লাইফস্টাইল
তরমুজ কি সত্যিই ওজন কমাতে সাহায্য করে?

তরমুজে এখন বাজার ভরে গেছে। টকটকে লাল রসালো এই ফল সবার কাছেই প্রিয়। স্বাস্থ্যের জন্য এই ফল খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। আর এ কারণেই অনেকে ভাবেন তরমুজ ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে সত্যিই কি তরমুজ ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে?
তরমুজ ও শসা কিউকারবাইটেসিয়া পরিবারের অন্তর্গত। এ পরিবারের সব খাবারেই পানির পরিমাণ বেশি। ১০০ গ্রাম তরমুজে ৩০ ক্যালোরি, ০.৬ গ্রাম প্রোটিন, ৭.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৬.২ গ্রাম চিনি ও ০.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে। অন্যদিকে এতে মোট পানি থাকে ৯১ শতাংশ।
সুস্বাদু মিষ্টি এই ফল সবারই প্রিয়। তবে অনেকেই প্রতিদিন তরমুজ খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন না। কারণ তরমুজের গ্লাইসেমিক সূচক ৭২, যা অনেক বেশি। ডায়াবেটিক রোগীর জন্য এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
তবে কয়েকটি স্বাস্থ্য প্রতিবেদন অনুসারে, যেহেতু এতে কার্বোহাইড্রেট তুলনামূলকভাবে কম, তাই এটি পরিমিতভাবে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া এতে থাকে ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, কপার, ভিটামিন বি ৫ ও ভিটামিন এ সহ উদ্ভিদ যৌগ সিট্রুলিন ও লাইকোপেন।
তরমুজের লাল রসালো সজ্জাকে ঢেকে রাখা সাদা অংশটি হল সিট্রুলাইন। যা অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড আরজিনাইনে রূপান্তরিত হয়। ফুসফুস, কিডনি, লিভার ও প্রজনন ব্যবস্থার স্বাভাবিক কার্যকারিতা বাড়াতে আরজিনাইন গুরুত্বপূর্ণ।
ওজন কমানোর জন্য তরমুজ কি আদর্শ?
ওজন কমানোর জন্য আপনি যে খাবারই নির্বাচন করুন না কেন, আগে জানতে হবে তার ক্যালোরি ও ফাইবার কত। ১০০ গ্রাম তরমুজে মাত্র ৩০ ক্যালোরি থাকে। এর ৯১ শতাংশ পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে জানা যায় বিভিন্ন গবেষণায়।
তবে এতে ফাইবার কম থাকে। ১০০ গ্রাম তরমুজে মাত্র ০.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে। আপনি যদি ডায়েটে তরমুজ যোগ করতে চান তবে আপনাকে ফাইবারের একটি ভালো উত্সও যোগ করতে হবে।
হার্ভার্ডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরমুজে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। একটি হলো লাইকোপেন, যা আসলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা ও রক্তচাপ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
অন্যটি হল সিট্রুলাইন, যা একটি অ্যামিনো অ্যাসিড। এটি নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা বাড়াতে পারে। রক্তনালিগুলো শিথিল করতে ও রক্তচাপ কমায় এই অ্যাসিড।
তরমুজ বেশি খেলে কী হয়?
অত্যধিক তরমুজ খেলেই কিন্তু আপনার শরীরের চর্বি পুড়বে না। বরং আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। অত্যধিক তরমুজ খেলে লিভারের প্রদাহ, গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি, হজমের সমস্যা ও কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা বাড়তে পারে। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণেই তরমুজ খাওয়া উচিত সবারই।
কাফি

লাইফস্টাইল
জাপানিদের দীর্ঘ জীবনের রহস্য কী?

জাপানে ১০০ বছর বা তারও বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা এখন রেকর্ড সর্বোচ্চ, প্রায় এক লাখ। এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সরকার। টানা ৫৫ বছর ধরে এ বিষয়ে রেকর্ড করে চলেছে জাপান। চলতি সেপ্টেম্বরে জাপানে শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা ৯৯ হাজার ৭৬৩ জন, যাদের ৮৮ শতাংশই নারী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাকামারো ফুকোকা ৮৭ হাজার ৭০৪ জন নারী এবং ১১ হাজার ৯৭৯ জন পুরুষকে শতবর্ষী হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং সমাজের উন্নয়নে তাদের বহু বছরের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
জাপান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয়ুষ্কালের মানুষের দেশ। প্রায়ই দেশটির নাম বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তির আবাসস্থল হিসেবে উঠে আসে। যদিও কিছু গবেষণায় বিশ্বব্যাপী শতবর্ষী মানুষের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
এটি বিশ্বের দ্রুততম গতিতে বয়স্ক হয়ে ওঠা সমাজের একটি, যেখানে বাসিন্দারা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেন এবং জন্মহার যেখানে বেশ কম।
জাপানের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হলেন ১১৪ বছর বয়সী শিগেকো কাগাওয়া, তিনি নারা শহরের উপকূলবর্তী ইয়ামাতোকোরিয়ামায় বসবাসকারী একজন নারী। অন্যদিকে, দেশটির সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ, ১১১ বছর বয়সী কিয়োতাকা মিজুনো উপকূলীয় শহর ইওয়াতার বাসিন্দা।
জাপানে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রবীণ দিবসের আগে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়, যেখানে নতুন শতবর্ষী ব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অভিনন্দনপত্র ও রূপার কাপ পান।
এ বছর ৫২ হাজার ৩১০ জন ব্যক্তি এই অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জাপানে ১৯৬০-এর দশকে, শতবর্ষীদের সংখ্যা জি-সেভেন দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম থাকলেও পরবর্তী দশকগুলোতে এই সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। দেশটির সরকার ১৯৬৩ সালে যখন শতবর্ষী মানুষের জরিপ শুরু করে, তখন সেখানে ১০০ বা তার বেশি বয়সীর সংখ্যা ছিল ১৫৩ জন। তবে, ১৯৮১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে এক হাজার হয় এবং ১৯৯৮ সালের মধ্যে তা ১০ হাজারে দাঁড়ায়।
অধিক আয়ুষ্কালের পেছনে মূলত হৃদরোগসহ সাধারণ ধরনের ক্যান্সার-বিশেষ করে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারে মৃত্যু কম হওয়ার মতো কারণ থাকে।
জাপানে স্থূলতার হারও কম, যা এসব রোগের একটি প্রধান কারণ।
খাদ্যাভ্যাসে লাল মাংস কম থাকা এবং মাছ ও শাকসবজি বেশি থাকাও মানুষকে দীর্ঘায়ু পেতে সাহায্য করেছে। বিশেষ করে, দেশটিতে নারীদের ক্ষেত্রে স্থূলতার হার বেশ কম, যা জাপানি নারীদের আয়ুষ্কাল পুরুষদের তুলনায় বেশি হওয়ার একটি অন্যতম কারণ বলে ধরা যেতে পারে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে খাদ্যতালিকায় যখন চিনি ও লবণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে, জাপান তখন বিপরীত দিকে এগিয়ে যাচ্ছে – জনস্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তা দিয়ে মানুষের খাবারে লবণের ব্যবহার কমাতে সফল হয়েছে দেশটি।
কিন্তু এটি কেবল খাদ্যতালিকার বিষয় নয়। জাপানিরা সক্রিয় থাকার প্রবণতাও ধরে রাখে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় বেশি হাঁটাচলা এবং গণপরিবহনের ব্যবহারও বেশি করে জাপানিরা।
রেডিও তাইসো, যেটি মূলত প্রতিদিন শরীরচর্চা বা ব্যয়াম করার একটি গ্রুপ, এটি ১৯২৮ সাল থেকে জাপানি সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি জাপানি সম্প্রদায়ের অনুভূতিকেও উৎসাহিত করতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এটি। শরীরচর্চার তিন মিনিটের এই রুটিন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয় এবং সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীতে ছোট ছোট দলে যুক্ত হয়ে এর অনুশীলন হয়ে থাকে।
তবে বেশ কয়েকটি গবেষণায় বিশ্বব্যাপী শতবর্ষীদের সংখ্যার বৈধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে তথ্যের ত্রুটি, অবিশ্বস্ত পাবলিক রেকর্ড এবং জন্ম সনদ না থাকাটাও শতবর্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধির নেপথ্য কারণ হতে পারে।
জাপানে পারিবারিক রেজিস্ট্রিগুলোর ওপর ২০১০ সালে পরিচালিত এক সরকারি নিরীক্ষায় ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সী দুই লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষের নাম পাওয়া গেছে, তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ কয়েক দশক আগেই মারা গেছেন। ফলে অসংগত রেকর্ড রাখাকেই এমন ভুল গণনার জন্য দায়ী করা হয়।
পাশাপাশি এমন সন্দেহও করা হয় যে কিছু পরিবার হয়তো তাদের পেনশন দাবি করার জন্য বয়স্ক আত্মীয়দের মৃত্যুর খবর গোপন করার চেষ্টাও করেছে। জাপানে এসংক্রান্ত একটি জাতীয় তদন্ত শুরু করা হয়, যখন টোকিওর সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত ১১১ বছর বয়সী সোগেন কোটোর মৃত্যুর ৩২ বছর পর পারিবারিক বাড়িতে তার দেহাবশেষ পাওয়া যায়।
লাইফস্টাইল
সকালের চার ভুলেই বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি

আন্তর্জাতিক গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, সকাল ৭টা থেকে ১১টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। অথচ ঘুম থেকে উঠে এই সময়টাতেই আমরা ছোট ছোট ভুল করে বসি। সকালে এমন চারটি ভুলের কারণে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে ক্যালিফোর্নিয়ার কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জয় ভোজরাজের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে কর্টিসল নামের স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়, রক্তের প্লেটলেটগুলো আঠালো হয়ে ওঠে এবং রক্তচাপ দ্রুত বাড়ে। ফলে হঠাৎ করেই হার্টের ওপর চাপ তৈরি হয়। এই সময় যদি খালি পেটে চা বা কফি খাওয়া, পানি না খাওয়া, ওষুধ বাদ দেয়া বা সরাসরি ব্যস্ততায় ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো অভ্যাস গড়ে ওঠে, তাহলে ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
সকালের ৪টি ক্ষতিকর অভ্যাস
- খালি পেটে চা বা কফি খাওয়া
- পানি না খাওয়া বা নিয়মিত ওষুধ এড়িয়ে যাওয়া
- ঘুম থেকে উঠেই কাজ বা ইমেইলে ডুবে যাওয়া
- শরীরকে সময় না দিয়ে তাড়াহুড়োয় ব্যস্ত হয়ে পড়া
হৃদয়বান্ধব সকাল কেমন হওয়া উচিত: কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জয়ের মতে, কিছু ছোট পরিবর্তন হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রেখে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। এসব হলো:
- ঘুম ভাঙার পর প্রথমেই পানি পান করা
- নির্ধারিত ওষুধ সময়মতো খাওয়া
- হালকা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ নাশতা গ্রহণ
- ১০-১৫ মিনিট স্ট্রেচিং, হাঁটা বা যোগব্যায়ামের মতো হালকা ব্যায়াম
দিনের শুরুটা যদি অগোছালো, তাড়াহুড়ো আর ভুল অভ্যাসে ভরা হয় তাহলে তার প্রভাব পড়ে সরাসরি হার্টের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুম ভাঙার পর শরীরকে একটু সময় দেয়া, পর্যাপ্ত পানি খাওয়া, সময়মতো ওষুধ সেবন, হালকা নাশতা ও অল্প ব্যায়াম এসব ছোট পদক্ষেপই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারে।
লাইফস্টাইল
দেশি সবুজ মাল্টার যত উপকারিতা

দেশি সবুজ মাল্টা লেবুর মতো দেখতে একধরনের সাইট্রাস ফল) ভিটামিন–সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ একটি ফল। এটি লেবু ও কমলার মতোই পুষ্টিগুণে ভরপুর। নিচে এর উপকারিতা তুলে ধরা হলো–
দেশি সবুজ মাল্টার উপকারিতা দেখে নিন
১. ইমিউনিটি বাড়ায়: মাল্টায় প্রচুর ভিটামিন–সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ঠান্ডা–কাশি ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
২. হজমে সহায়ক: মাল্টার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। সকালে বা খাবারের পর অল্প মাল্টা খেলে পাচন ভালো হয়।
৩. হার্টের জন্য ভালো: মাল্টায় থাকা পটাশিয়াম ও ফ্ল্যাভোনয়েড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কোলেস্টেরল কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
৪. ত্বক ও চুলের যত্নে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন–সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। নিয়মিত মাল্টা খেলে ত্বক সতেজ থাকে এবং চুলও মজবুত হয়।
৫. ওজন কমাতে সহায়ক: ক্যালরি কম ও ফাইবার বেশি থাকায় এটি সহজে পেট ভরায়, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।
৬. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে: মাল্টা শরীরে আয়রন শোষণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিন কম, তারা নিয়মিত মাল্টা খেলে উপকার পাবেন।
৭. ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও উপকারী: মাল্টায় প্রাকৃতিক চিনি থাকলেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।
সতর্কতা-
১. একসাথে অনেক বেশি মাল্টা খেলে অম্লতা বা গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।
২. কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগী (বিশেষত যাদের কিডনিতে পটাশিয়াম জমে) তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেশি মাল্টা খাওয়া ঠিক নয়।
লাইফস্টাইল
সন্তানের সামনে ভুলেও যেসব আচরণ করবেন না

শিশুরা শেখে দেখে দেখে, অনুকরণ করে। তাই বাবা-মায়ের প্রতিটি আচরণ এবং কথাই তাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই বিশেষজ্ঞরা এমন পাঁচটি কাজ চিহ্নিত করেছেন, যেগুলো কখনোই সন্তানের সামনে করা উচিত নয়।
১. উচ্চ শব্দে ঝগড়া-তর্ক করা
মা-বাবার মধ্যে মতবিরোধ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু তা যখন চিৎকার ও ঝগড়ায় পরিণত হয়, তখন শিশুর মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা, ভয় ও আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দেয়। ভবিষ্যতে সমস্যার সমাধান হিসেবে সে নিজেও আক্রমণাত্মক আচরণ করতে পারে।
২. সঙ্গী বা অন্য
হাসি-ঠাট্টার ছলেও সঙ্গী বা অন্য কাউকে ছোট করে কথা বলবেন না। এর ফলে শিশুরা ভাবতে পারে যে, অন্যকে ছোট করা স্বাভাবিক ব্যাপার। তার ভেতর নেতিবাচক মানসিকতা গড়ে উঠতে পারে।
৩. গ্যাজেটে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকা
সন্তানকে সময় দেওয়ার বদলে যদি বাবা-মা সারাক্ষণ মোবাইল বা ল্যাপটপে ডুবে থাকেন, তাহলে শিশু নিজেকে অবহেলিত মনে করে। এর প্রভাব পড়ে তার সামাজিক ও মানসিক বিকাশে।
৪. সবসময় সমালোচনা করা
বাবা-মাকে অনবরত নেতিবাচক কথা বলতে শুনলে শিশুর আত্মবিশ্বাস ভেঙে যায়। তাই শুধু ভুল ধরিয়ে দেওয়া নয়, বরং তার ছোট ছোট অর্জনকে প্রশংসাও করতে হবে।
৫. নিয়ম লঙ্ঘন করা
সন্তানের সামনে ছোট ছোট নিয়ম ভাঙার মতো কাজও তার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। যেমন, শিশু যদি দেখে যে তাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় আপনি রোজ ট্রাফিক নিয়ম ভেঙে ভুল দিক দিয়ে যাচ্ছেন, তাহলে বড় হয়ে তার কাছে এমন নিয়মগুলো গুরুত্ব পাবে না। সে মনে করবে যে — নিয়ম মানার কোনো গুরুত্ব নেই।
এসব ছাড়াও শিশুর সামনে ধূমপান বা মদ্যপান করা উচিত নয়, কারণ শিশুরা সহজেই অভ্যাস অনুকরণ করে। তেমনই অন্যদের নিয়ে গসিপ বা নিন্দা করলে তাদের মধ্যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। আবার সন্তানের সঙ্গে অযথা কঠোর ব্যবহার বা অন্যের সঙ্গে তুলনা করলেও মানসিক চাপ ও হতাশা তৈরি হতে পারে।
মনেও রাখুন, শিশুর মন অতিসংবেদনশীল, তারা আমাদের আচরণ গভীরভাবে খেয়াল করে। কারণ এগুলোই তাদের প্রথম শিক্ষা। আপনি কীভাবে কথা বলেন, কেমন ভঙ্গিতে কথা বলেন, অন্যের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন — সবই তারা মনে রাখে। তাই শিশুকে যদি আত্মবিশ্বাসী ও ইতিবাচক মানুষ হিসেবে বড় করতে চান, তাহলে আগে নিজেদের আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে।
লাইফস্টাইল
ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে যেসব ব্যায়ামে

ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ব্যায়াম। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে দেহের কোষগুলোকে সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানীরা ব্যায়াম নিয়ে গবেষণা করে দেখিয়েছেন, শুধু একটি সেশন ব্যায়াম করলেই ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির গতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে পারে। এক দফার ব্যায়ামে ক্যানসারের কোষবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারে অন্তত ৩০ শতাংশ পর্যন্ত।
ব্যায়ামের উপকারিতা নিয়ে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, কেবল স্তন ক্যানসার বা ডিম্বাশয়ের ক্যানসার নয়, ব্যায়াম করলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমেরিকার শিকাগোতে আয়োজিত বিশ্ব ক্যানসার কনফারেন্সে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে জানা যায়, স্টেজ ২ এবং স্টেজ ৩ কোলন ক্যানসারের রোগীদের অপারেশন ও কেমোথেরাপি দেওয়ার পর একটি দলকে সাধারণ জীবনযাপন করতে বলা হয়, অন্য দলকে নিয়মিত ব্যায়াম, শরীরচর্চার মধ্যে দিয়ে যেতে বলা হয়। দেখা যায়, প্রথম দলের তুলনায় দ্বিতীয় দলের রোগীদের ক্ষেত্রে ক্যানসার থেকে ফিরে আসার ঝুঁকি অনেকখানি কমে এসেছে। তাই এখন কোলন ক্যানসার রোগীদের নিয়মিত শরীরচর্চা করতে বলা হচ্ছে। শুধু কোলন ক্যানসার নয়, একাধিক ক্যানসারের ঝুঁকিই কমাতে পারে প্রতিদিনের নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা।
কোন ব্যায়াম কার্যকরী এবং কতক্ষণ করা উচিত
রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং (আরটি)-এর অর্থ হলো পেশি মজবুত করার জন্য নির্দিষ্ট ব্যায়াম। ডাম্ববেল, কেটলবেল, ভারোত্তোলন করা হয় এই ধরনের শরীরচর্চায়। তা ছাড়া স্কোয়াট, পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক, বাইসেপস কার্ল-ও রয়েছে তালিকায়।
হাই-ইন্টেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং (এইচআইআইটি)-এর অর্থ হলো অল্প সময়ে প্রবল পরিশ্রম, তার পর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রাম। যেমন ৩০ সেকেন্ড জাম্পিং জ্যাক, ১৫ সেকেন্ড বিশ্রাম, ৩০ সেকেন্ড বার্পি। আধাঘণ্টার মতো এই ভাবে ব্যায়াম করতে থাকলে নানাবিধ উপকার মিলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সপ্তাহে পাঁচ দিনই শরীরচর্চা করতে হবে। দিনের কোনো এক সময়ে ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে ফল পাওয়া যাবে।