শিল্প-বাণিজ্য
টানা ১৫ মাস পর ফেব্রুয়ারিতে বেড়েছে আমদানি

টানা ১৫ মাস ধরে কমার পর বাড়ল আমদানি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ৫২৫ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। গত বছরের একই মাসের তুলনায় যা ৬২ কোটি ডলার বা ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি। গত জানুয়ারি পর্যন্ত আগের ১৫ মাস প্রতি মাসের আমদানি ব্যয় আগের বছরের একই মাসের চেয়ে কম ছিল।
ডলার সংকটের কারণে ২০২২ সালের জুলাই থেকে আমদানি ব্যয় কমাতে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিভিন্ন পণ্যে শতভাগ পর্যন্ত এলসি মার্জিন আরোপ করা হয়। এই মার্জিনের পুরোটাই নিজস্ব উৎস থেকে দিতে বলা হয়। আবার বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক বাড়ানো হয়। প্রতিটি বড় এলসি তদারকি শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে ডলার সংস্থান করা ছাড়া ঋণপত্র না খুলতে বলা হয়। এসব উদ্যোগের প্রভাবে ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে আমদানি কমতে শুরু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে আমদানি বাড়লেও চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) কম রয়েছে ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ সময়ে মোট ৪ হাজার ৪১০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এ সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি, ভোগ্যপণ্যসহ বেশির ভাগ পণ্যের আমদানি কমেছে। নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা শুরুর পর গত অর্থবছর (২০২২-২৩) মোট ৭ হাজার ৫০৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়। আমদানিতে প্রতি মাসে গড়ে ব্যয় হয় ৬২৫ কোটি ডলার। আর বিধিনিষেধের আগে ২০২১-২২ অর্থবছর মোট আমদানি হয়েছিল ৮ হাজার ৯১৬ কোটি ডলার। প্রতি মাসে গড় ব্যয় ছিল ৭৪৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ডলারের ওপর চাপ কমাতে আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে বিলাসী পণ্য নিয়ন্ত্রণ করা ছিল প্রধান লক্ষ্য। এরই মধ্যে ডলারের ওপর চাপ একটু করে কমতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূলধন পণ্যের এলসি ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ কমে ৭৩০ কোটি ডলারে নেমেছে। মধ্যবর্তী পণ্যের আমদানি ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ কমে নেমেছে ২ হাজার ৬৬৮ কোটি ডলারে। তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট পণ্যের আমদানি ১০ দশমিক ১০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯১ কোটি ডলারে নেমেছে। এ ছাড়া ভোগ্যপণ্যের আমদানি ৩৫ শতাংশ কমে ১১৫ কোটি ডলারে নেমেছে। ভোক্তা পণ্যের মধ্যে চিনি আমদানি বেড়েছে ২৯ দশমিক ৫০ শতাংশ, মসলা প্রায় ১৮ শতাংশ এবং দুধ ও ক্রিম ৬ শতাংশ। তবে ডাল ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ভোজ্য তেল ৩১ দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে। সামগ্রিকভাবে ভোগ্যপণ্যের আমদানি সাড়ে ১৬ শতাংশ কমে ৩০৭ কোটি ডলারে নেমেছে।
ব্যাংকাররা জানান, আমদানি কমায় বাণিজ্য ঘাটতি অনেক কমেছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবে ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। তবে এখনকার মূল সংকট আর্থিক হিসাব নিয়ে। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর্থিক হিসাবে ৮ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মূলত নতুন করে ঋণ ও বিনিয়োগ কমা এবং পুরাতন ঋণ পরিশোধের চাপের কারণে এমন হয়েছে। এতে করে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ৪ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়েছে।
করোনার মধ্যে আমদানি চাহিদা কমলেও রপ্তানি বাড়ছিল। আবার ওই সময়ে হুন্ডি প্রায় বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেকর্ড রেমিট্যান্স আসে। বৈদেশিক ঋণও অনেক বেড়েছিল। সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হুহু করে বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ায়। তবে করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়। বাজার সামলাতে ওই বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ২৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে রিজার্ভ কমে এখন ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আর ওই সময়ে ৮৪ থেকে ৮৫ টাকায় থাকা ডলারের দর বেড়ে ১২৪ থেকে ১২৫ টাকায় উঠেছিল। অবশ্য সম্প্রতি ডলারের দর কমে ১১৫ থেকে ১১৬ টাকায় নেমেছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
বিকেএমইএর নির্বাচন ১০ মে, প্রার্থী হতে লাগবে ২ লাখ টাকা

প্রায় এক যুগ পর নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অবশেষে ভোট ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামী ১০ মে সংগঠনটির ৩৫টি পরিচালক পদে ভোট গ্রহণ হবে। এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একজন ব্যবসায়ীকে ২ লাখ টাকায় মনোনয়নপত্র কিনতে হবে।
চলতি মাসের শুরুতে বিকেএমইএর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান সফিউল্লা চৌধুরী। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ৫ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন আগ্রহী ব্যবসায়ীরা। ১৯ এপ্রিল চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন বোর্ড।
বিকেএমইএর পরিচালক পদের মনোনয়ন ফি ২ লাখ টাকা হলেও সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি ও সহসভাপতি পদে আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে নির্বাচিতদের। সভাপতি পদে ৩ লাখ, নির্বাহী সভাপতি পদে ২ লাখ ৭৫ হাজার এবং সহসভাপতি পদের মনোনয়নপত্র কিনতে লাগবে আড়াই লাখ টাকা। সংগঠনটিতে একজন করে সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছাড়া ছয়টি সহসভাপতি পদ রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বিজিএমইএ’র প্রশাসকের মেয়াদ বাড়লো

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়াদ আরও চার মাস বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে তিনি আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত প্রশাসকের দায়িত্বে থাকছেন।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ এ সংক্রান্ত একটি আদেশ দিয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ২০ অক্টোবর এক অফিস আদেশে বিজিএমই-এর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসক হিসেবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানোর চিঠিতে বলা হয়, সংগঠনের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হলেও অনাকাঙ্ক্ষিত বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কার্যক্রম শুরু ও সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না, এমনটা জানিয়ে প্রশাসক মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুই শর্তে প্রশাসকের মেয়াদ চার মাস বাড়িয়েছে মন্ত্রণালয়। শর্ত দুটি হচ্ছে— সংগঠনের সংঘস্মারক ও সংঘবিধি অনুসরণ করে বিজিএমই-এর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন করতে হবে।
এ ছাড়া বর্ধিত মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগে নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
এর আগে বিজিএমই-এর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন-২ শাখা আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছে, ২৪ আগস্ট এস এম মান্নান সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার পর পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলেও সেটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এ ছাড়া তৈরি পোশাকশিল্পের সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে পর্ষদ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। মূলত এসব অভিযোগে পর্ষদ ভেঙে ১২০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে প্রশাসক নিয়োগ করে মন্ত্রণালয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির কাছ থেকে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ চেয়েছে বাংলাদেশ

ভারতে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ চাইছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে সেখান থেকে। এর কারণ হলো বকেয়া পরিশোধ ইস্যু ও শীতে চাহিদা কম থাকা।
বকেয়া পরিশোধে দেরি হওয়ার কারণে ভারতীয় কোম্পানিটি ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে সরবরাহ অর্ধেক করে। এরপর নভেম্বর থেকে একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ থাকে। সে সময় বাংলাদেশও আদানিকে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলেছিল।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধের জন্য আদানিকে মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হচ্ছে এবং এখন কোম্পানিকে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও সরবরাহ পুনরায় শুরু করতে বলা হয়েছে।
বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, আমাদের বর্তমান চাহিদা অনুসারে দ্বিতীয় ইউনিটটি চালুর পরিকল্পনা করেছিল আদানির প্রতিষ্ঠান। তবে উচ্চ কম্পন ও কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন পেমেন্ট করছি। আমরা আরও অর্থ পরিশোধের চেষ্টা করছি। আমাদের উদ্দেশ্য ওভারডিউ কমানো। এখন আদানি নিয়ে বড় কোনো সমস্যা নেই।
ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি গোষ্ঠীর কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এ কেন্দ্রে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে ক্রয় চুক্তি করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারে নির্মিত ওই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর কিনবে বাংলাদেশ। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
ভারত-মায়ানমার থেকে এলো সাড়ে ৩০ হাজার টন চাল

মিয়ানমার ও ভারত থেকে আমদানি করা সাড়ে ৩০ হাজার টন চাল নিয়ে দুইটি জাহাজ ভিড়েছে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরে। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে ২৩ হাজার টন এবং ভারত থেকে সাড়ে ৭ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) জি টু জি ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে কেনা আতপ চাল এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে কেনা চাল বন্দরে এসে পৌঁছায়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা সাড়ে ৮ হাজার এবং ১০ হাজার টনের আরও দুইটি জাহাজ আগামীকাল শনিবার এবং পরদিন রোববার মোংলা বন্দরে পৌঁছাবে।
এর আগে গত বুধবার মিয়ানমার ও ভারত থেকে আমদানি করা চালের দুইটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। ওই দুই জাহাজে আছে ৩৭ হাজার টন চাল। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে ২২ হাজার টন এবং ভারত থেকে ১৫ হাজার টন চাল এসেছে।
তার আগেও বেশ কয়েক দফায় এই দুই দেশ থেকে চাল কিনেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আতঙ্কে নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরা, নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার ৪

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে আতঙ্কে আছেন নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীরা। নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরাও একইভাবে দুশ্চিন্তায়। কারণ, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ধারপাকড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
শপথ গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিবাসন–সংক্রান্ত শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিলসহ নতুন ৪৭টিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের শক্ত হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। নথিপত্রহীন সন্দেহভাজন অভিবাসীদের ব্যাপক মাত্রায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক বাংলাদেশি বলেন, ফুলটন এলাকায় আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। অতর্কিতে সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে আমাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন।
একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। তিনি এ কথা বলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে শপথ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অতিক্রম করে লাখ লাখ অনুপ্রবেশকারী নির্দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সীমান্তে প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করা হবে। তারপর বের করে দেওয়া হবে অপরাধীদের।
ইতিমধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রাখা হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এই আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজন বলেন, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যাঁরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার পথ ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকতেন, সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। সে হিসাবে অভিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যাপক সুযোগ পেয়েছেন। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সেসব নিয়োগ নির্ধারিত হবে। ফলে ছাটাই হতে পারেন অসংখ্য বাংলাদেশি।
সংবিধানের তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশ জারি করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের একটি বিধানও বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এতে এখন থেকে ৩০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানেরা দেশটির নাগরিকত্ব পাবে না। তবে ইতিমধ্যে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ২৪টি রাজ্য ও শহরে মামলা হয়েছে। যেহেতু এটা মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনের বিরুদ্ধে যায়, সে কারণে হাইকোর্ট এটি বাতিল করে দিতে পারে।
খাদিজা মুনতাহা বাংলাদেশিদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। অন্যের ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এই কঠিন সময়ে অহেতুক পুলিশি অথবা অন্য কোনো বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়ানো যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঙালি–অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় যেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যেত, এখন সেখানে লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।