আন্তর্জাতিক
তিন মাসের সর্বনিম্নে ভারতীয় চালের দাম

ভারতীয় চালের রফতানি মূল্য চলতি সপ্তাহে কমে তিন মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ ও নিম্নমুখী চাহিদা দাম কমাতে সহায়তা করেছে। তবে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে শস্যটির দাম প্রায় অপরিবর্তিত ছিল বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। খবর বিজনেস রেকর্ডার।
ভারতীয় ৫ শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ চাল চলতি সপ্তাহে টনপ্রতি ৫২৮-৫৩৬ ডলারে রফতানি হয়েছে। গত সপ্তাহে দাম ছিল ৫৩৮-৫৪৬ ডলার। গত মাসে প্রতি টনের মূল্য উঠেছিল ৫৬০ ডলারে, যা এ-যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অন্ধ্র প্রদেশভিত্তিক এক রফতানিকারক জানান, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোয় বর্তমানে চালের চাহিদা অনেক কম। অনেক রফতানিকারক রফতানির ক্ষেত্রে কম শুল্ক দিচ্ছেন এবং কম দামেই বিদেশী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন।
২০২৩ সালের আগস্টে সেদ্ধ চাল রফতানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে নয়াদিল্লি। উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় বাজারে শস্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা। এর প্রভাবে তখন বিশ্ববাজারে চালের দাম বেড়ে আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছিল।
এদিকে ভিয়েতনাম চলতি সপ্তাহে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ৫৭৫-৫৮০ ডলারে রফতানি করছে। গত সপ্তাহেও এ দামেই রফতানি করেছে দেশটি। হো চি মিন সিটিভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘টানা পাঁচদিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম কিছুটা ধীর হয়ে এসেছে। এ কারণেই চালের বাজারদরে উত্থান-পতন পরিলক্ষিত হয়নি।’
অন্যদিকে থাইল্যান্ড চলতি সপ্তাহে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ৫৮০-৫৮৫ ডলারে রফতানি করছে। গত সপ্তাহেও একই দামে রফতানি হয়েছিল শস্যটি। ইন্দোনেশিয়া থেকে চাহিদা কমে যাওয়ায় বাজারদর স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
এশিয়ায় ২০২৪ সালে চাল উৎপাদন কমার আশঙ্কা করা হয়েছে। এল নিনোর প্রভাবে আবহাওয়ায় শুষ্ক অবস্থা বিরাজ করবে, যা মাটির আর্দ্রতা কমিয়ে দেবে। ফলে এশিয়ার শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোয় ফলন ব্যাহত হবে। এতে খাদ্যপণ্যটির মজুদও কমে আসবে। সব মিলিয়ে বাজারে সরবরাহস্বল্পতার ফলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দেখা দিতে পারে।
বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিশ্বের বৃহত্তম চাল রফতানিকারক ভারত ও দ্বিতীয় শীর্ষ সরবরাহকারী থাইল্যান্ড চলতি বছর চাল উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে। ইন্দোনেশিয়ায় খরার কারণে ঠিকমতো ধান চাষ করতে পারেননি কৃষকরা। ফলে শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক দেশটি থেকে আমদানি চাহিদা আগের চেয়ে আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য বলছে, গত বছরের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বেড়ে ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। শস্যটির দামে এমন উল্লম্ফনের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। এশিয়া ও আফ্রিকায় অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের অর্থনীতিতে বাড়ছে ঝুঁকি।
বিশ্ববাজারে চালের সরবরাহ সংকটের পেছনে অনেকগুলো বিষয়কে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। এল নিনোর কারণে আবহাওয়ার অপ্রত্যাশিত আচরণ খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। কোথাও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, আবার কোথাও খরা ব্যাহত করছে শস্যটির আবাদ ও উৎপাদন প্রক্রিয়া।
ভারত গত বছরের মাঝামাঝি সময় পণ্যটি রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করে। ওই সময় বাসমতী ছাড়া সব ধরনের সাদা চাল রফতানিতে দেয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। স্থানীয় সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতেই এ রফতানি নীতি গ্রহণ করে নয়াদিল্লি। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে শস্যটির সরবরাহ সংকট দেখা দেয়।
বিশ্বের কয়েকশ কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য চাল। শস্যটির এমন মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। গৃহস্থালির নিত্যদিনের ব্যয় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর অনেক পরিবার।
২০২৩-২৪ মৌসুমে চালের বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস আগের মতোই অপরিবর্তিত রেখেছে আইজিসি। উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫১ কোটি ১০ লাখ টন। শস্যটির বাণিজ্য ও ব্যবহার পূর্বাভাসে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এর মধ্যে বাণিজ্য দাঁড়াতে পারে পাঁচ কোটি টনে। আর ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৫১ কোটি ৬০ লাখ টনে। মৌসুম শেষে মজুদ দাঁড়াতে পারে ১৬ কোটি ৬০ লাখ টনে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
শিক্ষার্থী-পর্যটনসহ সব ধরনের ভিসা ফি বাড়াচ্ছে যুক্তরাজ্য

আগামী ৯ এপ্রিল থেকে ইটিএ (ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন), স্বল্পমেয়াদী, চিকিৎসা, শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের ভিসা, স্পনসরশিপ ও নাগরিকত্ব ফি বৃদ্ধি করছে যুক্তরাজ্য। আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ৯ এপ্রিল থেকে স্বল্পমেয়াদি পর্যটন ভিসার (৬ মাস) জন্য আবেদনকারীকে গুণতে হবে ১২৭ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯ হাজার ৯৯০ টাকা। বর্তমানে এই ফি ১১৫ পাউন্ড বা ১৮ হাজার ১০১ টাকা।
আর দীর্ঘমেয়াদি পর্যটন ভিসা (৬ মাসের বেশি) ফি হবে ৪৭৫ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৪ হাজার ৭৬৫ টাকা, যা বর্তমানে ৪৩২ পাউন্ড বা ৬৭ হাজার ৩৭৫ রুপি।
এছাড়া ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদি ভিসার ফি করা হবে যথাক্রমে ৮৪৮ পাউন্ড (১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৬ টাকা) এবং ১ হাজার ৫৯ পাউন্ড (১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬৮ টাকা)। বর্তমানে এই ফি যথাক্রমে ৭৭১ পাউন্ড (১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৬ টাকা) এবং ৯৬৩ পাউন্ড (১ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৭ টাকা)।
বাড়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থী ও কর্মী ভিসা ফি-ও। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থী ভিসার ফি ৪৯০ পাউন্ড (৭৭ হাজার ১২৬ টাকা)। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে এই ফি হবে ৫২৪ পাউন্ড (৮২ হাজার ৪৭৮ টাকা)।
এছাড়া তিন বছর মেয়াদি দক্ষ কর্মী ভিসার ফি করা হচ্ছে ৭৬৯ পাউন্ড বা ১ লাখ ২১ হাজার ৪১ টাকা। বর্তমানে এই ফি ৭১৯ পাউন্ড বা ১ লাখ ১৩ হাজার ১৭১ টাকা। আর ৫ বছর মেয়াদি কর্মী ভিসা ফি ১ হাজার ৪২০ পাউন্ড (২ লাখ ২৩ হাজার ৫১০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫১৯ পাউন্ড (২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৩ টাকা) করা হচ্ছে।
যারা ইটিএ ভিসার জন্য আবেদনে আগ্রহী, তাদেরকেও ৯ এপ্রিলের পর থেকে ১০ পাউন্ডের (১ হাজার ৫৭৪ টাকা) পরিবর্তে ১৬ পাউন্ড (২ হাজার ৫১৮ টাকা) ব্যয় করতে হবে।
ভিসার পাশাপাশি স্পনসরশিপ এবং নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের ফিও বাড়ানো হয়েছে। দক্ষ কর্মীদের স্পনসরের ক্ষেত্রে আগামী ৯ এপ্রিল থেকে ৫২৫ পাউন্ড (৮২ হাজার ৬৭৫ টাকা) স্পন্সর ফি দিতে হবে নিয়োগকর্তাদের, বর্তমানে এই ফি ২৩৯ পাউন্ড বা ৩৭ হাজার ৬১৮ টাকা।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব লাভের আবেদন নিবন্ধিত করতে ১ হাজার ৩৫১ পাউন্ড (২ লাখ ১২ হাজার ৬৪৯ টাকা) ফি দিতে হয়। ৯ এপ্রিল থেকে এই ফি হবে ১ হাজার ৪৪৫ পাউন্ড (২ লাখ ২৭ হাজার ৬০২ টাকা)।
ভিসা ফি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, সীমান্ত সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলদারি ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা খাতে প্রতিদিনই সরকারি ব্যয় বাড়ছে। এই ব্যয় সংকুলানের জন্যই ভিসা, স্পনসরশিপ ও নাগরিকত্বের আবেদনের ফি বাড়ানো হয়েছে। কারণ সরকার এই অতিরিক্ত অর্থের জন্য করদাতাদের ওপর চাপ বাড়াতে ইচ্ছুক নয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলি হামলায় গাজার নতুন প্রধানমন্ত্রী নিহত

ইসরাইয়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নতুন প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল বারহুম। এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে উপত্যকাটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
এর আগে, গত ১৮ মার্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইশাম দা-লিসকে হত্যা করে ইসরাইয়েলি বাহিনী। এরপর তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন ইসমাইল বারহুম।
রোববার (২৩ মার্চ) রাতে গাজার নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিহত হওয়ার তথ্য জানান ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, রোববার সন্ধ্যায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ‘সফলভাবে জ্যেষ্ঠ হামাস কর্মকর্তা ইসমাইল বারহুমকে নাসের হাসপাতালে হত্যা করেছে’ প্রতিরক্ষা বাহিনী।
প্রতিরক্ষা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসমাইল ছিলেন গাজার হামাস সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইশাম দা-লিসের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। যাকে কয়েকদিন আগে হত্যা করা হয়েছে।
ইসমাইল বারহুমকে লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি হামলাটি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এবং বিবিসি অ্যারাবিকে ধরা পড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আল জাজিরার সাংবাদিক নাসের হাসপাতালের সামনে থেকে লাইভ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক তখন হঠাৎ করে মিসাইল সদৃশ্য কিছু একটা উড়ে এসে হাসপাতালটিতে আঘাত হানে। এরপরই সেখানে আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় আরও আটজন আহত হয়েছেন।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে হাসপাতালটি হামলায় নতুন করে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৩ মার্চ) রাতে গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই হামলাতেই ইসমাইল বারহুম ও অপর একজন নিহত হন। হামাস ইসমাইল বারহুমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, নাসের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ইসমাইল। সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ডলারের শক্তি খর্ব করবে না ভারত, থাকবে না ব্রিকস মুদ্রার উদ্যোগে: এস জয়শঙ্কর

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে নির্বাচনে জেতার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কার বলে দেন, ব্রিকস মুদ্রা নিয়ে আসা হলে এই জোটভুক্ত দেশগুলোর পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। অর্থাৎ মার্কিন মুদ্রা ডলারের শক্তি হ্রাসের চেষ্টা তিনি বরদাশত করবেন না। তাঁর সেই হুমকি কাজে দিচ্ছে।
ব্রিকসের অন্যতম সদস্য ভারত জানিয়ে দিয়েছে, ব্রিকস মুদ্রা চালু বা ডলারের শক্তি খর্ব করার কোনো উদ্যোগের সঙ্গে তারা থাকছে না। ভারতের সংসদে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে ব্রিকসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে জোটের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। বলেছেন, বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে এই জোট কাজ করে যাবে। খবর ইকোনমিক টাইমসের
লোকসভায় ব্রিকস মুদ্রা ও ট্রাম্পের হুমকিসংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নের জবাবে এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, গত দুই দশকে ব্রিকসের পরিসর ও সদস্যসংখ্যা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই জোটের কার্যক্রম সম্পর্কে আরও ওয়াকিবহাল হোক, ব্রিকস তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এস জয়শঙ্কর পরিষ্কার বলেছেন, ডলারের শক্তি খর্ব করার কোনো উদ্যোগের সঙ্গে ভারত জড়িত থাকবে না। এটা ভারতের অর্থনৈতিক বা কৌশলগত লক্ষ্য নয়—দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় বিষয়টি মার্কিন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদী। ফলে ব্রিকস জোট সম্পর্কে তিনি সব সময়ই সমালোচনামুখর। গত মাসেই তিনি বলেছেন, ব্রিকস মরে গেছে।
বিশেষ করে ব্রিকসের অভিন্ন মুদ্রার বিষয়ে ট্রাম্প যুদ্ধংদেহী। একাধিকবার বলেছেন, ব্রিকস মুদ্রা চালু করা হলে এই দেশগুলোর পণ্যে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। অর্থাৎ ডলারের আধিপত্য ক্ষুণ্ন হয়—এমন কোনো কাজ তিনি সহ্য করবেন না। তাঁর ভাষ্য, এই শতভাগ শুল্কের হুমকি দেওয়ার পর থেকেই ব্রিকস মরে গেছে।
ব্রিকসের বেশ কয়েকটি সদস্যদেশ বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য খর্ব করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে চীন তার মুদ্রা ইউয়ানকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অন্যতম প্রধান মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার মতো দেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আগের চেয়ে বেশি ইউয়ান ব্যবহার করছে। ভারতও বিশ্ব বাণিজ্যে রুপির ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
ডলারের আধিপত্য কমাতে ব্রিকসের সদস্যদের মধ্যে নতুন একটি ব্রিকস মুদ্রা তৈরিও কথাবার্তা হয়েছে। যদিও সেই আলোচনা খুব বেশি এগোয়নি। এরই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিতে সেই চেষ্টা একরকম বন্ধই হয়ে গেছে।
ব্রিকস জোটের প্রাথমিক সদস্যদেশ দেশগুলো হলো চীন, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। পরে ২০২৩ সালে ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও ইথিওপিয়া ব্রিকসে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
হাসিনাবিরোধী গণবিক্ষোভের কথা জানলেও হস্তক্ষেপ করতে পারেনি ভারত: জয়শঙ্কর

সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল এবং তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে শক্তিশালী যে বিক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছিল, সে সম্পর্কে ভারত অবগত ছিল বলে দাবি করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ ব্যাপারে ভারত কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেনি, যোগ করেন তিনি।
শনিবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যরা জয়শঙ্করের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেন, যেখানে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতিই আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে।
জয়শঙ্কর জানান, ভারত বাংলাদেশের ভেতরের অস্থির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করেন। জাতিসংঘ তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল যে, যদি তারা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে সংলাপ শুরু করলেও শেখ হাসিনাকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ায় ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারত এরই মধ্যে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রিকে ঢাকায় পাঠায়।
তবে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক (বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে কি না, সে বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নীরব।
এস. জয়শঙ্কর আলোচনায় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভূমিকা রয়েছে এবং চীনকে তিনি ‘প্রতিপক্ষ’ নয়, বরং ‘প্রতিযোগী’ হিসেবে দেখেন।
এছাড়াও দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নিয়েও আলোচনা করেন জয়শঙ্কর। ২০১৪ সালের পর থেকে সংস্থাটির কোনো শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
এরপর ২০১৬ সালে পাকিস্তানে নির্ধারিত ১৯তম সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। কারণ ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর, উরিতে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়। এরপর থেকে ভারত বিমসটেককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। মূলত, এই কারণে সার্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আরও ৫ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলা থেকে আসা ৫ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীর অস্থায়ী বৈধ মর্যাদা বাতিল করা হবে।
শনিবার (২২ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে পাওয়া খবরে বলা হয়, এই অভিবাসীদের ২৪ এপ্রিলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হবে। অন্যথায়, তাদের পারমিট এবং বহিষ্কার সুরক্ষা বাতিল করা হবে।
এটি একটি কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, কারণ এই সকল অভিবাসী ২০১৭ সালের পরে একটি বিশেষ কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর সিএইচএনভি স্পনসরশিপ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব অভিবাসীকে বৈধ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর এই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়, যার ফলে এই অভিবাসীরা এখন বিপদে পড়েছেন।
ফেডারেল সরকারের নোটিশে বলা হয়েছে যে, এসব অভিবাসী যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ না করেন, তবে তাদের বৈধ মর্যাদা বাতিল হয়ে যাবে এবং তারা দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
তবে, বর্তমানে স্পষ্ট নয়, কতজন অভিবাসী এই সময়ের মধ্যে বৈধ মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছেন এবং কতজন তাদের স্থিতি পুনঃনির্ধারণে সফল হয়েছেন।
এমন একটি সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অনেক অভিবাসীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এবং এটি দেশটির অভিবাসন নীতির একটি নতুন মোড় তৈরি করবে।