জাতীয়
টিসিবির জন্য ৩৪৭ কোটি টাকায় ডাল-তেল কিনছে সরকার
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও রাইস ব্রান তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৪৭ কোটি ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল, এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৫০ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল রয়েছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত পৃথক তিনটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান জানান, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৮ কোটি ২৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম পড়বে ১৫২.৯৮ টাকা। যা আগে ছিল ১৫৫.৯৭ টাকা। দেশীয় প্রতিষ্ঠান সিটি এডিবল ওয়েল লিমিটেডের কাছ থেকে এ তেল কেনা হবে।
অন্য এক প্রস্তাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এতে মোট ব্যয় হবে ১০২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রতি কেজি ডালের দাম পড়বে ১০২.৭৫ টাকা। যা আগে ছিল ১০৪.৭০ টাকা। দেশীয় প্রতিষ্ঠান সেনা কল্যাণ সংস্থা থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন ও নাবিল নাবা ফুড লিমিটেড থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনা হবে।
এ ছাড়া, একই পদ্ধতিতে ৫০ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৭৬ কোটি টাকা। প্রতি কেজি রাইস ব্রাণ তেলের দাম পড়বে ১৫২ টাকা। যা আগে ছিল ১৫৪.৯৭ টাকা। মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস লিমিটেড এবং মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেডের কাছ থেকে এ তেল কেনা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৫৬২
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে এই সময়ে এতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬২ জন। এছাড়া সারাদেশে ৫০৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৬৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৩৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪৭ জন রয়েছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৩৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯৫ হাজার ৬৩২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৫২২ জনের। সব মিলিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯২ হাজার ৭০২ জন।
প্রসঙ্গত, গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বছরে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি: উপদেষ্টা
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, জ্বালানি খাতে বছরে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু ভর্তুকির এ হার প্রায় ৩ হাজার টাকা।
আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত জ্বালানির সহনীয় মূল্য ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, গ্রাহকরা প্রতি ইউনিটের বিদ্যুতের গড় মূল্য ৮ দশমিক ৫৫ টাকা দিলেও সরকার তা ১২ থেকে ২৫ টাকায় কিনে থাকে। এলএনজি আমদানিতে প্রতি ইউনিট ৭০ টাকা খরচ পড়লেও শিল্প খাতে ৩০ টাকা হারে সরবরাহ করা হচ্ছে। মূল্যের এ পার্থক্যটা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে প্রতিযোগিতা না থাকা এবং গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে আমাদের অধিক মূল্যে জ্বালানি ক্রয় করতে হচ্ছে। আমাদের ৪ হাজার এমএমসিএফটি গ্যাস প্রয়োজন, আমাদের রয়েছে ৩ হাজারের কম। ঘাটতি মেটাতে নিজেদের গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম বাড়াতে হবে। ভোলায় প্রায় ৭০ সিএমএফএফটি গ্যাস মজুত রয়েছে, যা উত্তোলনে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হবে। এখন থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়া কোনো দরপত্র আহ্বান করা হবে না।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, তেল আমদানিতে উন্মুক্ত দরপত্রের কারণে আগের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম দামে পাওয়া গেছে। এর ফলে সাশ্রয় হবে ৩৭০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ খাতে আইপিপির পরিবর্তে মার্চেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট ব্যবস্থা চালু হবে। পর্যায়ক্রমে ৪০টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে এবং এ ধরনের প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান সরকার থেকে করা হবে। সরকারি কিছু সংস্থা যেমন- বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেল, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক বিভাগের অনেক জমি আছে, যেগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। সেখানে এ ধরনের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প করা হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বিবিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ ব্যবহারিক হবে না, বরং এক্ষেত্রে ৩ থেকে ৫ বছরের কর্মপরিকল্পনা অধিক কার্যকর। বাংলাদেশকে জ্বালানি আমদানি করতে হবে, তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশকে জ্বালানি স্বনির্ভর করা ও জ্বালানির মূল্য হ্রাসে নিজেদের গ্যাস অনুসন্ধানের ওপর জোর দেন তিনি।
অধ্যাপক তামিম আরও বলেন, নবায়ানযোগ্য জ্বালানি শক্তি উৎপাদনের জন্য আমাদের গৃহস্থালির ছাদ ব্যবহার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ২০২০-২১ অর্থবছরের পর টাকার অবমূল্যায়ন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি আমদানি এবং আন্তর্জাতিক জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে গ্যাসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি সিস্টেম লসের কারণে কমপক্ষে ৫ শতাংশ গ্যাস নষ্ট হচ্ছে, যা ১৩০ এমএমসিএফডির সমতুল্য।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, বিগত ৫০ বছরে আমাদের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর থেকে শিল্প ও সেবা খাত নির্ভর হয়ে উঠেছে। এখন জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ ও সহনীয় মূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিগত দুই দশকে আমাদের জ্বালানির ব্যবহার প্রায় ৪ গুণ বেড়ে ৪৫ মিলিয়ন টন অফ অয়েল ইকুইভ্যালেন্ট (টিওই) পৌঁছে গেছে। শিল্পখাতে জ্বালানির চাহিদা মেটাতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি আমদানি বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে নির্ধারিত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউএবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল আক্তার, আইএফডিএল বাংলাদেশ পার্টনার ব্যারিস্টার শাহওয়ার জামাল নিজাম এবং বিএসআরএমের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স সৌমিত্র কুমার মুৎসুদ্দি বক্তব্য দেন।
অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও অনুসন্ধান কার্যক্রম অনীহার কারণেই আজকের এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া গ্যাস আমদানির প্রতি আমাদের অধিক হারে আগ্রহ দেখা গেছে। তিনি উল্লেখ করেন, ভৌগলিকভাবে আমরা নাইজেরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রাকৃতিক গ্যাস মজুত স্থানে অবস্থান করছি। ফলে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে নিজেদের সম্পৃক্ত করার বিকল্প নেই।
ড. ইজাজ হোসেন বলেন, জ্বালানির মূল্য যেন বেশি মাত্রায় বৃদ্ধি করা না হয়, সে লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আলোচনা বাড়াতে হবে। স্থানীয় বাজারে ডলারের মূল্যের অস্থিতিশীলতার কারণে আমাদের জ্বালানি আমদানি আরও বেশি হারে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে, যার প্রভাব পড়ছে মূল্যস্ফীতি ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে। ফলে নিজেদের প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান কার্যক্রম আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
প্রভাবশালী দেশের সংসদে বাংলাদেশকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং প্রভাবশালী দেশের শীর্ষ সংসদীয় শুনানিতে অন্যায্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি সেক্যুলার সংবাদপত্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে বাংলাদেশের কথিত ধর্মীয় সহিংসতার মামলাগুলো তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে শফিকুল আলম জানান, নেত্র নিউজ যখন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে হামলার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল, আমি আশা করেছিলাম যে ঐক্য পরিষদ এই বিষয়ে একটি বিবৃতি দেবে।’
তিনি আরও বলেন, নেত্র নিউজ এমন একটি শীর্ষস্থানীয় তদন্তমূলক ওয়েবসাইট, যা বাংলাদেশের বড় বড় দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করে সুনাম অর্জন করেছে।
ওই পোস্টে প্রেস সচিব আরও লিখেছেন, নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সংখ্যালঘু পরিষদ যে ৯ জন হিন্দুর মৃত্যুর কথা বলেছিল, তাদের প্রায় সব কটির সঙ্গে রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত বা অন্যান্য কারণ যুক্ত ছিল, যা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নয়। তিনি বলেন, আমাদের আশা ছিল যে ঐক্য পরিষদ নেত্র নিউজের প্রতিবেদনটির জবাব দেবে; কারণ, এটি পরিষদের তথ্য সংগ্রহ এবং প্রতিবেদন তৈরির পদ্ধতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
প্রেস সচিব আরও বলেন, ঐক্য পরিষদ এ বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে আরেকটি বিতর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। শফিকুল আলম বলেন, ‘তারা বলেছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (যা ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে) অন্তত ৪৫ জন সংখ্যালঘু (অধিকাংশ হিন্দু) নিহত হয়েছে। আবার প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সংবাদপত্রগুলোর প্রথম এবং শেষ পাতায় প্রকাশিত হয়েছিল। ঐক্য পরিষদের এমন দাবির সত্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও কোনো গণমাধ্যমই তা চ্যালেঞ্জ করেনি।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, দেশের বৃহত্তম মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)–এর মতে, ২০২৩ সালে সংখ্যালঘুবিরোধী সহিংসতায় কেউ নিহত হয়নি এবং এ বছর (জানুয়ারি থেকে অক্টোবর) মাত্র দুজন নিহত হয়েছে। আসক একটি সেক্যুলার (ধর্মনিরপেক্ষ) গ্রুপ, বছরের পর বছর ধরে যেটির নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের একজন অপরাধ স্বীকারকারী। এর বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন মানবাধিকারবাদী আইনজীবী জেড আই খান পান্না। যিনি স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন যে তিনি বিচারে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে আগ্রহী হবেন।
শফিকুল আলম বলেন, ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনগুলোর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। সম্প্রতি একজন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে কথা বলার সময় ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করেছিলেন। তিনি বলেন, হিন্দুদের ওপর বিপ্লব-পরবর্তী হামলার প্রতিবেদনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ১১ মিলিয়নেরও বেশি বার দেখা হয়েছে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আমাদের জানা মতে, শক্তিশালী এবং সম্পদশালী হিন্দু আমেরিকান গোষ্ঠী, ভারতীয় জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং শীর্ষ ভারতীয় বিশ্লেষকেরা এই প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা তুলে ধরেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংখ্যালঘুবিরোধী সহিংসতা নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনগুলোই সবচেয়ে বড় উৎস।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঘটে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে আমরা এখনো আদর্শ দেশ হতে পারিনি। ধর্মীয়ভাবে আপত্তিকর ফেসবুক পোস্টের কারণে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। কিছু প্রান্তিক গোষ্ঠী ও ব্যক্তি প্রায়শই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায়।’ তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় ধর্মীয়ভাবে সংঘটিত ঘটনার সময় মানুষকে শান্ত থাকতে অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সুশীল সমাজের নেতাদের দ্বারা বৃহত্তর প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এ সময় তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই ঘটনাগুলোয় অসাধারণ রাজনৈতিক পরিপক্বতা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনগুলো পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনাগুলো বাড়িয়ে দেখিয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, শীর্ষস্থানীয় সেক্যুলার ও উদারপন্থী সংবাদপত্রগুলো সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কথিত সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে তাদের নিজস্ব তদন্ত করবে। আমরা আশা করি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও, যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, একই ধরনের তদন্ত করবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০১৩ সালে হেফাজত কর্মীদের গণহত্যা নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চমৎকার একটি তদন্ত করেছিল। আশা করি, তারা এখানে একই ধরনের তদন্ত করবে।’ সরকার যদি এই গুজব খণ্ডনের কাজ করে, তবে তার প্রতিবেদনের প্রতি সন্দেহের দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন ‘স্বাধীন সংবাদপত্র ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনাগুলো তদন্ত করুক। এটি একটি গুরুতর ইস্যু; কারণ, বাংলাদেশের বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং প্রভাবশালী দেশগুলোর শীর্ষ সংসদীয় শুনানিতে অন্যায্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ তো বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানোর অথবা দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানায় এসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে। এ কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথিত ঘটনাগুলোর ন্যায্য তদন্ত চায়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
উত্থান-পতন সত্ত্বেও ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক টিকে আছে: হাইকমিশনার
বিভিন্ন পরিবর্তন, পেশাগত চ্যালেঞ্জ এবং উত্থান-পতন থাকা সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক টিকে আছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
আজ শনিবার ঐতিহাসিক ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভারতের সামরিক ও কুটনৈতিক ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে এ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভারত। ইতিহাস গতভাবেই ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক স্মরণীয়। কারণ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ১০ দিন আগেই ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি একটি মাইলফলক, যা কখনো মোছা যায় না। ওই তারিখটি দুই দেশের অংশীদারত্বের একটি বড় চিহ্ন। যা বিভিন্ন পরিবর্তন, পেশাগত চ্যালেঞ্জ এবং বিভিন্ন উত্থান-পতন থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের সম্পর্ক টিকে আছে। আমাদের এই সম্পর্ক টিকে আছে দুই দেশের সংবেদনশীলতা, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধায়।
তিনি বলেন, গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করেছে, যা সম্ভব হয়েছে ৫৩ বছর আগে করা আমাদের ত্যাগের কারণে। ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ এবং ভারত অনেক দূর এগিয়েছে, উন্নতি করেছে দ্রুতগতির সাথে। দ্রুতগতির অর্থনীতি, ধারাবাহিক উন্নতি, মানুষের উন্নত ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষার উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যে নতুন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। যা আজ আমাদের বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একে অপরের উন্নয়নের পরিপূরক।
প্রণয় ভার্মা আরও বলেন, আমাদের সুসম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস যেখানে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সাথে জড়িত। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশের সাথে শান্তিপূর্ণ, গঠনমূলক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি, এর ভিত্তি ছিল সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক বোঝাপড়া। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের দুই দেশের জনগণ প্রধান অংশীদার এবং যে সম্পর্ক আমরা তৈরি করেছি, তার প্রধান উদ্দেশ্য দুই দেশের জনগণের উন্নয়ন। এতে দুই দেশের জনগণই উপকৃত। দুই দেশের বর্ডার ট্রান্সপোর্ট, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সঞ্চালন, আমাদের অর্থনৈতিক সংযোগ, এগুলো সবই মূলত আমাদের জনগণের সমৃদ্ধি তৈরি করে এবং তাদের কল্যাণে অবদান রাখে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের সমাজ গভীরভাবে সংযুক্ত। আমরা কেউ এককভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারবো না। আমরা আমাদের ভৌগোলিক ঘনিষ্ঠতাকে আমাদের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা এবং নতুন উচ্চাকাঙ্ক্ষা দ্বারা চালিত নতুন সুযোগে রূপান্তর করতে চাই। এটা সত্য যে বাংলাদেশে অশান্ত পরিবর্তন সত্ত্বেও, আমাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক, আমাদের পরিবহন ও জ্বালানি সহযোগিতা, আমাদের জনগণের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা ইতিবাচক গতি বজায় রেখেছে। যা প্রমাণ করে আমাদের সম্পর্ক সত্যিই স্থিতিশীল। এটি আরও দেখায় যে নির্বিশেষে আমাদের চারপাশে যা পরিবর্তন হচ্ছে তা আমাদের পারস্পরিক নির্ভরতার বাস্তবতা এবং পারস্পরিক সুবিধা আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকবে।
বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ীর (বীর প্রতীক) সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সাবেক পরিচালক মনিরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজির আহমেদ চৌধুরী, বাচিকশিল্পী টিটু মুনশী প্রমুখ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ভারত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে উভয় দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে: সাখাওয়াত হোসেন
ভারত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে উভয় দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভারত পণ্য রপ্তানি বন্ধ চাইলে সেটা তাদের ব্যাপার। এতে তাদের ইকোনমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ হবে। ভারতের ব্যবসায়ীরা এতো বড় বাজার হাতছাড়া করতে চায় না। তারা যদি বন্দরে রাজনৈতিক অবরোধ করতে চায় করুক। সেটা তাদের বিষয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ভারত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে উভয় দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
উপদেষ্টা প্রথমে ভোমরা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। এসময় দুই দেশের পাসপোর্ট যাত্রীদের খোঁজখবর নেন। পরে ভোমরা স্থলবন্দরের পার্কিং শেড ও নতুন নির্মাণাধীন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন।
কাফি