অর্থনীতি
ভরা মৌসুমেও চড়া আলুর বাজার

শীতের মৌসুম শেষে দেশজুড়ে বাড়ে আলু তোলার ধুম। বাজারে নতুন আলুর দাম শুরুর দিকে কিছুটা চড়া থাকলেও ধীরে ধীরে তা কমে আসে। কিন্তু চলতি বছরে এ চিত্র একেবারে বিপরীত। যেখানে অনেক কৃষক মাঠ থেকে আলু তোলা এখনো শেষ করতে পারেননি, এর মাঝেই বাড়ছে আলুর দাম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতিরিক্ত উৎপাদন খরচ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে আলুর উৎপাদন কম হওয়া—মূলত এই দুই কারণকে আলুর চড়া বাজারের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। দাম বাড়তি থাকায় ইতিমধ্যে আলু আমদানিও হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলুর খুচরা দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। কারওয়ান বাজারের মতো বড় বাজার থেকে এক পাল্লা, অর্থাৎ ৫ কেজি কিনলে দাম পড়েছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর দাম দাঁড়ায় ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত এক মাসে আলুর দাম বেড়েছে ৩৫ শতাংশের মতো। গত বছরের এই সময়ে ঢাকার বাজারে নতুন আলুর কেজি ছিল ১৬ থেকে ২০ টাকা। টিসিবির গতকালের বাজারদর অনুযায়ী, রাজধানীতে মানভেদে প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। সরকারি এই সংস্থার হিসাব পর্যালোচনা করা দেখা যায়, বাজারে গত এক মাসে আলুর দাম বেড়েছে ৩৫ শতাংশের মতো। গত বছর এই সময়ে ঢাকার বাজারে নতুন আলুর কেজি ছিল ১৬ থেকে ২০ টাকা। সেই হিসাবে, এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে ১১৭ শতাংশ।
কৃষকেরা বলছেন, উন্নত জাতের বীজ না থাকায় আলুর উৎপাদন কমেছে। সঙ্গে আছে বৈরী আবহাওয়া, জমির উর্বরতা সমস্যা ও প্রযুক্তির ব্যবহার না বাড়া। বিপরীতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে প্রতিবছর। ফলে আলুর বাজার স্থির থাকছে না।
অর্থসংবাদ/এমআই

অর্থনীতি
লিটারে ১৯ টাকা কমলো পাম অয়েলের দাম

দেশের বাজারে পাম তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি লিটারে পাম অয়েলের দাম কমানো হয়েছে ১৯ টাকা।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণসংক্রান্ত সভা শেষে এ তথ্য জানানো হয়।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম না কমায় এই মুহূর্তে কমানো সম্ভব হয়নি সয়াবিন তেলের দাম। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার কারণে লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে পাম অয়েলের দাম।
কাফি
অর্থনীতি
বাংলাদেশের আরও ৪ পাটপণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশের আরও চার ধরনের পাটজাতীয় পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করেছে ভারত। তবে শুধু মুম্বাইয়ের নভোসেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে পণ্যগুলো আমদানির সুযোগ রাখা হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা পণ্যগুলো হলো— পাটের বস্তা ও ব্যাগ, পাটের তৈরি ব্লিসড ও আনব্লিসড বোনা কাপড়, পাটের সুতা কর্ডেজ দড়ি। গতকাল থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ছয় মাসে চার দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ভারত। গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয়। এরপর গত ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে ভারত।
গত ২৭ জুন বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড় স্থলপথে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে তালিকায় আরও চারটি পণ্য যুক্ত হয়েছে, যা বাংলাদেশের পাটপণ্য রপ্তানিতে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ বলেন, ভারত এরকম অশুল্ক বাধা তৈরি করতে পারে এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। সে বিবেচনায় কিছু প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের চাহিদা বাড়ানোর বেশ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাধারণ পাটপণ্য রপ্তানি না করে মূল্য সংযোজিত দামি পণ্য পৃথিবীর যে কোনো দেশে যাতে রপ্তানি হতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভারতের এ সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য ‘সাপে বর’ হবে।
বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সংগঠনের সভাপতি রাশেদুল করিম মুন্না জানান, বাংলাদেশের পাটপণ্যের ভারতীয় আমদানিকারকরা মূলত কলকাতাভিত্তিক। স্থলপথে সহজেই কলকাতায় পণ্য পৌঁছানোর সুবিধা দু’দেশের জন্যই লাভজনক ছিল। তিন মাস আগে কিছু পণ্যে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দরে পণ্য পৌঁছানো এবং সেখান থেকে আবার কলকাতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা হয়। এতে আমদানিকারকদের পরিবহন ব্যয় বাড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ গুণ। সময়ও লাগছে দ্বিগুণের মত। নতুন করে আরও চার পণ্য এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার কারণে রপ্তানি বাজার হিসেবে ভারতকে আর ধরে রাখা বাণিজ্যিকভাবে সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপ এবং আমেরিকার বাজার লক্ষ্য করে পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, মান উন্নয়ন এবং মূল্য সংযোজন করার পরিকল্পনা নেওয়া গেলে কাঁচাপাট রপ্তানির এ প্রতিবন্ধকতা পাট শিল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনতে পারে।
অর্থনীতি
অর্থঋণ মামলার তথ্য বছরে দুইবার জমা দেওয়ার নির্দেশ

মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায়ের তথ্য বছরে দুইবার (৩০ জুন ও ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক) স্বতন্ত্রভাবে ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ’-এ দাখিলের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। হার্ডকপি কিংবা সফটকপিতে এ-সংক্রান্ত বিবরণী জমা দেওয়া যাবে।
সোমবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খেলাপি ঋণ আদায় সংক্রান্ত উল্লেখিত বিবরণীটি অর্থঋণ ও অন্যান্য আদালতে ব্যাংক কর্তৃক দাখিলের নির্দেশনা রয়েছে। এটি এখন থেকে বছরে দুইবার স্বতন্ত্রভাবে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগেও পাঠাতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পূর্বে বিভিন্ন সময় একাধিকবার একই ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে হতো, যা সময় ও শ্রমের অপচয় ঘটাত। এ জটিলতা দূর করতেই নতুন এ তথ্য দাখিল নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, অর্থঋণ ও অন্যান্য আদালতে ব্যাংক কর্তৃক দায়েরকৃত ও নিষ্পত্তিকৃত মামলার তথ্য এবং ঋণ/বিনিয়োগ অবলোপন সংক্রান্ত হার্ডকপি এ বিভাগে দাখিল করতে হবে না।
এছাড়া আমদানি-পরবর্তী অর্থায়নের তথ্যের হার্ডকপি এখন শুধু ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনে জমা দিলেই হবে। আগের মতো এ বিভাগে জমা দিতে হবে না।
অর্থনীতি
পাঁচ শ্রেণির করদাতাদের দিতে হবে না অনলাইন রিটার্ন

পাঁচ শ্রেণির করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ ছাড়া অন্য সব করদাতার অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। ছাড় পাওয়া করদাতাদের মধ্যে প্রবীণদের রেখেছে এনবিআর।
সোমবার (১১ আগস্ট) এনবিআর থেকে এ সংক্রান্ত এক আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
যে পাঁচ শ্রেণির করদাতাকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়া থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে- ১. ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা; ২. শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা (সনদ দাখিল সাপেক্ষে); ৩. বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা; ৪. মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি এবং ৫. বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক। তবে তারা চাইলে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩২৮-এর উপধারা (৪)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৪ আগস্ট থেকে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে।
অর্থনীতি
ইইউর ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্ট বাস্তবায়ন প্রস্তুতি সেমিনার

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন নীতিমালা, ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী শিল্পগুলোকে পরিচয় করিয়ে দিতে দিনব্যাপী একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাণিজ্য ফোরাম: ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্টের উপর আলোকপাত’ শীর্ষক দিনব্যাপী এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড’র (GIZ) উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারের মূল লক্ষ্য ছিল, ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্ট নিয়ে একটি সম্মিলিত ধারণা তৈরি করা এবং বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে ইইউ’র টেকসই পণ্য বিধিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রস্তুতি মূল্যায়ন করা।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, এই ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর অনুষ্ঠান বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো। ডিপিপি’র মতো নিয়ম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেন ব্যয় অতিরিক্ত বৃদ্ধি না পায়, সেদিকেও নজর রাখা জরুরি।।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোট্জ।
এসময় রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোট্জ বলেন, একটি পণ্যের অনুসন্ধানযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য ডিপিপি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ডিপিপির জন্য এমন একটি ডাটা ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চাই। যা সরকারের মালিকানায় থাকবে এবং যেখান থেকে রপ্তানিকারক, কারখানা মালিকসহ বেসরকারি খাতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল ইইউ’র ট্রেসেবিলিটি ও সার্কুলার ইকোনমির চাহিদা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। বক্তারা ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোরর্টের কারিগরি কাঠামো এবং এর মাধ্যমে কীভাবে পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল থেকে শুরু করে পুরো সাপ্লাই চেইন পর্যন্ত অনুসন্ধানযোগ্যতা নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন। সেমিনারে পোশাক, খাদ্য, ওষুধ এবং ব্যাটারিসহ বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।
আয়োজকরা মনে করেন, এই সেমিনারটি বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক, শিল্প খাতের নেতৃবৃন্দ এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্পকে ইইউর ভবিষ্যৎ টেকসই মানদণ্ড পূরণে সহায়তা করবে।
এসএম