সারাদেশ
রোজায় খাবার সংকটে ভুগছেন বৃদ্ধাশ্রমের ২৭ বৃদ্ধা মা

রোজায় খাবার সংকটে ভুগছেন কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকার উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের বৃদ্ধা ২৭ জন মা। অভাবি, অসহায়-দুস্থ ও স্বামী-সন্তানহারা বৃদ্ধ মায়েদের জন্য ১৯৯৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে সেখানে জীবনের পড়ন্ত বেলায় অসহায় বৃদ্ধা ২৭ জন মা থাকেন। এসব অসহায় মায়েদের খাবার, চিকিৎসাসেবা, ওষুধ, পোশাক-পরিচ্ছদসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুনর্বাসন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তবে আর্থিক অভাবের কারণে প্রয়োজনীয় খাবার, পোশাকসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার যথাযথ ব্যবস্থা করতে পারে না তারা।
পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধা আমেনা বলেন, আমার জীবন খুব কষ্টের। আমি বাসাবাড়ি ও রাস্তার কাজ করে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছি। আমার ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাই আছে। আমি বৃদ্ধা হয়ে গেছি, কাজ করতে পারি না। আমাকে কেউ দেখাশোনা করে না। এজন্য গত ৫ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। বৃদ্ধাশ্রমের জীবনও অনেক কষ্টের। টাকাপয়সার অভাবে ইফতারের জিনিসপত্র কিনতে পারে না। অনেক সময় খাবারও কিনতে পারে না। ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ঘরের মধ্যে পানি চলে আসে। আমাদের কাপড়, ওষুধ, ইফতারের কষ্ট। সবকিছুরই কষ্ট। আমরা চলতে পারছি না। ভাত দিয়ে ইফতার করতে হচ্ছে। কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই্ বলছিলেন বৃদ্ধা আমেনা বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল এলাকায়।
ষাটোর্ধ্ব বয়সী সাজেদা খাতুন বলেন, ছেলে-মেয়ে আছে। তাদেরকে কষ্ট করে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছি। এখন তারা, যার যার মতো। যার যার কর্ম সে সে করছে। তারা তাদের ছেলেপিলে নিয়ে করে খাচ্ছে। আমি এখন বুড়োকালে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। আমাদের জীবনটা অনেক কষ্টের জীবন। ছেলে-মেয়ে থেকেও নেই। আগেকার জীবনের কথা বলতে গেলে কষ্ট বেড়ে যায়। সেসব কথা বলতে চাই না।
সরেজমিনে গত বুধবার ইফতারের ১৫ মিনিট আগে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বয়স্ক মায়েরা কেউ অজু করছেন, কেউবা বসে দোয়া-দরুদ পড়ছেন। কেউ ঘুমাচ্ছেন, কেউবা নামাজ পড়ছেন। কেউবা চুপচাপ ইফতার করার জন্য বসে আছেন। সবার চোখেমুখে কষ্টের ছাপ। রোজাদার বৃদ্ধা অসহায় মায়েদের জন্য থালায় ভাত তুলে দেওয়া হচ্ছে। মসজিদের মাইকে ইফতারের ঘোষণার সাথে সাথে চিনির শরবত দিয়ে ইফতার শুরু করেন। এরপর ভাত খাওয়া শুরু করেন তারা। অর্থের অভাবে ইফতার সামগ্রী কিনতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এজন্য ভাত দিয়ে একবারে রাতের খাবার ও ইফতার সম্পন্ন করেন বলে জানিয়েছেন ভাগ্যতাড়িত অসহায় মায়েরা ও কর্তৃপক্ষ।
নসিরন খাতুন বলেন, আমার দুইটা মেয়ে হয়েছিলো। তাদের ছোট রেখে আমার স্বামী মারা গেছে। আমি অফিসারদের বাসায় কাজ করতাম। কাথা সেলাই করতাম। এভাবে অনেক কষ্টে মেয়ে দুটিকে বড় করেছি। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমার তো ছেলে সন্তান নাই। এজন্য ২০ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। বৃদ্ধাশ্রমে টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারে না। এজন্য আমরা ভাত খেয়ে ইফতার করি। টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারছি না। এছাড়াও টাকার অভাবে থাকা, খাওয়া, কাপড়চোপড় ও চিকিৎসার কষ্টে আছি। আমাদের সবাই সহযোগিতা করেন।
৭০ বছর বয়সী আয়েশা খাতুন বলেন, আমি নিঃসন্তান। আমার ছেলে-মেয়ে নাই। ঘর-বাড়ি নাই, থাকার জায়গা নাই। আমার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন আছে। তারা আমার দেখাশোনা করে না। ১০ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছি। মরণের আগ পর্যন্ত এখানেই থেকে যাব। অর্থের অভাবে আমাদের খাওয়ার কষ্ট হয়। টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারে না। আমরা ভাত দিয়ে ইফতার করি। আপনারা আমাদের সাহায্য করুন।
আনজিরা খাতুন বলেন, আমার ছেলে-মেয়ে আছে, তারা দেখাশোনা করে না। আমি ৫ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে আছি। আমি অনেক আগে থেকে অসুস্থ। হার্টের অসুখ, টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারি না।
উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আফরোজা ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় ২২ বছর ধরে অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করি। আমাদের কাছে অনেক অসহায় নির্যাতিত মা রয়েছে। যাদের সংসারে ঠাঁই নেই। সন্তান জন্ম দিয়েছে, বড় করেছে। এখন সেই সংসারে মায়ের জায়গা নেই। পরনের কাপড় ও পেটের খাবারের জন্য তারা আমাদের এখানে আছে। মানুষের মা মরে একবার। আর আমাদের মা মরে বারবার। অনেক মা এখানে মারা গেছেন। মানুষের সহযোগিতায় বৃদ্ধাশ্রম চলে। রমজানে তাদের জন্য ইফতার সামগ্রী কিনতে পারি না। আজ ভাত খেয়ে ইফতার করেছে। অর্থের অভাবে মায়েদের চিকিৎসা করাতে পারি না। ঠিকমতো খাওয়াতে পারি না। থাকার কষ্ট রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন মিঠু বলেন, প্রায় দুই যুগ আগে আমার মায়ের মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পরে মায়ের জয়গাটা পূরণ করার জন্য কয়েকজন বৃদ্ধা মাকে নিয়ে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করি। আমরা অনেক কষ্ট করে এই প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছি। রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহ করে দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। রমজানে বৃদ্ধাশ্রমের মায়েরা রোজা রাখেন। অর্থের অভাবে তাদের ইফতার সামগ্রী ও সেহরিতে প্রয়োজনীয় খাবার ঠিকমতো কিনতে পারি না। ভাড়া বাসায় মায়েরা থাকে। বৃষ্টি হলে টিনের ফুটো দিয়ে ঘরের মধ্যে পানি চলে আসে। বিছানাপত্র ভিজে যায়। অর্থের অভাবে মায়েদের অনেক কষ্ট হয়। সরকার ও বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি।

সারাদেশ
মাটির নিচে মিলল লুটের পাথর, দুই দিনে উদ্ধার এক লাখ ঘনফুট

সিলেটের অন্যতম পর্যটনরকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ পাথর মাটির নিচে লুকানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটির নিচ এসব পাথর জব্দ করেছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও দিনভর অভিযান চালিয়ে আরও ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব পাথর জব্দ করা হয়। এ নিয়ে গত দুই দিনে প্রায় এক লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা পাথরের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুনরায় সাদা পাথরে ফেলা হয়েছে। বাকিগুলোও প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (গোপনীয় শাখা, মিডিয়া সেল) মো. মাসুদ রানা বলেন, শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত পাথর পুনরায় সাদাপাথরে ফেলা হচ্ছে। বুধবার মধ্য রাত থেকে শুরু করে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সবমিলিয়ে প্রায় এক লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর অভিনব পন্থায় লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। এসময় মাটিচাপা অবস্থায় বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দ করা হয়। জব্দ করা পাথরের মধ্যে ৭ ট্রাক পাথর সাদাপাথরে পুনরায় ফেলা হয়েছে। আরও আনুমানিক ৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। সেগুলোও সাদাপাথর পর্যটন এলাকায় পুনরায় ফেলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কলাবাড়িতে অভিযান পরিচালনা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা, জেলা ব্র্যান্ডিং ও পর্যটন সেল) মাহমুদ আশিক কবির বলেন, কলাবাড়ি এলাকায় ক্রাশার মালিকরা মাটির নিচে পাথর মজুত করে রেখেছেন। সেখান থেকে ৭ ট্রাক পাথর সাদা পাথর জিরোপয়েন্টে ফেলা হয়েছে। আরও আনুমানিক ৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা অবস্থায় রয়েছে। শনিবার সেগুলোও সাদাপাথরে ফেলা হবে।
সারাদেশ
বাড়ছে পদ্মার পানি, পানিবন্দি ২০ হাজার পরিবার

কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে হুহু করে বাড়ছে পানি। এতে দৌলতপুরের সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলের দুটি ইউনিয়ন রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারির অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। বৃহস্পতিবার তুলনায় পদ্মায় আজও পানি বেড়েছে চার সেন্টিমিটার।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৫৭৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে এর প্রধান শাখা গড়াই নদেও পানি বেড়েছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, প্রতি বছরই এই সময়ে পানি বাড়ে পদ্মায়। তবে পানি আর বাড়বে না, দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে বলেও জানান তিনি।
পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। আজ সকালে সেখানে বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, অর্থাৎ ১২ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার, পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুই দিনে পানি বেড়েছে ৪ সেন্টিমিটার।
সারাদেশ
রাজশাহীতে একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

‘চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’- এমনি একটি চিরকুট পাওয়া গেছে রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামুনশিখড় এলাকায় একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হওয়া সেই বাড়ি থেকে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- মিনারুল ইসলাম (৩০), তার স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮), ছেলে মাহিম (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (১৮ মাস)। মাহিম খড়খড়ি উচ্চ বিদয়ালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেত। তাদের মরদেহ দুটি ঘরে পাশাপাশি পড়ে ছিল। আর মিনারুলের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
উদ্ধারকৃত চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এই কারণে যে, আমি যদি মরে যাই, তাহলে আমার ছেলে-মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের বোঝা নিয়ে আর খাওয়ার অভাবে। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভালো। কারো কাছে কিছুই চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে কারো কাছে ছোট হতে হবে না। আমার জন্য আমার বাবা অনেক লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু সুফিয়ান বলেন, মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে সেটা নিহত মিনারুলের লেখা। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সারাদেশ
৭০ ট্রাক জব্দ, ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার

লেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরে অবৈধভাবে পাথর লুট ও পাচারের বিরুদ্ধে বুধবার রাত থেকে শুরু করে আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ৭০টি ট্রাকে থাকা প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে নদীতে পুনরায় ফেলার প্রক্রিয়া চলছে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, উদ্ধারকৃত পাথরের বড় অংশ ধলাই নদীতে ফেরত দেওয়ার কাজ চলছে, যাতে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ ও পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়। একই সঙ্গে রাতের মধ্যেই পাথর লুটের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন রাঘব বোয়ালকে গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সাদাপাথর এলাকায় প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচার করে আসছে। সম্প্রতি এই লুটপাটের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে ধলাই নদীর তীরবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধভাবে উত্তোলিত সব পাথর উদ্ধার ও জড়িতদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
এবিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও পরিবেশ বাঁচাতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, মজুত বা পাচারে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চেকপোস্টে গতরাত থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। এ সময় প্রায় ৭০টি গাড়িতে সাদাপাথর এলাকার পাথর শনাক্ত হলে সেগুলো পুনরায় প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সারাদেশ
সিলেটের পাথর উদ্ধারে অভিযানে নামছে দুদক

সিলেটের ভোলাগঞ্জে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে এবার অভিযানে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিছুক্ষণের মধ্যেই এ অভিযান শুরু হবে। দুদকের সিলেট সমন্বিত কার্যালের কর্মকর্তারা অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের অসাধু ব্যাক্তিদের যোগসাজশে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকার পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইনফোর্সমেন্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কিছুক্ষণের মধ্যেই এ অভিযান শুরু হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে শত শত ট্রাকে করে পাথর সরিয়ে নেওয়ার এক্সক্লুসিভ ভিডিও প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। এ ছাড়া কালবেলায় পাথর লুটপাট নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়।