জাতীয়
হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চার নির্দেশনা

দেশজুড়ে চলমান তীব্র তাপদাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। আগামী তিন দিন তীব্র তাপপ্রবাহ থাকবে জানিয়ে দেশে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সোমবার (২২ এপ্রিল) এক বার্তায় বলা হয়েছে- দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ ৭২ ঘণ্টা থাকতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে জনজীবনে অস্বস্তি বাড়তে পারে। এই তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে চার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বিদ্যমান আছে। এ অবস্থায় সুস্থ থাকতে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. তীব্র গরম থেকে দূরে থাকুন, মাঝে মাঝে ছায়ায় বিশ্রাম নিন।
২. প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করুন। হেপাটাইটিস এ, ই, ডায়রিয়াসহ প্রাণঘাতী পানিবাহী রোগ থেকে বাঁচতে রাস্তায় তৈরি পানীয় ও খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে একাধিকবার গোসল করুন।
৩. গরম আবহাওয়ায় ঢিলেঢালা পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন, সম্ভব হলে গাঢ় রঙিন পোশাক এড়িয়ে চলুন।
৪. গরম আবহাওয়ায় যদি ঘাম বন্ধ হয়ে যায়, বমি বমি ভাব দেখা দেয়, তীব্র মাথাব্যথা হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাব কমে যায়, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হওয়ার মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে যান এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রথমবার তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়।

জাতীয়
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরবেন আরো দুই হাজার বাংলাদেশি

লিবিয়া থেকে দেশে ফেরার জন্য দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছেন। পর্যায়ক্রমে এসব বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। সম্প্রতি লিবিয়ার মিসরাতা সফরে এক গণশুনানিতে দেওয়া বক্তব্যে এ তথ্য জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার।
রোববার (২০ জুলাই) ত্রিপলির বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়।
দূতাবাস জানায়, রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে সম্প্রতি দূতাবাসের একটি দল লিবিয়ার মিসরাতা সফর করেন। সফরকালে রাষ্ট্রদূত মিসরাতা শহরে কর্মরত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তিনি প্রবাসীদের সঙ্গে দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত একটি গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। গণশুনানিতে শতাধিক প্রবাসী তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করে প্রবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন। তিনি জানান, দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট চালুর লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ চলছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যেই এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে আশা করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কারও ই-পাসপোর্ট হারানো বা নষ্ট হলে, দূতাবাস থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে স্থানীয় থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন।
তিনি আরও জানান, লিবিয়ায় প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দূতাবাস স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত অবৈধ অভিবাসনের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সকলকে সচেতন করেন এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রবাসী স্কিমে অংশগ্রহণের জন্যও অনুরোধ জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রবাসীদের ভিসা বা আকামা-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছে। তিনি সব প্রবাসীকে তাদের আকামা নবায়নের ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে লিবিয়ার স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলা এবং নৈতিক আচরণ বজায় রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত জানান, গত দেড় বছরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় ৫ হাজার ৫০০-এরও বেশি অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আরও দুই হাজারের বেশি অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন করেছেন এবং পর্যায়ক্রমে এসব বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
সফরকালে দূতাবাসের প্রতিনিধি দল মিসরাতা থেকে প্রাথমিক তালিকাভুক্ত ২১৮ জন অভিবাসীকে আইওএমের কাছে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে। এ ছাড়া, দূতাবাসের পক্ষ থেকে মিসরাতা শহরে কনস্যুলার ও কল্যাণ সেবা প্রদান করা হয়। এ সময় মিসরাতা এবং এর আশপাশের শহরে বসবাসরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী দূতাবাসের বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেন।
কাফি
জাতীয়
ডেঙ্গু ও করোনার চিকিৎসায় নতুন নির্দেশনা জারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের

দেশজুড়ে ডেঙ্গু আর করোনাভাইরাস চোখ রাঙ্গাচ্ছে। দেশের কোথাও কোথাও এ ভাইরাসে মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। তবে নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার (২০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত সার্বিক নির্দেশনাপত্র জারি করেছে। এই নির্দেশনাগুলো দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, বিভাগীয় ও জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্দেশনাসমূহর মধ্যে রয়েছে, সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে ফ্লু কর্নার/ফিভার কর্নার রাখতে হবে। এখানে জ্বরের রোগী এলে শনাক্ত করা ডেঙ্গু রোগীকে ট্রিয়াজ অর্থাৎ প্রাথমিক নির্ণয়ের মাধ্যমে রোগের তীব্রতা অনুযায়ী এ, বি ও সি গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করে গাইডলাইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিটের মজুত নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা বিধি মোতাবেক সরকারের পূর্বনির্ধারিত হারে ফি প্রযোজ্য হবে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরদারিতে রাখবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী তীব্রতা অনুযায়ী প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হবে অথবা তাকে উচ্চতর হাসপাতালে রেফার করতে হবে।
সব হাসপাতালে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড বেড/ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। সব হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত সুনির্দিষ্ট চিকিৎসক দল থাকতে হবে। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় আইভি ফ্লুইডের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে বিধি মোতাবেক ক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি রোগীর ফ্লুইড গ্রহণ ও বর্জনের চার্ট নিয়মিতভাবে রেকর্ড ও মনিটরিং করতে হবে। ডেঙ্গু রোগীদের জাতীয় গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। প্লাটিলেট কনসেনট্রেট প্রয়োজন হলে সরকারিভাবে সংগ্রহ করা যাবে।
২১টি সেন্টারে প্লাটিলেট সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। এসব সেন্টারের মধ্যে রয়েছে- DMCH. NICVD, NIKDU, NINS, BMU, CMCH. RMCH, NICRH. RpmCH, Dinajpur MCH. (DJMCH), SZMCH. Manikganj MCH. Sher-E-Bangla MCH, Sylhet MAG Osmani MCH. NIDCH, ShSMCH. SSMCH. Coxsbazar H. MMCH, Faridpur MCH. Sirajganj MCH
আরও নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত মশারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য গঠিত মৃত্যু পর্যালোচনা কমিটি রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখায় (সিডিসি) পাঠাতে হবে। ডেঙ্গু ভেক্টর বাহিত রোগ বিধায় জিও লোকেশন ট্রেসিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মোবাইল নম্বর ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা অবশ্যই সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
ডেঙ্গু পরীক্ষার তথ্য দেওয়ার জন্য এমআইএস থেকে ডেঙ্গু ট্র্যাকার অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সব ল্যাবরেটরিতে এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে ডেঙ্গু বিষয়ক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা নিতে হবে। ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিধায় হাসপাতালের ভেতর পরিষ্কার রাখতে হবে। এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার সহযোগিতায় হাসপাতালের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হাসপাতালের দর্শনার্থীদের সংখ্যা সীমিত রাখতে হবে।
অপর দিকে, করোনা চিকিৎসায় নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোভিড প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সতর্কতা নিশ্চিত করতে হবে (মাস্ক পরা ও প্রয়োজনে পিপিই পরা)। হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে জ্বরের রোগীদের বিশেষভাবে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে চাহিদা ও সংক্রমণের তীব্রতা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইসোলেশন/কোভিড শয্যা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী সিডিসি থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সংগ্রহ করতে হবে। একই সঙ্গে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিধি মোতাবেক কিট সংগ্রহের ক্রয়প্রস্তুতি নিতে হবে।
অ্যান্টিজেন টেস্টে কোভিড পজিটিভ রোগীদের নির্দিষ্ট আরটি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পাঠিয়ে পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য DHIS2 ও MIS সার্ভারে এন্ট্রি করতে হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া কোনো কোভিড রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা যাবে না। যদি রেফার করার প্রয়োজন পরে তাহলে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে রেফার করতে হবে (রেফারেল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেওয়া যেতে পারে)। কোভিড চিকিৎসার ক্ষেত্রে জাতীয় কোভিড-১৯ ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন-দশম ভার্সন অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। হাসপাতালে আগত রোগী/দর্শনার্থীদের কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সচেতন করা।
কাফি
জাতীয়
পায়রা বন্দরকে টেকসই করতে হবে: নৌ উপদেষ্টা

পায়রা বন্দরকে এ অঞ্চলের জন্য অবশ্যই টেকসই ও কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি বন্দরের জন্য নিজস্ব ড্রেজার থাকা একান্ত প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশে এমন কোনো বন্দর নেই যেখানে ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন পড়ে না। আশা করছি, আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে পায়রা বন্দরের নিজস্ব ড্রেজার এবং একটি পূর্ণাঙ্গ ড্রেজিং সেকশন চালু করা সম্ভব হবে।
আজ রবিবার (২০ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় কুয়াকাটার একটি অভিজাত হোটেলে ‘পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান’ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একটি বন্দর প্রতিষ্ঠা ও পূর্ণ কার্যকারিতায় পৌঁছাতে ১০ বছর কোনো বিষয় নয়, বরং ২০-২৫ বছর সময় লাগে। তখনই বলা যায় বন্দরটি আসল উন্নয়নের পথে।
পায়রা বন্দরের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, এটি সরলরৈখিক ও প্রশস্ত চ্যানেলের অধিকারী একটি বন্দর। এর ভৌগলিক অবস্থান এবং দেশের মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে বহুমুখী যোগাযোগের সুবিধা এই অঞ্চলকে ভবিষ্যতের একটি সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক করিডোরে পরিণত করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৩ শতাংশ আমদানি-রফতানি চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক পরিচালিত হয়। তবে দ্রুত শিল্পায়ন এবং রপ্তানি খাত সম্প্রসারণের কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ বৈদেশিক বাণিজ্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে পায়রা বন্দরের গুরুত্ব আরও বাড়বে।
মাস্টারপ্ল্যান অনুষ্ঠানেও উপদেষ্টা বলেন, দেশে একদিকে যখন নতুন কোনো পোর্ট গড়ার কথা বলা হয়, তখনই নানা ধরনের আশঙ্কা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আবার চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো অপারেটর নিয়োগের প্রসঙ্গ উঠলেই বলা হয় ‘দেশ শেষ’। এ ধরনের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের বাস্তবভিত্তিক ও টেকসই পরিকল্পনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চল দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিতে রূপ নেবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল, মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পে নিযুক্ত বুয়েটের টিম লিডার অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহম্মেদ এবং আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভির (নেদারল্যান্ডস) টিম লিডার মেনো মুইজ। অনুষ্ঠানে বন্দরের কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, সামরিক কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
যদি কখনও জেলে যাই, তাহলে কি উঁচু কমোড পাব: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমার সবচেয়ে বড় চিন্তা হল যদি কখনও জেলে যাই, তাহলে কি আমি হাই কমোডের সুযোগ পাব।
গত বছর গণঅভ্যুত্থান ও ছাত্র আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হলে জেলে উঁচু কমোড পাওয়ার জন্য তার হয়ে স্ত্রীকে আইনজীবী নিয়োগ করতে বলেছিলেন তিনি।
রোববার (২০ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
ফেসবুকে প্রেস সচিব শফিকুল আলম লেখেন, গত বছরের কারফিউ ও ইন্টারনেট শাটডাউনের সময় লন্ডনভিত্তিক বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের এক সাংবাদিক প্রথম আমাকে সতর্ক করেন, যেকোনো মুহূর্তে আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তিনি (বিবিসির সাংবাদিক) বলেন, হাসিনা সরকারের এক মন্ত্রী আমাকে মিথ্যা প্রচারের অভিযোগে এবং ‘সন্ত্রাসীদের মুখপাত্র’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। আমি তখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। আল জাজিরার তানভীর চৌধুরী এবং আরও দুজন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মী একই রকম সতর্কবার্তা দেন। তারা বলেন, হাসিনা সরকার জানে যে, ইন্টারনেট শাটডাউনের সময়েও এএফপির দ্রুতগতির ইন্টারনেট চালু ছিল এবং আমি দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের রিপোর্ট, ছবি ও ভিডিও পাঠাতে সহায়তা করছিলাম।
শফিকুল আলম বলেন, তখন আমার সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা ছিল গ্রেফতার হওয়া নয়। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে, আমাকে গ্রেফতার করা হলেও তারা আমার ওপর শারীরিক নির্যাতন করবে না- কারণ আমি তখন এএফপির ব্যুরো চিফ ছিলাম। আর এএফপি ফ্রান্স সরকারের মালিকানাধীন বার্তা সংস্থা। কিন্তু আমাকে ভীষণ আতঙ্কিত করেছিল এই চিন্তাটা- যদি আমাকে সাধারণ কোনো কারাগার সেলে পাঠানো হয়, যেখানে উঁচু কমোড নেই! আমার হাঁটু ভাঙা এবং স্কোয়াট করে প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটানোর উপায় আমার নেই।
প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব লেখেন, আমি আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম, যদি আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে তিনি যেন প্রথম কাজ হিসেবে একজন শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী নিয়োগ করেন। যিনি আমার কারাগারে উঁচু কমোড ব্যবহার নিশ্চিত করবেন। আমার স্ত্রী বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়েছিলেন, কারণ তিনি জানতেন আমি ঠাট্টা করছি না। আমি এএফপির সহকর্মী, আমার সাবেক সহকর্মী ও কয়েকজন শীর্ষ সাংবাদিককেও বলেছিলাম যেন তারা আমার পক্ষে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তিনি আরও লেখেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি শেষ পর্যন্ত কারাগারে যাইনি। কিন্তু আজও আমার সবচেয়ে বড় ভয়- যদি কোনোদিন আমাকে জেলে যেতে হয়, তাহলে কি সেখানে আমি উঁচু কমোড পাব?
কাফি
জাতীয়
টেকসই বিনিয়োগে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি জরুরি: সৈয়দা রিজওয়ানা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, টেকসই বিনিয়োগ শুধুমাত্র কোনো একটি দেশের লক্ষ্য নয়-এটি হতে হবে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি।
তিনি বলেন, টেকসই লেনদেন ও টেকসই বিনিয়োগ-উভয়ের প্রতিই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। আর এই উন্নয়নে ন্যায্যতা থাকতে হবে। যদি সম্পদনির্ভর অর্থনীতিগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণ হারে ভোগ করে, তাহলে কোনো বৈশ্বিক টেকসই কাঠামো টিকবে না।
রবিবার (২০ জুলাই) ঢাকার বনানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচ্যাম) আয়োজিত ‘অ্যামচ্যাম ডায়লগ অন ফস্টারিং সাসটেইনেবল ইনভেস্টমেন্ট’ শীর্ষক এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্প ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “টেক্সটাইল খাতে এখনো কিছু বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে যা রপ্তানিমুখী না হলেও স্থানীয় বাজারে ব্যবহৃত হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি বিপজ্জনক। এজন্য বাধ্যতামূলক কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা বিধিমালা জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “ভূগর্ভস্থ পানিকে আর বিনামূল্যে নেওয়া যাবে না—এর যথাযথ মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। একবার শিল্পকারখানাগুলো মূল্য পরিশোধ করলে, তারা পানির ব্যবহার নিয়েও দায়িত্বশীল হবে।”
জ্বালানি বিষয়ে তিনি বলেন, “সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা গ্রহণ করেছে, যেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি দপ্তরে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোগ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এটি শুধু নীতিগত অঙ্গীকার নয়, বরং বাস্তবায়নের সূচনা।”
জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম শিকার হলেও এর দায় আমাদের নয়। তাই বৈশ্বিকভাবে একটি ন্যায্য টেকসই কাঠামো গড়ে তোলা জরুরি।”
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন নিয়ে তিনি বলেন, “সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে। সিঙ্গাপুরের মতো সফল মডেল আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।”
তিনি বলেন, “টেকসই বিনিয়োগের দায় শুধু উৎপাদকের নয়—ক্রেতা ও উৎপাদক উভয়েরই। এই বিনিয়োগের ব্যয় যৌথভাবে বহন করলে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের ন্যায্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যামচ্যাম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, অ্যামচ্যামের সাবেক সভাপতি ও অর্থনীতিবিদ ফরেস্ট ই. কুকসন এবং চেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও অ্যামচ্যাম সহ-সভাপতি এরিক এম. ওয়াকার।
অনুষ্ঠানে রিকাভার, চেভরন বাংলাদেশ ও ফিলিপ মরিস-এর প্রতিনিধিরা পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন।
কাফি