পুঁজিবাজার
কারসাজি নয়, কম দামে শেয়ার কেনার অপেক্ষায় নেতিবাচক শেয়ারবাজার
গত কয়েকদিন ধরে নেতিবাচক ধারায় চলা দেশের শেয়ারবাজার নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে কারসাজির অভিযোগ তুললেও তা ভিত্তিহীন বলে প্রমাণ পেয়েছে বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স টিম। তারা বলছেন, দীর্ঘ দেড় বছর সময়ে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা কোম্পানিগুলোর দেশি-বিদেশি ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে পারেনি। সম্প্রতি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার হওয়ায় এসব কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রির সুযোগ পেয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা নামমাত্র শেয়ার বিক্রির অর্ডারে সূচকে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আবার কম দামে শেয়ার কেনার অপেক্ষা করছে কিছু বিনিয়োগকারীরা, এর ফলে শেয়ারবাজারের লেনদেন কমেছে। এদিকে, মার্জিন লোনের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয় করা বিনিয়োগকারীদের লোনের এডজাস্টমেন্টের (সমন্বয়) জন্য শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে শেয়ার ক্রয়ের তুলনায় বিক্রির চাপ কিছুটা বেশি হওয়ায় নেতিবাচক ধারায় বইছে শেয়ারবাজার।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, শেয়ারবাজারে যে পরিমাণ বিক্রির আবেদন থাকে, সেই পরিমাণ ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কাঙ্খিত দামের তুলনায় কম দামে শেয়ার বিক্রি করায় কোম্পানিগুলোতে দরপতনের পাশাপাশি সূচকে নেতিবাচক প্রবণতার ঘটনা ঘটেছে।
বিএসইসির সার্ভেইল্যান্সের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আজ বুধবার ডিএসইর সূচক কমার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিলো ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি) লিমিটেডের। বুধবার কোম্পানিটির বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হিসাব থেকে শেয়ার বিক্রি হয়েছে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার। একই সময়ে একটি বিদেশি হিসাব এবং দেশি বিনিয়োগকারীর বিও অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার কেনা হয়েছে ৯০ লাখ টাকার। আলোচ্য সময়ে শেয়ার বিক্রির তুলনায় শেয়ার ক্রয় কমে আসায় কোম্পানিটির আজ শেয়ারদর কমেছে ১০ টাকা ৬০ পয়সা বা ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এদিকে একই ঘটনা দেখা গেছে নেতিবাচক ধারায় থাকা আরও তিন কোম্পানির শেয়ারে। বুধবার সূচকের পতনে রেনেটার অবদান ছিলো ৫ শতাংশ। কিন্তু ডিএসইতে আজ কোম্পানিটির এক বিদেশি বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব থেকে সর্বোচ্চ শেয়ার বিক্রি হয়েছে মাত্র ১১ লাখ টাকার। শেয়ার বিক্রির তুলনায় ক্রয় কম থাকায় কোম্পানিটি সূচকের পতনে জায়গা নিয়েছে।
সূত্র জানায়, ডিএসইর সূচকে নেতিবাচক প্রবণতায় অবদান রাখা আরেক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা। ১১৪ টাকা দরে শেয়ার বিক্রি করা কোম্পানিটির আজ এক অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। যা দিনের সর্বোচ্চ। শেয়ার বিক্রিতে কোন অ্যাকাউন্ট থেকে দিনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শেয়ার বিক্রি ছিলো ২৩ লাখ টাকা। কিন্তু শেয়ার বিক্রির তুলনায় ক্রেতাদের আগ্রহ কম থাকায় কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে আড়াই শতাংশ।
সূত্র মতে, শুধু দিনের হিসাবে নয়, মার্চ মাসের লেনদেনের চিত্র জুড়ে এমন ঘটনা দেখা গেছে। চলতি মার্চ মাসে বিএটিবিসির তিন বিও হিসাব থেকে শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে একটি বিও হিসাব থেকেই বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪৬ কোটি টাকা। প্রায় দেড় বছর ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা বিএটিবিসির বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রি স্বাভাবিক বিষয় হলেও সামান্য সংখ্যক শেয়ার বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। কিন্তু শেয়ার বিক্রির তুলনায় ক্রয় কম হওয়ায় সূচককে টেনে ধরার ক্ষেত্রে মাসজুড়ে ছিলো বিএটিবিসির অবদান। শুধু মার্চ মাসেই বিএটিবিসির ১২ কোটি টাকার শেয়ার ক্রয় করেছে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি। এছাড়া আরও তিনটি ভিন্ন বিও হিসাব থেকে পর্যায়ক্রমে ৫ কোটি, ৩ কোটি ৭০ লাখ এবং ৩ কোটি টাকা সমপরিমাণের শেয়ার ক্রয় ছিলো।
সূত্র জানায়, মার্চ মাসে ফ্লোর প্রাইস থেকে মুক্ত হওয়া গ্রামীনফোনের শেয়ারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ দেখা গেছে। এ মাসে বিদেশি চারটি হিসাব থেকে পর্যায়ক্রমে ২২ কোটি, ১৭ কোটি, ৭ কোটি এবং ৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বিপরীতে গ্রামীনফোন মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ৮ কোটি এবং ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। শেয়ার বিক্রির তুলনায় ক্রয় কমে আসায় বাজারে বড় প্রভাব ফেলেছে এই কোম্পানিটি।
এবিষয়ে বুধবার (২৭ মার্চ) বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অর্থসংবাদকে বলেন, পুঁজিবাজার গত কয়েকদিন নেতিবাচক ধারায় চললেও তাতে কারসাজি বা ফোর্স সেলের ঘটনা নেই। উল্টো ক্রেতা সংকটে কম দামে শেয়ার বিক্রি হওয়ায় বাজার কিছুটা নিম্নগতিতে অবস্থান করছে। তবে ক্রেতাদের সাড়া বাড়লেই পুঁজিবাজার আগের অবস্থানে ফিরবে।
তিনি বলেন, অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারের অবস্থান বুঝতে কেনাবেচা করছেন না। কেউ কেউ আবার কম দামে শেয়ার কেনার অপেক্ষা করছেন। এসব বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহী হয়ে উঠলেই পুঁজিবাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
পর্ষদ সভার তারিখ জানালো জেএমআই সিরিঞ্জ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস লিমিটেড পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২১ অক্টোবর বিকাল ৩টায় কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত সভায় ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
সভায় সমাপ্ত হিসাববছরের বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা আসতে পারে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
বিএসসির ট্যাংকারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) দুই ট্যাংকারে পরপর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। এ সন্দেহ যাতে দূর হয় বা প্রকৃত ঘটনা বের করে আনার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৯ থেকে ১০ সদস্যের একটি বড় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দুর্ঘটনার নেপথ্যে সন্দেহজনক কিছু আছে কি না, তাঁরা বের করবেন।
আজ রোববার দুপুরে বিএসসি কার্যালয়ে নৌপরিবহন এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন। এর আগে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
গত সোমবার বন্দরের ডলফিন অয়েল জেটিতে নোঙর করে রাখা বিএসসির ট্যাংকার ‘এমটি বাংলার জ্যোতিতে’ বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়েছিলেন। গত শুক্রবার মধ্যরাতে সংস্থাটির আরেকটি ট্যাংকার ‘এমটি বাংলার সৌরভে’ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরেকজন নাবিক নিহত হন।
এ নিয়ে পাঁচ দিনের ব্যবধানে দুটি অগ্নিকাণ্ডে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এমটি বাংলার সৌরভের দুর্ঘটনাকে নাশকতা হিসেবে সন্দেহ করে আসছিলেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের ভয় ছিল, যদি তেলে বিস্ফোরণ হতো, তাহলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটত। তবে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বন্দরসহ সবাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছি আমরা।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
‘শেয়ারাবাজারে বিনিয়োগের কারণে আমার আত্মহত্যা করতে হবে’
শেয়ারাবাজারে বিনিয়োগের কারণে আত্মহত্যা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এক বিনিয়োগকারী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
‘শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ১৮ লাখ, হয়ে গেল দেড় লাখ’
দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা ১৮ লাখ টাকা দরপতনের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে দেড় লাখ টাকায় এসে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন এক বিনিয়োগকারী। আজ রোববার বিএসইসি ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আজও বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আজও বিক্ষোভ করেছে বিনিয়োগকারীরা। রাজধানীর মতিঝিলে বক চত্বরে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিএসইসি ভবনের সামনেও মানববন্ধন করেছে একদল বিনিয়োগকারী।
এ নিয়ে টানা তিন কার্যদিবস বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে ব্যর্থ হওয়ায় চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে হবে।
তারা বলেন, খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে নেতৃত্বে বিএসইসি পুনর্গঠন করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস ছিল নতুন কমিশনের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার গতিশীল হবে। কিন্তু, বিএসইসি চেয়ারম্যান না বুঝে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছে। যার কারণে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই এখন আরে তার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই। তাই বিএসইসির চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করা খুবই জরুরি। এর কোনো বিকল্প নেই। তাই বিনিয়োগকারীদের এখন একটাই দাবি, বিএসসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাই। তিনি পদত্যাগ না করলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেব।
এদিকে বিএসইসি ভবনের বিপরীতে ‘শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী’ ব্যানারে একদল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করে। এ সময় তারা বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ শেয়ারবাজারের উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে বিএসইসিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রোববার দুপুর থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে বিএসইসি ভবনের নিচে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এছাড়া বিএসইসির নিচ তলার ভেতরে কোস্ট গার্ড ও সেনা সদস্যদেরও উপস্থিত রয়েছে।
এর আগে শনিবারের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েও কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা লাগাতার কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
গত বৃহস্পতিবারও লংমার্চ কর্মসূচি দিয়ে বিনিয়োগকারীরা বৃষ্টির মধ্যেও মতিঝিলে জড়ো হন এবং বিএসইসি কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন। তারা ‘অযোগ্য বিএসইসি চেয়ারম্যান হঠাও, পুঁজিবাজার বাঁচাও’— স্লোগান দিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন। এর আগের দিন গত বুধবারে ডিএসই ভবনের সামনে প্রথম মানববন্ধন শুরু করেন।
এমআই