টেলিকম ও প্রযুক্তি
হোয়াটসঅ্যাপে আসছে নতুন পলিসি
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ প্ল্যাটফর্মটিতে আসছে নতুন পলিসি। এই পলিসিতে ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার ওপর জোর দেয়া হবে। নিয়ম ভাঙলে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। ব্যবহার করা যাবে না হোয়াটসঅ্যাপ।
নতুন পলিসি নিয়ে কাজ শুরু করেছে কোম্পানি। শিগগিরই আসতে চলেছে অ্যাকাউন্ট রেস্ট্রিকশন ফিচার। অর্থাৎ বেশ কিছু নিয়ম চালু করা হবে। যা না মানলে চ্যাট করা বন্ধ হয়ে যাবে। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করবে মেটা। এই ফিচার খুব তাড়াতাড়ি রোল আউট করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
কিছুদিন আগে নতুন ফিচারটি সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ বেটা ইনফো। যার অর্থ হোয়াটসঅ্যাপের পলিসি লঙ্ঘন করলে কিছু সময়ের জন্য চ্যাটিং করতে পারবেন না। অ্যাপ খুলবে কিন্তু কাজ করবে না। সব ফিচার নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। তবে একটি সুবিধা থাকবে।
ইতিমধ্যে প্ল্যাটফর্মে একাধিক অটোমেটেড টুল বসিয়ে রেখেছে হোয়াটসঅ্যাপ। যাদের কাজ হল অ্যাপে কোনও স্প্যাম, বাল্ক মেসেজ এবং অন্যান্য অপব্যাবহার হচ্ছে কি না দেখা। হোয়াটসঅ্যাপের এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন থাকায় স্বাধীন ভাবে কাজ করে এই অটোমেটিক টুলগুলো। যদি কোনও অপব্যাবহার বা স্প্যামিং ধরা পড়ে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বাংলাদেশে পেপ্যাল কতটা জরুরি, চালু হতে বাধা কোথায়?
কেনাকাটা করতে গেলে অথবা কাউকে টাকা পাঠাতে গেলে বারবার অ্যাকাউন্টের নাম, নম্বর, রাউটিং নম্বর, ক্রেডিট কার্ড হলে কার্ড নম্বর, কার্ডের মেয়াদ ইত্যাদি তথ্য প্রদান শুধু ঝামেলাদায়কই নয়, গুরুত্বপূর্ণ এই আর্থিক ডেটা যেখানে সেখানে সরবরাহ করা অনিরাপদও বটে। ঠিক এ জায়গায় এসেই আর্থিক খাতে বিশ্বব্যাপী নিজেদের অবস্থান পোক্ত করে নিয়েছে পেপ্যালের মতো সেবাগুলো।
একটিমাত্র ই–মেইল ঠিকানার (বা ফোন নম্বর) মাধ্যমে লেনদেনের সুযোগ করে দিয়েছে পেপ্যাল। সে ই–মেইলই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আইডি। অনলাইনে বা অ্যাপের মাধ্যমে পেপ্যাল দিয়ে টাকা পাঠানো, বলতে গেলে জিমেইল ব্যবহার করে ই–মেইল পাঠানোর মতোই সহজ। পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ডের সঙ্গে পেপ্যালকে সংযুক্ত করে নিতে হয়। পরবর্তী সময়ে সে ব্যাংক বা কার্ডের তথ্য বারবার দেওয়া ছাড়াই নিরাপদে করা যায় লেনদেন, পরিশোধ করা যায় পণ্য বা সেবার মূল্য।
বিশ্বের ২০০টির বেশি দেশে পেপ্যালের সার্ভিস চালু আছে এবং লেনদেন হয় ২৫টির বেশি মুদ্রায়। ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সচল পেপ্যাল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩ কোটি। প্রতিদিন পেপ্যালের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় ৪ কোটির বেশিসংখ্যক লেনদেন। অনলাইন লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ বাজারের ৪৩ দশমিক ৮৫ ভাগ রয়েছে পেপ্যালের দখলে। বিশ্বের ১ কোটি ৬৮ লাখের বেশি ওয়েবসাইট পেপ্যালের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করে। ২০২০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা ৭১ ভাগ ই-কমার্স সাইট পেপ্যালের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ রেখেছে।
বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশে পেপাল চালু রয়েছে। তবে বাংলাদেশে সেই সুযোগ নেই। বাংলাদেশ যেখানে অনলাইন কর্মীর দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে; সেখানে বিষয়টি বেশ অদ্ভুতই মনে হয়।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ২০২৩ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ফ্রিল্যান্সিংয়ের শতকরা ১৪ ভাগই বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের দখলে।
পেপাল কেন দরকার?
আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করা ফ্রিল্যান্সাররা প্রাথমিকভাবে দুটি উপায়ে কাজ করে থাকেন। প্রথমত, মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে আর দ্বিতীয়ত স্বাধীনভাবে। এক্ষেত্রে কিছু মার্কেটপ্লেস একচেটিয়াভাবে পেপালের উপর নির্ভর করে। আর অন্যগুলো একাধিক পেমেন্ট পদ্ধতির প্রস্তাব করে।
মামুন নামের একজন বলেন, আমরা বহু মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করতে পারি না। শুধু আমাদের পেপাল সুবিধা নেই বলে। কিছু প্ল্যাটফর্ম শুধু পেপাল ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে একবার যখন আস্থা তৈরি হয়ে যায়, তখন বহু ফ্রিল্যান্সাররাই তার ক্লায়েন্টের সাথে মার্কেটপ্লেসের বাইরে কাজ শুরু করে। এতে করে প্ল্যাটফর্ম ফি এড়িয়ে যাওয়া যায়। যাতে দুপক্ষই লাভবান হয়। কেননা, প্রতিটি পেমেন্ট থেকে মার্কেটপ্লেস মোটা অঙ্কের টাকা কেটে নেয়।
মামুন জানান, পশ্চিমা দেশগুলোর ক্লায়েন্টের জন্য পেপাল সবচেয়ে সুবিধাজনক পেমেন্ট পদ্ধতি। কেননা, ওই দেশগুলোতে এটিই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তারা প্রায়শই অন্য পেমেন্ট পদ্ধতির থেকে পেপালকে এগিয়ে রাখেন।
মীর তৌহিদুল ইসলাম নামের একেজন ফ্রিল্যান্সার বলেন, আমি একজন মার্কিন ক্লায়েন্টের পক্ষ থেকে ফুল টাইম রিমোট জবের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। তবে সেখানে একমাত্র পেমেন্ট অপশন ছিল পেপাল। যেহেতু আমি পেমেন্ট মেথডটি ব্যবহার করতে পারবো না; তাই আমাকে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিতে হয়।
আমরা কি অন্য প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারি?
এ প্রসঙ্গে মামুন বলেন, এক্ষেত্রে হ্যাঁ বা না দুটোই বলা যায়। পেপালের তুলনায় অন্য পেমেন্ট পদ্ধতিতে সাধারণত ট্রানজেকশন ফি বেশি। কিংবা এটি ক্লায়েন্টের জন্য সুবিধাজনক হয় না।
বাংলাদেশে পেওনিয়ার, জুম ও ব্যাংক ট্রান্সফার পদ্ধতি চালু রয়েছে। তবে এগুলো একটিও পেপালের মতো জনপ্রিয় নয়। একইসাথে কিছু কিছু মেথডে অতিরিক্ত ফি আদায়, অল্প সংখ্যক ফিচার থাকা কিংবা আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের কাছে সেগুলো গ্রহণযোগ্য না হওয়ার মতো সমস্যা রয়েছে।
তৌহিদ বলেন, আমি সাধারণত ডোমেইন কেনা ও বিক্রির কাজ করতাম। তবে পেপাল ব্যবহার না করতে পারার কারণে আমাদের অন্য পেমেন্ট মেথডের ওপর নির্ভর করতে হতো। যেগুলো আমার আয়ের ৪০ ভাগ পর্যন্ত কেটে রেখে দিত। অথচ পেপাল ব্যবহার করতে পারলে মাত্র ৫ ভাগেরও কম আয় কাটা হতো।
এ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের ডিরেক্টর প্রফেসর বিএম মইনুল হোসাইন বলেন, পেপালের মূল বিষয়টি হচ্ছে আস্থা। যখন আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি আসে; তখন আস্থাই সব। পেপাল বিশ্বব্যাপী এমন জোড়ালো আস্থা অর্জন করেছে যে, মানুষজন অন্য পেমেন্ট মেথডের তুলনায় এটিকেই ব্যবহার করে থাকেন।
এমন পরিস্থিতিতে ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে কাজ করা কিছু এজেন্সি আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের জন্য পেপালের ব্যবস্থা করে থাকেন। তবে সেটা ভিন্নভাবে। তারা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের একটি ঠিকানা ব্যবহার করে ব্যবসার নিবন্ধন করে। সেখানে একটি স্থানীয়ভাবে ব্যবসার লাইসেন্স নেন। সেই দেশের একটি ফোন নম্বরও রাখা হয়।
মামুন বলেন, একবার এজেন্সিটি বিদেশে নিবন্ধিত হলে সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের একটি ব্যবসা হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ করে। কিন্তু এখানে একটি খরচও আছে। এক্ষেত্রে তাদের ওই দেশের সরকারকে ট্যাক্স ও ফি দিতে হয়৷ যেহেতু ফ্রিল্যান্সারদের পেপালে সরাসরি প্রবেশাধিকার নেই, তাই বাংলাদেশ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে।”
বাধাগুলো কী?
বাংলাদেশে পেপাল চালুর বিষয়টি অনিশ্চিত। ফ্রিল্যান্সার ও ডিজিটাল উদ্যোক্তারা বিষয়টি নিয়ে হতাশ। যদিও কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা নেই।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির এই বিলম্বের পেছনে দুটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন।
তার মতে, পেপালের কাছে বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ বেশ সামান্য মনে হয়। যাতে করে এখানে সার্ভিস চালুর ক্ষেত্রে তারা আগ্রহী নয়। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের রেগুলেশনের সাথে পেপালের পলিসির সামঞ্জস্য নেই।
কবির বর্তমানে মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও ও আয়অল কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছেন। তিনি বলেন, “পেপাল দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে না এলেও ফ্রিল্যান্সাররা পেওনিয়ার ও জুম সার্ভিসের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের কাজ করছে। তবে এই বিকল্পগুলো জটিলতা ও ফি বৃদ্ধির মতো সমস্যা তৈরি করছে।”
আরেকটি বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা বৈধভাবে পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না। অর্থাৎ, তারা বাংলাদেশ থেকে অন্য পেপাল ব্যবহারকারীদেরও পেমেন্ট পাঠাতে পারে না। এক্ষেত্রে অন্য দেশের ফ্রিল্যান্সারদের থেকে সার্ভিস নিতেও বেশ বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।
কবির বলেন, এখানে অর্থ পাচারের মতোও উদ্বেগ রয়েছে। বর্তমানে নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকেরা প্রতি বছর সর্বোচ্চ ১২ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিদেশে পাঠাতে পারেন। যেটি আবার বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটর করে। এক্ষেত্রে এ পেমেন্টগুলো পেপালের মাধ্যমে করা হলে সেটি ট্র্যাক করা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সম্ভব হবে না। যাতে করে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ কী কী উদ্যোগ নিয়েছে?
২০১৭ সাল থেকে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা দেশে পেপাল চালু সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তারা ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, এটি শীঘ্রই চালু হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত বাস্তবে এক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
অধ্যাপক মাইনুল বলেছেন, একাধিক ঘোষণা সত্ত্বেও আমার মনে হয় না যে, পেপালের সাথে আলোচনার জন্য কোন জোড়ালো চেষ্টা করা হয়েছে।
সৈয়দ আলমাস কবিরও এই মন্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, সরকার ও পেপালের মধ্যে কোনও চুক্তি বা বৈঠক হয়নি, অন্তত আমার জানামতে।
পেপালের জন্য বাংলাদেশের বাজার খুবই ছোট এমন ধারণার সাথে একমত নন অধ্যাপক মইনুল। তিনি বলেন, পেপাল ২০০টিরও বেশি দেশে কাজ করে। যার মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশের চেয়েও ছোট। তাদের যদি পেপাল থাকতে পারে তবে আমরা কেন পারবো না?
অধ্যাপক মইনুল অর্থ পাচারের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অন্যান্য দেশগুলিও একই রকম ঝুঁকি মোকাবিলা করে। আমাদের তাদের সমাধানগুলি সম্পর্কে জানতে হবে। সেই অনুযায়ী মানিয়ে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি আশাবাদী যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবে। আমি মনে করি যে, এটির জন্য তাদের সদিচ্ছা রয়েছে।
পেপাল কীভাবে বর্তমানের আর্থিক প্রেক্ষাপটকে প্রভাবিত করতে পারে?
পেপাল বাংলাদেশে কী প্রভাব তৈরি করবে সেটি অনুমান করা কঠিন। তবে এর বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে।
অধ্যাপক মইনুল বলেন, আমি সঠিক সংখ্যা দিতে পারছি না। তবে এটি অবশ্যই আর্থিক খাতকে চাঙ্গা করবে।
কবির মনে করেন যে, বিকাশ বা নাগদের মতো স্থানীয় মোবাইল আর্থিক পরিষেবা (এমএফএস) পেপালের সাথে যুক্ত হতে পারে। এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করবে।
প্রবাসীদের দেশে থাকা পরিবারগুলো বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দারা তখন এমএফএস সাভিসের মাধ্যমে টাকা পেতে পারবে। ফলে প্রক্রিয়াটি আরও নির্বিঘ্ন হবে।
পেপাল চালু হলে ফ্রিল্যান্সাররাও উপকৃত হবে। তারা বিশ্বব্যাপী আরও প্রজেক্টে যুক্ত হতে পারবে। এতে করে তাদের আয়ের সম্ভাবনা বাড়বে। একইসাথে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ বৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদানের পাশাপাশি আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
স্মার্টব্যান্ডে যুক্ত হচ্ছে গুগলের এআই চ্যাটবট জিমিন
স্মার্টওয়াচে অসংখ্য নতুন নতুন ফিচার যুক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেক আগেই এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি যুক্ত হয়েছে স্মার্টওয়াচে। এবার স্মার্টব্যান্ডে যুক্ত হচ্ছে গুগলের এআই চ্যাটবট জিমিন। ফিটবিটে একটি নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বৈশিষ্ট্যযোগ করছে। যা ব্যবহারকারীদের তাদের স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস সম্পর্কে আরও ভালো তথ্য দেবে।
গুগল সম্প্রতি ফিটবিটে একটি নতুন এআই ফিচার যুক্ত করেছে, যা ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য ও ফিটনেস ট্র্যাকিংকে আরও উন্নত করবে। এই ফিচারটির নাম গুগল এআই জিমিন, যা প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যক্তিগত ফিটনেস সহায়তা প্রদান করবে। এই নতুন ইনোভেশনটি ফিটবিটের ইউজারদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করবে।
গুগল এআই জিমিন একটি উন্নত অ্যালগরিদমের মাধ্যমে কাজ করে, যা ব্যবহারকারীর ফিটনেস ডাটা, যেমন হাঁটার সংখ্যা, স্লিপ প্যাটার্ন, হার্ট রেট এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ করে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে এআই ফিচারটি ব্যক্তিগতভাবে উপদেশ প্রদান করে।
ফিটনেস ট্র্যাকিংয়ের পাশাপাশি, এআই জিমিন ব্যবহারকারীদের খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও নির্দেশনা দিতে সক্ষম। এটি খাদ্য সম্পর্কিত সুপারিশ, যেমন ক্যালোরি এবং পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করার জন্য টিপস, প্রদান করতে পারে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজেদের স্বাস্থ্যগত লক্ষ্য অর্জনে আরও উৎসাহিত হতে পারবেন।
গুগল এআই জিমিনের একটি বিশেষত্ব হলো এটি ব্যবহারকারীর অগ্রগতি ট্র্যাক করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী তাদের লক্ষ্য পুনর্বিবেচনা করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ব্যবহারকারী একটি নির্দিষ্ট ওজন কমানোর লক্ষ্য স্থির করেন, তবে এআই সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো বিশ্লেষণ করে এবং দৈনন্দিন কাজের পরামর্শ দেয়।
এছাড়া, ফিটবিটের ব্যবহারকারীরা গুগল সহায়তার মাধ্যমে বিভিন্ন ফিটনেস চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, যা তাদের ফিটনেস যাত্রাকে আরও মজাদার ও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলবে। এটি সামাজিক সংযোগ তৈরিতে সহায়ক হবে, যেখানে ব্যবহারকারীরা একে অপরের সাথে তাদের অগ্রগতি শেয়ার করতে পারবেন।
সার্বিকভাবে, গুগল এআই জিমিন ফিটবিটের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে প্রমাণিত হতে চলেছে। এটি শুধু ফিটনেস ট্র্যাকিংকেই উন্নত করবে না, বরং ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনকে উৎসাহিত করবে। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য প্রযুক্তির এ ধরনের উদ্ভাবন আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে আরও সহজ এবং সুস্থ করে তুলবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বাজারে এসেছে রিয়েলমি ১২, প্রি-অর্ডারে লাখ টাকা পুরষ্কার
দেশের বাজারে এসেছে নতুন স্মার্টফোন রিয়েলমি ১২। মিডিয়াম বাজেটের ফোন হলেও এই মডেলে শক্তিশালী স্ন্যাপড্রাগন চিপসেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ফোনটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কাজ করবে। মডেলটি প্রি-অর্ডারের মাধ্যমে লাখ টাকার পুরস্কার জিতে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন গ্রাহকেরা।
রিয়েলমি ১২ মডেলে ৫ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারিসহ ৬৭ ওয়াটের সুপারভুক চার্জিং প্রযুক্তি থাকায় ১৯ মিনিটের মধ্যে শূন্য থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ হবে। এমনকি পাঁচ মিনিটেও ১৮ শতাংশ চার্জ বাড়িয়ে নিতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। সেই সঙ্গে রিয়েলমি ফোনটির প্রচারে স্লোগান ব্যবহার করেছে। এতে অত্যাধুনিক ফিচারের কমতি নেই।
দাম ও রং
রিয়েলমি ১২ ফোনটি ৮ জিবি (গিগাবাইট) র্যাম থাকলে ৮ জিবি ডাইনামিক র্যাম যুক্ত করা যাবে। সেই সঙ্গে ইন্টারনাল স্টোরেজ থাকবে ২৫৬ জিবি।
ফোনটির এই সংস্করণের দাম ২৯ হাজার ৯৯৯ টাকা রাখা হয়েছে।
প্রি-অর্ডারকারী গ্রাহকরা পেতে পারেন ১ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার এবং ৫০ হাজার টাকার দ্বিতীয় পুরস্কার।
ফোনটি দুটি রঙে পাওয়া যাবে—স্কাইলাইন ব্লু (আকাশি) ও পায়োনিয়ার গ্রিন (গাড় সবুজ)
ফিচার
ফোনটির ডিসপ্লেতে রেইনওয়াটার স্মার্ট টাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করা রয়েছে। এটি বৃষ্টির সময় ভেজা হাতে ব্যবহার করা যাবে। যাদের হাত বেশি ঘামে তাদের জন্য ফিচারটি বেশ সুবিধা দেবে। আর এআই প্রোটেক্টিভ ফিল্ম টাচের মতো ফিচার, যা যে কোনো পরিস্থিতিতে সর্বোত্তম প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করে।
আর ফোনটি আনলকের জন্য এতে ইনডিসপ্লে টাচ ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে।
ফোনটিতে ভ্যাপার চেম্বার কুলিং সিস্টেম রয়েছে। এটি শক্তিশালী চিপসেটের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে। ফলে ফোনটি চার্জ দেওয়ার সময় বা বেশিক্ষণ ব্যবহার করলেও এটি তেমন গরম হবে না।
এ ছাড়া অডিও শোনার অভিজ্ঞতাকে আরও ভালো করতে এতে হাই-রেস অডিও সার্টিফিকেশন অর্জন করা ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার দেওয়া হয়েছে।
ফোনটির ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও মোড, ফটো মোড, নাইট মোড, স্ট্রিট শুটিং মোড, পোর্ট্রেট মোড, হাই পিক্সেল, প্রোফেশনাল প্যানোরামিক ভিউ, সুপার টেক্সট, টিল্ট-শিফট, টাইম-ল্যাপ্স, স্লো-মুভ, মুভি মোডে ছবি তোলা যাবে।
রিয়েলমি ১২ এর স্পেসিফিকেশন
পেছনের ক্যামেরা: ডুয়েল ক্যামেরা—অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার (ওআইএস) প্রযুক্তির ৫০ মেগাপিক্সেল সনি এলওয়াইটি-৬০০ ক্যামেরা এবং ২ মেগাপিক্সেল মনো ক্যামেরা।
সেলফি ক্যামেরা: ১৬ মেগাপিক্সেল
নেটওয়ার্ক: ৪ জি
ওয়াইফাই: ২ দশমিক ৪ / ৫ গিগাহার্টজ
আয়তন: ১৬২.৯৫ এমএম x ৭৫.৪৫ এমএম x৭.৯২ এমএম
ওজন: ১৮৭ গ্রাম
ডিসপ্লে: ৬ দশমিক ৬৭ ইঞ্চি আলট্রা-স্মুদ অ্যামোলেড
রিফ্রেশ রেট: ১২০ হার্টজ
টাচ স্যাম্পলিং রেট: ১৮০ হার্টজ
ব্রাইটনেস: ২০০০ নিট পিক ব্রাইটনেস
অপারেটিং সিস্টেম: রিয়েলমি ইউআই ৫.০
চিপসেট: কোয়ালকম স্ন্যাপড্রগন ৬৮৫
সিপিইউ: অক্টাকোর ৬৪ বিট
জিপিইউ: অ্যাড্রেনো ৬১০
র্যাম: ৮ জিবি + ৮ জিবি
ইন্টারনাল স্টোরেজ: ২৫৬ জিবি
স্পিকার: ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার
ব্লুটুথ: ৫.০
জিপিএস: আছে
ইউএসবি: ইউএসবি সি
ব্যাটারি: ৫০০০ এমএএইচ
চার্জিং: ৬৭ ওয়াট
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
ফেসবুক-গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন: নিরাপত্তা নাকি বিপদ?
ফেসবুক বা গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপে সরাসরি লগইন করা যায়। ফলে সেই ওয়েবসাইট বা অ্যাপে প্রবেশের জন্য আলাদা করে অ্যাকাউন্ট ও পাসওয়ার্ড লিখতে হয় না। আলাদা করে ই-মেইল বা পাসওয়ার্ড লেখার ঝামেলা এড়াতে অনেকেই নিজেদের ফেসবুক ও গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে অন্য সাইটে লগইন করে থাকেন। সিঙ্গেল সাইন ইন বা এসএসও নামের এ পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেলেও তা নিরাপদ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে।
যেভাবে কাজ করে এসএসও পদ্ধতি
সাধারণত এসএসও পদ্ধতিতে গুগল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য বেশি ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে অনলাইন অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করার পর সেটি ফেসবুক বা গুগলের মতো প্রাথমিক অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যবহারকারীর নাম, ই–মেইল ঠিকানা, ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। তবে কখনো কখনো ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর, জন্মদিন, বয়স, আগ্রহের বিষয়সহ অবস্থানের তথ্যও সংগ্রহ করে। ফলে এসএসও পদ্ধতিতে লগইন করলে অন্য সাইটগুলো কোন কোন তথ্য সংগ্রহ করছে, তা ব্যবহারকারী জানতে পারেন না। শুধু তা–ই নয়, ফেসবুক ও গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে সংগ্রহ করা তথ্য কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনও দেখিয়ে থাকে ওয়েবসাইট ও অ্যাপগুলো।
ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি ও সাইবার হামলার আশঙ্কা
এসএসও পদ্ধতি ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীদের ফেসবুক ও গুগল অ্যাকাউন্টের ব্যক্তিগত তথ্য গোপনে সংগ্রহ করে বিক্রি করে দিতে পারে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ। এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে সাইবার হামলাও চালানো যায়। ফলে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হয়। শুধু তা–ই নয়, এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে সাইবার অপরাধীরা যদি কোনো একটি ওয়েবসাইটের অ্যাকাউন্টের দখল নিতে পারে তবে খুব সহজেই ব্যবহারকারীদের অন্য অ্যাকাউন্টগুলোও হ্যাক করা যায়। ফলে এসএসও পদ্ধতি ব্যবহার করে কোনো অনলাইন সেবার অ্যাকাউন্ট চালু করা সহজ হলেও এতে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তাঝুঁকি রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
মনিটাইজেশন আরও সহজ করছে ফেসবুক
মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট হচ্ছে ফেসবুক। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীরা বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন। সেইসঙ্গে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন।
এ ছাড়া ফেসবুকে পেজ খুলে অনেকেই ব্যবসা করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারছেন ঘরে বসেই। আবার অনেকেই ফেসবুকে ভিডিও বা বিভিন্ন কনটেন্ট বানিয়ে আয় করে থাকেন। তবে কনটেন্ট বা ভিডিও শেয়ারের মাধ্যমে আয় করতে হলে ভিন্ন ভিন্ন শর্ত রয়েছে। যা ভাঙলে আয় করা সহজ হয়ে উঠে না। তাই এবার ভিডিও নির্মাতাদের জন্য নতুন কিছু পরিবর্তন আনছে ফেসবুক।
সম্প্রতি দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে, তিন পদ্ধতিতে ফেসবুক থেকে আয় করা যায়। সেগুলো হচ্ছে ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, অ্যাডস অন রিলস ও পারফরম্যান্স বোনাস। তবে এসব ব্যবস্থার পরিবর্তন আনছে ফেসবুক। কনটেন্ট মনিটাইজেশন প্রোগ্রামে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য আয়ের পথ আরও সহজ এবং সুবিধাজনক করে তুলবে এ পরিবর্তন।
জানা গেছে, নতুন ব্যবস্থায় ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, রিল অ্যাডস, এবং পারফরম্যান্স বোনাসকে একটি সিঙ্গেল প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করেছে। তবে নতুন এ মনিটাইজেশন প্রক্রিয়া চালু হলে ভিডিও নির্মাতাদের আবেদন করে অনবোর্ডিং প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে হবে। এরপরই ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, অ্যাডস অন রিলস ও পারফরম্যান্স বোনাস এ তিন পদ্ধতিতে আয় করা যাবে। ফলে বারবার আবেদন করতে হবে না।
২০২৫ সালে সবার জন্য নতুন এই মনিটাইজেশন মডেলটি উন্মুক্ত করা হবে। বর্তমানে এটি শুধুমাত্র আমন্ত্রিত ক্রিয়েটরদের জন্য বিটা ভার্সনে চালু করা হয়েছে। বিটা ভার্সনের অংশ হিসেবে এক মিলিয়ন ক্রিয়েটর এ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
কাফি