বীমা
স্বদেশ ইসলামী লাইফের সিইওর দায়িত্ব পালন করতে পারবে না ইখতিয়ার
স্বদেশ ইসলামী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীনের নিয়োগ নবায়নে আইডিআরএর না-মঞ্জুরের আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে উচ্চ আদালত। তবে সাবেক সিইও ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ও আদালতের স্থগিতাদেশ’র আগেই কোম্পানির পর্ষদ সভায় নতুন সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে মো. ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীন সিইও পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।
বুধবার (৩ এপ্রিল) এক চিঠিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ)।
চিঠিতে বলা হয়, মো. ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীন কর্তৃক ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে পলিসিহোল্ডারের প্রিমিয়াম জমাকরণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও বিআইনীভাবে ইনসেনটিভ বোনাস গ্রহণের মাধ্যমে বীমা আইন লঙ্ঘন এবং বীমাকারী ও বীমাগ্রহীতার স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করে। ফলে গত বছরের ৩ আগস্ট ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীন এর বিরুদ্ধে বীমা আইন ২০১০ এর ৫০ ধারার ১(খ) উপ-ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তিনি এ পদে কাজ করতে পারবেন না বলে নির্দেশনা জারি করা হয়। সেই সঙ্গে তার পুনঃনিয়োগ প্রস্তাব না-মঞ্জুর করা হয়। তবে আইডিআরএর এ সিদ্ধান্তের বিপরীতে রিট করেন ইখতিয়ার উদ্দিন।
এতে আরও বল হয়, রিটের শুনানিতে স্বদেশ ইসলামী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীনের নিয়োগ নবায়নে আইডিআরএর না-মঞ্জুরের আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে উচ্চ আদালত। তবে সাবেক সিইও ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ও আদালতের স্থগিতাদেশ’র আগেই কোম্পানির পর্ষদ সভায় নতুন সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে মো. ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীন সিইও পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। সেই সঙ্গে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদ একটি চুক্তিভিত্তিক পদ, তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে উক্ত পদে আসীন থাকার সুযোগ নেই বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে, স্বদেশ ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মো. ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় ২০২৩ সলের ৮ জুন। কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মো. ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীন কর্তৃক ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে পলিসিহোল্ডারের প্রিমিয়াম জমাকরণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও বিআইনীভাবে ৬০ লক্ষ ৭০ হাজার সাতশত টাকা ইনসেনটিভ বোনাস গ্রহণ করে। বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ এ টাকা কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে জমা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীন ২৮ হাজার ৭৫ হাজার টাকা কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে জমা করেন এবং তার নিয়োগ নবায়নে আইডিআরএর না-মঞ্জুরের বিপক্ষে রিট করেন।
জানা গেছে, কোম্পানির সিইও পদে ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীনের নিয়োগ নবায়নে আইডিআরএর না-মঞ্জুরের আদেশ হাইকোর্ট কর্তৃক স্থগিতাদেশ প্রদানের পূর্বেই তার মেয়ার শেষ হয়। সেই সঙ্গে কোম্পানির ৪৪তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর এ পদে মো. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লাকে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। এমতাবস্থায়, কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মো. ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীনকে দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে আইডিআরএ।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পালানোর পথে আসাদের প্লেন বিধ্বস্তের গুজব
ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। কিন্তু ‘সিরিয়ান এয়ার ৯২১৮ ফ্লাইটটি’ উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় অনেকে বলছেন বিদ্রোহীদের গুলিতে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে কোনো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে এতথ্য নিশ্চিত বা যাচাই করতে পারেনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা যখন রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করছেন, সে সময় দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে একটি ইলিউশিন৭৫ উড়োজাহাজ আকাশে উড়াল দেয়।
‘সিরিয়ান এয়ার ৯২১৮ ফ্লাইটটি’ দামেস্ক থেকে উড়াল দেওয়া সর্বশেষ ফ্লাইট বলে জানিয়েছে ফ্লাইটরাডার ২৪। ফ্লাইটরাডার ২৪–এর তথ্যানুযায়ী, দামেস্ক থেকে ছাড়া ইলিউশিন৭৫ উড়োজাহাজটি প্রথমে সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে উড়ে যায়। কিন্তু সেখান থেকে পরে ইউ–টার্ন নিয়ে উড়ে যেতে শুরু করে এবং কয়েক মিনিট পর সেটি মানচিত্র থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। অদৃশ্য হওয়ার সময় উড়োজাহাজটি হোমসের ওপর ছিল বলে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে।
ওই উড়োজাহাজে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ছিলেন কি না, রয়টার্স তা নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছিলেন, রোববার স্থানীয় সময় ভোরে উড়োজাহাজে দামেস্ক ছেড়েছেন আসাদ। তখন তারা বলেছিলেন, আসাদের গন্তব্যে কোথায়, তা তারা জানেন না।
দামেস্ক বিমানবন্দর এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আসাদ সিরিয়া ছেড়ে গেছেন বলে জানানো হয়েছে।
বিদ্রোহীরা বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঠিক আগে বাশার আল-আসাদকে বহনকারী উড়োজাহাজটি উড্ডয়ন করে। সূত্রের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্রোহীদের গুলিতে আসাদের প্লেন বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে স্বাধীনভাবে হিন্দুস্তান টাইমস খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বেশকিছু ভিডিওতে একটি প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। এটি আসাদকে বহনকারী প্লেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে এই দাবিগুলো কোনো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে নিশ্চিত বা যাচাই করতে পারেনি।
এর আগে, বিদ্রোহীরা উত্তর সিরিয়ার বড় অংশ দখল করার পরপরই বাশার আল-আসাদের পরিবার রাশিয়ায় পালিয়ে যায়। ক্রেমলিনের একটি সূত্র ব্লুমবার্গকে এই তথ্য নিশ্চিত করে। তারা জানায় আসাদকে রক্ষা করার কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্লাদিমির পুতিন আসাদের সৈন্যদের পিছু হটার ঘটনায় বিরক্ত।
আমেরিকা অবশ্য প্রকাশ্যে সিরিয়া নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। তবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সিরিয়ার পরিস্থিতি খুব খারাপ। ওরা আমাদের বন্ধু নয়। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে আমেরিকার কিছু করার নেই। এটা আমাদের যুদ্ধ নয়। ওখানে যা হচ্ছে, হোক। আমরা এর মধ্যে নাক গলাব না।
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে প্রথম থেকেই বিদ্রোহীদের মদদ দিয়েছে আমেরিকা। আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে একাধিকবার নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৩ সালে ঘৌটার হামলায় ৩০০ জনেরও বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এদের মধ্যে ছিল বহু শিশু। ২০১৭ সালের হামলাতেও মৃত্যু হয় শতাধিক সিরিয়ান নাগরিকের। জাতিসংঘের একাধিক দল সিরিয়ায় গিয়ে নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
৫০ বছর পর সিরিয়ার সীমানায় ঢুকেছে ইসরায়েলি ট্যাংক
আসাদ সরকারের পতনের মধ্যে সিরিয়ার মাটিতে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের কয়েকটি ট্যাংক সিরিয়া সীমান্তের বেড়া অতিক্রম করেছে। ১৯৭৪ সালের পর এই প্রথম তারা সিরিয়া সীমান্ত অতিক্রম করল। খবর আল-জাজিরা।
ইসরায়েলি সংবাদ শাধ্যম মারিভের মতে, সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী বা বেসামরিক নাগরিকদের আনুগত্য নির্বিশেষে, ইসরায়েলি অবস্থানের কাছাকাছি আসা থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বলেছেন, সিরিয়ার সঙ্গে দখলকৃত গোলান মালভূমিতে হারমন পর্বতে ইসরায়েলকে অবশ্যই ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি লাইনের ভিত্তিতে একটি নতুন প্রতিরক্ষা লাইন স্থাপন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার গোলান মালভূমির বেশিরভাগ অংশ দখল করে, ১৯৮১ সালে এটিকে সংযুক্ত করে।
এদিকে সিরিয়ার স্থানীয় সূত্রের বরাতে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য ইসরায়েল টাইমস জানিয়েছে, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ার কুনেইত্রা শহরের কাছে বাফার জোনে প্রবেশ করেছে এবং গুলি চালিয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) এই বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
ইসরায়েলি মিডিয়ার অন্যান্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদের শাসনের পতনের পর বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সম্ভাব্য হুমকির কারণে সীমান্ত এলাকায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। এর মধ্যে স্কুল বন্ধ রাখা এবং সীমান্তবর্তী চারটি ড্রুজ গ্রামের জন্য বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
গোলান মালভূমি সংলগ্ন এলাকাগুলোকে সংরক্ষিত সামরিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এ ছাড়াও, এই এলাকায় চেকপয়েন্ট স্থাপন এবং যান চলাচল সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সিরিয়ার আগে যেসব দেশের স্বৈরশাসক পালিয়েছেন
সশস্ত্র বিদ্রোহের মুখে সিরিয়ার দীর্ঘ দুই যুগের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ‘অজানা গন্তব্যে’। ফলে সিরিয়া এখন ‘মুক্ত’ বলে ঘোষণা করেছেন দেশটির বিদ্রোহীরা।
বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কের কেন্দ্রস্থলে প্রবেশের পর আরব দেশটিতে ‘নতুন যুগ’র সূচনা হয়েছে জানিয়ে প্রবাসী সিরিয়ানদের দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার রাজনৈতিক বিরোধী জোটের প্রধান হাদি আল-বাহরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের ঘোষণা দিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমি আপনাদের জানাচ্ছি, বাশার আল-আসাদের পতন হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিরাপদ এবং প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার কোনো জায়গা এখানে নেই। সিরিয়ার ইতিহাসের একটি অন্ধকার অধ্যায় শেষ হয়েছে।
তার এই ঘোষণার পর দামেস্কে আনন্দ-উল্লাসের খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর রাস্তা সিরিয়ানদের ‘মুক্তি! মুক্তি!’ স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে।
এর আগেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তীব্র গণআন্দোলনের মুখে বহু স্বৈরশাসক পালিয়েছেন। সিরিয়ার আগে এমনটি ঘটেছিল বাংলাদেশে। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।
তার আগে অভ্যুত্থান সংঘটিত হয় শ্রীলঙ্কায়। দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে গণঅভ্যুত্থানের কারণে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন লিবিয়ার শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি। অবশ্য স্বৈরাচার গাদ্দাফি পালাতে পারেননি। তিনি বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন। মিশরে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন হোসনি মোবারক। পরে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
১৯৯৮ সালে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুহার্তো। ২০০৬ সালে অভ্যুত্থান করে থাই জনতা। একটি টেলিকম কোম্পানি বিক্রয়কে কেন্দ্র করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বছরেই থাকসিনকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী।
একবিংশ শতকে আলোচিত আরব বসন্ত শুরু হয় তিউনিসিয়ায়। গণঅভ্যুত্থান ঘটলে ২৩ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা প্রেসিডেন্ট বেন আলী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাশারের প্রধানমন্ত্রীর হাতেই থাকছে সিরিয়া সরকারের ভার
আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত বাশার আল-আসাদের নিয়োগ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালির দায়িত্বেই থাকবে সিরিয়ার সরকারের ভার।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদেন বলা হয়েছে,রাজধানী দামেস্ক দখলে নিয়েছে এইচটিএস। এর মধ্যেই পালিয়ে গেছেন বাশার আল–আসাদ। পরে এ নিয়ে বিদ্রোহীদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে এইচটিএস প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেন, বিরোধীদের দামেস্কের কোনো প্রতিষ্ঠানের দখল নিতে নিষেধ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে এর ভার। উৎসবের সময় গুলি চালানোও নিষিদ্ধ।
বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের মাধ্যমে নতুন সিরিয়ার সূচনা হলো বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন সিরিয়া হবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের স্থান, যেখানে ন্যায়বিচারের জয় হবে এবং সিরিয়ানদের মর্যাদা রক্ষা করা হবে।
বিদ্রোহীরা বিবৃতিতে বলেন, আমরা অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করি। ৫০ বছরের নিপীড়ন এবং ১৩ বছরের অপরাধ, অত্যাচার, বাস্তুচ্যুতি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পর, সব দখলদার বাহিনীর মোকাবিলা করে আমরা আজ ঘোষণা করছি, সেই অন্ধকার যুগের সমাপ্তি এবং শুরু। সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের শুরু হলো।
এদিকে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। তিনি জানান, তিনি তার বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন না এবং তিনি নিশ্চিত করতে চান যে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আল-জালালি বলেন, আমি সবাইকে যুক্তিযুক্তভাবে চিন্তা করার এবং দেশ নিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বিরোধীদের দিকে আমাদের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি যারা তাদের হাত বাড়িয়েছে। দৃঢ়ভাবে বলছি, তারা এই দেশের কারও ক্ষতি করবে না।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
অর্ধশতাব্দী ধরে আসাদ পরিবারের সিরিয়া শাসন
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সিরিয়া শাসন করেছে আল-আসাদ পরিবার। সামরিক কর্মকর্তা থেকে ১৯৭১ সালে দেশের প্রেসিডেন্ট হন হাফেজ আল-আসাদ। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিরিয়া শাসন করেছিলেন। ২০০০ সালের জুনে মারা যান তিনি। তার কাছ থেকে সে বছরের জুলাইয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতা পান চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্র ও ছেলে বাশার আল-আসাদ।
একইসঙ্গে, বাথ পার্টির নেতা এবং সামরিক বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বাশার আল-আসাদ। এর ১১ বছর পর যখন সিরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। বাশার আল-আসাদ কঠোর দমন-পীড়নের মাধ্যমে এর জবাব দেন। আরো বেশি সিরীয় জনগণ বিক্ষোভে যোগ দেয়। বাশার তখন তার বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করে দমন-পীড়ন আরো বাড়াতে থাকেন, যা শেষ পর্যন্ত গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
এরপরের বছরগুলোতে নিহত হন সিরিয়ার কয়েক লাখ মানুষ। বাশার আল-আসাদকে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগেও অভিযুক্ত করা হয়। অনেকটা যুদ্ধের বাতাবরণেই তিনি সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে নির্বাচন আয়োজন করেছিলেন। তবে সেসব নির্বাচন অনেকের কাছেই অগণতান্ত্রিক বলে অগ্রহণযোগ্যই থেকে যায়।
যুদ্ধ কখনোই জিততে না পারলেও, বাশার আল-আসাদ তার অনুসারীদের সমর্থন এবং সংখ্যালঘু আলাওয়ি রাজনৈতিক দলের সহায়তায় সংকীর্ণভাবে ক্ষমতায় টিকে ছিলেন।
সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া আসাদ বিরোধী আন্দোলন মাঝে স্তিমিত হয়ে এলেও চলতি বছর গত নভেম্বরের শেষ দিকে বিদ্রোহীরা নতুন করে আক্রমণ শুরু করে। ফলশ্রুতিতে আলেপ্পো, হামা, হোমস জয়ের পর দ্রুতই রাজধানী দামেস্কের দিকে অগ্রসর হয় বিদ্রোহী এইচটিএস। তাদের আক্রমণ শুরু হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই বাশার আল-আসাদের পতন হয়েছে বলে ঘোষণা দেয় বিদ্রোহীরা।
বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের গভীর ক্ষত এখনো দৃশ্যমান দেশটিতে। তাই সিরিয়া এখনো মতাদর্শগত কারণে অনেকাংশেই বিভক্ত। গত চার বছর ধরে চলা অচলাবস্থা এবং স্থিতিশীল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র দেড় সপ্তাহ আগে বিদ্রোহীদের কঠোর আঘাতে ভেঙে পড়তে শুরু করে বাশারের প্রতিরোধব্যুহ। বিদ্রোহীদের হঠাৎ আঘাতে আসাদ বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরব নেতাদের মধ্যে একঘরে থাকার অবস্থান থেকে বাশার বেরিয়ে এলেও গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি কার্যকর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কোনো পরিকল্পনা বা বাস্তবায়ন কিছুই হয়নি তার আমলে। বরং ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার দিকে তার কেন্দ্রীভূত মনোযোগে পুঞ্জিভূত হয়েছে জনগণের ক্ষোভ। যার বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে আলেপ্পো বা দামেস্কের রাজপথে জনগণের উল্লাসে।
কাফি