে তা অনেকে বিশ্বাস করতো না। ২০০৯ সালে যেখানে রপ্তানি ছিল ১৫ বিলিয়ন ডলারের একটু বেশি, আজকে সেই রপ্তানি আয় প্রায় চার গুন বেড়ে ৬৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। যার জিডিপির আকার প্রায় ৪৬০ বিলিয়নের ওপরে। এসবগুলো অর্জনই সম্ভব হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। উনি ব্যবসা-বাণিজ্যে লজিস্টিক যে সাপোর্ট দিয়েছেন এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন হয়েছে, সেটি অনস্বীকার্য। আজকে রপ্তানি বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় নিয়ামক শক্তি যোগাযোগ ব্যবস্থা।
তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা রপ্তানি বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আমরা ১৪০ জনকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য সিআইপি প্রদান করেছি। সেই সঙ্গে এ দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই তাদের স্বীকৃত স্বরূপ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সুপারিশ মোতাবেক ৪৪ জনকে সিআইপি ট্রেড হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
দেশের রপ্তানিকারক, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও পারস্পরিক সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার আবহ সৃষ্টি করাই সিআইপি (রপ্তানি) কার্ড প্রদানের উদ্দেশ্য। নীতিমালা অনুযায়ী ২০২২ সালের জন্য ২২টি খাতের মধ্যে ১৮টি পণ্য ও সেবা খাত এবং ইপিজেডভুক্ত ‘সি’ ক্যাটাগরিতে মোট ১৪০ জনকে সিআইপি (রপ্তানি) এবং ৪৪ জন ব্যবসায়ী নেতাকে সিআইপি (ট্রেড) সম্মানে ভূষিত করা হয়।
এ বছর পণ্য ও সেবা সংশ্লিষ্ট ২০টি খাতে মোট ৩২৮টি আবেদন পাওয়া যায়। মেলামাইন ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প খাতে কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি। ন্যূনতম আয়ের নিচে রপ্তানি আয় হওয়ায় চা খাতের একটি আবেদন অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য এক বছর মেয়াদে সিআইপি (রপ্তানি) নির্বাচন করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে নির্বাচিত সিআইপিরা পরবর্তী বছরের সিআইপি (রপ্তানি) ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত সিআইপি (রপ্তানি) মর্যাদায় ভূষিত থাকবেন।
২০২২ সালের পণ্য বা সেবার খাতওয়ারি মনোনীত সিআইপিদের (রপ্তানি ও ট্রেড) মধ্যে কাঁচাপাটে দুই জন, পাটজাত পণ্যে চারজন, চামড়াজাত দ্রব্যে ছয়জন, হিমায়িত খাদ্যে চারজন, তৈরি পোশাকে (ওভেন) ১৮ জন মনোনীত হয়েছেন। এছাড়া কৃষিজাত দ্রব্যে পাঁচজন, অ্যাগ্রোপ্রসেসিং এ পাঁচজন, হালকা প্রকৌশলী পণ্যে চারজন, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যে তিনজন, হস্তশিল্পজাত পণ্যে চারজন, স্পেশালাইজড বা হোমটেক্সটাইল পণ্যে চারজন, তৈরি পোশাকে (নিটওয়্যার) ৩৪ জন, সিরামিক পণ্যে একজন, প্লাস্টিকজাত পণ্যে চারজন, টেক্সটাইলে (ফেব্রিক্স) সাতজন, কম্পিউটার সফটওয়্যারে দুইজন, আসবাবে একজন, বিবিধ পণ্যে ২৭ জন ও ইপিজেডভুক্ত ‘সি’ ক্যাটাগরিতে পাঁচজন সিআইপি হয়েছেন। একইসঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে সিআইপি (ট্রেড ক্যাটাগরি) মনোনীত হয়েছেন ৪৪ জন।
সিআইপি (রপ্তানি)-২০২২ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিআইপি (রপ্তানি) নীতিমালা-২০১৩ অনুসরণ করা হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালকের নেতৃত্বে প্রাথমিক বাছাই কমিটি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (রপ্তানি) নেতৃত্বে চূড়ান্ত বাছাই/নির্বাচন কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি আবেদনপত্র মূল্যায়ন করা হয়। আবেদনপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি আয় এবং নতুন বাজারে প্রবেশ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা হয়। এছাড়া রপ্তানিকারকের বাণিজ্য বিরোধের সংশ্লিষ্টতা, আয়কর, ভ্যাট, শুল্ক এবং ঋণ গ্রহণ/পরিশোধ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয়াদিও যাচাই করা হয়। খেলাপি ঘোষিত আবেদনকারীদের আবেদন চূড়ান্ত মূল্যায়নে বিবেচনা করা হয় না।
সিআইপি (রপ্তানি)-২০২২ হিসেবে নির্বাচিত ব্যবসায়ীরা সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশ পাস ও গাড়ির স্টিকার প্রাপ্তি, জাতীয় অনুষ্ঠান ও মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ প্রাপ্তি, ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, ব্যবসায়িক কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ‘লেটার অফ ইন্ট্রোডাকশন’ প্রাপ্তি, নির্বাচিত সিআইপি তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন প্রাপ্তির অগ্রাধিকার এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহার সুবিধা পাবেন।
সরকারিভাবে প্রদত্ত সিআইপি কার্ডধারী ব্যক্তি বিদেশি ক্রেতার কাছে আস্থা ও সুনামের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরতে পারেন, যা তার ব্যবসায়িক সম্পর্ককে সুদৃঢ়করণের পাশাপাশি দেশের সার্বিক রপ্তানি প্রসারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য
আসন্ন বাজেটে কর বাড়ানো হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় বাজেটে কর যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করা হবে। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে রাজস্ব আদায় বাড়ানো এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) প্রাক-বাজেট আলোচনায় বক্তৃতা করতে গিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের অন্যতম নিম্নতম, যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। কর কমালে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতি দেখা দেবে, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বহন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য রাজস্ব অপরিহার্য। আমাদের উপর ব্যাপক চাপ রয়েছে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর, না পারলে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিসিসিআই প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা। আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবিদা মুস্তাফা, বাংলাদেশ ফার্নিচার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মকসুদুর রহমান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সালেহ আহমেদ সোলাইমান, সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা।
এনবিআর চেয়ারম্যান উদাহরণ দিয়ে বলেন, একটি দেশ একটি পরিবারের মতো—যারা বেশি আয় করে, তারা বেশি অবদান রাখে, আর যারা আয় করে না, তারা পকেট মানি পায়। তেমনি আমরা কর সংগ্রহ করি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা নিশ্চিত করি।
তিনি জানান, দেশে নিবন্ধিত ১ কোটি ৪৫ লাখ করদাতার মধ্যে প্রকৃত কর প্রদান করেন মাত্র ৪৫ লাখ, যার মধ্যে ৩০ লাখ করদাতা শূন্য রিটার্নধারী। তবে তিনি বলেন, কর ব্যবস্থায় ডিজিটাল অগ্রগতি হচ্ছে—গত বছর অনলাইনে ৪ লাখ রিটার্ন জমা পড়লেও এবার তা ১৫ লাখে পৌঁছেছে।
ভ্যাট কমানোর প্রস্তাবের জবাবে আবদুর রহমান খান বলেন, আমরা একক হারে ভ্যাট কমাতে প্রস্তুত, তবে সব পণ্যে একই হার হতে হবে। ব্যবসায়ীদেরও প্রকৃত ভ্যাট প্রদানের ব্যাপারে সৎ হতে হবে। তিনি আরও জানান, এনবিআর প্রতি মাসের পরিবর্তে ত্রৈমাসিক ভ্যাট নিরীক্ষা চালু করার চিন্তা করছে, এবং ভ্যাট ব্যবস্থাকে আরও স্বয়ংক্রিয় করতে কাজ করছে।
বন্ড সুবিধার অপব্যবহার নিয়েও কঠোর মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য করমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুবিধা নেওয়া হলেও তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। স্বর্ণের ক্ষেত্রে তো আমদানি রেকর্ডই নেই, অথচ বাজারে টনকে টন স্বর্ণ পাওয়া যায়।
রিকন্ডিশন গাড়ির বাজারে আন্ডার-ইনভয়েসিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ১৫ লাখ টাকায় আমদানিকৃত গাড়ি ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে—এটা দেখেই বোঝা যায় আন্ডার-ইনভয়েসিং হয়েছে। এজন্যই ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে বাধ্য হচ্ছি।
জাহাজভাঙা শিল্পে আমদানি শুল্ক নিয়েও সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, দেখতে অযৌক্তিক মনে হলেও, এসব শুল্ক না থাকলে জাহাজগুলোতে মূল ওজনের চেয়ে বেশি তেল আসবে—এটা সুবিধার অপব্যবহারের উদাহরণ।
ব্যবসায়ী নেতাদের বিভিন্ন দাবির প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বেশিরভাগ প্রস্তাব যুক্তিযুক্তভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং বাজেটে প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা করি।
এসময় খলিলুর রহমান মূলধনী যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক কমানোর দাবি জানান। বলেন, গত বছর ক্রেনের মতো যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৭ শতাংশ করা হয়েছে, যা আবার কমানো জরুরি।
সিসিসিআই প্রশাসক আনোয়ার পাশা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাজেটের জন্য প্রায় ১৬টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছিল কর ও ভ্যাট ব্যবস্থাকে সহজীকরণ, বন্ড ব্যবহারে নজরদারি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসে কর মাফ, আগাম আয়কর (এআইটি) দ্রুত ফেরত, ও ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করার প্রস্তাব ইত্যাদি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের ইতিহাসের সব রেকর্ড ভাঙলো স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৪০৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ২৭ টাকা। দেশের বাজারে এর আগে কখনো সোনার এত দাম হয়নি।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার (১১ এপ্রিল) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এতদিন ভালো মানের এক ভরি সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৭২ টাকা। ২৯ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই দামে সোনা বিক্রি করা হয়। এই রেকর্ড দামের পর ৯ এপ্রিল দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়। তবে দুই দিনের মাথায় আবার সোনার দাম বাড়ানো হলো। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠলো সোনা।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী সময়ে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪০৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ২৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ২৯৮ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৫১ হাজার ৭৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৯৭১ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৩০ হাজার ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৬৮০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ৮ এপ্রিল সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ২৪৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৫৬ হাজার ৬২৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ২০২ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ২৬ টাকা কমিয়ে এক লাখ ২৮ হাজার ১৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৫ হাজার ৬৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অতিরিক্ত কর কমিশনার মারুফ সাময়িক বরখাস্ত

দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ এনে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালায় অতিরিক্ত কর কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) শাহ মোহাম্মদ মারুফকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সই করা এক আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আদেশে বলা হয়েছে, বগুড়া কর অঞ্চলের অতিরিক্ত কর কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) শাহ মোহাম্মদ মারুফের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(ঘ) অনুযায়ী দুর্নীতি পরায়নতার অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেহেতু সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ১২(১) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা প্রয়োজন ও সমীচীন। তাই শাহ মোহাম্মদ মারুফকে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
প্রসঙ্গত, শাহ মোহাম্মদ মারুফ ২০১০ সালে ২৮তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। অভিযোগ রয়েছে, তার আয়কর নথিতে মোট সম্পদের পরিমাণ চার কোটি টাকার বেশি। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন দেশের অভিজাত এলাকা বারিধারা কূটনৈতিক জোনের ১২ কোটি টাকা দামের ফ্ল্যাটে। স্ত্রীর নামে তিনি ফ্ল্যাটটি কিনলেও এখনো নিবন্ধন করেননি। নিজ ও স্ত্রীর ব্যবহারের জন্য আছে আলাদা বিলাসবহুল গাড়ি। নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন বলে কর বিভাগ থেকে সত্যতা পাওয়া গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
লজিস্টিকস খাতের সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতায় আগ্রহী সিঙ্গাপুর

বাংলাদেশের লজিস্টিকস খাতের সক্ষমতা বাড়িয়ে ব্যবসাপরিচালন ব্যয় কমাতে সহযোগিতায় সিঙ্গাপুর অত্যন্ত আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার ডেরেক লো। তিনি বলেন, দক্ষ বন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সিঙ্গাপুর বৈশ্বিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ডিসিসিআই গুলশান সেন্টারে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
এসময় ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণায় বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য স্বস্তির বিষয়। তবে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হবে, বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ এবং সেদেশের উদ্যোক্তারা এরই মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। তিনি জানান, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, বিশেষকরে আধুনিক ও দক্ষ বন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সিঙ্গাপুর বৈশ্বিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে এবং বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো, লজিস্টিকস, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগে সিঙ্গাপুরের উদ্যোক্তাদের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈশ্বিক বাণিজ্যে দেশের এসএমইখাতের উদ্যোক্তাদের পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণে দক্ষতা উন্নয়নে সিঙ্গাপুরের সহযোগিতার আহ্বান জানান তাসকীন আহমেদ। বাংলাদেশের পাট ও কৃষি খাতের আধুনিকায়নে সিঙ্গাপুরের প্রযুক্তিগত সহায়তার ওপর জোরারোপ করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লো বলেন, শিল্পখাতে পণ্য উৎপাদন ও লজিস্টিকস খাতে ব্যয় কমানোর মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় অনেকাংশে কমানো সম্ভব। তিনি বাংলাদেশের বন্দরগুলোর দক্ষ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের ব্যবসাপরিচালন ব্যয় অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব, যার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়বে।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশের রাজস্ব খাতের সংস্কার ও অটোমেশনের ওপর জোরারোপ করেন। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে তিনি শিল্পখাতে ইএসজি কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়ানোসহ সার্বিকভাবে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
হাইকমিশনার জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সিঙ্গাপুর নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত হওয়া ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
এসময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মানসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিশেল লি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার, ৪ পণ্যবাহী ট্রাক ফেরত পাঠালো ভারত

ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্য বোঝাই ৪টি ট্রাক ফেরত এসেছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে বেনাপোল বন্দর থেকে ট্রাকগুলো ঢাকায় ফেরত আসে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে যাওয়ার সুবিধা বাতিল করে দেশটি। এতে বুধবার থেকে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্রুত ও স্বল্প খরচে বাণিজ্য করার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল বন্দর থেকে ফেরত যাওয়া পণ্যের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেড।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের জন্য ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় একটি চিঠি ইস্যু করেছে কাস্টমসে। এই চিঠির আলোকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার পণ্য বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহ-সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস জানান, ভারত সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত দুই দেশের বাণিজ্য ও বন্ধুত্ব সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হবে। আমরা আশা রাখছি, ভারত সরকার এ সিদ্ধান্ত পরিহার করে বন্ধুত্ব সম্পর্ক ধরে রাখবেন।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) সজিব নাজির জানান, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় পেট্রাপোল কাস্টমস তৃতীয় দেশের পণ্যে কার্পাস ইস্যু করেনি। এতে ওই সব পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে ঢুকতে পারছে না। তবে ভারতের অভ্যন্তরে রপ্তানির উদ্দেশ্যে আসা অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।