জাতীয়
সমবায় কৃষি নিশ্চিত হলে দেশে কখনো খাদ্যাভাব হবে না: প্রধানমন্ত্রী

সরকার বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার দেখানো পথে সমবায় কৃষি নিশ্চিত করা হলে দেশে কখনো খাদ্যের অভাব হবে না।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গণভবনে সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একসময় যারা নুন ভাতের কথা বা ডাল ভাতের কথা চিন্তা করতে পারত না, এখন তারা মাছ-মাংস ডিমের কথাও চিন্তা করে। ফলে যারা সরকারি সমালোচনা করেন তাদের সেগুলো মাথায় রেখে উন্নয়ন হয়েছে কিনা তা বিবেচনা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীজ উৎপাদন বিএডিসিসহ নানা গবেষণা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো নানা সময়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই কৃষি গবেষণায় জোর দেয়। বীজ, মাছ, ধান, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বাড়িয়ে বিদেশি নির্ভরতা কমিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে।
সরকারপ্রধান বলেন, খাদ্য সংরক্ষণ,খাদ্য ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার ফলেই এদেশের কৃষি সমৃদ্ধ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি কখনোই চায়নি এদেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক, তারা চেয়েছে অন্য দেশ থেকে ভিক্ষা করে দেশ চালাতে। সারাদেশে আটক নেতা কর্মীর সংখ্যা নিয়ে বিএনপির যে দাবি তাতে কারাগারে আটক সব অপরাধীই যেন বিএনপির নেতা কর্মী।
আজ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। কৃষকের অধিকার রক্ষায় ১৯৭২ সালের এই দিনে ১৯ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীসহ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকাল সাড়ে ৬টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৭টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে ধানমন্ডির ৩২ পর্যন্ত আনন্দ শোভাযাত্রা, সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এরপর সকাল ১০টায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় এবং কেক কাটা অনুষ্ঠানে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। বিকেল ৩টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়
এক হাটের পশু অন্য হাটে নিলে কঠোর ব্যবস্থা: র্যাব

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে এক হাটের পশু জোর করে অন্য হাটে নামিয়ে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এক হাটের পশু অন্য হাটে নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব। এছাড়া হাটে ও বাস টার্মিনালে চাঁদাবাজি করলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর গাবতলীতে পশুর হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।
তিনি বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের সর্ববৃহৎ পশুর হাট গাবতলীসহ অন্যান্য পশুর হাটের নিরাপত্তা জোরদার ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। র্যাব-৪ হাটে ওয়াচ টাওয়ার ও অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনসহ মিরপুর বেনারসী পল্লী এলাকা এবং পাটুরিয়া ফেরিঘাট গরুর হাটে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে। এছাড়া হাটে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে; যাতে জনসাধারণ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির শিকার না হয়। নির্বিঘ্নে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে।
মাহবুব আলম বলেন, পশু পরিবহনে যেকোনো ধরনের চাঁদাবাজি বা এক হাটের পশু অন্য হাটে জোর করে নেওয়া বা মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে বা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পেলে দ্রুত সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ঘরমুখো মানুষ যেন ছিনতাই, মলম পার্টি, অজ্ঞানপার্টিসহ কোনো অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতিতে না পড়ে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বিশেষ করে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, নবীনগর, বাইপাইল এলাকা এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাট এলাকায় নিয়মিত টহল দল মোতায়েন রয়েছে। বাসের টিকিট সিন্ডিকেট, কালোবাজারি কিংবা বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়য়ের মতো অপরাধ প্রতিরোধে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। সোমবারও গাবতলী বাস কাউন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা মহানগরসহ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় শপিং কমপ্লেক্সগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সাদা পোশাকে র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় এবং যেকোনো ধরনের অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে অত্র ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত চেকপোস্ট পরিচালনা ও সার্বক্ষণিক টহল দেওয়া হচ্ছে।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, পশু ক্রয় বিক্রয়কারীর জাল টাকা আদান-প্রদান বন্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিসহ জাল টাকা শনাক্তকারী মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। যাতে কোনো অসাধু চক্র অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে না পারে। অজ্ঞানপার্টি এবং মলম পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধী চক্রকে প্রতিহত করতে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গত ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ১৭ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নাশকতা-হামলা, যেকোনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নকারী তথ্য ও গুজব প্রতিরোধ করতে র্যাব প্রস্তুত রয়েছে। ঈদুল আজহা উদযাপন ও পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন অনেকে। ঈদের আগে ও পরে র্যাব-৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বিভিন্ন সড়ক ও মহল্লায় ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, দস্যুতা ও যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত অপরাধ প্রতিরোধেও বিশেষ টহল ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়াও যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাব-৪ এর পর্যাপ্ত স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স প্রস্তুত থাকবে বলেও জানিয়েছেন লে. কর্নেল মাহবুব আলম।
জাতীয়
ঈদুল আজহায় বায়তুল মোকাররমে ৫ জামাত

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (৩ জুন) ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমিনের সই করা ওই বার্তায় বলা হয়েছে, আগামী আরবি ১০ জিলহজ (১৪৪৬ হিজরি) এবং ইংরেজি ৭ জুন (শনিবার) সারাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জামাতগুলো পরিচালনায় দায়িত্বে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও দেশের খ্যাতনামা আলেমরা।
প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এতে ইমামতি করবেন যাত্রাবাড়ীর তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. খলিলুর রহমান মাদানী। মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।
দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতির দায়িত্বে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির হবেন মো. নাসির উল্লাহ।
তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্পাদক ড. মুশতাক আহমদ। মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন মো. বিল্লাল হোসেন।
চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমাম হিসেবে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতী মো. আব্দুল্লাহ এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন মো. আমির হোসেন।
পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন। মুকাব্বির হবেন মো. জহিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, কোনো জামাতে নির্ধারিত ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম। পাশাপাশি, বিকল্প মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন খাদেম মো. রুহুল আমীন।
জাতীয়
যেসব এলাকায় ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না আজ

টঙ্গী-কালিগঞ্জ মহাসড়কের টঙ্গী নিমতলী ব্রিজ নামক স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন মেরামত কাজের জন্য মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মোট ৮ ঘণ্টা বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় তিতাস গ্যাসের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
তিতাস জানায়, টঙ্গী বিসিক, পাগাড়, মরকুন, শিলমুন, মাজুখান বাজার, আরিচপুর, গোপালপুর ও তালটিয়া বাজার এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
এছাড়া এই এলাকার আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে বলেও জানানো হয়। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
জাতীয়
কালোটাকা সাদা করার বিধান সংস্কারের মূল লক্ষ্যের বিপরীত: টিআইবি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারের এ উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করে বলেছে, বিষয়টিকে রাষ্ট্রীয় সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের মূল উদ্দেশের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত একই সঙ্গে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি।
সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্র সংস্কার—বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যকে রীতিমতো উপেক্ষা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে রিয়েল এস্টেট লবির ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। করহার যা-ই হোক না কেন, এটি সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে অনুপার্জিত আয় অবৈধ হবে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ একইসঙ্গে বৈষম্যমূলক, কারণ এ সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে অবৈধ অর্থের মালিকদের অধিকতর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সৎ উপার্জনকারীদের ফ্ল্যাট বা ভবনের অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সবচেয়ে আশঙ্কা ও হতাশার ব্যাপার হলো, সরকারের এ সিদ্ধান্ত দুর্নীতিকে উৎসাহ দেবে। এর মাধ্যমে সরকার বাস্তবে পুরো বছরজুড়ে অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ অর্জনের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করছে এবং বছর শেষে কালো টাকাকে বৈধতা দেওয়ার অঙ্গীকার করছে। বৈধতা দেওয়ার অজুহাত হিসেবে যে খাতের তোষণ করা হচ্ছে, সে আবাসন খাতই দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের একটি হিসেবে চিহ্নিত। অবিলম্বে কালো টাকা সাদা করার এ দুর্নীতিবান্ধব সুযোগ চিরতরে বাতিল করার জোর দাবি জানাই আমরা, যার সূচনা হওয়া উচিত সংশোধিত বাজেটে এ সুযোগ রহিত করার মাধ্যমে। পাশাপাশি, কালো টাকার উৎস অনুসন্ধান করে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা, করব্যবস্থায় সমতা ও ন্যায় নিশ্চিতের দাবি জানাই আমরা।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, সরকার যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান বাস্তব ও কার্যকর বলে দাবি করতে চায়, তবে কালোটাকা বৈধ করার যাবতীয় পথ চিরতরে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম ও নীতিনির্ধারণী উদ্যোগগুলোকে জনগণ শুধুই লোকদেখানো মনে করবে, যার পরিণতিতে দুর্নীতির স্বাভাবিকতার সংস্কৃতি আরও গভীরতর হবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র লোক দেখানো হিসেবেই থেকে যাবে। মনে রাখতে হবে এ সরকার কর্তৃক গঠিত দুদক সংস্কার কমিশনের অন্যতম সুপারিশ হচ্ছে কালোটাকাকে বৈধতা দেওয়ার সব পথ চিরতরে রুদ্ধ করা, যার প্রতি এরই মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অথচ, অন্তর্বর্তী সরকার এর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে স্ববিরোধিতা করছে, সরকার নিজেকে বিব্রত করছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, একইভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ বাজেটে প্রত্যাশা ছিল, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারে কতটা অগ্রগতি হলো তার একটি ধারণা দেওয়া হবে। কিন্তু সে ব্যাপারে মাত্র একটি বাক্য ব্যবহার করেই দায় সেরেছেন অর্থ উপদেষ্টা। আবার দেশ থেকে অর্থসম্পদ পাচার করেছেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন, এমন ব্যক্তিদের অর্থ-সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান করা হয়েছে। কিন্তু কী প্রক্রিয়ায় তা বাস্তবায়ন করা হবে- তাও পরিষ্কার করা হয়নি। এর বাইরে রাজস্ব আদায় বাড়াতে এর ব্যবস্থাপনা থেকে নীতিকে আলাদা করার সঙ্গে এ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের কৌশলগুলো কী হবে- সে উত্তরও পাওয়া যায়নি বাজেট বক্তৃতায়, যা সত্যিই হতাশার বলে মনে করে টিআইবি।
কাফি
জাতীয়
জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকে প্রথম পর্ব শেষ হলো।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিতে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদল। বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি সারা দিনে যত মিটিং করি, যত মিটিং করে এসেছি, তখন সবচাইতে আনন্দ পাই যখন এরকম বসার সুযোগ পাই। এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে, সেই রকম কাজে আমি যুক্ত হতে পেরেছি।
তিনি বলেন, সংস্কার করার জন্য আমার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কোথায় থেকে শুরু করব। প্রথমে নানা আলাপের মাধ্যমে ঠিক হলো যে, আমরা কয়েকটি কমিশন করে দেব। তারা ভেতরে গিয়ে প্রকৃত জিনিসটা তৈরি করবে। আমরা কমিশন গঠন করলাম। দ্রুত গতিতে কাজ করার জন্য তাদেরকে ৯০ দিন আমরা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। আমরা খুব আনন্দিত তারা করতে পেরেছে। কয়েকটা কমিশন বেশি সময় হয়েছে তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
‘কমিশন থেকে রিপোর্ট আসলো তারপর আমরা ঐকমত্য গঠন করতে চাচ্ছি এটা কীভাবে হবে, সেখান থেকে একটা আইডিয়া আসলো যে আলাদা একটা ঐকমত্য কমিশনের কথা। সেটা ফলপ্রসূ হয়েছে। আলী রীয়াজ সাহেব যখনই আমার সঙ্গে বৈঠক করেন তখন খুব আনন্দিত হই।’
দ্বিতীয় পর্বে কী হবে তা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অনেকগুলো বিষয় কাছাকাছি এসে গেছে। আরেকটু হলে আমাদের তালিকায় আরেকটি সুপারিশ যুক্ত হবে, সেটা হচ্ছে ঐকমত্যের সুপারিশ। সেই সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি। আমাদের জুলাই সনদের যতগুলো বিষয় আছে তাতে যদি আরও কিছু যুক্ত করতে পারি, দেখতে সুন্দর লাগবে। জাতীয় একটা সনদ হলো। অনেকগুলো বিষয়ে আমরা এক হতে পেরেছি। জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত হতে পারি। আমরা বিভক্তিকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রাজনীতি সৃষ্টি করেনি। আমরা দেশের উন্নতির জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছি।
কাফি