আন্তর্জাতিক
নিলামে উঠছে চকোলেট নিয়ে লেখা ৪০০ বছরের পুরোনো বই
পর্তুগালে নিলামে উঠছে ৪০০ বছরের পুরোনো একটি দুর্লভ বই ‘আন ডিসকার্সো ডেল চকোলেট’। ধারণা করা হয় বইটি শুধু চকোলেট নিয়ে লেখা পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো বই।
১৬২৪ সালে সেভিলে মুদ্রিত এই মূল্যবান বইটি লিখেছেন স্প্যানিশ ডাক্তার এবং অ্যাকাডেমিক সান্তিয়াগো ডি ভালভার্দে টুরিসেস। বইটির মাত্র তিনটি কপির অস্তিত্ব আছে, যার মধ্যে একটি নিলামে উঠছে। নিলাম শুরু হবে ২ হাজার ইউরো থেকে।
পর্তুগালের পাবলিকো সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে অ্যানো অকশন হাউসের পরামর্শক ফ্রান্সিসকো ব্রিটো জানান, এই বইয়ের বাকি দুটি কপির একটি মাদ্রিদের জাতীয় গ্রন্থাগারে এবং অন্যটি ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা আছে।
‘আন ডিসকার্সো ডেল চকোলেট’-এ চকোলেট নিয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান, ব্যবহারিক পরামর্শ, রেসিপি এবং সাংস্কৃতিক ভাষ্যের সংমিশ্রণ রয়েছে। পাঁচটি অংশে বিভক্ত, বইটি চকোলেটের বহুমুখী প্রকৃতি এবং মানবদেহে এর প্রভাবগুলোও আলোচনা করে।
চকলেটের ইতিহাস
টুরিস চকোলেটের ‘গরম, আর্দ্র এবং চিটচিটে’ প্রকৃতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, তার মতে এটি বিরক্তি এবং ক্রোধের কারণ হতে পারে।
চকো-লোর: চকোলেটের একটি তিক্ত-মিষ্টি ইতিহাস
প্রায় ৫,৩০০ বছর আগে বর্তমান দক্ষিণ-পূর্ব ইকুয়েডরের জামোরা-চিনচিপ প্রদেশে মায়ো-চিনচিপ সংস্কৃতি দ্বারা কোকো বীজ চাষ করা শুরু হয়েছিল। পরে এই প্রথা মেসো-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে। ওলমেকস, মায়া এবং অ্যাজটেকদের মতো মধ্য আমেরিকার আদিবাসীরা কোকো গাছকে পবিত্র হিসেবে শ্রদ্ধা করত। তারা এর বীজ দিয়ে ‘জোকোলাটল’ নামে একটি তিক্ত, ফেনাযুক্ত পানীয় তৈরি করতে ব্যবহার করত। নাহুয়াতল ভাষায় যার অর্থ ‘তিক্ত জল’।
অভিজ্ঞরা জানান, যখন হার্নান কর্টেসের নেতৃত্বে স্প্যানিশ এক্সপ্লোরাররা ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সোনা এবং ধনসম্পদের সন্ধানে আমেরিকাতে পৌঁছায়, তখন তারা এ পানীয়টি আবিষ্কার করে।
অ্যাজটেক সাম্রাজ্যের স্প্যানিশ বিজয়ের পরে, জোকোলাটল ধীরে ধীরে ইউরোপের মানুষদের কাছে পৌঁছায়। স্প্যানিশরা দারুচিনি এবং ভ্যানিলার মতো মশলার পাশাপাশি তিক্ত পানীয়টি মিষ্টি করার জন্য চিনি বা মধু যোগ করেন।
শুরুর দিকে পানীয় হিসাবে খাওয়া হলেও, ১৭তম শতাব্দীতে ইউরোপ জুড়ে বিশেষত স্পেন, ইতালি এবং ফ্রান্সে চকোলেট জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
টুরিসের বইটিতে স্পেন এবং নতুন বিশ্ব উভয়ের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে চকোলেট তৈরি ও ব্যবহারের নানা রেসিপি রয়েছে।
তিনি চকোলেটের স্বাদ, রং এবং স্বাদ উন্নত করতে বিশেষত কলেরিক এবং স্যাঙ্গুইন মেজাজযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য অ্যানাটো বীজ যুক্ত করার পরামর্শ দেন, যা আচিওট নামেও পরিচিত।
বইটি ১৯৭৭ সালে মারা যাওয়া পর্তুগিজ সামরিক কর্মকর্তা, লেখক ও প্রত্নতাত্ত্বিক হোসে অগাস্টো কোরেইয়া দে ক্যাম্পোসের থেকে সংগ্রহ করে নিলামে তোলা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতে ৫ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেফতার
অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে অন্তত পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের আন্তর্জাতিক এলাকা থেকে ওই বাংলাদেশিদের গ্রেফতার করেছে আসাম পুলিশ। ভারতের ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে নর্থ ইস্টের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আসামের পুলিশ অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে। এই বাংলাদেশিরা হলেন, হাসি আখতার, শ্রাবণী, সোহাগী খান, সুমি খান ও নীলা আক্তার।
আসাম পুলিশ বলেছে, ওই বাংলাদেশিদের গ্রেফতারের পর তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ জোরদারে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কঠোর অবস্তানে রয়েছে।
একই দিনে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, প্রত্যেক দিন প্রায় ১০ থেকে ২০ বাংলাদেশি নাগরিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তবে সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমরা কঠোর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছি।
এর আগে, মঙ্গলবার আসাম থেকে ১৬ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসামের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সেন্টিনেল আসামের প্রতিবেদনে ওই বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে বলা হয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ১৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আসাম পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী এবং ৫ শিশু রয়েছে।
আসামের পুলিশ বলেছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা বেঙ্গালুরু থেকে আসামের গুয়াহাটি হয়ে দক্ষিণ সালমারার মানকাচরে গিয়েছিলেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা বাংলাদেশি নাগরিক বলে স্বীকার করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেলো চার বাংলাদেশির
সৌদি আরবের মদিনা শহরে গত ২১ ডিসেম্বর ময়লার গাড়িকে পেছন থেকে আরেকটি গাড়ি ধাক্কা দিলে চার বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হন। নিহত চারজনের মধ্যে দুজনের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার।
তারা হলেন – ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার পাইথল গ্রামের বদরুদ্দিন তোতা মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৩৮)। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। অপরজন কুরচাই গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে ইকরাম (২৪)। তিনি এক সন্তানের বাবা।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি আরও বলেন, নিহতদের মরদেহ আনার প্রক্রিয়া চলছে। তবে কখন বা কবে আসবে, তা এখন বলা যাচ্ছে না।
নিহত শ্রমিক ইকরামের বাবা আবু সাঈদ বলেন, আমার ছেলে ইকরাম এক সন্তানের বাবা। এক বছর আগে সংসারের হাল ধরতে সৌদি আরবের মদিনায় গিয়েছিল সে। সেখানে ইকরাম রাস্তা ক্লিনারের কাজ করত। ঘটনার দিন সকালে কাজ করে ময়লার গাড়িতে করে ৮/১০ জনকে নিজ বাসায় ফিরছিল। ফেরার পথে পেছন থেকে অন্য গাড়ি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার ছেলে ইকরামসহ ৪ জন মারা যায়। এসময় আহত হয় আরও দুজন। চারজনের একজন আমার ছেলে ইকরাম। আরেকজন সুমন মিয়া পাইথল গ্রামের বাসিন্দা। অপর দুইজনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা বলে জানতে পারছি।
তিনি আরও বলেন, ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। ছেলের মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের স্ত্রী রুনা শোকে পাথর হয়ে গেছে। কারও সঙ্গে কথা বলছে না। আমার ছেলের দুই বছরের এক সন্তান রয়েছে। সে শুধু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। মরদেহ আনার জন্য কাগজপত্র তৈরি করছেন বলেও জানান তিনি।
নিহত ইকরামের বড় বোন শাহিনুর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি ঢাকায় থাকি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে এসেছি। আমার ভাই ওই কাজে বের হওয়ার সময় সবার সঙ্গে কথা বলেছিলে, কে কেমন আছে জানতে চেয়েছিল সে। আমার সেই ভাই কথা বলার কয়েক ঘণ্টা পরেই মারা গেছে। ভাই আর আমাদের সঙ্গে কথা বলবে না।
পাইথল গ্রামের নিহত সুমনের চাচা চাচা শাহিন মিয়া বলেন, সুমন এক যুগ ধরে সৌদি আরবের মদিনায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করে আসছিল। গত দুই বছর আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল। এভাবে তার মৃত্যু পরিবারের কেউ মেনে নিতে পারছে না। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। স্ত্রী সন্তানরা মরদেহের অপেক্ষায় আছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
টায়ারে সমস্যা থাকায় ৭ লাখ গাড়ি ফিরিয়ে নিয়েছে টেসলা
টায়ারে সমস্যা থাকার কারণে প্রায় সাত লাখ বিদ্যুচ্চালিত (ইভি) গাড়ি ফিরিয়ে নিয়েছে আমেরিকার গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলা।
কোম্পানিটি জানায়, টায়ার প্রেসার মনিটরিং সিস্টেমের সতর্কতা বাতি গাড়ি চালানোর সময় নাও জ্বলতে পারে ও কম টায়ারের চাপ সম্পর্কে চালককে সতর্ক করতেও ব্যর্থ হতে পারে। ফলে রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় বাড়তে পারে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। তাই মডেল ৩, মডেল ওয়াই ও সাইবারট্রাক গাড়িকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্বাই নিউজ জানায়, টেসলা বিনামূল্যে সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে সমস্যাটি সমাধান করবে।
২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এই ত্রুটিযুক্ত গাড়ির মালিকদের জানিয়ে চিঠি পাঠানোর কথা বলেছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটি। এবারই প্রথম নয়, বছরজুড়েই বেশ কয়েকবার বিভিন্ন মডেলের গাড়ি ফিরিয়ে নিয়েছে টেসলা। চলতি বছরের জুলাইয়ে গাড়ির হুড বা বনেটে সমস্যার কারণে ১৮ লাখ গাড়ি তুলে নেওয়া হয়।
টেসলা এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২২ লাখ গাড়ি প্রত্যাহার করে। গাড়ির যন্ত্র প্যানেলের কিছু সতর্কতা বাতি আকারে খুব ছোট থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কাজাখস্তানে যাত্রীবাহী প্লেন বিধ্বস্ত, ৩০ জনের বেশি নিহত
কাজাখস্তানের আকতাউ শহরের কাছে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সবশেষ ৩০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে। আরও হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশটির জরুরি পরিষেবা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সকালে ৬৭ আরোহী নিয়ে উড্ডয়ন করা বিমানটিতে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। মরদেহগুলো উদ্ধার করা হচ্ছে। অনেকে বেঁচে আছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
রাশিয়ার বিমান চলাচল পর্যবেক্ষণ সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, পাখির ঝাঁকের সঙ্গে ধাক্কার পর পাইলট জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
আকতাউ শহরটি আজারবাইজান ও রাশিয়া থেকে কাস্পিয়ান সাগরের বিপরীত তীরে অবস্থিত। কাজাখস্তানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কী ঘটেছে তা তদন্তের জন্য একটি সরকারি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ তার রাশিয়া সফর সংক্ষিপ্ত করেছেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, দুর্ভাগ্যবশত আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ সেন্ট পিটার্সবার্গ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন (যেখানে একটি শীর্ষ সম্মেলন ছিল)। পুতিন এরই মধ্যে তাকে ফোন করেছেন এবং বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই বিমান দুর্ঘটনায় যারা তাদের স্বজন ও বন্ধুদের হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমরা গভীর সহানুভূতি জানাই এবং যারা বেঁচে আছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
ক্রেমলিন সমর্থিত চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভ এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করে বলেন, যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। তিনিও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
টানা দুই মাস ধরে শূন্যের নিচে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি
শূন্যের নিচে নেমে এসেছে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতির হার। গতমাসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার মাইনাস ১ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এর আগের মাস অর্থাৎ অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল মাইনাস শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। এর ফলে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার পথে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে দেশটি।
নভেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কার খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল শূন্য শতাংশ, অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় খাদ্যের দাম বাড়েনি। অক্টোবর মাসে যা ছিল ১ দশমিক ৩ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল মাইনাস ৩ দশমিক ১ শতাংশ, আগের মাস অক্টোবরে যা ছিল মাইনাস ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এই সময়ে শ্রীলঙ্কার মুদ্রা রুপির দরবৃদ্ধির সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কমানো হয়েছে, তার হাত ধরে মূল্যস্ফীতির এই অধোগতি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসেও মূল্যস্ফীতির হার ঋণাত্মক থাকতে পারে। এরপর গাড়ি আমদানি শুরু হলে বিদেশি মুদ্রার চাহিদা বাড়তে পারে। তখন মূল্যস্ফীতির হার আবার শূন্যের ওপরে যাবে, যদিও তা ৪ শতাংশের ওপরে যাবে না।
২০২২ সালে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে দেউলিয়া হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এরপর ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ২৯০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দেশটি।
রয়টার্সের সংবাদে বিশ্বব্যাংকের সূত্রে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হতে পারে ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ শতাংশ। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী বছর বৃদ্ধির হার আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। টানা তিন বছর ধরে মারাত্মক বিপর্যয়ের পর ২০২৪ সালের শেষের দিক থেকে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে উন্নতির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি ওই পূর্বাভাসও হার মানিয়েছে।
২০২২ সালে ঋণখেলাপি হয়ে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে জোর দেয়। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, তার ফল পেতে শুরু করেছে দেশটি। টানা পাঁচ প্রান্তিকে অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার পর ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। তখন প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৬ শতাংশ। সে বছরের শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। টানা দুই বছর অর্থনৈতিক সংকোচনের পর চলতি বছর সামগ্রিকভাবে দেশটি প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরবে বলে আশা করছেন অর্থনীতিবিদেরা।
ইতিমধ্যে বেশ কিছু কল্যাণকর প্রকল্প গ্রহণ করে দেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছে শ্রীলঙ্কার বামপন্থী সরকার। কাঠামোগত সংস্কার ও কল্যাণকর প্রকল্প প্রণয়নের পাশাপাশি শিল্পায়নেও জোর দিয়েছে অনূঢ়া কুমার দিশানায়েকের নেতৃত্বাধীন সরকার। দেশটির ছোট–বড় উদ্যোগকে ঋণের দায়মুক্ত করতে সরকার বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের উৎপাদন ও নতুন উদ্যোগে আগ্রহী করতে সরকারের আর্থিক সহযোগিতা বাড়ানো হয়েছে।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কয়েক দফায় শ্রীলঙ্কায় গাড়ি ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের আমদানি আবার শুরু হবে। এতে বেশ কিছু শিল্পের পুনরায় চাঙা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই শিল্পে বিনিয়োগের জন্য ইতিমধ্যে ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার যৌথ বাণিজ্যিক ফোরাম বিশেষ উৎসাহ দেখিয়েছে। বামপন্থীদের এই শিল্পায়ননীতির অনেকটাই স্বনির্ভরতার ধাঁচে গড়ে তোলা হচ্ছে। এই সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারে তেমন টানও পড়বে না বলে মনে করা হচ্ছে।
কাফি