শিল্প-বাণিজ্য
টানা ১৫ মাস পর ফেব্রুয়ারিতে বেড়েছে আমদানি

টানা ১৫ মাস ধরে কমার পর বাড়ল আমদানি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ৫২৫ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। গত বছরের একই মাসের তুলনায় যা ৬২ কোটি ডলার বা ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি। গত জানুয়ারি পর্যন্ত আগের ১৫ মাস প্রতি মাসের আমদানি ব্যয় আগের বছরের একই মাসের চেয়ে কম ছিল।
ডলার সংকটের কারণে ২০২২ সালের জুলাই থেকে আমদানি ব্যয় কমাতে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিভিন্ন পণ্যে শতভাগ পর্যন্ত এলসি মার্জিন আরোপ করা হয়। এই মার্জিনের পুরোটাই নিজস্ব উৎস থেকে দিতে বলা হয়। আবার বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক বাড়ানো হয়। প্রতিটি বড় এলসি তদারকি শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে ডলার সংস্থান করা ছাড়া ঋণপত্র না খুলতে বলা হয়। এসব উদ্যোগের প্রভাবে ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে আমদানি কমতে শুরু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে আমদানি বাড়লেও চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) কম রয়েছে ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ সময়ে মোট ৪ হাজার ৪১০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এ সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি, ভোগ্যপণ্যসহ বেশির ভাগ পণ্যের আমদানি কমেছে। নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা শুরুর পর গত অর্থবছর (২০২২-২৩) মোট ৭ হাজার ৫০৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়। আমদানিতে প্রতি মাসে গড়ে ব্যয় হয় ৬২৫ কোটি ডলার। আর বিধিনিষেধের আগে ২০২১-২২ অর্থবছর মোট আমদানি হয়েছিল ৮ হাজার ৯১৬ কোটি ডলার। প্রতি মাসে গড় ব্যয় ছিল ৭৪৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ডলারের ওপর চাপ কমাতে আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে বিলাসী পণ্য নিয়ন্ত্রণ করা ছিল প্রধান লক্ষ্য। এরই মধ্যে ডলারের ওপর চাপ একটু করে কমতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূলধন পণ্যের এলসি ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ কমে ৭৩০ কোটি ডলারে নেমেছে। মধ্যবর্তী পণ্যের আমদানি ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ কমে নেমেছে ২ হাজার ৬৬৮ কোটি ডলারে। তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট পণ্যের আমদানি ১০ দশমিক ১০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯১ কোটি ডলারে নেমেছে। এ ছাড়া ভোগ্যপণ্যের আমদানি ৩৫ শতাংশ কমে ১১৫ কোটি ডলারে নেমেছে। ভোক্তা পণ্যের মধ্যে চিনি আমদানি বেড়েছে ২৯ দশমিক ৫০ শতাংশ, মসলা প্রায় ১৮ শতাংশ এবং দুধ ও ক্রিম ৬ শতাংশ। তবে ডাল ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ভোজ্য তেল ৩১ দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে। সামগ্রিকভাবে ভোগ্যপণ্যের আমদানি সাড়ে ১৬ শতাংশ কমে ৩০৭ কোটি ডলারে নেমেছে।
ব্যাংকাররা জানান, আমদানি কমায় বাণিজ্য ঘাটতি অনেক কমেছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবে ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। তবে এখনকার মূল সংকট আর্থিক হিসাব নিয়ে। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর্থিক হিসাবে ৮ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মূলত নতুন করে ঋণ ও বিনিয়োগ কমা এবং পুরাতন ঋণ পরিশোধের চাপের কারণে এমন হয়েছে। এতে করে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ৪ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়েছে।
করোনার মধ্যে আমদানি চাহিদা কমলেও রপ্তানি বাড়ছিল। আবার ওই সময়ে হুন্ডি প্রায় বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেকর্ড রেমিট্যান্স আসে। বৈদেশিক ঋণও অনেক বেড়েছিল। সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হুহু করে বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ায়। তবে করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়। বাজার সামলাতে ওই বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ২৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে রিজার্ভ কমে এখন ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আর ওই সময়ে ৮৪ থেকে ৮৫ টাকায় থাকা ডলারের দর বেড়ে ১২৪ থেকে ১২৫ টাকায় উঠেছিল। অবশ্য সম্প্রতি ডলারের দর কমে ১১৫ থেকে ১১৬ টাকায় নেমেছে।
এসএম

শিল্প-বাণিজ্য
ঈদে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে হিলি স্থলবন্দর

ঈদুল আযহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি। তবে এই সময়ে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতে বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য লোড-আনলোড কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়া হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রমও স্বাভাবিক থাকবে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন সই করা এক চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫ জুন বৃহস্পতিবার থেকে ১৪জুন শনিবার পর্যন্ত টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন রোববার সকাল থেকে যথারীতি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে।
হিলি ইমিগ্রেশন ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও দু’দেশের বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
অর্থনীতি
১১ মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে— এই ১১ মাসে দেশের মোট পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি মার্কিন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ রিপোর্ট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত মে মাসেই পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৭৪ কোটি ডলারের, যা গত বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এটি চলতি অর্থবছরের মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানির রেকর্ড। এর মধ্যে, সবচেয়ে বড় সুখবর এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। মে মাসে এককভাবে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৯২ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস মিলিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৫৬ কোটি ডলারে— পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।
মূলত, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। শিল্প মালিকরা বলছেন, নতুন বাজার খোঁজা, অর্ডার পণ্যের বৈচিত্র্য এবং উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে এ সাফল্য সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে, ইপিবির বিশ্লেষণ বলছে, তৈরি পোশাক ছাড়াও মে মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, প্রকৌশল পণ্য এবং প্লাস্টিক সামগ্রীর রপ্তানি বেড়েছে। তবে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
শিল্প-বাণিজ্য
বাজেটে বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব অর্জিত হওয়া দুরূহ: বিসিআই প্রেসিডেন্ট

প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসাবান্ধব হওয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব লক্ষ্য অর্জিত হওয়া দুরূহ বলে জানিয়েছেন বিসিআই প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
পাঠানো বক্তব্যে তিনি বলেন, বাজেটে রেভিনিউ আহরনকে প্রধান টার্গেট করা হয়েছে। এ বাজেটে কর্পোরেট কর ও ব্যক্তিখাতের করের উপর অতিমাত্রায় নির্ভর করা হয়েছে। পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারের রাজস্ব আয় কম। কিন্তু এটা যে বাড়বে, সে রকম কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে নেই। করজাল বাড়ানোর কোনো পদক্ষেপ আমরা এ বাজেটে দেখছি না। বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসাবান্ধব হওয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব লক্ষ্য অর্জিত হওয়া দুরূহ।
তিনি আরও বলেন, উৎপাদন খাতের বড় শিল্পের কাঁচামালের ভ্যাট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়বে। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কিভাবে কমাবে আমি ঠিক জানি না। সবকিছু আইএমএফের ফরমুলা অনুযায়ী করা হয়েছে। আইএমএফের ফরমুলা ধরলে তো ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতির মুখে পড়বে। এমনিতেই খরচ অনেক বেশি, জ্বালানির খরচ বেশি, ব্যাংক ঋণের সুদ অনেক বেশি, জ্বালানির পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। এতসব সংকেটর মধ্যেও যেসব ইন্ডাস্ট্রি মোটামুটি প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে সেখানেও শুল্ক ও কর বাড়ানো হয়েছে। গার্মেন্টস সহ রপ্তানিমুখি শিল্পের নগদ প্রণোদনা আস্তে আস্তে কমিয়ে আনা হচ্ছে এর ফলে রপ্তানি খাত প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে। আমরা নগদ প্রণোদনার পরিবর্তে কোন ফিসক্যান সাপোর্টও বাজেটে দেখছি না। কটন সুতা ও ম্যান মেইড ফাইবার এর উপর মূসক উৎপাদন পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫ টাকা করা হয়েছে। বর্তমানে জ্বালানী সংকটের মধ্যে দেশীয় স্পিনিং মিলসমূহে এই মূসক বৃদ্ধি করলে দেশি টেক্সটাইল ক্ষতির মুখে পড়বে এবং সুতা আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে। স্টিল শিল্পের কাঁচামালের উপর কর ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে ও সিমেন্ট শিল্পে কাঁচামালে মূসক ৫ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে যা দেশের আবাসন ও নির্মান শিল্প খাত খরচ বেড়ে যাবে।
আনোয়ার-উল আলম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা যা দেশের শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে বিশেষ করে সিএমএসএমই খাত বেশি ক্ষতির মূখে পড়বে। আমরা এই টার্নওভার কর বাড়ানোর বিষয় পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করছি। ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের বিক্রির উপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে যা বিশেষ করে উদীয়মান এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুতর আঘাত হবে, যা ৫ শতাংশ এ কমিয়ে আনা উচিত।
বিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষে ১০০ কোটি, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১২৫ কোটি টাকার তহবিল বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যা সুধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। এসএমই খাতকে ফরমালাইজেশনের ও ডিজিটাল ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে যা বিসিআই’র প্রস্তাবের প্রতিফলন এ জন্য আমরা অর্থ উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি প্রস্তাব রেখে বলেন, বাজেটে খাত ভিত্তিক বরাদ্দকৃত অর্থ বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, জ্বালানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি যেন যথাযথ ভাবে ও পূর্ণমাত্রায় ব্যবহৃত হয়। বাজেটের বাস্তবায়নকে যেন নিবিড় কমপ্লায়েন্সের মধ্যে নিয়ে আসা হয়। কারণ বাজেট হল প্রয়োজনের সময় ব্যয় হল না বা অর্থ পাওয়া গেল না তাহলে এর সুফল অর্থনীতি ও জনগন পাবেনা।
কাফি
শিল্প-বাণিজ্য
বাজেটকে ইতিবাচক জানিয়ে যা বললো বিজিএমইএ

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এ বাজেটকে লক্ষ্যবিলাসী ধারণা থেকে সরে এসে সামগ্রিক উন্নয়নের বাজেট বলে মন্তব্য করেছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
সোমবার (২ জুন) বাজেটোত্তর এক বিবৃতিতে বিজিএমইএ’র প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাজেটের অনন্য দিক।
বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে পোশাককর্মীসহ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ উপকৃত হবেন। সামাজিক নিরাপত্তাখাতের আওতায় কিছু কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে; এটি ইতিবাচক দিক বলে উল্লেখ করে বিজিএমইএ।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সার্বিক ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামীতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। বিজিএমইএ- এর প্রশাসক বলেন, এটি শিল্পের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ।
মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এলএনজি-এর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রেট্রোলিয়াম ও ডিজেলের আমদানি শুল্কও উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে। আমরা মনে করি, ভোক্তা পর্যায়ে এর সুফল পৌঁছাবে এবং প্রত্যক্ষভাবে শিল্পের উৎপাদন ব্যয় কমবে। সর্বোপরি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
শিল্প-বাণিজ্য
বিসিআইয়ের আয়োজনে ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ফ্রেমওয়ার্ক অব বাংলাদেশ’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) আয়োজনে ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ফ্রেমওয়ার্ক অব বাংলাদেশ’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৭ মে) বিসিআইয়ের বোর্ডরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিসিআইর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)। আলোচক ও ট্রেইনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (পেটেন্ট) মির্জা গোলাম সারোয়ার, উপ-পরিচালক (ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ডিজাইন) সাইদুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মিস তাসলিমা জাহান।
কর্মশালায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সেক্টরের ২১ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও কর্মশালায় বিসিআই পবিচালক মো. শহীদুল ইসলাম নিরু, নাজমুল আনোয়ার ও যেয়াদ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন, এনডিসির পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি দেশের শিল্প খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি মেধাভিত্তিক ও উদ্ভাবননির্ভর হবে। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য এখনই ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস-এর ওপর গুরুত্বারোপ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনি কাঠামো শক্তিশালী করা অত্যন্ত জরুরী।
কর্মশালার দ্বিতীয় ভাগে “ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ফ্রেমওয়ার্ক অব বাংলাদেশ” এর উপর আলোচক মিস তাসলিমা জাহান আইপিআর নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি এলডিসি থেকে উত্তরন হলে আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পেটেন্ট ও আইপিআর নিয়ে কি ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে তা তুলে ধরে বলেন এলডিসি থেকে উত্তরনের পূর্বেই বাংলাদেশকে পেটেন্ট ও আইপিআর নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। জনাব সাইদুজ্জামান বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন প্রোটেকশন অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম নিয়ে এবং জনাব মির্জা গোলাম সারোয়ার ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে পেটেন্টদের ভূমিকা বিষয়ে আলোচনা করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
কর্মশালার শেষ অংশে অংশগ্রহণকারীদের মতামত/ফিডব্যাক নেয়া হয় এবং সকলের নিকট সার্টিফিকেট বিতরন করা হয়। বিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল আলোচকবৃন্দ ও সকল অংশগ্রহণকারীকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানান এবং সকলকে বিসিআই এর বিভিন্ন কর্মসূচীর সাথে যুক্ত থাকার অনুরোধ জানান।
কাফি