জাতীয়
সমুদ্রে চলে যাবে যশোর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, ফেনীর কিছু অঞ্চল: আইনুন নিশাত

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলা। আগামী ১০০ বছরের মধ্যে যশোর থেকে গোপালগঞ্জ, গোপালগঞ্জ থেকে চাঁদপুর ও চাঁদপুর থেকে ফেনী, এসব অঞ্চলের দক্ষিণাংশ সমুদ্রের অংশ হয়ে যাবে বলে মনে করেন পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাত।
তাঁর আশঙ্কা করছেন, এ পরিবর্তন ৫০ বছরের মধ্যেও হয়ে যেতে পারে। এমনকি ঢাকার চারপাশের জমিও লবণাক্ত হয়ে যেতে পারে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত‘উপকূলের জীবন ও জীবিকা: সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত এসব কথা বলেন।
সংলাপে জাতিসংঘের সংস্থা ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব কথা বলেন আইনুন নিশাত। ১৯৫টি দেশ একমত হওয়ার পর ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইপিসিসি।
রাজশাহী থেকে সিরাজগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব—এই সারির মধ্যাঞ্চল লবণাক্ত হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ঢাকা শহর খুব উঁচু। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ২৫ ফুট। ঢাকা শহরের চারপাশ লবণাক্ত হয়ে যাবে। কামরাঙ্গীরচর বা জিঞ্জিরার উচ্চতা পাঁচ থেকে ছয় ফুট। এসব এলাকা পানির তলায় চলে যেতে পারে।
লবণাক্ততা একটি গুরুতর সমস্যা উল্লেখ করে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ বলেন, বাংলাদেশ ভারতকে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের সম্মতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে লবণাক্ততা সমস্যার শুরু। উজান থেকে পানি আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে লবণাক্ততা বাড়া শুরু হয়েছে।
অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, নদী পানির সঙ্গে পলিমাটিও নিয়ে আসে। সরকার নদী খননের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। এসব টাকা কোনো কাজে আসবে না। কারণ, খনন করার পর আবার পলি এসে দু-এক বছরের মধ্যে তা ভরাট হয়ে যায়।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী এবং বেসরকারি সংস্থা ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভের গবেষণা ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল ফারুক।
কাফি

জাতীয়
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধানে জাতিসংঘের উদ্বেগ

বাংলাদেশে আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ তৈরির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক।
সোমবার (১৬ জুন) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
ফলকার টুর্ক বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপের মাধ্যমে অগ্রগতি হচ্ছে, এতে আমি অনুপ্রাণিত। অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে তাদের আমি অর্থবহ সংস্কারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, তবে আমি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এবং তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জন্য আইনের সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ ধরনের পরিবর্তন সংগঠন করার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে অন্যায্যভাবে সীমিত করে।
জাতীয়
পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করা মুক্তিযোদ্ধা সখিনা আর নেই

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার নারী মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম (৯৩) মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোরে বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের বড়মাইপাড়া গ্রামে তিনি মারা যান।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিলচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল হক নাহিদ।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সখিনা বেগম। তার বাবার নাম সোনাফর মিয়া এবং মায়ের নাম দুঃখী বিবি। সখিনা নিঃসন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আগেই মারা যান স্বামী কিতাব আলী। নিকলীতে সখিনাকে দেখভাল করার কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া গ্রামে ভাগ্নি ফাইরুন্নেছা আক্তারের কাছে থাকতেন। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হিলচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিয়াজ মামনুন রহমান পুটন বলেন, সখিনা বেগম বড়মাইপাড়া গ্রামে প্রায় ৪০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন। মঙ্গলবার ভোর ৫টার সময় তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। আমাদের বাড়ির পাশে তার বসবাস থাকায় ছোটকাল থেকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলতেন। তিনি খেতাবপ্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
নিকলী উপজেলার গুরুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তোতা মিয়া বলেন, গুরুই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমকে দেখভাল করার জন্য কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর হিলচিয়া ভাগ্নির কাছে থাকতেন। সেখানে মারা গেছেন। মঙ্গলবার আসর নামাজ বাদ গুরুই ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে সখিনা বেগমের গ্রামে শাহী মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সখিনা বেগম নেমে পড়েন সশস্র যুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে সখিনা বেগমের ভাগ্নে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে শহীদ হোন। ভাগ্নের অকালমৃত্যু সখিনাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সখিনা বেগম গুরুই এলাকায় বসু বাহিনীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রাঁধুনির কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে রাজাকারদের গতিবিধির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। একপর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। আসার সময় সেখান থেকে নিয়ে আসেন একটি ধারালো দা। পরে সেই দা দিয়েই নিকলীর পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন। সখিনা বেগমের ওই দা বর্তমানে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
জাতীয়
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ২৬ হাজার ১০৯ হাজি

সৌদি আরব থেকে পবিত্র হজ পালন শেষে ফিরতি ফ্লাইটে সোমবার (১৬ জুন) রাত পর্যন্ত ২৬ হাজার ১০৯ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৯৫ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ২১ হাজার ৫১৪ জন দেশে ফিরেছেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৮ হাজার ৭১৪, সৌদি পতাকাবাহী সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ১০ হাজার ৬১৫ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৬ হাজার ৭৮০ জন দেশে ফিরেছেন। মোট ৬৬টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে ২২টি ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের, ২৭টি সাউদিয়ার এবং ১৭টি ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের।
এদিকে, সৌদি আরব বাংলাদেশি হাজিদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশটির মেডিকেল সেন্টারগুলো এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ২৫টি অটোমেটেড প্রেসক্রিপশন ইস্যু করেছে এবং আইটি হেল্পডেস্কগুলো ২২ হাজার ১১০টি সেবা প্রদান করেছে।
এখন পর্যন্ত ৩২ জন বাংলাদেশি সৌদি আরবে মারা গেছেন । তাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী। এদের মধ্যে ২১ জন মক্কায়, ১০ জন মদিনায় এবং ১ জন আরাফায় মারা গেছেন।
সৌদি আরবের সরকারি হাসপাতালগুলো এ পর্যন্ত ২৫৬ জন বাংলাদেশিকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এদের মধ্যে এখনো ২৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত ২৯ এপ্রিল প্রথম ফ্লাইটের মাধ্যমে এ বছরের হজ কার্যক্রম শুরু হয় এবং ৩১ মে শেষ হয়। সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার কার্যক্রম ১০ জুন শুরু হয়েছে এবং তা ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের হজের জন্য ৭০টি হজ এজেন্সিকে অনুমোদন দিয়েছে। এ বছর হজ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ৩০২ জন ধর্মপ্রাণ মুসল্লি সৌদি আরবে গেছেন।
হজ ব্যবস্থাপনা অফিস জানায়, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশিদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে চলমান এ কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।
জাতীয়
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আটকে পড়া ১৫৮ বাংলাদেশি

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় আটকেপড়া ১৫৮ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর ৫টা ২০ মিনিটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টারে আটকেপড়া ১৫৮ বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ জুন) দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ত্রিপলীর মেতিগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বুরাক এয়ারের বিশেষ ফ্লাইটে (নম্বর: UZ222) ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তারা।
জাতীয়
তেহরানে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ দূতাবাস

ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন।
সোমবার (১৬ জুন) তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, তেহরানে বাংলাদেশ মিশন ভবনের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ইরানের একটি পরমাণু কেন্দ্রসহ কমপক্ষে দুটি সংবেদনশীল স্থাপনা রয়েছে। সেগুলোতে হামলার ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে ইসরায়েল। ফলে বাংলাদেশ মিশন, আশপাশে বসবাসরত কূটনীতিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের জীবন ও সম্পদ ঝুঁকিতে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সম্ভাব্য হামলায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটানো ওই সব কূটনীতিক ও স্টাফদের পরিবারকে শহরের ৩০-৪০ কিলোমিটার বাইরে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য জরুরি হটলাইন চালু করেছে তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাস।
দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য ইমার্জেন্সি হটলাইন চালু করা হয়েছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ এবং +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫ (হোয়াটসঅ্যাপসহ) নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।