জাতীয়
জিম্মিদশার ৩১ দিনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ৩১ দিন জিম্মি থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক। গত শনিবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপের এই জিম্মি জাহাজ থেকে নেমে যায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। কীভাবে কাটলো ৩১ দিন। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন জাহাজের মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ। মঙ্গলবার হোয়াটসঅ্যাপে গণমাধ্যমের কাছে জিম্মিদশার বর্ণনা দেন তিনি।
ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, মার্চের ১২ তারিখ সকালে ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ নীল সাগরে ছুটে চলছিল। কেবিনে অফিসের কাজ সেরে সকাল সাড়ে ৯টায় জাহাজ পরিচালনা কক্ষ- ব্রিজ থেকে মাস্টারের চেয়ারে গিয়ে বসি। বসেই জাহাজের দায়িত্বে থাকা তৃতীয় কর্মকর্তাকে বলি, সব ঠিকঠাক আছে তো?
মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা বোঝাই করে সোমালিয়ার উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর হয়ে যাওয়ার পথে তৃতীয় কর্মকর্তা জানালেন, ‘স্যার, জাহাজের ডান পাশে অনেক দূরে একটি ফিশিং বোট দেখা যাচ্ছে।’
দৃশ্যমান সেই ফিশিং বোট থেকে ব্যবধান বাড়িয়ে দিতে জাহাজটি বাঁয়ে ঘুরিয়ে দিয়ে নৌযানটি আমরা পর্যবেক্ষণ শুরু করি। হঠাৎ করে দেখি, নৌযান থেকে একটি স্পিডবোট সাগরে ভাসানো হয়েছে। তখনই আমরা নিশ্চিত হয়ে যাই, জলদস্যুরা আসছে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে কয়লাবোঝাই থাকায় আমাদের গতি ছিল কম। ঘণ্টায় সাড়ে ১০ নটিক্যাল মাইল।
স্পিডবোটটি কাছাকাছি চলে এলে ঢেউ সৃষ্টি করে এবং উচ্চচাপে পানি ছিটিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আবার ডানে-বাঁয়ে জাহাজ ঘুরিয়ে স্পিডবোটটির গতি কমানোর চেষ্টা শুরু করি। এ সময় যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনে যোগাযোগ করি। সেখানে কেউ ফোন ধরেননি। সে সময় যোগাযোগ করে কাছাকাছি কোনো যুদ্ধজাহাজও পাইনি।
জলদস্যুরা উঠে যাবে বুঝতে পেরে আমরা জাহাজের সুরক্ষিত কক্ষ- সিটাডেলে আশ্রয় নেওয়ার শেষ চেষ্টা করি। নাবিকের সিটাডেলে যাওয়ার নির্দেশ দিই। তবে চারজন জলদস্যু অস্বাভাবিক গতিতে ব্রিজে ওঠে পড়তে সক্ষম হয়। তারা প্রথমে দ্বিতীয় কর্মকর্তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ‘মাস্টার মাস্টার’ বলে চিৎকার করে। আমাকে খুঁজতে থাকে। দ্বিতীয় কর্মকর্তা ভয় পেয়ে যান। আমি দ্রুত সেখানে চলে এসে হাত তুলি। তখনই জলদস্যুরা ‘অল ক্রু’ বলে চিৎকার করতে থাকে।
এরপরই আমি সব নাবিককে ব্রিজে চলে আসার নির্দেশ দিই। নাবিকরা শুরুতে বেশ ভয় পেয়ে যান। জলদস্যুরা জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করার কথা বলে। ইঞ্জিন বন্ধ করার পর মাছ ধরার নৌযানটি আমাদের জাহাজের সঙ্গে বাঁধা হয়। ওই নৌযানে একজন পাকিস্তানি এবং বাকিরা ছিলেন ইরানের জেলে। নৌযানে থাকা সব জলদস্যু জাহাজে ওঠে। মোট ১২ জন সশস্ত্র জলদস্যু আমাদের জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। আমাদের কাছ থেকে মুঠোফোন কেড়ে নিলেও ল্যাপটপ ও কয়েকটি মুঠোফোন আমরা লুকিয়ে রেখেছিলাম। এ সময় জলদস্যুরা আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে জলদস্যুদের নির্দেশনায় চলতে থাকে জাহাজটি। এবার তাদের নির্দেশে আমরা এমভি আবদুল্লাহর ইঞ্জিন চালু করি। সোমালিয়ার উপকূলের দিকে যাওয়ার নির্দেশনা দেয় জলদস্যুরা। সে সময় একজন জলদস্যু একটি নম্বরে যোগাযোগ করতে বলে। কল দেওয়ার পর ‘আহমেদ’ পরিচয় দিয়ে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘হাউ আর ইউ ক্যাপ্টেন এভরিথিং ইজ ওকে’ এরপরই জাহাজটি কীভাবে কোথায় নিতে হবে, তার পথনির্দেশনা দিয়ে দেয় জলদস্যুনেতা। সে অনুযায়ী জাহাজ চলতে থাকে।
রোজার দ্বিতীয় দিনে ইফতারের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপারেশন আটলান্টার একটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহর পিছু নেয়। যুদ্ধজাহাজ থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ভিএইচএফে জলদস্যুদের নির্দেশনা দেওয়া হয়, ‘তোমরা জাহাজ ছেড়ে যাও। না হলে অভিযান চালানো হবে।’ নির্দেশনায় কোনো কাজ হয়নি। যুদ্ধজাহাজ থেকে একটি হেলিকপ্টার আকাশে ওড়ানো হয়। একপর্যায়ে এমভি আবদুল্লাহর চারপাশে পানিতে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়। তাতেও কোনো কাজ হয়নি।
যুদ্ধজাহাজ যাতে দ্রুত চলে যায়, তা বলার জন্য আমাকে জলদস্যুরা ভয় দেখায় অস্ত্র তাক করে। আমি ভিএইচএফে জানাই, ‘আমরা অস্ত্রের মুখে আছি। তোমরা দূরে চলে যাও। প্রায় আধা ঘণ্টা পর যুদ্ধজাহাজ দূরে চলে যায়। যুদ্ধজাহাজ পিছু নেওয়ায় দুই দফা নোঙর তুলে তৃতীয় দফায় সোমালিয়া উপকূলের জেফলের দিকে এমভি আবদুল্লাহকে নিয়ে যায় জলদস্যুরা।
তিনি বলেন, মোট ৩৫ জন জলদস্যু জাহাজে ওঠে। যুদ্ধজাহাজ পিছু নেওয়ায় জলদস্যুরা জাহাজে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসে। রকেট লঞ্চার, মেশিনগান, এম-সিক্সটিনসহ নানা রকমের অস্ত্র। মনে হয়েছে, যেন যুদ্ধক্ষেত্রে আছি। জলদস্যুদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার না করে উপায় নেই। ভালো ব্যবহার করায় তারা আমাদের কেবিনে থাকার সুযোগ দেয়। কবে মুক্তি পাবো, মনে মনে শুধু সেই ভাবনা ভিড় করে।
আমরা ১৬ জানুয়ারি জাহাজ নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। পথে শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর হয়ে মোজাম্বিকের মাপুতো থেকে কয়লা বোঝাই করেছিলাম।
চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার আগে প্রায় ১৪ লাখ টাকার বাজারসদাইয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ এসআর শিপিং (কেএসআরএম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান)। জাহাজে তিন মাসের খাবার ছিল। জলদস্যুরা জাহাজে দুম্বা নিয়ে আসত। গরম পানিতে সেদ্ধ করে লবণ ও কিছু মসলা মিশিয়ে তারা তা খেতো। এগুলো আমাদের জন্য খাওয়ার অযোগ্য ছিল। একপর্যায়ে তারা নিজেদের রান্না করার জন্য লোক নিয়ে আসে জাহাজে। আমরা ইফতারের সময় লেবুসহ নানা ধরনের শরবত পান করতাম। সেহরিতে ভাতের পাশাপাশি দুধ থাকতো। জাহাজে পানি শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়ব—এমন আশঙ্কায় শুধু খাবার পানি সরবরাহ ঠিক রাখতাম আমরা।
এদিকে, গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দেখে জলদস্যুরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়। তাদের সন্দেহ হয়, নিশ্চয়ই নাবিকদের কাছে মুঠোফোন আছে। আহমেদ বলতে থাকে, ‘তোরা এই ছবি পাঠিয়েছিস’ পরে আমরা বলি, ‘মুঠোফোন নয়, ল্যাপটপ দিয়ে ছবি পাঠানো হয়েছে।’ পরে ল্যাপটপ কেড়ে নেয় জলদস্যুরা।
জলদস্যুদের ভিডিও করার বর্ণনা দিয়ে মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, মুক্তি পাওয়ার দুই দিন আগে হঠাৎ আহমেদ এসে সবাইকে ডেকে নিয়ে দাঁড়াতে বলে। সে আমাদের ভিডিও করতে শুরু করে। তার কথা অনুযায়ী, আমি নাবিকদের নাম জিজ্ঞাসা করে পরিচয় করে দিই। শুনেছি, এই ভিডিও তারা কেএসআরএম গ্রুপের কাছে পাঠিয়েছে। আমরা যে সুস্থ আছি, তা দেখতে চেয়েছে কেএসআরএম গ্রুপ। আমাদের মনে তখন আশার সঞ্চার হয়। এর দুদিন পর আবার সব নাবিককে ডেকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখে জলদস্যুরা। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দেখি, ছোট আকারের একটি উড়োজাহাজ আসছে। অদূরে দুটি যুদ্ধজাহাজ। আমরা ভয় পেয়ে যাই। কারণ, তখন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ৬৫ জন জলদস্যু। তাদের কাছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র আছে।
জলদস্যুদের নির্দেশে এমভি আবদুল্লাহর নোঙর তুলে পেছনের দিকে সরিয়ে নিতে থাকি। জাহাজ পেছনের দিকে সরিয়ে নেওয়া হতে থাকে। একপর্যায়ে দেখতে পাই, রাতে তীর থেকে জাহাজের দিকে আলো ফেলে ইশারা দেওয়া হচ্ছে। জলদস্যুদের নির্দেশে জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়। এ সময় পাঁচটি স্পিডবোটে করে সব জলদস্যু অস্ত্রসহ জাহাজ থেকে নেমে যায়। তখন সোমালিয়ার সময় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিট অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল প্রথম প্রহর।
জলদস্যুরা নেমে যাওয়ার পর জাহাজটি ঘুরিয়ে সোমালিয়া উপকূল ত্যাগ করতে শুরু করি। সবাই পরিবার ও স্বজনদের কাছে মুক্তির বার্তা দিতে ধাকে। এ সময় সবার মধ্যে জীবন ফিরে পাওয়ার আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। রাতের বেলায় জাহাজ চলছে। দুই পাশে তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীতে থাকা চিকিৎসকেরা আমাদের সব নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। স্প্যানিশ নৌবাহিনীর একজন নারী চিকিৎসক আমাকে বলেন, ‘সব নাবিক সুস্থ আছেন।’
তিনি বলেন, আমরা জলদস্যুদের হাত থেকে এত দ্রুত মুক্তি পাব তা কল্পনাও করিনি। সোমালিয়ার উপকূল থেকে জিম্মি জাহাজের এক মাসের মধ্যে মুক্তি পাওয়ার ঘটনার নজির খুব একটা নেই।
জিম্মিদশার পর থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দপ্তর সার্বক্ষণিক আমাদের জাহাজের অবস্থানের ওপর নজর রেখেছে। তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সব সময় আমাদের পাশেই ছিল।
এমভি আব্দুল্লাহর বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবারও জাহাজটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ছিল। তবে বুধবার সেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রম করবে। সে ক্ষেত্রে ২২ এপ্রিল দুপুরের মধ্যে জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাতে পারে।
এই মুক্তির জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা সহযোগিতা না করলে মুক্তি সম্ভব হতো না বলে মনে করেন ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ।
কাফি

জাতীয়
দেশে আবারও কমল জ্বালানি তেলের দাম

দেশের বাজারে আবারও জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। জুন মাসের জন্য প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ২ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেনের দাম লিটারে ৩ টাকা কমানো হয়েছে। এই নতুন দাম আগামীকাল, ১ জুন থেকে কার্যকর হবে।
শনিবার (৩১ মে) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন দরের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে:
- প্রতি লিটার ডিজেল ১০৪ টাকা থেকে কমিয়ে ১০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
- পেট্রলের দাম প্রতি লিটার ১২১ টাকা থেকে কমিয়ে ১১৮ টাকা করা হয়েছে।
- অকটেনের দাম ১২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১২২ টাকা করা হয়েছে।
- কেরোসিনের নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৪ টাকা।
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি শুরু করেছে সরকার। সে অনুযায়ী প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়।
এর আগে মে মাসে জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১ টাকা কমেছিল। আর এপ্রিলে পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল।
জাতীয়
গরুর বুদ্ধি অনেক মানুষের চেয়ে বেশি: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মন্তব্য করেছেন গরুর যে বুদ্ধি আছে, তা অনেক মানুষের মধ্যেও নেই। তিনি এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন যে, গরু-ছাগল তামাক পাতা খায় না, অথচ অনেক মানুষ এর ক্ষতিকর প্রভাব জেনেও তামাক সেবন করে।
শনিবার (৩১ মে) বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “আমাদের দেশে পুরুষের সিগারেট খাওয়াকে স্বাভাবিক করে ফেলা হয়েছে। বড়দের সামনে এটাকে বেয়াদবি ধরা হয়। বর্তমানে ই-সিগারেটটা তো বৈধ করে ফেলা হয়েছে। এমনভাবে উপস্থাপন করে, যেন বাংলাদেশ সরকার তামাক কোম্পানির টাকায় চলে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটা ভুল তথ্য। আমাদের সরকার জনগণের টাকায় চলে।”
এসময় তরুণদের প্রশংসা করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, “যেই তরুণরা এত বড় সরকার হটিয়েছে তাদের টার্গেট করে তামাক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ব্যবসা করবে, এটা হবে না। আমি আশা করি, আমাদের তরুণেরা তামাক কোম্পানির এই ধ্বংসযজ্ঞ রুখে দেবে।”
তিনি আরও বলেন, এই তামাক কোম্পানিগুলো তামাক চাষের জন্য নদীর পাড় বেছে নেয়, যার ফলে মাছের প্রজনন কমে যাচ্ছে। গরুপালনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং মানুষের প্রজননও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জাতীয়
বাংলাদেশের আকাশে চক্কর দিলো ভারতীয় ৪ ড্রোন

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে ফের বাংলাদেশের আকাশসীমায় ভারতীয় ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। শুক্রবার (৩০ মে) রাত ৮টার দিকে ওই সীমান্তে বাংলাদেশের ৫০০ মিটার অভ্যন্তরে চারটি ড্রোন উড়তে দেখা যায়।
ওই সীমান্তের দায়িত্বে থাকা জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুর রহমান এক ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে বিজিবির আর কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, ভারতের আসাম রাজ্যের কাকড়িপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের আওতাধীন বিএসএফ সদস্যরা শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চারটি ড্রোন পাঠায়। রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা গ্রামের আকাশে এসব ড্রোন প্রায় আধঘণ্টা ধরে চক্কর দেয়। বিএসএফ নজরদারি করতে এবং বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে এসব ড্রোন ওড়াচ্ছে। এর আগে গত ২৭ মে একই সীমান্তে বাংলাদেশের আকাশসীমায় ড্রোন ওড়ায় বিএসএফ।
বিজিবি সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত সোয়া ৮টা থেকে পৌনে ৯টা পর্যন্ত ৩০ মিনিট ধরে সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার ১০৬৭ (১ এস)-এর কাছে বাংলাদেশের ৫০০ মিটার অভ্যন্তরে চারটি ভারতীয় ড্রোন চক্কর দেয়। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা অস্বীকার করে।
সূত্র আরও জানায়, বিএসএফ ছাড়া এসব ড্রোন অন্য কারও ওড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ তারা সীমান্তের ২০০ গজ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। তাদের নজর এড়িয়ে সাধারণ মানুষের এসব ড্রোন ওড়ানোর সুযোগ নেই। কিন্তু বিএসএফ দায় স্বীকার করে না।
রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া বলেন, ২৭ মে বড়াইবাড়ী সীমান্তের ১০৬৭ মেইন পিলার দিয়ে আসামের ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বিএসএফ কর্তৃক পুশ ইন করার পর থেকে ভারত বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে নজরদারি করার চেষ্টা করছে। সেদিনও তারা বাংলাদেশের সীমানায় ড্রোন পাঠিয়েছিল। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশের বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা গ্রামের আকাশে ভারতের ৪-৫টি ড্রোন উড়ছিল। ড্রোনগুলো বড়াইবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের কাছেও এসেছিল।
‘ভারতের এমন আচরণের নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত বৈরী আচরণ করছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এর প্রতিকার চাই’, প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন এই ইউপি সদস্য।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, বৈধ অনুমতি ছাড়া কোনও রাষ্ট্র অন্য কোনও রাষ্ট্রের জল, স্থল কিংবা আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সীমান্তে অস্ত্র বা প্রযুক্তি ব্যবহারে জাতিসংঘের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ভারত বাংলাদেশের আকাশসীমায় এভাবে ড্রোন ওড়াতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ভারতের এসব অপতৎপরতা বন্ধে বাংলাদেশ কূটনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি অকাট্য প্রমাণ সংগ্রহ করে প্রয়োজনে জাতিসংঘে যেতে পারে।
জাতীয়
সন্ধ্যার মধ্যে শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাস সাপ্লাই স্বাভাবিক হবে: উপদেষ্টা

সড়ক পরিবহন, সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, শিল্প মালিকরা কারখানায় যে গ্যাস সংকটের কথা বলে আসছেন তার সত্যতা পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে বিদেশ থেকে এলএনজি দেশে পৌঁছেছে, কিন্তু সমুদ্রের উত্তাল পরিস্থিতির জন্য জাহাজ ল্যান্ড করতে পারছে না। আজ সন্ধ্যার মধ্যে গ্যাস সাপ্লাই স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় টাওয়েল টেক্স লিমিটেড কারখানার গ্যাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, সব এলাকাতেই অবৈধ গ্যাসের সংযোগ রয়েছে। অবৈধ সংযোগের জন্য যেসব তিতাসের কর্মকর্তার দায় রয়েছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পাশাপাশি বড় পরিসরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান চালানো এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে এলএনজি নিয়ে একটি জাহাজ পৌঁছেছে কিন্তু সমুদ্রের উত্তাল আবহাওয়ার জন্য সেটি ডকিং করা যায়নি। এখন সেটি ডকিং হচ্ছে। আশা করছি বিকালের মধ্যেই এর একটি সমাধান হবে।
তিনি টাওয়ার টেক্সটাইল কারখানার মালিককে বলেন এখন আমি দেখেছি গ্যাসের কি অবস্থা আমাকে সন্ধ্যায় আবার জানাবেন এর কোনো উন্নতি হলো কিনা।
টাওয়েল টেক্স লিমিটেড পরিচালক শাহাদাত হোসেন বলেন, চলতি মাসে কারখানায় গ্যাস সংকট টাকার ধারণ করেছে। আমরা ২৪ ঘণ্টা গ্যাস চাচ্ছি না কিন্তু অন্তত ৮ ঘণ্টা গ্যাস দরকার।
এ সময়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, তিতাস গ্যাসের এমডি পারভেজ আহমেদ, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব সাইফুল ইসলাম, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আজিম প্রমুখ।
জাতীয়
ফিরতি ঈদযাত্রা: ১০ জুনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু

ঈদুল আজহা শেষে ঘরমুখো মানুষের ফেরার সুবিধার্থে আন্তঃনগর ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করছে বাংলাদেশে রেলওয়ে। আজ বিক্রি করা হবে আগামী ১০ জুনের ট্রেনের টিকিট।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ৮টায় বিক্রি শুরু হবে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট। দুপুর ২টায় বিক্রি শুরু হবে পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
ঈদ উপলক্ষ্যে রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে জানা গেছে, আন্তঃনগর ট্রেনের ৯ জুনের আসনের টিকিট বিক্রি বিক্রি হয়েছে ৩০ মে। এছাড়া ১১ জুনের আসনের টিকিট বিক্রি হবে ১ জুন; ১২ জুনের আসনের টিকিট বিক্রি হবে ২ জুন; ১৩ জুনের আসনের টিকিট বিক্রি হবে ৩ জুন; ১৪ জুনের আসনের টিকিট বিক্রি হবে ৪ জুন এবং ১৫ জুনের আসনের টিকিট বিক্রি হবে ৫ জুন।
আরও জানা গেছে, ঈদের পরে ৭ দিনের ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। এসময় কেনা টিকিটগুলো যাত্রীরা রেলওয়েকে ফেরত দিতে পারবেন না। প্রতিজন টিকিটপ্রত্যাশী ৪টি আসনের টিকিট একবার একসঙ্গে কিনতে পারবেন। একটির বেশি আসনের টিকিট কিনলে সহযাত্রীদের নাম টিকিট কেনার সময় লিখতে হবে।