শিল্প-বাণিজ্য
বিশ্ববাজারে টানা দুই বছর কমবে পণ্যের দাম

বিশ্ববাজারে এ বছর পণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকবে, একই ধারাবাহিকতায় আগামী বছরও দাম কমবে। তবে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে বা যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে দাম বেড়ে যেতে পারে। পণ্যবাজার নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এক পূর্বাভাসে এমন দাবি করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমবে ৩ শতাংশ, ২০২৫ সালে কমবে ৪ শতাংশ।
তবে এ দাম এখনো ২০১৫ এবং করোনা-পূর্ববর্তী ২০২০ সালের গড় দামের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি। যদিও ২০২৪ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে ২ শতাংশ এবং সোনা ও তামার দাম বাড়বে যথাক্রমে ৮ শতাংশ ও ৫ শতাংশ। পূর্বাভাসে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২২ সালের মধ্যভাগ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যভাগ পর্যন্ত বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমেছে ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে রয়েছে তেল, গ্যাস ও গম। এর ফলে ওই সময়ে বিশ্ববাজারে মূল্যস্ফীতি কমেছিল ২ শতাংশীয় পয়েন্ট।
পূর্বাভাসে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় আবশ্যকীয় পণ্যের বাজারে উচ্চমুখী চাপ তৈরি করেছে। বিশেষত তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ছে। এর পাশাপাশি তামার দাম বেড়েও দুই বছরে সর্বোচ্চ হয়েছে। এতে সরবরাহ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এদিকে বিশ্ববাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের জন্য এই সুখবর খুব বেশি স্বস্তির বার্তা বয়ে আনতে পারবে না। কারণ জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, তুলার মতো বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান আমদানি পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়বে বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে দেশে আগামী দু-এক বছর মূল্যস্ফীতি কতটা কমবে তা নিয়ে সংশয় আছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, ওই ১০টি পণ্যের মধ্যে ছয়টি পণ্যের দাম কমবে, আর বাকি চারটির দাম বাড়বে।
দাম কমতে পারে এমন ছয়টি পণ্য হলো ইউরিয়া সার, কয়লা, এলএনজি, চিনি, গম ও ভুট্টা। আর দাম বাড়তে পারে জ্বালানি তেল, পামতেল, সয়াবিন তেল ও তুলার। দেশের প্রধান আমদানি পণ্য তালিকায় এই ১০টি পণ্য বিশাল জায়গা দখল করে আছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২৩ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গড় দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি সাড়ে ৮২ ডলার। চলতি বছরে তা বেড়ে ৮৪ ডলার হতে পারে। তবে আগামী বছর তা কমে ৭৯ ডলার হতে পারে। জ্বালানি তেল আমদানিতেই সরকার সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হিসাবে ৪৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, এ বছর এই খরচ আরো বাড়তে পারে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ আমদানিপণ্য হলো তুলা। এটি বস্ত্র খাতের মূল কাঁচামাল। বিশ্বব্যাংক বলছে, আগামী দুই বছর তুলার দাম বাড়বে। এ বছর প্রতি কেজি তুলার দাম উঠতে পারে ২.১৫ ডলারে। আগামী বছর তা আরো পাঁচ সেন্ট বাড়তে পারে। গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের তুলা আমদানি হয়েছে।
পামতেল ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি বছরে প্রতি টন পামতেলের দাম ২০-২১ ডলার বাড়তে পারে। প্রতি টন তেলের গড় দাম হতে পারে ৯০৫ ডলার। অন্যদিকে সয়াবিন তেলের দামও বাড়ার কথা বলছে বিশ্বব্যাংক। বর্তমানের টনপ্রতি এক হাজার ১১৯ ডলার থেকে বেড়ে এক হাজার ১৩০ ডলার হতে পারে সয়াবিন তেলের দাম। দেশে প্রতিবছর গড়ে ৩০-৩৫ লাখ টন পামতেল ও সয়াবিন তেল আমদানি হয়। গত অর্থবছরে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার পামতেল ও সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে কোন পণ্যের কত দাম কমছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরিয়া সারের দাম টনপ্রতি ৩৫৮ ডলার থেকে কমে ৩৫০ ডলার হতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার সার আমদানি হয়েছে। এবার একটু কম খরচ হতে পারে। একইভাবে এলএনজি এবং কয়লার দামও কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, কয়লার দাম ব্যাপক কমতে পারে। ২০২৩ সালে প্রতি টন কয়লার গড় দাম ছিল প্রায় ১৭৩ ডলার। চলতি অর্থবছরে এর গড় দাম হতে পারে ১২৫ ডলার। অন্যদিকে প্রতি বিএমএমটিইউ এলএনজির দাম ১৪ ডলার থেকে কমে সাড়ে ১২ ডলার হতে পারে।
চিনি হলো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিত্যপণ্য। দেশে চিনির চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি করে মেটাতে হয়। বিশ্বব্যাংক বলছে, চিনিতে সুখবর আছে। প্রতি কেজি ০.৫২ থেকে কমে ০.৫০ ডলার হতে পারে। একইভাবে প্রতি টন গমের দামও ৩৪০ থেকে কমে ২৯০ ডলার হতে পারে। পোলট্রি ফিডের জন্য বিপুল পরিমাণ ভুট্টা আমদানি করা হয় বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দামও কমতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
বিকেএমইএর নির্বাচন ১০ মে, প্রার্থী হতে লাগবে ২ লাখ টাকা

প্রায় এক যুগ পর নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অবশেষে ভোট ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামী ১০ মে সংগঠনটির ৩৫টি পরিচালক পদে ভোট গ্রহণ হবে। এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একজন ব্যবসায়ীকে ২ লাখ টাকায় মনোনয়নপত্র কিনতে হবে।
চলতি মাসের শুরুতে বিকেএমইএর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান সফিউল্লা চৌধুরী। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ৫ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন আগ্রহী ব্যবসায়ীরা। ১৯ এপ্রিল চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন বোর্ড।
বিকেএমইএর পরিচালক পদের মনোনয়ন ফি ২ লাখ টাকা হলেও সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি ও সহসভাপতি পদে আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে নির্বাচিতদের। সভাপতি পদে ৩ লাখ, নির্বাহী সভাপতি পদে ২ লাখ ৭৫ হাজার এবং সহসভাপতি পদের মনোনয়নপত্র কিনতে লাগবে আড়াই লাখ টাকা। সংগঠনটিতে একজন করে সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছাড়া ছয়টি সহসভাপতি পদ রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বিজিএমইএ’র প্রশাসকের মেয়াদ বাড়লো

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়াদ আরও চার মাস বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে তিনি আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত প্রশাসকের দায়িত্বে থাকছেন।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ এ সংক্রান্ত একটি আদেশ দিয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ২০ অক্টোবর এক অফিস আদেশে বিজিএমই-এর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসক হিসেবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানোর চিঠিতে বলা হয়, সংগঠনের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হলেও অনাকাঙ্ক্ষিত বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কার্যক্রম শুরু ও সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না, এমনটা জানিয়ে প্রশাসক মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুই শর্তে প্রশাসকের মেয়াদ চার মাস বাড়িয়েছে মন্ত্রণালয়। শর্ত দুটি হচ্ছে— সংগঠনের সংঘস্মারক ও সংঘবিধি অনুসরণ করে বিজিএমই-এর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন করতে হবে।
এ ছাড়া বর্ধিত মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগে নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
এর আগে বিজিএমই-এর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন-২ শাখা আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছে, ২৪ আগস্ট এস এম মান্নান সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার পর পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলেও সেটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এ ছাড়া তৈরি পোশাকশিল্পের সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে পর্ষদ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। মূলত এসব অভিযোগে পর্ষদ ভেঙে ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে প্রশাসক নিয়োগ করে মন্ত্রণালয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির কাছ থেকে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ চেয়েছে বাংলাদেশ

ভারতে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ চাইছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে সেখান থেকে। এর কারণ হলো বকেয়া পরিশোধ ইস্যু ও শীতে চাহিদা কম থাকা।
বকেয়া পরিশোধে দেরি হওয়ার কারণে ভারতীয় কোম্পানিটি ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে সরবরাহ অর্ধেক করে। এরপর নভেম্বর থেকে একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ থাকে। সে সময় বাংলাদেশও আদানিকে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলেছিল।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধের জন্য আদানিকে মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হচ্ছে এবং এখন কোম্পানিকে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও সরবরাহ পুনরায় শুরু করতে বলা হয়েছে।
বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, আমাদের বর্তমান চাহিদা অনুসারে দ্বিতীয় ইউনিটটি চালুর পরিকল্পনা করেছিল আদানির প্রতিষ্ঠান। তবে উচ্চ কম্পন ও কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন পেমেন্ট করছি। আমরা আরও অর্থ পরিশোধের চেষ্টা করছি। আমাদের উদ্দেশ্য ওভারডিউ কমানো। এখন আদানি নিয়ে বড় কোনো সমস্যা নেই।
ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি গোষ্ঠীর কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এ কেন্দ্রে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে ক্রয় চুক্তি করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারে নির্মিত ওই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর কিনবে বাংলাদেশ। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
ভারত-মায়ানমার থেকে এলো সাড়ে ৩০ হাজার টন চাল

মিয়ানমার ও ভারত থেকে আমদানি করা সাড়ে ৩০ হাজার টন চাল নিয়ে দুইটি জাহাজ ভিড়েছে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরে। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে ২৩ হাজার টন এবং ভারত থেকে সাড়ে ৭ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) জি টু জি ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে কেনা আতপ চাল এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে কেনা চাল বন্দরে এসে পৌঁছায়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা সাড়ে ৮ হাজার এবং ১০ হাজার টনের আরও দুইটি জাহাজ আগামীকাল শনিবার এবং পরদিন রোববার মোংলা বন্দরে পৌঁছাবে।
এর আগে গত বুধবার মিয়ানমার ও ভারত থেকে আমদানি করা চালের দুইটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। ওই দুই জাহাজে আছে ৩৭ হাজার টন চাল। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে ২২ হাজার টন এবং ভারত থেকে ১৫ হাজার টন চাল এসেছে।
তার আগেও বেশ কয়েক দফায় এই দুই দেশ থেকে চাল কিনেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আতঙ্কে নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরা, নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার ৪

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে আতঙ্কে আছেন নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীরা। নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরাও একইভাবে দুশ্চিন্তায়। কারণ, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ধারপাকড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
শপথ গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিবাসন–সংক্রান্ত শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিলসহ নতুন ৪৭টিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের শক্ত হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। নথিপত্রহীন সন্দেহভাজন অভিবাসীদের ব্যাপক মাত্রায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক বাংলাদেশি বলেন, ফুলটন এলাকায় আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। অতর্কিতে সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে আমাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন।
একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। তিনি এ কথা বলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে শপথ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অতিক্রম করে লাখ লাখ অনুপ্রবেশকারী নির্দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সীমান্তে প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করা হবে। তারপর বের করে দেওয়া হবে অপরাধীদের।
ইতিমধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রাখা হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এই আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজন বলেন, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যাঁরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার পথ ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকতেন, সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। সে হিসাবে অভিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যাপক সুযোগ পেয়েছেন। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সেসব নিয়োগ নির্ধারিত হবে। ফলে ছাটাই হতে পারেন অসংখ্য বাংলাদেশি।
সংবিধানের তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশ জারি করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের একটি বিধানও বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এতে এখন থেকে ৩০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানেরা দেশটির নাগরিকত্ব পাবে না। তবে ইতিমধ্যে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ২৪টি রাজ্য ও শহরে মামলা হয়েছে। যেহেতু এটা মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনের বিরুদ্ধে যায়, সে কারণে হাইকোর্ট এটি বাতিল করে দিতে পারে।
খাদিজা মুনতাহা বাংলাদেশিদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। অন্যের ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এই কঠিন সময়ে অহেতুক পুলিশি অথবা অন্য কোনো বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়ানো যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঙালি–অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় যেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যেত, এখন সেখানে লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।