আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে ওজন কমানোর ওষুধের চাহিদা বাড়লো ৫ গুণ

যুক্তরাষ্ট্রে ওজন কমানোর ওষুধের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশেষ করে নভো নরডিস্কের উইগোভি ট্রায়ালে ইতিবাচক ফল পাওয়ার পর এ প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেই (জানুয়ারি-মার্চ) এ ওষুধের জন্য ক্রয়াদেশের হার পাঁচ গুণ বেড়েছে।
ওষুধ উৎপাদনকারী নভো নরডিস্কের তথ্যানুযায়ী, এক সপ্তাহে আবেদনের পরিমাণ ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক স্থূলকায় এবং ১০ শতাংশের বেশি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। আর এরাই কোম্পানির ব্যবসা বিস্তারের ক্ষেত্রে বড় প্রভাবক। কিন্তু ওষুধের উচ্চ মূল্য যুক্তরাষ্ট্রে অনেক স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানিকে উসকে দিয়েছে। এর মধ্যে প্রবীণদের জন্য সরকারি পরিকল্পনা মেডিকেয়ারেও প্রবেশাধিকার সীমিত করে দেয়া হয়।
গত মাসে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে উইগোভি ওষুধ বিক্রিতে মাসিক ১ হাজার ৩৪৯ ডলার নির্ধারণ করেছে নভো নরডিস্ক। কিন্তু যুক্তরাজ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪০ পাউন্ডে এটি কেনা সম্ভব। নভো নরডিস্কের জর্জেনসন স্বীকার করেছেন যে চিকিৎসার চাহিদা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ তৈরি করছে।
এখন পর্যন্ত নভো নরডিস্কের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ সরবরাহ করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন কারখানা স্থাপনে বিনিয়োগও করেছে কোম্পানিটি।
এমআই

আন্তর্জাতিক
আয়া সোফিয়ায় দর্শনার্থীদের জন্য এআই নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু

পনেরো শতাব্দীর ইতিহাসের সাক্ষী হায়া সোফিয়া আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত। এর মাধ্যমে দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতা যেমন সমৃদ্ধ হচ্ছে, তেমনি নিশ্চিত হচ্ছে পবিত্রতা ও ঐতিহাসিক স্বাতন্ত্র্যের সুরক্ষা। ইস্তাম্বুল বিজয়ের পর হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়।
১৯৩৪ সালে তুর্কি মন্ত্রিসভার আদেশে এটি জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়। এরপর দীর্ঘ ৮৬ বছর পর, ২০২০ সালের ১০ জুলাই রাষ্ট্রপতির আদেশে এটি পুনরায় মসজিদ হিসেবে ইবাদতের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই স্থাপত্য, ইতিহাস এবং নিরাপত্তা রক্ষায় প্রযুক্তিনির্ভর নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
তুরস্কের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ভাক্ফ অধিদপ্তর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের জন্য নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং মসজিদের কাঠামোগত অখণ্ডতা বজায় রাখতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ইস্তাম্বুল ভাক্ফ প্রথম অঞ্চলের উপপরিচালক লেভেন্ট চেতিন জানান, “হায়া সোফিয়াকে ইবাদতের জন্য পুনরায় চালু করা হয়েছে পাঁচ বছর আগে। বর্তমানে এখানে প্রায় ৩০০ জন কর্মী নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা ও দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনায় কাজ করছেন।”
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া পূর্ণাঙ্গ দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনার আওতায় গ্যালারি ফ্লোর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও স্থাপত্য, মোজাইক ও অন্যান্য ঐতিহাসিক নিদর্শন রক্ষায় উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে। দর্শনার্থী ও নামাজিদের প্রবেশপথ পৃথক হওয়ায় আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না।
চেতিন যোগ করেন, “এখন মসজিদে প্রবেশ ও প্রস্থান আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে। দর্শনার্থীরাও গ্যালারির ঐতিহাসিক শিল্পকর্মগুলো আরও নিবিড়ভাবে উপভোগ করতে পারছেন।
২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি চালু হওয়া নতুন অডিও গাইড ব্যবস্থায় ২৩টি ভাষায় ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মোজাইক, উসমানীয় পাঠাগার ও মুয়াজ্জিন মিম্বারসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদান সম্পর্কে দর্শনার্থীরা নিজেদের মোবাইল হেডফোন বা যেকোনো হেডফোনে তথ্য শুনতে পারছেন।”
এর ফলে দর্শনার্থীরা নিজেদের মাতৃভাষায় বিস্তারিত ও মানসম্মত তথ্য পেয়ে যেমন উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি মুসল্লিরাও পাচ্ছেন এক মনোযোগী ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইবাদতের সুযোগ।
চেতিনের ভাষায়, “দর্শনার্থীদের প্রতিক্রিয়াও অত্যন্ত ইতিবাচক। ভিড় কমে যাওয়ায় মসজিদের পরিবেশ আরও প্রশান্ত ও সম্মানজনক মনে হয়।” নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যুক্ত করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সমর্থিত নতুন প্রযুক্তি।
তিনি জানান, “এই সিস্টেম সম্ভাব্য হুমকি শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্কবার্তা দিতে পারে এবং নিরাপত্তাকর্মীদের তাৎক্ষণিক সহায়তা করে। ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, ফলে আগেভাগেই যেকোনো ঝুঁকি শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “কেউ যদি মসজিদের নিষিদ্ধ অংশে প্রবেশের চেষ্টা করেন, তাহলে সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের স্ক্রিনে বার্তা পাঠায়। এতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়, যা মসজিদের গঠন রক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।” পুনরুদ্ধার কার্যক্রম সম্পর্কেও বিস্তারিত তুলে ধরেন চেতিন।
তিনি জানান, “আমরা ইতোমধ্যে সমাধি, সিবিয়ান মক্তব (উসমানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়) এবং মুবাককিথানা (সময় পরিমাপক কক্ষ) পুনরুদ্ধার করেছি।” ডিজিটাল টুইন তৈরির অংশ হিসেবে বৈজ্ঞানিক পরিষদ মসজিদের মূল গম্বুজ ও পার্শ্ব গম্বুজের কাঠামোগত স্থিতিশীলতা নিয়ে হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তাঁর ভাষায়, “গম্বুজে এবং পার্শ্ব গম্বুজে কাজ শুরু হয়েছে। সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদের মিনার পুনরুদ্ধার প্রকল্প প্রায় শেষ পর্যায়ে। ধাপে ধাপে আমাদের সব পুনরুদ্ধার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।”
কাফি
আন্তর্জাতিক
অর্ধশত আরোহী নিয়ে রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, সবাই নিহত

রাশিয়ায় নিখোঁজ হয়ে যাওয়া আন-২৪ মডেলের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ৪৯ জন আরোহী সবাই প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারার এএন-২৪ বিমানটি চীন সীমান্তবর্তী আমুর অঞ্চলের শহর টাইন্ডায় যাওয়ার পথে রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে বিমানটি নিখোঁজ বলে জানানো হলেও রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, আমুর অঞ্চলে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
রাশিয়ার তাস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, অবতরণের সময় বিমানের ক্রুদের ভুল এবং দৃশ্যমানতার অভাবকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আঞ্চলিক গভর্নর ভ্যাসিলি অরলভ জানিয়েছেন, বিমানটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। যদিও জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে আরোহীর সংখ্যা ছিল ৪০ জন।
আন্তর্জাতিক
‘ভিসা ক্যাসকেড’ পদ্ধতি চালু করেছে ইইউ, সহজে মিলবে শেনজেন ভিসা

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্প্রতি ‘ভিসা ক্যাসকেড’ পদ্ধতি চালু করেছে, যা ইউরোপ ভ্রমণকারীদের জন্য এক দারুণ খবর। এই নতুন ব্যবস্থার অধীনে, যারা পূর্বে তাদের শেনজেন ভিসাগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করেছেন, তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ও একাধিকবার প্রবেশযোগ্য (মাল্টিপল-এন্ট্রি) শেনজেন ভিসা পাওয়া এখন অনেক সহজ হবে।
নতুন নিয়মের বিস্তারিত
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ বুধবার (২৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন নিয়মটি বেশ সরল। গত তিন বছরে যারা দুটি স্বল্পমেয়াদী শেনজেন ভিসা সফলভাবে ব্যবহার করে ইউরোপ ভ্রমণ করেছেন, তারা এখন দুই বছরের মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই দুই বছরের ভিসা যদি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়, তাহলে পরবর্তী ধাপে পাঁচ বছরের মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করার সুযোগ মিলবে। তবে, এই সুবিধা পেতে হলে আবেদনকারীর পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে।
যেসব দেশের নাগরিকরা সুযোগ পাচ্ছেন
প্রাথমিকভাবে, ভারত, তুরস্ক এবং ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকরা এই নতুন ‘ভিসা ক্যাসকেড’ সুবিধার আওতায় এসেছেন। এ দেশগুলোর নাগরিকরা সহজেই ভিসা পাবেন।
এই পদ্ধতি কেন সুবিধাজনক?
প্রতিবার শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করা এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া ছিল বেশ সময়সাপেক্ষ ও কষ্টকর। যাদের পূর্বের ভিসা সঠিকভাবে ব্যবহারের প্রমাণ আছে, আর্থিক সামর্থ্য ও ভ্রমণ বিমা আছে, তারা প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে কয়েক বছরের জন্য ইউরোপে বারবার প্রবেশের সুযোগ পাবেন। এতে তাদের সময়, অর্থ এবং ভিসা আবেদনের ঝামেলা অনেকটাই কমে যাবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
যদিও এই সুবিধা এখনো সব দেশের নাগরিকদের জন্য চালু হয়নি, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও দেশকে এই সুবিধার আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে।
সূত্র: গালফ নিউজ
আন্তর্জাতিক
জিরো ওয়েস্ট প্রকল্প এগিয়ে চলছে, তুরস্কজুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে ডিপোজিট ব্যবস্থা

তুরস্ক তার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রচেষ্টায় একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে, কারণ ডিপোজিট ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা (ডিএমএস) এই বছরের শেষ নাগাদ জাতীয় পর্যায়ে পুরোপুরি বিস্তৃত হওয়ার পথে রয়েছে। পরিবেশ, নগরায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো বর্জ্যকে কেবল আবর্জনা হিসেবে না দেখে একে মূল্যবান কাঁচামালে রূপান্তর করা, যা পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করবে।
ডিপোজিট ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, যা প্রথম নারী এমিনে এরদোয়ানের উদ্যোগে গৃহীত জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়িত জিরো ওয়েস্ট প্রকল্পের সর্বশেষ ধাপ, তা ইতিমধ্যে সাকারিয়া প্রদেশে সফলভাবে পাইলট হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এই প্রাথমিক পর্যায়ের পর, মন্ত্রণালয় আরও ছয়টি প্রদেশে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে: এরজুরুম, মারসিন, গাজিয়ানতেপ, সামসুন, ইজমির ও কনিয়া। এই শহরগুলোতে রিটার্ন মেশিন স্থাপন কাজ চলছে, এবং গভর্নর ও মেয়ররা সমন্বয় কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ, এই ব্যবস্থা তুরস্কের সকল ৮১টি প্রদেশ ও জেলায় চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রায় ৪ হাজার ৫০০টি স্বয়ংক্রিয় রিটার্ন মেশিন নিরাপদ ও সহজে প্রবেশযোগ্য স্থানে যেমন সরকারি ভবন, পৌরসভা ও চেইন দোকানগুলোতে স্থাপন করা হবে, যাতে সহজে বর্জ্য সংগ্রহ করা যায়।
নাগরিকরা “ডিপোজিট প্যাকেজিং রিটার্নস (ডিওএ)” নামক মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে কিউআর কোড স্ক্যান করতে পারবেন এবং উপযুক্ত প্যাকেজিং সামগ্রী মেশিনে ফেলে দিতে পারবেন। প্রতিটি আইটেমের বিনিময়ে তারা অর্থ উপার্জন করবেন, যা তাদের ইলেকট্রনিক ওয়ালেটে জমা হবে। এই সহজ প্রক্রিয়াটি জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে এবং দেশের ক্রমবর্ধমান বৃত্তাকার অর্থনীতিকে সহায়তা করে।
মন্ত্রণালয় একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করেছে, যা রিয়েল-টাইমে মেশিনের পূর্ণতা পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে দ্রুত টিম পাঠিয়ে মেশিন খালি করে, যাতে নিরবিচারে সেবা চালু রাখা যায়।
ডিপোজিট ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার প্রত্যাশিত প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৬ সালের মধ্যে, তুরস্ক প্রত্যাশা করছে যে প্রতি বছর আনুমানিক ২৫ বিলিয়ন বর্জ্য বোতল পুনর্ব্যবহার করে ৫২০ মিলিয়ন ইউরো (৬০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আয় করবে। এই কাঁচামাল প্রবাহ বিভিন্ন খাতে-যেমন টেক্সটাইল ও অটোমোটিভ শিল্পে — আমদানি নির্ভরতা কমাবে, এবং তুরস্কের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও শক্তিশালী করবে।
এছাড়াও, এই তহবিলগুলো নতুন সরকারি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করবে। সরকার সারা দেশে হাজার ভূমিকম্প-প্রতিরোধী বাড়ি এবং ১৫০টির বেশি নতুন স্কুল নির্মাণে সম্পদ বরাদ্দ করার পরিকল্পনা করছে, যা দেশের অবকাঠামো এবং জনকল্যাণকে উন্নত করবে।
এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পটি তুরস্কের টেকসই উন্নয়ন ও বৃত্তাকার অর্থনীতির নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে, যেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে একটি চ্যালেঞ্জ থেকে রূপান্তরিত করা হচ্ছে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সুযোগে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে গোপনে সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছেন আ.লীগ নেতারা

দেশে শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দেশ থেকে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের তদন্ত করছে অন্তর্বর্তী সরকার। ধারণা করা হয়, এর একটি বড় অংশই পাচার হয়েছে যুক্তরাজ্যে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এর শীর্ষ নেতারা এবং হাসিনার আস্থাভাজন বিভিন্ন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীই এই সম্পদ পাচারের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
তবে হাসিনার সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সাবেক ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের বিলাসবহুল সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রি ও পুনঃঋণায়নের (রিফাইন্যান্স) প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ব্রিটিশ প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এবং আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর এক যৌথ অনুসন্ধানে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি লেনদেনের তৎপরতা বাড়তে শুরু করে। বিশেষ করে বিলাসবহুল এলাকাগুলোর বাড়িঘর ও অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে শুরু হয় অস্বাভাবিক রকমের বিক্রয় ও ফ্রিজিং কার্যক্রম।
২০২৪ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) প্রায় ১ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট জব্দ করে, যার মালিকানা ছিল হাসিনার সাবেক বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের। এর কিছুদিন পরই সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে থাকা প্রায় ২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকার ৩০০টির বেশি সম্পত্তি জব্দ করা হয়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধু গত এক বছরেই যুক্তরাজ্যের জমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে অন্তত ২০টি উল্লেখযোগ্য সম্পত্তি লেনদেনের আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহানের নামে নাইটসব্রিজে চারতলা বাড়ি, যেটি প্রথমে হস্তান্তর, পরে বিক্রি করা হয় এক গোপন হিসাবরক্ষকের মালিকানাধীন কোম্পানির কাছে (মূল্য ৭.৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড)।
তার ভাই শাফিয়াত সোবহান সারে’র ভার্জিনিয়া ওয়াটারে ৮ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি প্রাসাদোপম ম্যানসনের মালিকানা পরিবর্তন করেন।
সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান ২০২৪ সালের জুলাইয়ে রিজেন্টস পার্কে অবস্থিত ১০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের টাউনহাউস বিক্রি করেন এবং আরও তিনটি সম্পত্তির জন্য ‘রিফাইন্যান্স’ আবেদন করেন।
এদিকে, সালমান এফ রহমানের পরিবারের মালিকানাধীন লন্ডনের গ্রোসভেনর স্কয়ারে ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ইতোমধ্যে এনসিএ কর্তৃক ফ্রিজ করা হয়েছে।
তবে এই পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে—বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হচ্ছে এবং তারা যেকোনো তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ যেন এসব সম্পত্তি বিক্রি, স্থানান্তর বা বন্ধক রাখতে না দেওয়া হয়। গভর্নর মনসুর বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত, অনেকেই ইতোমধ্যে সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছেন। তাই কঠোরভাবে এসব সম্পদ ফ্রিজ করা অত্যন্ত জরুরি।’
ব্রিটেনের সংসদীয় দুর্নীতিবিষয়ক অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের প্রধান জো পাওয়েল বলেন, ‘ইতিহাস বলছে—যদি যথাসময়ে সম্পদ জব্দ করা না হয়, সেগুলো মুহূর্তেই গায়েব হয়ে যায়। লন্ডন যেন দুর্নীতিপরায়ণ ধনীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
তদন্তে আরও প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এই বিপুল সম্পত্তির লেনদেনে যুক্তরাজ্যের আইনজীবী ও পরামর্শদাতারা যথাযথ যাচাইবাছাই করেছেন কি না? তাদের ভূমিকা ও সতর্কতা নিয়ে ইতোমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অনুসন্ধান কেবল বাংলাদেশে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচন করছে না, বরং আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের নীতি ও দায়িত্ববোধকেও এক কঠিন পরীক্ষার মুখে দাঁড় করিয়েছে।