ক্যাটাগরি: পুঁজিবাজার

আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় টেকনো ড্রাগসে বিনিয়োগের সুযোগ আগামীকাল

পুঁজিবাজার থেকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। আর এই বিডিং কার্যক্রমে অংশ নেবেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। আর্থিক সক্ষমতা, সুনাম ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিবেচনা করে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করে টেকনো ড্রাগস কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটি ২০১৪ সালে ওষুধ রপ্তানিতে চতুর্থ স্থান অর্জন করে। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ সালে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। কোম্পানিটি ২০০৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয় এবং ২০১৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি থেকে পাবলিক কোম্পানিতে রুপান্তরিত হয়।

ওষুধ রপ্তানিতে দেশের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে অন্যতম টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ইতোমধ্যে কোম্পানিটি ওষুধ রপ্তানির মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছে। জীবনরক্ষাকারী ঔষধ উৎপাদন ও বিক্রয় করে এবং লাভজনক কোম্পানি হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানিটির বেশ কিছু স্পেশালইজন প্রোডাক্ট রয়েছে। এছাড়া হিউম্যান এবং ভেটেরিনারি মেডিসিনের প্রায় সকল প্রকার ঔষুধ উৎপাদনের মাধ্যেমে ভবিষৎ অগ্রগতির পথ আরো সুগম করবে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মোট মূলধন প্রায় ৯৪ কোটি টাকা যার মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ৬৩ শতাংশসহ পরিচালনা পর্ষদের কাছে ৮৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বর্তমানে যে দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মকর্তা কর্মচারিরা রয়েছে তাতে ভবিষ্যতে আরও সাফল্য অর্জন করবে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানায়, টেকনো ড্রাগস সাধারনত বিশেষায়িত পণ্য নিয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির অনকোলজির ক্যামোথেরাপি, অ্যানেস্থেসিয়া বা চেতনানাশক, জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল, ইনজেকশন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ইমপ্ল্যান্ট স্টিক (৫ বছরের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রন) রয়েছে। এছাড়াও ভেটেনারি ও সাধারন হিউম্যান মেডিসিনও রয়েছে।

জানা গেছে, ইমপ্ল্যান্ট স্টিক যা বাংলাদেশে একমাত্র টেকনো ড্রাগস উৎপাদন করে। এটি ৫ বছরের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রযোজ্য। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রধান ঔষধ সমূহগুলো হলো- জন্ম নিয়ন্ত্রন মেডিসিন- সুখী থার্ড জেনারেশন ওরাল পিল, প্রোভেরা ইনজেকশন, ইমপ্ল্যান্ট স্টিক (৫ বছরের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রন), এন্টিক্যান্সার মেডিসিন- হেরিটিন, জোলোমাইড, ইপোসাইড, চেতনানাশক মেডিসিন- লিডোসিন প্লাস ইনজেকশন, ভেনকুরোন ১০টিভি ইনজেকশন, সাধারন হিউম্যান মেডিসিন- মোটিলেক্স সাসপেনশন, ওমিসেক, রোমিলেক, সেফিক্সোন ইনজেকশন, ভেটেনারি মেডিসিন- ভারমিক ইনজেকশন, ডেক্সাভেট ইনজেকশন, রুমেন প্লাস পাউডার, ভিটা জিংক।

সূত্র মতে, কোম্পানিটি শুরু থেকেই উন্নতমানের বিশেষায়িত ঔষধ উৎপাদন ও বিতরণ করে আসছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক একজন ফামার্সিস্ট এবং দেশের সবোর্চ্চ বিদ্যাপিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাত্তোকত্তর সম্পন্ন করেছেন। কোম্পানির পরিচালক মেহেরিন আহমেদ অনকোলজিতে পিএইচডি সম্পন্ন্ করেছেন বিদেশ থেকে। প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের টেন্ডারের বিপরীতে সর্বোচ্চ পরিমান জন্ম নিয়ন্ত্রন ঔষধ সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া কোম্পানিটির ১৭টি ডিপো রয়েছে যার মাধ্যমে সারাদেশে ঔষধ সরবরাহ করা হয়। তাছাড়া প্রতিটি স্তরে “সার্বক্ষনিক মনিটরিং টিম” রয়েছে যারা কোম্পানীর প্রতিটি কাজের সঠিক মনিটরিং নিশ্চিত করে থাকে। কোম্পানিটি ড্রাগ অ্যাডমিনিসট্রেসন ও জিএমপিসহ অন্যান্য রেগুলটরি গাইডলাইন মেনে মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন ও বিতরণ করে থাকে। করপোরেট গভর্নেন্সের পূর্ণাঙ্গ প্রতিফলন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আইপিও তহবিলের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান, সর্বপরি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ ওষুধ রপ্তানির মাধ্যমে দেশের সুনাম অর্জন করাই কোম্পানিটির মূল উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য, টেকনো ড্রাগস লিমিটেড ২০০৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। তবে, ২০১০ সালের ১ জুলাই কোম্পানিটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে যাত্রা শুরু করে ভেটেনারি প্রোডাক্ট দিয়ে। দেশে ভেটেনারি প্রোডাক্টের প্রবর্তক টেকনো ড্রাগস। পরবর্তীতে মানুষের ওষুধ নিয়ে কাজ শুরু করে। বর্তমানে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৯৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সর্বশেষ হিসাববছরে কোম্পানিটি ১৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে। ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়নসহ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ২৭ টাকা ৭৪ পয়সা এবং পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া ২২ টাকা ৫৭ পয়সা। এ সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ২ টাকা ৮ পয়সা। বিগত ৫ বছরের ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৩ টাকা ২৫ পয়সা। চলতি বছরের গত ৭ মার্চ টেকনো ড্রাগস লিমিটেডকে আইপিওর অনুমতি দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার