আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম

হামলা-পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান-ইসরায়েলের সাম্প্রতিক উত্তেজনা আপাত প্রশমিত হয়েছে। নতুন করে যুদ্ধ শুরুর ঝুঁকি না বাড়ায় নিম্নমুখী হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১ শতাংশেরও বেশি।
আইসিই ফিউচারস ইউরোপে গতকাল ফ্রন্ট মান্থ চুক্তিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বা ১ ডলার ২১ সেন্ট কমেছে। প্রতি ব্যারেল গতকাল তা কেনাবেচা হয়েছে ৮৬ ডলার শূন্য ৮ সেন্টে।
অন্যদিকে মে মাসে সরবরাহ চুক্তিতে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৯৭ সেন্ট বা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। বাজারে গতকাল প্রতি ব্যারেল কেনাবেচা হচ্ছিল ৮২ ডলার ১৭ সেন্টে। একই সময় জুনে সরবরাহ চুক্তিতে মার্কিন বাজার আদর্শটির দাম ১ ডলার ২৩ সেন্ট কমেছে। প্রতি ব্যারেল বেচাকেনা হয়েছে ৮০ ডলার ৯৯ সেন্টে।
আইজির বাজার বিশ্লেষক ইয়েপ জুন রং বলেন, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম তার প্রাথমিক ঊর্ধ্বগতি ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সংযত প্রতিক্রিয়া। কারণ এরই মধ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।
ইরানের ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের পর গত শুক্রবার লেনদেনের শুরুর দিকেই উভয় বাজার আদর্শের দাম ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৩ ডলারের বেশি বেড়ে যায়।
ইয়েপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ বিক্রির ওপর চাপ বাড়িয়েছে। গত সপ্তাহে এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডাটা থেকে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ ২৭ লাখ ব্যারেল বেড়েছে, যা বিশ্লেষকদের ১৪ লাখ ব্যারেল বৃদ্ধির পূর্বাভাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
বিশ্লেষক টিনা টেং বলেন, অর্থনৈতিক উদ্বেগগুলো পুনরায় অপরিশোধিত বাজারের জন্য নেতিবাচক ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে। দামের পাশাপাশি মার্কিন মজুদের কারণেও বাজারটি চাপের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। এছাড়া ডলারের অবস্থান শক্তিশালী হওয়ায় অন্য মুদ্রা ব্যবহারকারীদের জন্যও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয়ের খরচ আরো বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ইউক্রেন ও ইসরায়েলের জন্য বড় অংকের সহায়তা প্যাকেজ পাস করেছে। ফলে ইরানের জ্বালানি তেল উৎপাদনের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরো প্রসারিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইরানের জ্বালানি তেল উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হলে আন্তর্জাতিক বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে এএনজেডের বিশ্লেষকরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারকে প্রভাবিত করবে।

আন্তর্জাতিক
পরিকল্পিতভাবে গাজার সব ভবন ধ্বংস করে দিচ্ছে ইসরায়েল: বিবিসি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাজার হাজার বেসামরিক ভবন পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে স্যাটেলাইট চিত্র, যাচাই করা ভিডিও ফুটেজ ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে। মার্চ মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহারের পর থেকে এই ধ্বংসযজ্ঞ চলছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সম্প্রতি প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, গাজার বহু শহর ও উপশহরের অধিকাংশই এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এসব এলাকায় একসময় হাজার হাজার মানুষের বসবাস ছিল। ইসরায়েল দাবি করছে, এই এলাকাগুলো বর্তমানে তাদের ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে।
পরিকল্পিতভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে স্কুল, হাসপাতাল ও আবাসিক ভবন
বিবিসির যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভবন ধসে পড়ছে, বাতাসে উড়ছে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষ। শুধু যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে, তা নয় বরং অক্ষত ভবনগুলোকেও ইচ্ছা করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছে গাজার স্কুল, হাসপাতাল, টাওয়ার ব্লক, এমনকি শিশুদের জন্য পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রও।
রাফাহ শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত টেল আল-সুলতান এলাকায় অবস্থিত একমাত্র মাতৃসদন হাসপাতাল ও অনাথ শিশুদের যত্নকেন্দ্রসহ প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, এই এলাকার অধিকাংশ ভবন আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি নাগাদ পুরো এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কেবল একটি হাসপাতাল এখনো টিকে আছে।
এছাড়া রাফাহ’র সৌদিপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি বুলডোজার ও ট্যাংকের উপস্থিতি দেখা গেছে। ভিডিওতে ধরা পড়েছে, রাস্তার পাশে খননযন্ত্র দিয়ে ভবন গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা।
টেল আল-সুলতান এলাকার বাসিন্দা মুয়াতাজ ইউসুফ আহমেদ আল-আবসি বলেন, যুদ্ধ শুরুর মাত্র এক বছর আগে আমি আমার নতুন ঘরে উঠেছিলাম। ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন আমার সেই ঘর নেই, কোনো আশ্রয়ও নেই।
কৃষি শহরও রেহাই পায়নি
গাজা সীমান্ত থেকে মাত্র ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কৃষিনির্ভর শহর খুজা’আতেও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। টমেটো, গম ও জলপাই চাষের জন্য বিখ্যাত এই শহরের ১২০০টিরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ধ্বংস করা ভবনগুলো ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’র অংশ।
পাশের শহর আবাসান আল-কবিরা, যেখানে যুদ্ধের আগে প্রায় ২৭ হাজার মানুষের বাস ছিল, সেখানেও মে ও জুলাইয়ের মধ্যে মাত্র ৩৮ দিনে একটি বিশাল এলাকা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।
‘নিরাপত্তা করিডোর’ ও ‘বাফার জোন’ তৈরির অভিযোগ
ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন অংশকে বিভক্ত করে নিরাপত্তা করিডোর তৈরি করছে, আর এসব করিডোর বরাবর ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে আলাদা করতে এক বিশাল করিডোর নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া কিজান আবু রাশওয়ান নামক একটি গ্রামে, যা ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে- ১৭ মে’র পর থেকে প্রায় সব ভবন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, একত্রে থাকা বেশ কয়েকটি টাওয়ার ব্লক একযোগে বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের অবস্থান ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রশ্ন
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বিবিসির প্রশ্নের উত্তরে জানায়, তারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কাজ করছে ও হামাস মূলত বেসামরিক এলাকায় তাদের সামরিক স্থাপনা গোপন করে রাখে। সেনাবাহিনী কেবল তখনই ভবন ধ্বংস করে, যখন তা সামরিক প্রয়োজনে একান্ত জরুরি হয়ে ওঠে।
তবে মানবাধিকার আইনজীবীরা বলছেন, ইসরায়েলের এই ধ্বংসযজ্ঞ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও বিশেষ করে চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
জেরুজালেমভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সংস্থা ডায়াকোনিয়ার সিনিয়র আইনি বিশ্লেষক ইইতান ডায়মন্ড বলেন, আবশ্যিক সামরিক প্রয়োজন ছাড়া এ ধরনের পরিকল্পিত ধ্বংস আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। ভবিষ্যতে ব্যবহার হতে পারে- এই আশঙ্কায় কোনো স্থাপনা ধ্বংস করা আইনত বৈধ নয়।
‘মানবিক শহর’ না ‘ঘেটো’?
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ রাফাহ শহরের ধ্বংসাবশেষের ওপর ছয় লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থানান্তর করে একটি তথাকথিত ‘মানবিক শহর’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট এই পরিকল্পনাকে ‘একটি ঘেটোর মতো’ আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
‘ঘেটো’ শব্দটি সাধারণত শহরের এমন একটি এলাকাকে বোঝায় যেখানে কোনো একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ, বিশেষ করে সামাজিক, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক কারণে একত্র বসবাস করে। এটি প্রায়শই দরিদ্র এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়।
ধ্বংস যেন শেষ হচ্ছে না
সম্প্রতি ইসরায়েলি মিডিয়া জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে ডজনখানেক ডি-৯ বুলডোজার ইসরায়েল সেনাবাহিনীর হাতে পৌঁছেছে, যা আগে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে স্থগিত ছিল। সেইসঙ্গে মে মাস থেকে ইসরায়েলি ফেসবুক গ্রুপগুলোতে গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে ভবন ভাঙার জন্য কন্ট্রাক্টর নিয়োগের বিজ্ঞাপনও লক্ষ্য করা গেছে।
এ বিষয়ে একজন নিয়োগকারীর মন্তব্য চাইলে তিনি কটূ ভাষায় উত্তর দেন, তোমরা আর গাজা- দুজনই ধ্বংস হও।
সূত্র: বিবিসি
আন্তর্জাতিক
ভয়ংকর বজ্রপাত ভারতের বিহারে, নিহত ১৯

ভয়াবহ বজ্রপাতের সাক্ষী হয়েছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহার। এই বজ্রপাতের শিকার হয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যটিতে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাজ্যটির নালন্দা জেলায়।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বিহার রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় বজ্রপাতে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে নালন্দা জেলায়। এরপর ভৈরালি জেলায় ৪ জন, পাটনা ও বাঁকা জেলায় ২ জন করে এবং শেখপুরা, নওয়াদা, জেহানাবাদ, আওরঙ্গাবাদ, জামুই ও সমস্তিপুর জেলায় একজন করে মারা গেছেন।
নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এ ছাড়া, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৪ লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি খারাপ আবহাওয়ার সময় সকলকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে চলতি মৌসুমে বিহারে বজ্রপাতের আশঙ্কা বেশি থাকায় জনসাধারণকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
চীনের জ্বালানি তেল আমদানি বেড়েছে ৭ শতাংশ

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনে গত জুন মাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। দেশটির শুল্ক দপ্তর জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জুনে চীন মোট ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা দৈনিক হিসেবে প্রায় ১ কোটি ২১ লাখ ব্যারেল।
এই আমদানি পরিমাণ মে মাসের তুলনায় ৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরব ও ইরান থেকে আমদানি বাড়ানো এবং দেশের তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনরায় পূর্ণমাত্রায় কার্যক্রম শুরু করাই এই প্রবৃদ্ধির মূল কারণ।
বিশ্ববিখ্যাত ডেটা বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের জ্বালানি বিশ্লেষক মুইউ জু জানান, চীনে বসন্তকালীন রক্ষণাবেক্ষণ শেষে বেশিরভাগ পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান পুনরায় উৎপাদনে ফিরেছে। ফলে জুনে দৈনিক জ্বালানি তেলের চাহিদা মে মাসের ১ কোটি ৪৮ লাখ ব্যারেল থেকে বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল।
চীনের এই আমদানি প্রবণতা বৈশ্বিক তেলবাজারে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য এটি একটি বড় বাজার-সংকেত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক
ইরাকে শপিং মলে ভয়াবহ আগুন, নিহত বেড়ে ৬০

ইরাকের পূর্বাঞ্চলীয় কুত শহরের একটি হাইপারমার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৫৯টি মৃতদেহ শনাক্ত করতে পেরেছি। তবে একটি মরদেহ এতটাই পুড়ে গেছে যে, শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।’
কুত শহরের এক কর্মকর্তা আলি আল-মায়াহি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মৃতদেহ থাকতে পারে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পাঁচতলা একটি ভবনে আগুন লেগে ছড়িয়ে পড়েছে, দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
ওয়াসজিত প্রদেশের গভর্নর মোহাম্মদ আল-মায়াহি জানান, আগুন একটি হাইপারমার্কেট ও রেস্তোরাঁয় ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার সময় অনেক পরিবার সেখানে কেনাকাটা ও রাতের খাবার খাচ্ছিলেন।
গভর্নর জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন এবং পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য এক মর্মান্তিক বিপর্যয়।
এ ঘটনায় ভবন ও শপিং মলের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক
আলাস্কায় ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় ৭ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সময় বুধবার রাত ১২টা ৩৭ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের পর অঙ্গরাজ্যটির উপকূলে সুনামির সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল স্যান্ড পয়েন্ট শহর থেকে প্রায় ৫৪ মাইল (৮৭ কিলোমিটার) দক্ষিণে এবং এর গভীরতা ছিল ২০.১ কিলোমিটার।
ভূমিকম্পের পর আলাস্কার দক্ষিণাঞ্চল এবং আলাস্কা উপদ্বীপজুড়ে সুনামির সতর্কতা জারি করে পামারে অবস্থিত জাতীয় সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র। সতর্কতা জারির এলাকা হলো কেনেডি প্রবেশদ্বার (হোমার থেকে ৪০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে) থেকে ইউনিমাক পাস (উনালাস্কা থেকে ৮০ মাইল উত্তর-পূর্বে) পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল।
তবে দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে সুনামির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত আলাস্কায় এর আগেও বড় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ১৯৬৪ সালের মার্চে ৯.২ মাত্রার ভূমিকম্পে অ্যাঙ্কোরেজ শহর ধ্বংস হয়ে যায় এবং এতে সুনামিসহ প্রাণ হারান ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে আলাস্কা উপদ্বীপে ৭.২ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হলেও বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।