অর্থনীতি
২২ বছরে বিশ্বে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৫০ শতাংশ: আইওএম
গত ২২ বছরে বিশ্বে প্রবাসী আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩ হাজার কোটি টাকা। এর ৬৫ হাজার কোটি টাকা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো পেয়েছে বলে ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশান অব মাইগ্রেশনের (আইওএম) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক অভিবাসী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা আইওএম।
বার্ষিক এই প্রতিবেদনে উঠে এসছে বিশ্বের সব প্রবাসীর তথ্য। ব্যক্তিগত প্রভাব ছড়িয়ে প্রবাসী আয়ের এ প্রবৃদ্ধি রাষ্ট্রীয়ভাবেও সুফল বয়ে আনছে বলেই মনে করে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিশ্বে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৫০ শতাংশ। যার প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৩ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩ হাজার ১০০ কোটি টাকায়। যার মধ্যে ৬৫ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো।
এছাড়া সারা বিশ্বে প্রায় ২৮ কোটি অভিবাসী রয়েছে। কেবল ২০২২ সালেই প্রায় ১২ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় এবং যুদ্ধ সংঘাতের মতো বিষয় জড়িত। আর নিজ দেশেই অন্তঃদ্বন্দ্ব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন সাড়ে ৭ কোটি মানুষ।
পাশাপাশি সারাবিশ্বের জনসংখ্যার সাড়ে তিন শতাংশ মানুষ অভিবাসী হিসেবে কাজ করে। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৪৮ শতাংশ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণ হিসেবে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, অভিবাসী বিষয়ে বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীণ প্রেক্ষাপটের জন্য যে অঙ্গীকার করেছে, কেবল তা মেনেই বসে থাকবে না; বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিবাসন এবং উন্নয়ন সম্পর্কিত যেসব নতুন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলো নিয়েও কাজ করবে।
প্রতিবেদনটি মানব উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক সমৃদ্ধির চালক হিসেবে অভিবাসনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টাকে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি ই পোপ।
অভিবাসনে বিশ্বের শীর্ষ ৬-এ থাকা বাংলাদেশে এবারই প্রথম কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশের আয়োজন করে আইওএম।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনাও কোটিপতি
আলোচিত এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের গৃহকর্মী মর্জিনা আক্তারের ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার টাকার সন্ধান মিলেছে। এসব টাকার মধ্যে ইসলামী ব্যাংকে ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা করে মোট ২২টি ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) রয়েছে। যার মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১০ হাজার টাকা। আর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবে আছে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের সম্পদের হিসাব খুঁজতে গিয়ে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। একটি সরকারি সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, মর্জিনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর তথ্য পেতে এই অনুসন্ধানটি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মর্জিনার আরো কিছু অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে, যেখানে তার অর্থের সন্ধান মিলতে পারে।
নথি অনুযায়ী, মর্জিনার নামে চট্টগ্রামের দুটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে খোলা একটি অ্যাকাউন্টে ২২টি এফডি থাকার তথ্য রয়েছে। চট্টগ্রামের ইসলামী ব্যাংক পাঁচলাইশ শাখায় মর্জিনা আক্তারের নামে ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা করে ২২টি ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে, যা মোট ১ কোটি ১০ হাজার টাকার সমান। এছাড়া, প্রবর্তক মোড়ের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক শাখায় তার নামে রয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে, এই গৃহকর্মীর দুটি ব্যাংকে মোট ২ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা রয়েছে।
দুটি অ্যাকাউন্টে এত অর্থ জমা থাকা বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
মর্জিনা আক্তারের ব্যাংক হিসাবে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, তার স্বামী সাদ্দাম হোসেন জানিয়েছেন, এস আলমের মালিকানাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন মর্জিনা। তিনি বলেন, এই টাকার মধ্যে বেশিরভাগই ইসলামী ব্যাংকের যাকাত ফান্ডের এবং আমাদের সঞ্চিত অর্থ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখলে মালিক-শ্রমিক দুই পক্ষেরই ক্ষতি: বিজিএমইএ
ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখলে মালিকেরও লস (ক্ষতি), শ্রমিকেরও লস। আমাদের কারখানা চালু রেখে যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের দিকে এগোতে হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া বিকেএমইএর ভবনে সংগঠনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় একথা বলেন তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সারা পৃথিবীতে বর্তমান সরকার প্রধান গ্রহণযোগ্য। তিনি সারা বিশ্বে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিকে প্রোমোট করতে পারবেন। আমরা যখন তার সাথে দেখা করতে গিয়েছি, তিনি বলেছেন তোমরা কাজ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাও। আমি বাংলাদেশের গার্মেন্টসের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে সারাবিশ্বে কাজ করবো।
তিনি বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশের মানুষের জন্য সুযোগ এসেছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ অনেক বড় বড় ব্র্যান্ডের সাথে ড. ইউনুসের সুসম্পর্ক। অনেক শর্ট ডেলিভারি আমরা এবার মিস করেছি। অনেক বায়ার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকায় তাদের অর্ডার সরিয়ে নিয়েছে। আরও দুই-তিনটি বড় ফ্যাক্টরি ইতোমধ্যে অনেকদিন ধরে বন্ধ। সেই ফ্যাক্টরিগুলোর শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ হাজার। অনেক মালিক দেখছে, লাভ করছে এবং ব্যয় বাড়ছে। এমন অবস্থায় যখন ব্যয় আয়ের চেয়ে বেশি হয়ে যায় তখন আর ফ্যাক্টরি চালানো সম্ভব হয় না। এই সংকটের সময় আমরা যদি একসাথে কাজ না করি ও বায়ারদের একটি মেসেজ দিতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতে আরও সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
খন্দকার রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, সেনাবাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করছে। আমরা মনে করি একটি ফ্যাক্টরিকে শ্রম আইন অনুযায়ী চলতে হবে। আমরা উভয় পক্ষ যেন শ্রম আইন অনুযায়ী চলি সেটাই আমাদের কামনা।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, সেনাবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ জেলার কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আতিক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুজ্জামান প্রমুখ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চার শর্তে বাংলাদেশকে ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংক থেকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এই ঋণ পেতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে মানতে হবে চার শর্ত। বিশ্বব্যাংকের ঋণের মধ্যে ৭৫ কোটি ডলার নীতি সংস্কারে ব্যয় হবে আর বাকি ২৫ কোটি ডলার দেওয়া হবে বিনিয়োগ ঋণ ও গ্যারান্টি–সুবিধা হিসেবে ব্যবহারের জন্য। আগামী ডিসেম্বরে এই সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এ সময় সংস্থাটির কর্মকর্তারা এই শর্ত বেঁধে দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।
এ ছাড়া গতকাল এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) একটি প্রতিনিধিদল গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশকে ১৫০ কোটি ডলার ঋণ দিতে চেয়েছে। তারা তিন ধাপে বাংলাদেশকে এই ঋণ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে এ জন্য খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। এসএমই খাতে ঋণ দিতে নতুন প্রকল্প করতে হবে।
বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ পেতে যেসব শর্ত মানতে হবে- ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ আদায়ে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাঠামো তৈরি এবং কোনো ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী কে হবেন, তা নির্ধারণে নীতি প্রণয়ন করা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফরেনসিক নিরীক্ষা করলে সেটির কার্যপরিধি কী হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে বিধিবিধান বাস্তবায়নে (এনফোর্সমেন্ট) পৃথক বিভাগ গড়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া বাকি ২৫ কোটি ডলার ঋণ মিলবে বিনিয়োগ ঋণ ও গ্যারান্টি–সুবিধা হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এসব ঋণ পেতে কিছু শর্ত পালন করতে হবে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ ব্যবস্থাপনা কম্পানি গঠন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং নতুন গঠিত টাস্কফোর্সের অধীনে ফরেনসিক নিরীক্ষার কার্যপরিধি নির্ধারণ করতে হবে। তবে শর্তগুলোর ৫০ শতাংশের বিষয়ে ইতিমধ্যে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাতের সংস্কারে জোর দেয় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নতুন গভর্নর নিয়োগের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১১টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯টিরই মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ ছিল বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপের হাতে। এসব ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে, যা আদায় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ব্যাংকগুলো। তারল্য-সংকটে পড়ে এসব ব্যাংকের স্বাভাবিক লেনদেন কার্যক্রম ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিপিডিবির বকেয়া পরিশোধে বন্ড ইস্যুর পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের বকেয়া পাওনা মেটাতে অতিরিক্ত বন্ড ইস্যুর কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদকদের (আইপিপি) ওপর আর্থিক চাপ কমানো এবং দেশের বিদ্যুৎ খাতকে স্থিতিশীল করা এই পদক্ষেপের লক্ষ্য।
সরকারি সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেছে, যাতে তারা অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারে।
বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (আইপিপি) হিসেবে পরিচিত বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের কাছে বিপিডিবির বকেয়া হিসাব করছি।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিপিডিবির মোট বকেয়া বিলের পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে আইপিপিগুলো পাবে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।
বাকি অর্থের মধ্যে গ্যাস বিল প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা, রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পাবে ১০ হাজার কোটি টাকা এবং আদানি গ্রুপসহ ভারতের সরকারি-বেসরকারি খাত পাবে ৮ হাজার কোটি টাকা।
এর আগে বিদ্যুৎ খাতকে স্থিতিশীল করতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ২০ হাজার ৬২০ কোটি টাকা পেয়েছিল। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া দায় পরিশোধের লক্ষ্যে এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত ছিল সিটি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।
বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ২৫ জানুয়ারি একটি বিস্তৃত চুক্তি সই হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়,এই চুক্তি অনুযায়ী সরকার সিটি ব্যাংককে ১৯ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা এবং পূবালী ব্যাংককে ৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বন্ড ইস্যু করেছে।
সূত্র জানায়, ভর্তুকি তহবিল বিতরণে সরকারের অক্ষমতার কারণে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো তাদের আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণে লড়াই করছে, যার ফলে কেউ কেউ দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
এ সংকট মোকাবিলায় সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত রেপো রেটে অনুযায়ী ৮ শতাংশ হারে স্পেশাল বন্ড ইস্যু করছে।
উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে রেপো হারের যেকোনো ওঠানামা বন্ডের সুদের হারকে সমন্বয় করবে।
মেয়াদ শেষে সরকার সুদসহ ব্যাংকের পাওনা মিটিয়ে দেবে এবং পরবর্তীতে এসব বন্ড পুনরুদ্ধার করবে। সাধারণত এসব বন্ডের মেয়াদ ১৫-২০ বছর পর্যন্ত হয়। তবে এই বিশেষ বন্ডগুলোর সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত ধরা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের জরুরি প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সামিট পাওয়ার, ইউনাইটেড পাওয়ার, কনফিডেন্স পাওয়ার, বারাকা, কুশিয়ারা, ডরিন ও অ্যাক্রন পাওয়ারসহ বিদ্যুৎ খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো এই উদ্যোগের সুবিধাভোগীদের মধ্যে অন্যতম।
চুক্তির গুরুত্ব নিয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা আশাবাদী। ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এসব বন্ড পেতে পারে, একই সঙ্গে সরকারও আর্থিক দিক দিয়ে কঠিন সময় মোকাবিলা করতে পারে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না ডিম-মুরগি
ডিম, সোনালী ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারন করে দিয়েছে সরকার। তবে রাজধানীর বাজারগুলোতে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে এসব মিলছে না। সোনালী মুরগি এই দামে পাওয়া গেলেও ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের জন্য আগের মতোই বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
গতকাল রবিবার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারন দিয়েছে সরকার। খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা, সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
তবে আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে এক পিস ডিম ১৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এক হালি (৪টি) ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। আর এক ডজন (১২টি) ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকা।
অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-১৯৫ টাকা। অর্থাৎ সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির জন্য ক্রেতাদের কেজি প্রতি ১০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। তবে সোনালী মুরগি সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। সোনালী মুরগির কেজি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল এক ডজন ডিম ১৬০ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ পাইকারিতে ডিমের দাম আরও বেড়েছে। বাড়তি দামে কিনে আনার কারণে আজ ডিমের ডজন ১৬৫ টাকার নিচে বিক্রি করার সুযোগ নেই। সরকার তো খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সে হিসেবে এক ডজন ডিমের দাম ১৪৩ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। এমন কথা বললে এই ব্যবসায়ী বলেন, আমরা কম টাকায় কিনতে না পারলে কমে বিক্রি করবো কীভাবে? ডিম বিক্রি করে আমাদের খুব একটা লাভ হয় না। আমরাই ১৩ টাকার ওপরে ডিম কিনে এনেছি।
ডিম কিনতে আসা এক কেত্রা বলেন, সরকার ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমাদের কিনতে হচ্ছে প্রায় ১৪ টাকা করে। তাই শুধু দাম বেঁধে দিলে হবে না, নিয়মিত বাজারে মনিটরিং করতে হবে। না হলে দাম কমবে বলে মনে হচ্ছে না। এর আগের সরকারও জিনিসপত্রের দাম নিয়ে নানা কথা বলেছে। কিন্তু বাজারে তার কার্যকর প্রতিফলন দেখা যায়নি শুধু মনিটরিংয়ের অভাবে। এই সরকারের কাছে তেমনটা আশা করি না। আমরা চাই এ সরকার সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবে।
এদিকে ব্রয়লার মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের এক ব্যবসায়ী বলেন, মুরগির দাম বাড়েনি, কমেনি, আগে যা ছিল তাই আছে। ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। আর সোনালী মুরগি বিক্রি করছি ২৭০ টাকা কেজি।
রামপুরার এক ব্যবসায়ী বলছেন, খুচরা বাজারে মুরগির দাম নির্ভর করে পাইকারি বাজারের ওপর। আজ পাইকারি বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেনি। তাই আমরাও আগের দামেই বিক্রি করছি। দাম বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি সরকার পাইকারি বাজারে নিয়মিত মনিটরিং করলে ব্রয়লার মুরগির দাম কমে আসবে।
কাফি