আন্তর্জাতিক
কলম্বিয়ায় সাধারণ মানুষকে গোসল না করার আহ্বান

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতার সাধারণ মানুষকে গোসল না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে জলাধারের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বোগোতার মেয়র কার্লোস ফার্নান্দো গালান এমন আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া যুগল ও দম্পতিদের একসঙ্গে গোসল করতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) পানি সরবরাহ ব্যবস্থা থেকে কলম্বিয়ার রাজধানীর বেশিরভাগ অঞ্চল বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা এল নিনোর প্রভাবে কলম্বিয়ায় খরা চলছে। যার প্রভাব পড়েছে জলাধারগুলোতে।
এই জলাধারগুলো থেকেই সাধারণ মানুষের কাছে পানি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় এগুলো শুকাতে শুকাতে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে এখন পানির সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গোসল না করার পরামর্শ দিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলেছেন, যদি রোববার অথবা সপ্তাহের যে কোনো দিন আপনি বাড়ি থেকে বের না হন, এটির সুযোগ নিন এবং গোসল করবেন না।
এল নিনোর প্রভাবে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে বৃষ্টিপাত কম হয়। এই এল নিনোর কারণে এ বছর এমন খরা দেখা দিয়েছে যে, ওই অঞ্চলের প্রশাসকদের জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে।
কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতা আন্দেস পর্বতমালায় অবস্থিত। যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৬০০ মিটার উঁচু। বোগোতাতে সাধারণত বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
কিন্তু তা সত্ত্বেও বর্তমানের গরম আবহাওয়ার কারণে বোগোতার আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে দাবানল দেখা দিয়েছে। এসব দাবানলের ধোঁয়ার কারণে সাধারণ মানুষের দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এসবের মধ্যেই এখন আবার জলাধারগুলোর পানি কমে গেছে।
দেশটির রাজধানীর মোট চাহিদার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ করা হয় চিনগাজা জলাধার থেকে। বর্তমানে এই জলাধারে ধারণ ক্ষমতার মাত্র ১৬ শতাংশ পানি রয়েছে। যা আগে কখনো হয়নি।
বোগোতার পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, রাজধানীতে আর মাত্র ৫৪ দিনের পানি অবশিষ্ট আছে।
পানির সংকটের বিপর্যয় ঠেকাতে বোগোতাকে নয়টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। যেগুলোতে ২৪ ঘণ্টা করে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ভারতীয়দের সকল ভিসা স্থগিত করলো পাকিস্তান

ভারত-শাসিত কাশ্মিরে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে এবং এরই প্রেক্ষিতে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা তথা সমানুপাতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পাকিস্তান।
ইসলামাবাদ তাৎক্ষণিকভাবে ভারতীয় নাগরিকদের দেওয়া সমস্ত ভিসা স্থগিত করেছে। এর পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারতের কিছু কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে। গত মঙ্গলবারের ওই হামলায় একদল বন্দুকধারী পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়, যাতে ২৬ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন।
ঘটনাটিকে গত কয়েক বছরের মধ্যে কাশ্মিরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের স্তর কমিয়ে আনে এবং একাধিক পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে—দুই দেশের মধ্যে চলাচলের প্রধান স্থলপথ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেওয়া এবং ৬০ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণাও রয়েছে।
জবাবে পাকিস্তানও বেশ কিছু পাল্টা কড়া সিদ্ধান্ত নেয়। দেশটি ভারতের সব ফ্লাইটের জন্য পাকিস্তানের আকাশপথ বন্ধ করে দেয়, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য স্থগিত করে। এছাড়া ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনে কর্মরত কূটনীতিকের সংখ্যা ৩০ জনে নামানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় নৌ, বিমান ও সামরিক উপদেষ্টাদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাকিস্তান ছাড়তে বরঅ হয়েছে।
এদিকে কাশ্মিরজুড়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। কয়েকদিন ধরে বন্ধ থাকা স্কুল, দোকানপাট ও ব্যবসা এখন ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে হামলার এই ঘটনার পর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কাশ্মিরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। জম্মু-কাশ্মির ছাত্র সংঘের প্রধান নাসির খুইহামি জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডে একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের মারধরের হুমকি দিয়ে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে।
যদিও এই ভিডিওগুলোর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
এলওসিতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গোলাগুলি

ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে জম্মু-কাশ্মীরের লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি) দুই পক্ষের মধ্যে এই গুলিবিনিময় হয়।
সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রথমে ভারতের কয়েকটি পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি চালায়। জবাবে ভারতের সেনাবাহিনীও গুলি চালিয়েছে।
সূত্রগুলো আরও দাবি করেছে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কার্যকরভাবে জবাব দিয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
মঙ্গলবার ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার কয়েক দিন পর দুই দেশের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটল। ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এই দাবি তীব্রভাবে অস্বীকার করে এবং ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হিসেবেও অভিহিত করেছে।
হামলার পরদিন বুধবার প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিল ও সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত।
ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ বুধবার বেশ কয়েকটি পালটা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। পালটাপালটি এসব পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে যা হয়তো সামরিক সংঘাতে গড়াতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দার।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইসাক দারের সফর স্থগিতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৭-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করতে পারছেন না। পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে সফরের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান পরিস্থিতির কারণে আগামী ২৭-২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করতে পারবেন না মর্মে ঢাকাকে অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় উভয়পক্ষের সম্মতিতে যত দ্রুত সম্ভব ইসাক দার ঢাকা সফর করবেন।
সম্প্রতি ঢাকা সফর করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। তার সফরকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় ১৫ বছর হওয়া পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়। ইসাক দারের সফরকে ঘিরে ঢাকা-ইসলামাবাদ শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইতোমধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং সংস্কৃতি খাতে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই করার প্রস্তুতিও চলছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, আগামী ২৮ এপ্রিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ইসাক দারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা ছিল। ওইদিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খানের ঢাকা সফরের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। ওই সময় ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ডি-৮ সম্মেলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। ১০ বছরের ব্যবধানে ২০২২ সালের জুলাইয়ে সেই হিনা রাব্বানির ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তিনি তখন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু হিনা রাব্বানি ঢাকায় আসেননি।
তার ঢাকা সফর বাতিল হওয়ার কারণ হিসেবে তৎকালীন ঢাকার দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের ভাষ্য ছিল, ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগমুহূর্তে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে পাকিস্তানের পতাকা জুড়ে দিয়ে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করে। এ নিয়ে ওই সময় ঢাকার প্রতিক্রিয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় পাকিস্তান হাইকমিশনকে। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি পাকিস্তান।
এ ছাড়া, ২০২১ সালে পাকিস্তানে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়ার কথা ছিল তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের। কিন্তু শেষ সময়ে তিনি সফরটি বাতিল করেন। তার বদলে বৈঠকে পাঠানো হয় তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনকে। এর বাইরে ২০২২ সালের মার্চে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে ইসলামাবাদে দুই দিনব্যাপী ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনিও সফরে না গিয়ে তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিবকে পাঠান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকতে পারবে না ভারতীয় প্লেন

ভারতশাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। সীমান্ত বন্ধ, কূটনীতিক বহিষ্কারসহ আরও বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি। তার প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।
এখন থেকে পাকিস্তানের আকাশসীমায় কোনো ভারতীয় উড়োজাহাজ প্রবেশ করতে পারবে না। অর্থাৎ, ভারতের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) ভারতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত পানির প্রবাহ ভারতে যদি একতরফাভাবে বন্ধ বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটিকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) জরুরি বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তে সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিল আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি ও দায়িত্ব লঙ্ঘনের শামিল।
এই পানি পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জীবনরেখা উল্লেখ করে এনএসসি জানায়, এই অধিকার রক্ষায় তারা সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। যদি পাকিস্তানের অধিকারের পানি আটকে রাখা বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচিত হবে।
জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে নেওয়া অন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:
– ওয়াঘা সীমান্ত ভারতের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে
– সার্ক ভিসা ছাড়ের আওতায় থাকা ভারতীয় নাগরিকদের ছাড় অবিলম্বে বাতিল
– পাকিস্তানে অবস্থানরত সব ভারতীয়কে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ
– ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা
– ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মী সংখ্যা ৩০ জনে নামিয়ে আনা হচ্ছে
– সব ধরনের বাণিজ্যিক লেনদেন স্থগিত, তৃতীয় দেশের মাধ্যমে যেসব লেনদেন হতো তাও বন্ধ
এনএসসি জানিয়েছে, ভারতের আগ্রাসী আচরণের জবাবে পাকিস্তান পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। তাদের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো ধরনের আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য তৈরি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানিদের ভারত ছাড়তে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলো নয়াদিল্লি

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনার একদিন পর দেশটিতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের অবিলম্বে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লি। বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির (সিসিএস) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগামে হামলার ঘটনার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) বিশেষ ভিসা ছাড় প্রকল্পের আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে আর ভ্রমণ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দিল্লি।
সার্ক ভিসার আওতায় ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশটি থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের পর দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদের বলেছেন, পেহেলগামে হামলার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিরাপত্তা কমিটিকে ব্রিফ করা হয়েছে। বৈঠকে আন্তঃসীমান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মিরে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিষয়ে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত ওই অঞ্চলে অবিরাম কর্মযজ্ঞের মাঝে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা বাতিল, নতুন করে ভিসা বন্ধ, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি বাতিল, ইসলামাবাদ থেকে সামরিক উপদেষ্টাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি পেহেলগামে হামলার ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে ভারতের প্রতি সমর্থন ও সংহতি জানিয়ে যেভাবে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান মিশ্রি। এসব বার্তা সন্ত্রাসবাদের প্রতি বিশ্বের জিরো টলারেন্স নীতিরই প্রতিফলন বলে মনে করছে ভারতের নিরাপত্তা কমিটি।
সিসিএসের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বলেন, পাকিস্তানি নাগরিকদের সার্ক ভিসা ছাড়ের আওতায় ভারতে আর ভ্রমণ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। অতীতে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য জারি করা যে কোনও সার্ক ভিসা বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে এই ভিসার আওতায় ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ত্যাগ করতে হবে।