জাতীয়
বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারার ঘটনায় গ্রেফতার ৩

রাজধানীর ডেমরায় অছিম পরিবহনে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এসব কথা জানান।
গ্রেফতাররা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম মনির ওরফে মনির মুন্সি (৩৭), নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্যসচিব মো. সাহেদ আহমেদ (৩৮) এবং মনির মুন্সির ব্যক্তিগত গাড়িচালক বিএনপিকর্মী মাহাবুবুর রহমান সোহাগ (৩৩)।
তাদের গ্রেফতারের পাশাপাশি আগুন দেওয়ার সময় ব্যবহৃত গাড়ি জব্দ করেছে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ বিভাগের অ্যান্টি ইললিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিম।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন এলাকায় নারকীয় তাণ্ডব পরিচালনা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার মতো জঘন্য কাজসহ অসংখ্য গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটান বিএনপির নেতাকর্মীরা।
তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৯ অক্টোবর ভোরে ডেমরা থানাধীন দেইল্লা বাসস্ট্যান্ডে রাখা অছিম পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই বাসে ঘুমিয়ে থাকা হেলপার মো. নাইম (২২) ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যান এবং অপর হেলপার মো. রবিউল (২৫) অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় ২৯ অক্টোবর ডেমরা থানায় একটি মামলা (নাম্বার ৩৮) দায়ের করা হয়।
আসাদুজ্জামান বলেন, মামলাটি ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের অ্যান্টি ইললিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিমে হস্তান্তর করা হয়। সিটিটিসি এই মামলাটির তদন্ত শুরু করে। তদন্তের প্রথমেই দুজন ভুক্তভোগীর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত মো. নাইমের বাড়ি বরিশালের কোতয়ালি থানা এলাকায়।
‘নিহত নাইম অভাবের সংসারে একটু সচ্ছলতা ফেরানোর জন্য অল্প বয়সে কাজে নেমে পড়েন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই বাসের ভেতর ঘুমন্ত অবস্থায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিজের জীবন বিসর্জন দেন তিনি।’ যোগ করেন আসাদুজ্জামান।
তিনি বরেন, অপর ভুক্তভোগী মো. রবিউল একই বাসে নাইমের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন। আচমকা আগুনের তাপে ঘুম ভেঙে যায় তার। কিন্তু ততক্ষণে রবিউলের শরীরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কোনোমতে অগ্নিধগ্ধ অবস্থায় তিনি গাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। পরে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি। শরীরে পোড়া দাগ নিয়ে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন রবিউল।
সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, তদন্তভার গ্রহণের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এসব ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি শনাক্ত করা হয়। গাড়িটি ওইদিন অগ্নিসংযোগে ব্যবহৃত হয়েছিল। এই গাড়ির সূত্র ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটনের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মূল অগ্নিসংযোগকারী ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার এবং ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়ি জব্দ করা হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান গত ২৮ অক্টোবরের ধারাবাহিকতা এবং তাদের এই নাশকতা অব্যাহত রাখার জন্য মনির মুন্সি তার নেতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা পান। নির্দেশনার মূল বিষয়বস্তু ছিল নাশকতার মাত্রা আরও বাড়ানো এবং এমন কোনো ঘটনা ঘটানো যাতে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
‘তারই অংশ হিসেবে তিনি বেশ কয়েকজনকে অগ্নিসংযোগের জন্য নিয়োগ দেন। তিনি নিজে বড় একটি ঘটনা ঘটানোর জন্য তার অপর সহযোগী নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্যসচিব এবং তার বন্ধু সাহেদ আহমেদকে ডেকে নেন। তারা দুজন মিলে একটি পরিকল্পনা করেন, তারা স্থির করেন এমন একটি ঘটনা ঘটাবে যাতে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, এই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে ডেমরার দেইল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাত ২টার পর বেশ কয়েকবার গাড়ি নিয়ে ঘুরে ঘুরে রেকি করেন এবং দেখতে থাকেন কোন জায়গা সিসি ক্যামেরার আওতামুক্ত। পরে তারা কাঙ্ক্ষিত টার্গেটের পর বড়ভাঙ্গা মার্কেটে চলে যান। সেখান থেকে তারা ২ লিটার পেট্রোল সংগ্রহ করেন। পরে আনুমানিক রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান তারা। ঘটনাস্থলে নিরাপদ দূরত্বে গাড়ি থামিয়ে চালক মাহাবুবুর রহমান সোহাগ গাড়িতে অবস্থান করেন এবং মনির মুন্সি ও সাহেদ পেট্রোলের বোতল নিয়ে রাস্তার পাশে পার্ক করা অছিম পরিবহনের গাড়ির কাছে যান।
‘সেখানে একটি গাড়ির চালকের সিটের পাশে থাকা খোলা গ্লাসের অংশ দিয়ে চালকের সিটে মনির মুন্সি পেট্রোল ঢেলে দেন। একপর্যায়ে বোতলটিও সেখানে ফেলে দেন। এরপর তিনি দিয়াশলাইয়ের কাঠিতে আগুন ধরিয়ে সেই কাঠি ঢেলে দেওয়া পেট্রোলের ওপর ছুড়ে মারেন। নিমেষেই আগুন ছড়িয়ে পড়লে তারা দুজন দৌড়ে পুনরায় গাড়িতে উঠে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।’ বলেন আসাদুজ্জামান।
ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, হামলাকারীরা সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে সড়কের রং সাইড দিয়ে ডেমরা এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে সুফিয়া কামাল ব্রিজ দিয়ে ভুলতায় থাকা মনির মুন্সির মালিকানাধীন মুন্সি পেট্রোল পাম্পে রাত কাটান। পরদিন সকাল ১০টার দিকে তারা পেট্রোল পাম্প থেকে বাসায় চলে যান।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ ক্লু-লেস ছিল। বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করে ও তদন্তের পর একটি গাড়ি শনাক্ত করা হয়। পরে সেই গাড়ির সূত্র ধরে একে একে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা আগুন দেওয়ার জন্য দুই লিটারের পানির বোতলে করে তাদের একটি মোটরসাইকেল থেকে পেট্রোল সংগ্রহ করেন। মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মনির মুন্সি নির্দেশদাতাদের থেকে নির্দেশনা পেয়ে এই কাজ শুরু করেন। তিনি আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। দলের আরও বড় পোস্ট পাওয়ার প্রত্যাশায় ছিলেন তিনি।
ঘটনার নির্দেশদাতাদের শনাক্ত করা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নির্দেশদাতাদের নাম আমরা পেয়েছি৷ তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের বিষয়ে এখনই কোনো তথ্য বলবো না।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
সংসদের আসন বাড়িয়ে ৬০০ করার সুপারিশ

জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৬০০ করার সুপারিশ করেছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি সংসদীয় আসনে একটি সাধারণ আসন এবং নারীদের জন্য একটি সংরক্ষিত আসন থাকবে। যেখানে উভয় আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, জুলাইয়ে যারা প্রাণ দিয়েছে, তাদের স্মরণার্থে এমন কিছু করতে চেয়েছি যা মানুষ ও সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।
শিরীন পারভীন বলেন, সুপারিশগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে।
এর আগে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হকের নেতৃত্ব কমিশনের সদস্যরা।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে শিরিন পারভীন হককে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান করে ১০ সদস্যের গঠন করে সরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভুয়া নথিপত্র দাখিল করলে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

ভুয়া নথিপত্র দাখিল করলে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ভিসা দেবে না। শনিবার (১৯ এপ্রিল) এ কথা জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের পেজেও এ কথা জানিয়েছে দূতাবাস। তারা বলছে, ভুয়া নথিপত্র দাখিলকারী আবেদনকারীদের কোনো ভিসা দেওয়া হয় না।
মার্কিন দূতাবাস বলেছে, ভিসা মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় জাতীয় নিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যতক্ষণ না সব ধরনের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট উদ্বেগের সমাধান হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ভিসা ইস্যু করা হয় না।
তারা বলেছে, ভুয়া নথিপত্র দাখিলকারী আবেদনকারীদের কোনো ভিসা দেওয়া হয় না। যারা এরূপ কর্মকাণ্ড করে থাকেন তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ও সংশ্লিষ্ট দেশেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার কাছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন কমিশনের সদস্যরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরিন পারভীন, সদস্য মাহীন সুলতান, সারা হোসেন, ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, কল্পনা আক্তার, ডা. হালিদা হানুম আক্তার, সুমাইয়া ইসলাম, নিরুপা দেওয়ান, ফেরদৌসী সুলতানা ও নিশিতা জামান নিহা।
সরকার ২০২৪ সালের নভেম্বরে নারী পক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন পারভীন হককে প্রধান করে ১০ সদস্যের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন করবে অন্তর্বর্তী সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন। এটি দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, এ নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল) এর একটি প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, বাংলাদেশ নির্বাচন ও গণতন্ত্র কর্মসূচির পরামর্শক মে বুটয়, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার থারিন্ডু আবেরত্না, প্রোগ্রাম অফিসার আয়ান রহমান খান এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমেই।
এএনএফআরইএল হচ্ছে এশিয়ার নির্বাচনভিত্তিক একটি নাগরিক সংগঠন যারা গত দুই দশক ধরে সুষ্ঠু নির্বাচন, গণতান্ত্রিক সংস্কার ও নাগরিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
সাক্ষাতে এএনএফআরইএল বাংলাদেশে তাদের চলমান কর্মকাণ্ড তুলে ধরে। বিশেষ করে স্বাধীন ও নাগরিক-চালিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে। তারা স্টেকহোল্ডার ম্যাপিং ও প্রয়োজন নির্ধারণমূলক কার্যক্রমের কথাও তুলে ধরে যা বাংলাদেশে সুশীল সমাজের সম্পৃক্ততা ও নির্বাচনী স্বচ্ছতা বাড়ানোর সম্ভাব্য পথ খুঁজে বের করতে সহায়ক হবে।
প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
হর্ন বন্ধ করা নয়, আমার কাজ আইন প্রয়োগ করা: পরিবেশ উপদেষ্টা

হর্ন বন্ধ রাখা নয়, আমার দায়িত্ব হচ্ছে বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করা। এমনটাই জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তবে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন কার্যকর করার দায়িত্ব তার অধিক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে বলে জানান তিনি।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর বিজয় সরণির সামরিক জাদুঘরে ‘সবুজ জ্বালানি অলিম্পিয়াড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন,
“সবাই আমাকে দেখেই বলেন, ‘আপা, হর্ন তো বন্ধ হল না।’ কিন্তু আপনি নিজে তো ৫৩ বছর ধরে হর্ন বাজিয়েই যাচ্ছেন। আপনার ড্রাইভারও বাজিয়ে যাবে। অথচ দায়টা শুধু আমার কাঁধেই চাপিয়ে দিচ্ছেন!”
তিনি স্পষ্ট করেন, “হর্ন বন্ধ রাখা নয়, আমার দায়িত্ব হচ্ছে বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করা। এখানে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো—মানসিকতা আর আচরণগত পরিবর্তন।”
উল্লেখ্য, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালের বিধিমালা অনুযায়ী রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাভেদে শব্দের সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা নির্ধারিত আছে। নীরব এলাকায় দিনে ৫০ এবং রাতে ৪০ ডেসিবল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ও রাতে ৪৫ ডেসিবল শব্দমাত্রা অনুমোদিত। মিশ্র, বাণিজ্যিক এবং শিল্প এলাকায় ধাপে ধাপে সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ ডেসিবল পর্যন্ত।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গাড়ির হর্ন নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দ তৈরি করছে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে বিধিমালার আওতায়। চলতি বছরের শুরু থেকে আরও ১০টি সড়ককে একইভাবে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনার কথাও জানান উপদেষ্টা।
তিনি সতর্ক করেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা এমন একটি পৃথিবী রেখে যাচ্ছি, যেখানে জলবায়ু সংকট ভয়াবহ রূপ নেবে—বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের পুনরাবৃত্তি আরও বেড়ে যাবে।”
তরুণদের নীতিনির্ধারণী কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিজওয়ানা বলেন, “এই সরকার তরুণদের সরকার—তা মানে এই নয় যে আমি নিজেকে তরুণ ভাবছি। তবে এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম, যখন তিনজন তরুণ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হয়েছেন এবং তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।”