আন্তর্জাতিক
ব্রাজিলে কফি উৎপাদন বাড়ছে টানা তিন বছর

ব্রাজিলে টানা তৃতীয় বছরের মতো বাড়তে যাচ্ছে কফি উৎপাদন। দেশটির কফি খাতের ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা। ১৪৪ বছরে সপ্তমবার টানা তৃতীয় বছরের মতো উৎপাদন বাড়তে যাচ্ছে এর। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ব্রাজিল বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদক ও রফতানিকারক। আগামী বছরও দেশটিতে উৎপাদনের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা। ব্রাজিলে মূলত অ্যারাবিকা উৎপাদন হয় বেশি। তবে এ বছর সেখানে উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করবে রোবাস্তা কফি।
ব্রাজিলে দ্বিবার্ষিক চক্রে অ্যারাবিকা কফি উৎপাদন হয়। অর্থাৎ এক বছর উৎপাদন বেশি হলে অন্য বছর কম হয়। আবার এক বছর কম হলে অন্য বছর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র গরম আবহাওয়ার কারণে এ চক্র ভেঙে গেছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে ভয়াবহ খরা আর তীব্র তুষারপাতের কারণে বিপর্যয় নেমেছিল দেশটির কফি খাতে। এর পর থেকেই প্রতি বছর পানীয় পণ্যটির উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি দেখছে দেশটি।
বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব মোকাবেলায় চাষাবাদ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছেন দেশটির কফিচাষীরা। বাড়ানো হয়েছে সেচের আওতা। শুষ্ক আবহাওয়ায় উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে জোর প্রয়াস চালাচ্ছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। ব্রাজিলের কফি রফতানিকারক গ্রুপের চেয়ারম্যান মারিকো ফ্যারেরা বলেন, ‘আগামী বছরও উৎপাদন বাড়বে তাতে সন্দেহ নেই।’
ব্রাজিলের খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থা কোনাব জানায়, ১০ বছরের ব্যবধানে হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ৫০ শতাংশ বেড়ে ৪৪ দশমিক ২ ব্যাগে (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) উন্নীত হয়েছে। অ্যারাবিকা কফি উৎপাদন ২৪ শতাংশ বেড়ে হেক্টরপ্রতি দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৭ ব্যাগে।
কোনাবের প্রাক্কলন অনুযায়ী, এ বছর ব্রাজিলে ৫ কোটি ৮০ লাখ ব্যাগ কফি উৎপাদন হতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। তিন বছরে মোট উৎপাদন দাঁড়াতে যাচ্ছে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ব্যাগে।
ব্রাজিলে এমন সময় রোবাস্তা উৎপাদন বাড়ছে, যখন এটি উৎপাদনে বহুমুখী জটিলতায় পড়ছে ভিয়েতনাম। দেশটি রোবাস্তা উৎপাদনে শীর্ষস্থানীয়। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে সম্প্রতি সেখানে এর উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে দাম বেড়ে পৌঁছেছে ১৬ বছরের সর্বোচ্চে।
প্রসঙ্গত, চলতি ২০২৩-২৪ কফিবর্ষে পানীয় পণ্যটির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা রাখবে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলো। ইন্টারন্যাশনাল কফি অর্গানাইজেশনের (আইসিও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ১৭ কোটি ৮০ লাখ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) কফি উৎপাদন হতে পারে, আগের বছর যা ছিল ১৬ কোটি ৮২ লাখ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে উৎপাদন বাড়বে ৯৮ লাখ ব্যাগ।
সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বছর কফির বৈশ্বিক ব্যবহার আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বাড়তে পারে। ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৭ কোটি ৭০ লাখ ব্যাগে, আগের বছর যা ছিল ১৭ কোটি ৩১ লাখ। যেসব দেশে পণ্যটি উৎপাদন হয় না, সেসব দেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদা এর ব্যবহার বাড়ার পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখবে।
চলতি বছর বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ কফি উৎপাদন হবে, তার ৫৭ দশমিক ৪ শতাংশ হিস্যাই থাকবে অ্যারাবিকার দখলে। জনপ্রিয় এ জাতের কফি উৎপাদন হতে পারে ১০ কোটি ২২ লাখ ব্যাগ, যা আগের বছর ছিল ৯ কোটি ৪০ লাখ। অন্যদিকে রোবাস্তা জাতের কফি উৎপাদন হতে পারে ৭ কোটি ৫৮ লাখে, আগের বছর যা ছিল ৭ কোটি ৪২ লাখ ব্যাগ।
আইসিও জানায়, চলতি বছর দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় কফি উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ব্যাগে উন্নীত হতে পারে। আফ্রিকার দেশগুলোয় উৎপাদন ১ কোটি ৭৯ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি ১ লাখ ব্যাগে পৌঁছার সম্ভাবনা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা কাতারের আমিরের

কাতারের রাজধানী দোহায় শুরু হয়েছে আরব-ইসলামিক সম্মেলন। দখলদার ইসরায়েল দোহায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর মুসলিম নেতারা এক জোট হয়েছেন।
কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সম্মেলনে কথা বলেন। এতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন তিনি।
কাতারি আমির বলেন, কাতারে ইসরায়েলি ‘বর্বর’ হামলার নিন্দা জানিয়েছে আরব বিশ্ব। এ হামলার বিরুদ্ধে এবং নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাতার যে আইনি ব্যবস্থা নেবে সেটিকে সমর্থন জানাবে তারা।
ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে কঠোর এবং দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্বিচারিতা পরিহার করে ইসরায়েল যেসব অপরাধ করেছে সেগুলোর বিচার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কাতারের আমির বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই দ্বিচারিতা পরিহার করার সময়। এছাড়া ইসরায়েল যেসব অপরাধ করেছে তাদের সেগুলোর জন্য বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে কাতারের আমির বলেন, ইসরায়েলের জানা উচিত ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে তারা যে গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু করেছে, মাতৃভূমি থেকে জোরপূর্বক তাদের উচ্ছেদের যে চেষ্টা ইসরায়েল চালাচ্ছে সেটি সফল হবে না, তারা যতই মিথ্যা যুক্তি দিক।
এছাড়া দখলদার ইসরায়েল বারবার গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে বলেও জানান তামিম বিন হামাদ আল থানি। তিনি বলেন, ইসরায়েলি সরকার প্রস্তাবের পর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধের পরিধি বাড়াচ্ছে। এই অঞ্চলের মানুষ এবং ইসরায়েলিদের ঝুঁকিতে ফেলে করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক
নেপালে আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২

নেপালে চলতি সপ্তাহের দুর্নীতিবিরোধী সহিংস বিক্ষোভে কমপক্ষে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রবিবার জানিয়েছে দেশটির সরকার। একই সময়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারও তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
সরকারের প্রধান সচিব একনারায়ণ আরিয়াল এক বিবৃতিতে জানান, নিহত হয়েছে ৭২ জন এবং ১৯১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দেশটিতে সরকারের পতনের পর তৈরি হওয়া পরিস্থিতির পূর্ণ চিত্র ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
নিহতরা মূলত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা, দুর্নীতি ও দুর্বল শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের দমন ও পীড়নে প্রাণ হারায়।
পরিস্থিতি মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) আরো ভয়াবহ রূপ নেয়। ক্ষুব্ধ জনতা সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপরই প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন। তখনই সেনাবাহিনী রাস্তায় নামে ও নিয়ন্ত্রণ নেয়।
নেপালের সেনাবাহিনী শুক্রবার জানিয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে লুট হওয়া ১০০টির বেশি বন্দুক তারা উদ্ধার করেছে। এর আগে বিক্ষোভকারীদের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে ঘুরতে দেখা যায়।
পুলিশের মুখপাত্র বিনোদ ঘিমিরে এএফপিকে বলেন, সহিংসতার সময় দেশজুড়ে একাধিক কারাগার থেকে পালানো প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ কয়েদির মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ১২ হাজার ৫৩৩ জন এখনও পলাতক।
নিহতদের মধ্যে জেল পালানো কয়েকজন কয়েদিও ছিলেন। পালানোর সময় বা পরবর্তীতে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে জেল থেকে পালানো অনেকে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বেশিরভাগ কয়েদিকে আটক করেছে।
আন্তর্জাতিক
নেপালে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশের ভিত্তিতে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট। এছাড়া আগামী বছরের মার্চে নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন নেপালের প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নতুন নির্বাচনের তারিখ হলো ২০২৬ সালের ৫ মার্চ।
এর আগে, শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নেপালের রাষ্ট্রপতি ভবনে স্থানীয় সময় রাত সেয়া ৯টায় তিনি শপথ নেন। তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল।
দুর্নীতি-বিরোধী সহিংস আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলির পদত্যাগের পর অস্থির দেশটির দায়িত্ব নিলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাওডেলের দপ্তর থেকে জানানো হয়, সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার পর কার্কির নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরাই তাকে নেতৃত্বের জন্য প্রস্তাব করেন।
এর আগে, সপ্তাহজুড়ে চলা বিক্ষোভে অন্তত ৫১ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনকে ‘জেন জি আন্দোলন’ বলা হচ্ছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে সামাজিকমাধ্যমের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও সহিংসতা থামে গত মঙ্গলবার ওলির পদত্যাগের পর।
তবে প্রকৌশলী কুলমান ঘিসিংকে প্রধানমন্ত্রী পদে চান আন্দোলনকারীদের অনেকে, যিনি নেপালের বিদ্যুৎ সংকট সমাধান করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এক বিবৃতিতে তার নামও প্রস্তাব করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। কুলমানের নাম উঠে আসায় কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। আর এরও আগে ওলি সরকারের পতনের পরই প্রাথমিকভাবে নাম শোনা গিয়েছিল রাজধানী কাঠমাণ্ডুর নির্দল মেয়র ও জনপ্রিয় র্যাপার বলেন্দ্র শাহের। কিন্তু ৩৫ বছর বয়সী শাহ প্রধানমন্ত্রী হতে আগ্রহী ছিলেন না। বরং তিনি প্রকাশ্যে কার্কির পক্ষেই সমর্থন জানান।
প্রসঙ্গত, সুশিলা কার্কি এর আগে ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন। সততা, দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও দৃঢ়তার কারণে তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিত। বিচারপতি থাকাকালে ক্ষমতাসীন মন্ত্রীকে জেলে পাঠানো থেকে শুরু করে সরাসরি সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতেও পিছপা হননি কার্কি। তবে তার বিচারপতি জীবন ঝঞ্ঝাটমুক্ত ছিল না। দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখা হয়। জনমতের চাপে শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়। যদিও ঘটনাটি কার্কিকে হতাশ করেছিল এবং তিনি পরে পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ১৭১ অবৈধ অভিবাসী আটক

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ দেশটির কুয়ালালামপুর ও জোহর বাহরুতে পৃথক অভিযানে বাংলাদেশিসহ ১৭১ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর সেতাপাকের দানাউ কোটার ১৯ তলা ভবনে চালানো অভিযানে ১২৫ জনকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশন পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সৌপি ওয়ান ইউসুফ জানান, আটকদের মধ্যে ৮১ জন পুরুষ ও ৪৪ জন নারী। যাদের বয়স ১৬ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে মিয়ানমারের ৬৯ জন, ভারতের ২৫ জন, পাকিস্তানের ১৪ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১২ জন ও বাংলাদেশের ৫ জন রয়েছেন।
তিনি বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ ও দুই সপ্তাহের নজরদারির পর এ অভিযান চালানো হয়। মোট ৬৪টি ইউনিটে অভিযান চালিয়ে ৪০০ জনকে যাচাই করা হয়। আটকদের বিরুদ্ধে বৈধ কাগজপত্র না থাকা বা ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে জোহরের উলু তিরম এলাকায় ‘অপস সাপু’ অভিযানে আরও ৪৬ জনকে আটক করা হয়।
জোহর ইমিগ্রেশন পরিচালক দাতুক মোহাম্মদ রুসদি মোহাম্মদ দারুস জানান, আটকদের মধ্যে রয়েছেন ১৩ জন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ, ১০ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, ১২ জন মিয়ানমারের পুরুষ, ৪ জন মিয়ানমারের নারী, ৪ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ১ জন নেপালি পুরুষ এবং ২ থেকে ৬ বছর বয়সী দুই ইন্দোনেশিয়ান শিশু।
তিনি বলেন, আটকদের ইমিগ্রেশন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে এবং অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত চলছে। অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ বা আশ্রয় প্রদানকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আন্তর্জাতিক
চার্লি কার্ককে হত্যা আমেরিকার জন্য একটি অন্ধকার মুহূর্ত: ট্রাম্প

মার্কিন ডানপন্থী কর্মী ও ভাষ্যকার চার্লি কার্কের হত্যাকে ‘আমেরিকার জন্য এক অন্ধকার মুহূর্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কার্ক, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার পর ট্রুথ সোশালে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, চার্লি কার্কের নৃশংস হত্যাকাণ্ড তাকে ‘শোক ও ক্রোধে ভরিয়ে দিয়েছে’। তিনি বলেন, “চার্লি লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন। আজ রাতে যারা তাকে চিনতেন ও ভালোবাসতেন, তারা সবাই গভীর শোকে মর্মাহত। তিনি একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ছিলেন, যিনি মুক্ত আলোচনা এবং তার প্রিয় দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।”
ট্রাম্প আরও উল্লেখ করেন, চার্লি কার্ক ছিলেন সত্য ও স্বাধীনতার প্রতীক এবং তরুণদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত একজন মানুষ। “তিনি ছিলেন গভীর বিশ্বাসের অধিকারী। আমরা সান্ত্বনা পাই এই ভেবে যে এখন তিনি ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তিতে আছেন,” বলেন তিনি।
এ সময় ট্রাম্প কার্কের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি যেন এই ভয়াবহ দুঃখ ও কষ্টের সময়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের দেখভাল করেন।”
এ ঘটনায় দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে বিচারকার্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র ছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।
চার্লকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজতে ক্যাম্পাসজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। যদিও শুরুতে কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানান, সন্দেহভাজন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। পরে এটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
ঘটনার পরই ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং ভারী অস্ত্রে সজ্জিত পুলিশ সদস্যরা সেখানে টহল দিচ্ছে। কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী ও ভাষ্যকার চার্লি কার্ক (৩১) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) উটাহ রাজ্যের ওরেম শহরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বক্তব্য দেয়ার সময় হঠাৎ গুলির শব্দ হয়। সঙ্গে সঙ্গে কার্ক গলায় হাত দিয়ে চেয়ারে লুটিয়ে পড়েন। এরপর উপস্থিত কয়েক হাজার মানুষ দৌড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, তার গলা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে।
উটাহ গভর্নর স্পেন্সার কক্স সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এটি একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। আমাদের রাজ্যের জন্য আজ অন্ধকার দিন, জাতির জন্য ট্র্যাজেডি।’