চলতি মাসে ২৩ দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত ছিল এবং ১৯৪৮ সাল থেকে এক বছরে তাপপ্রবাহের দিনের রেকর্ড শুক্রবার ভাঙতে চলেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। টানা অন্তত দুই দিন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকলে তা তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বিভাগে গত ১ এপ্রিল থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগটির তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এর পর ঢাকা, খুলনা ও রংপুর বিভাগে তাপমাত্রা বাড়ে এবং দুই দিন তা অব্যাহত থাকে। ৮ এপ্রিল কক্সবাজার ও সীতাকুণ্ডে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ৯ ও ১০ এপ্রিল সারাদেশে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল।
৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ও জলবায়ু সংক্রান্ত রেকর্ড থেকে বোঝা যায়, গত কয়েক দশক ধরেই বাংলাদেশে উষ্ণতার মাত্রা ও এর স্থায়িত্ব বাড়ছে। রাজশাহী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে তাপপ্রবাহ তুলনামূলক বেশি।
সম্প্রতি আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন’ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দুটোই বাড়লেও দ্রুত বাড়ছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জুলি অ্যান রাইগলি গ্লোবাল ফিউচারস ল্যাবরেটরির সিনিয়র গ্লোবাল ফিউচার সায়েন্টিস্ট অধ্যাপক রাশেদ চৌধুরী বলেন, এল নিনো লা নিনায় পরিণত হচ্ছে এবং চলতি বছর সর্বোচ্চ উষ্ণতম হিসেবে রেকর্ড হতে পারে।
এল নিনোর সময় মৌসুমী বায়ু দুর্বল হয়ে যায়, প্রশান্ত মহাসাগরের উপরিভাগের পানি উষ্ণ হয়ে ওঠে এবং পূবের বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে।
লা নিনার সময় সমগ্র প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী থাকে। একই সঙ্গে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বেশিরভাগই স্বাভাবিকের চেয়ে শীতল থাকে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের গত ৪ এপ্রিলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ুবিদ ও আবহাওয়া ইতিহাসবিদ ম্যাক্সিমিলিয়ানো হেরেরার মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে একটি ‘ঐতিহাসিক তাপপ্রবাহ’ অনুভব করা হচ্ছে।
এমআই