শিল্প-বাণিজ্য
পণ্যবৈচিত্র্য না হলে রপ্তানি কমবে: এডিবি

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য কম। দেশের রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে গেলে রপ্তানি পণ্যে যে শুল্ক আরোপিত হবে, তার জেরে দেশের রপ্তানি ৫.৫ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এই বাস্তবতায় দেশের রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলেই মনে করে সংস্থাটি।
এডিবির ‘এক্সপান্ডিং অ্যান্ড ডাইভারসিফাইং এক্সপোর্টস ইন বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড দ্য ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্যের বৈচিত্র্য না থাকায় এলডিসি গ্রুপের বাইরের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ তুলানমূলক সবচেয়ে কম। বাংলাদেশের চেয়ে কম জনসংখ্যার দেশগুলোর রপ্তানি অনেক বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানি যেখানে ৫৫ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ ৩৬০ বিলিয়নের বেশি, ইন্দোনেশিয়ার ২৪০ এবং থাইল্যান্ডের রপ্তানি প্রায় ৩২৩ বিলিয়ন ডলার।
এমনকি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে গড়পড়তা শুল্কের হার বেড়ে যেতে পারে। এতে কানাডায় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ, ভারতে ৮.৬, জাপানে ৮.৭ ও চীনে রপ্তানির ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপিত হতে পারে।

শিল্প-বাণিজ্য
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে ১০ দিন

ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি। এই সময়ে চতুর্দেশীয় এই বন্দরের সব কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে। তবে স্বাভাবিক থাকবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, ঈদে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সব আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন (রোববার) থেকে আমদানি-রপ্তানি যথারীতি চালু হবে। বাংলাবান্ধা কাস্টমস, আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়াডিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ কবীর বলেন, ঈদে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও ভিসা আর পাসপোর্টধারীদের পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
শিল্প-বাণিজ্য
ঈদে টানা ১০ দিন বন্ধ সোনাহাট স্থলবন্দর

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর।
সোনাহাট কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম আকমল স্বাক্ষরিত এক পত্রে বন্ধের বিষয়টি জানা গেছে।
এতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সোনাহাট স্থলবন্দরের কার্যক্রম ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আগামী ১৫ জুন স্থলবন্দরের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বন্দর ১০ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় বন্দরকেন্দ্রিক আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে।
সোনাহাট স্থল শুল্কস্টেশনের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন জানান, আজ বৃহস্পতিবার (৫জুন) থেকে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত মোট ১০ দিন সোনাহাট স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন থেকে যথারীতি বন্দরের কার্যক্রম চালু হবে।
শিল্প-বাণিজ্য
ঈদে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে হিলি স্থলবন্দর

ঈদুল আযহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি। তবে এই সময়ে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতে বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য লোড-আনলোড কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়া হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রমও স্বাভাবিক থাকবে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন সই করা এক চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫ জুন বৃহস্পতিবার থেকে ১৪জুন শনিবার পর্যন্ত টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন রোববার সকাল থেকে যথারীতি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে।
হিলি ইমিগ্রেশন ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও দু’দেশের বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
অর্থনীতি
১১ মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে— এই ১১ মাসে দেশের মোট পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি মার্কিন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ রিপোর্ট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত মে মাসেই পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৭৪ কোটি ডলারের, যা গত বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এটি চলতি অর্থবছরের মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানির রেকর্ড। এর মধ্যে, সবচেয়ে বড় সুখবর এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। মে মাসে এককভাবে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৯২ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস মিলিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৫৬ কোটি ডলারে— পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।
মূলত, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। শিল্প মালিকরা বলছেন, নতুন বাজার খোঁজা, অর্ডার পণ্যের বৈচিত্র্য এবং উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে এ সাফল্য সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে, ইপিবির বিশ্লেষণ বলছে, তৈরি পোশাক ছাড়াও মে মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, প্রকৌশল পণ্য এবং প্লাস্টিক সামগ্রীর রপ্তানি বেড়েছে। তবে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
শিল্প-বাণিজ্য
বাজেটে বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব অর্জিত হওয়া দুরূহ: বিসিআই প্রেসিডেন্ট

প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসাবান্ধব হওয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব লক্ষ্য অর্জিত হওয়া দুরূহ বলে জানিয়েছেন বিসিআই প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
পাঠানো বক্তব্যে তিনি বলেন, বাজেটে রেভিনিউ আহরনকে প্রধান টার্গেট করা হয়েছে। এ বাজেটে কর্পোরেট কর ও ব্যক্তিখাতের করের উপর অতিমাত্রায় নির্ভর করা হয়েছে। পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারের রাজস্ব আয় কম। কিন্তু এটা যে বাড়বে, সে রকম কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে নেই। করজাল বাড়ানোর কোনো পদক্ষেপ আমরা এ বাজেটে দেখছি না। বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসাবান্ধব হওয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব লক্ষ্য অর্জিত হওয়া দুরূহ।
তিনি আরও বলেন, উৎপাদন খাতের বড় শিল্পের কাঁচামালের ভ্যাট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়বে। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কিভাবে কমাবে আমি ঠিক জানি না। সবকিছু আইএমএফের ফরমুলা অনুযায়ী করা হয়েছে। আইএমএফের ফরমুলা ধরলে তো ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতির মুখে পড়বে। এমনিতেই খরচ অনেক বেশি, জ্বালানির খরচ বেশি, ব্যাংক ঋণের সুদ অনেক বেশি, জ্বালানির পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। এতসব সংকেটর মধ্যেও যেসব ইন্ডাস্ট্রি মোটামুটি প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে সেখানেও শুল্ক ও কর বাড়ানো হয়েছে। গার্মেন্টস সহ রপ্তানিমুখি শিল্পের নগদ প্রণোদনা আস্তে আস্তে কমিয়ে আনা হচ্ছে এর ফলে রপ্তানি খাত প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে। আমরা নগদ প্রণোদনার পরিবর্তে কোন ফিসক্যান সাপোর্টও বাজেটে দেখছি না। কটন সুতা ও ম্যান মেইড ফাইবার এর উপর মূসক উৎপাদন পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫ টাকা করা হয়েছে। বর্তমানে জ্বালানী সংকটের মধ্যে দেশীয় স্পিনিং মিলসমূহে এই মূসক বৃদ্ধি করলে দেশি টেক্সটাইল ক্ষতির মুখে পড়বে এবং সুতা আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে। স্টিল শিল্পের কাঁচামালের উপর কর ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে ও সিমেন্ট শিল্পে কাঁচামালে মূসক ৫ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে যা দেশের আবাসন ও নির্মান শিল্প খাত খরচ বেড়ে যাবে।
আনোয়ার-উল আলম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা যা দেশের শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে বিশেষ করে সিএমএসএমই খাত বেশি ক্ষতির মূখে পড়বে। আমরা এই টার্নওভার কর বাড়ানোর বিষয় পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করছি। ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের বিক্রির উপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে যা বিশেষ করে উদীয়মান এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুতর আঘাত হবে, যা ৫ শতাংশ এ কমিয়ে আনা উচিত।
বিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষে ১০০ কোটি, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১২৫ কোটি টাকার তহবিল বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যা সুধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। এসএমই খাতকে ফরমালাইজেশনের ও ডিজিটাল ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে যা বিসিআই’র প্রস্তাবের প্রতিফলন এ জন্য আমরা অর্থ উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি প্রস্তাব রেখে বলেন, বাজেটে খাত ভিত্তিক বরাদ্দকৃত অর্থ বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, জ্বালানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি যেন যথাযথ ভাবে ও পূর্ণমাত্রায় ব্যবহৃত হয়। বাজেটের বাস্তবায়নকে যেন নিবিড় কমপ্লায়েন্সের মধ্যে নিয়ে আসা হয়। কারণ বাজেট হল প্রয়োজনের সময় ব্যয় হল না বা অর্থ পাওয়া গেল না তাহলে এর সুফল অর্থনীতি ও জনগন পাবেনা।
কাফি