সারাদেশ
রোজায় খাবার সংকটে ভুগছেন বৃদ্ধাশ্রমের ২৭ বৃদ্ধা মা

রোজায় খাবার সংকটে ভুগছেন কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকার উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের বৃদ্ধা ২৭ জন মা। অভাবি, অসহায়-দুস্থ ও স্বামী-সন্তানহারা বৃদ্ধ মায়েদের জন্য ১৯৯৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে সেখানে জীবনের পড়ন্ত বেলায় অসহায় বৃদ্ধা ২৭ জন মা থাকেন। এসব অসহায় মায়েদের খাবার, চিকিৎসাসেবা, ওষুধ, পোশাক-পরিচ্ছদসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুনর্বাসন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তবে আর্থিক অভাবের কারণে প্রয়োজনীয় খাবার, পোশাকসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার যথাযথ ব্যবস্থা করতে পারে না তারা।
পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধা আমেনা বলেন, আমার জীবন খুব কষ্টের। আমি বাসাবাড়ি ও রাস্তার কাজ করে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছি। আমার ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাই আছে। আমি বৃদ্ধা হয়ে গেছি, কাজ করতে পারি না। আমাকে কেউ দেখাশোনা করে না। এজন্য গত ৫ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। বৃদ্ধাশ্রমের জীবনও অনেক কষ্টের। টাকাপয়সার অভাবে ইফতারের জিনিসপত্র কিনতে পারে না। অনেক সময় খাবারও কিনতে পারে না। ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ঘরের মধ্যে পানি চলে আসে। আমাদের কাপড়, ওষুধ, ইফতারের কষ্ট। সবকিছুরই কষ্ট। আমরা চলতে পারছি না। ভাত দিয়ে ইফতার করতে হচ্ছে। কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই্ বলছিলেন বৃদ্ধা আমেনা বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল এলাকায়।
ষাটোর্ধ্ব বয়সী সাজেদা খাতুন বলেন, ছেলে-মেয়ে আছে। তাদেরকে কষ্ট করে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছি। এখন তারা, যার যার মতো। যার যার কর্ম সে সে করছে। তারা তাদের ছেলেপিলে নিয়ে করে খাচ্ছে। আমি এখন বুড়োকালে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। আমাদের জীবনটা অনেক কষ্টের জীবন। ছেলে-মেয়ে থেকেও নেই। আগেকার জীবনের কথা বলতে গেলে কষ্ট বেড়ে যায়। সেসব কথা বলতে চাই না।
সরেজমিনে গত বুধবার ইফতারের ১৫ মিনিট আগে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বয়স্ক মায়েরা কেউ অজু করছেন, কেউবা বসে দোয়া-দরুদ পড়ছেন। কেউ ঘুমাচ্ছেন, কেউবা নামাজ পড়ছেন। কেউবা চুপচাপ ইফতার করার জন্য বসে আছেন। সবার চোখেমুখে কষ্টের ছাপ। রোজাদার বৃদ্ধা অসহায় মায়েদের জন্য থালায় ভাত তুলে দেওয়া হচ্ছে। মসজিদের মাইকে ইফতারের ঘোষণার সাথে সাথে চিনির শরবত দিয়ে ইফতার শুরু করেন। এরপর ভাত খাওয়া শুরু করেন তারা। অর্থের অভাবে ইফতার সামগ্রী কিনতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এজন্য ভাত দিয়ে একবারে রাতের খাবার ও ইফতার সম্পন্ন করেন বলে জানিয়েছেন ভাগ্যতাড়িত অসহায় মায়েরা ও কর্তৃপক্ষ।
নসিরন খাতুন বলেন, আমার দুইটা মেয়ে হয়েছিলো। তাদের ছোট রেখে আমার স্বামী মারা গেছে। আমি অফিসারদের বাসায় কাজ করতাম। কাথা সেলাই করতাম। এভাবে অনেক কষ্টে মেয়ে দুটিকে বড় করেছি। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমার তো ছেলে সন্তান নাই। এজন্য ২০ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। বৃদ্ধাশ্রমে টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারে না। এজন্য আমরা ভাত খেয়ে ইফতার করি। টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারছি না। এছাড়াও টাকার অভাবে থাকা, খাওয়া, কাপড়চোপড় ও চিকিৎসার কষ্টে আছি। আমাদের সবাই সহযোগিতা করেন।
৭০ বছর বয়সী আয়েশা খাতুন বলেন, আমি নিঃসন্তান। আমার ছেলে-মেয়ে নাই। ঘর-বাড়ি নাই, থাকার জায়গা নাই। আমার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন আছে। তারা আমার দেখাশোনা করে না। ১০ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছি। মরণের আগ পর্যন্ত এখানেই থেকে যাব। অর্থের অভাবে আমাদের খাওয়ার কষ্ট হয়। টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারে না। আমরা ভাত দিয়ে ইফতার করি। আপনারা আমাদের সাহায্য করুন।
আনজিরা খাতুন বলেন, আমার ছেলে-মেয়ে আছে, তারা দেখাশোনা করে না। আমি ৫ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে আছি। আমি অনেক আগে থেকে অসুস্থ। হার্টের অসুখ, টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারি না।
উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আফরোজা ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় ২২ বছর ধরে অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করি। আমাদের কাছে অনেক অসহায় নির্যাতিত মা রয়েছে। যাদের সংসারে ঠাঁই নেই। সন্তান জন্ম দিয়েছে, বড় করেছে। এখন সেই সংসারে মায়ের জায়গা নেই। পরনের কাপড় ও পেটের খাবারের জন্য তারা আমাদের এখানে আছে। মানুষের মা মরে একবার। আর আমাদের মা মরে বারবার। অনেক মা এখানে মারা গেছেন। মানুষের সহযোগিতায় বৃদ্ধাশ্রম চলে। রমজানে তাদের জন্য ইফতার সামগ্রী কিনতে পারি না। আজ ভাত খেয়ে ইফতার করেছে। অর্থের অভাবে মায়েদের চিকিৎসা করাতে পারি না। ঠিকমতো খাওয়াতে পারি না। থাকার কষ্ট রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন মিঠু বলেন, প্রায় দুই যুগ আগে আমার মায়ের মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পরে মায়ের জয়গাটা পূরণ করার জন্য কয়েকজন বৃদ্ধা মাকে নিয়ে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করি। আমরা অনেক কষ্ট করে এই প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছি। রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহ করে দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। রমজানে বৃদ্ধাশ্রমের মায়েরা রোজা রাখেন। অর্থের অভাবে তাদের ইফতার সামগ্রী ও সেহরিতে প্রয়োজনীয় খাবার ঠিকমতো কিনতে পারি না। ভাড়া বাসায় মায়েরা থাকে। বৃষ্টি হলে টিনের ফুটো দিয়ে ঘরের মধ্যে পানি চলে আসে। বিছানাপত্র ভিজে যায়। অর্থের অভাবে মায়েদের অনেক কষ্ট হয়। সরকার ও বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি।

সারাদেশ
পাবনায় ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে সাড়ে ১২ লাখ টাকা লুট

পাবনা সদর উপজেলার টেবুনিয়ায় ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় জানালার গ্রিল কেটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। এসময় দুটি কম্পিউটার ভাঙচুর ও হার্ডডিস্ক লুট করা হয়। প্রমাণ ধ্বংস করতে এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
বুধবার (১৮ জুন) দিনগত রাতে উপজেলার টেবুনিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে ব্যাংক খোলার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
স্থানীয়, পুলিশ ও ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার স্বাভাবিক কার্যক্রম শেষে ব্যাংক বন্ধ করে চলে যান শাখা সংশ্লিষ্টরা। পরদিন ব্যাংকের অফিস সহকারী (মেসেঞ্জার) রাসেল এসে ব্যাংক খুলে দেখেন জানালার গ্রিল কাটা এবং পুরো ব্যাংক তছনছ অবস্থায় রয়েছে। পরে সংশ্লিষ্টদের খবর দিলে দেখা যায়, ভল্টে থাকা টাকা, কম্পিউটার ও হার্ডডিস্ক লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এবিষয়ে ব্যাংকের অফিস সহকারী রাসেল প্রামাণিক বলেন, রাতের কোনো একটি সময় এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। সকালে অফিসে ঢুকে দেখি জানালার গ্রিল কাটা, কম্পিউটার ভাঙা ও চেয়ার ছড়ানো। এরপর আমি স্যারদের জানাই।
এজেন্ট শাখার ইনচার্জ নাঈম হাসান বলেন, খবর পেয়ে অফিসে এসে দেখি ভল্ট ভাঙা ও তাতে থাকা ১২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা নেই। অফিসের দুটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক এবং সিসিটিভি সিস্টেমও ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় চেয়ারে ঘটনায় জড়িতদের পায়ের ছাপ লক্ষ্য করা গেছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভল্ট ভেঙে টাকা ও কম্পিউটার চুরি হয়েছে বলে দাবি শাখা সংশ্লিষ্টদের। তবে ভল্ট ভাঙা হয়েছে বলে মনে হয়নি। ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের দ্বন্দ্বেও এমনটি হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
সারাদেশ
২৪ ঘণ্টায় সিলেটে আরও ৪ জনের করোনা শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে নতুন করে আরও চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে নতুন করে সিলেটে ছয়জন করোনা আক্রান্ত হলেন। বুধবার (১৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে চারজনের কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এ নিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছয়জন। তাদের মধ্যে শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে তিনজন, নর্থইস্ট হাসপাতালে একজন, রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন ও সীমান্তিকে একজন।
এদিকে নতুন করে সিলেটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু হওয়ায় প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরই মধ্যে তিনটি আরটি-পিসিআর ল্যাব প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া করোনা রোগীদের চিকিৎসায় শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। এর বাইরে করোনার পরীক্ষার কিটসহ সব সরঞ্জামাদি সরবরাহ ও প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আনিসুর রহমান জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি সংস্থা সীমান্তিকে তিনটি আরটি-পিসিআর ল্যাব প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমানে নমুনা পরীক্ষার চাহিদা কম থাকায় শুধুমাত্র ওসমানী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চলবে পরীক্ষা। রোগী বাড়লে বাকি দুটি ল্যাবও ব্যবহার করা হবে।
সারাদেশ
বাস-কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩

কক্সবাজার রামুতে যাত্রীবাহী বাস ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। সোমবার (১৬ জুন) সকাল ৯টার দিকে রামু রশিদ নগর ইউনিয়নের জেটিরঘাটা রাস্তার মাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, কক্সবাজার সদরের পিএমখালী এলাকার বাসিন্দা হাবিব উল্লাহ (৫৫), তার ৯ বছরের শিশু রিয়াদ, রামু এলাকার বাসিন্দা রিমঝিম বড়ুয়া।
প্রত্যক্ষদর্শী কুদ্দুস জানান, কক্সবাজার শহর থেকে ছেড়ে আসা পূরবী বাস ও বিপরীত থেকে আসা কার্ভারভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহতদের বাস কেটে উদ্ধার করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়বুর রহমান। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে একজন শিশু, একজন নারী ও একজন পুরুষ রয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। নিহতদের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে।
সারাদেশ
গোপালগঞ্জে তিন বাসের সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ২

গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে তিনটি বাসের পরপর সংঘর্ষে পুলিশের এক কর্মকর্তা ও বাসের এক সহকারী নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা সহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মেরী গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের এটিএসআই রফিকুল ইসলাম (৫২) নিহত দুইজনের একজন। তিনি উদ্ধারকাজ পরিচালনার সময় চতুর্মুখী সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন এবং পরে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত অপর ব্যক্তি আরমান পরিবহনের বাস হেল্পার। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক মো. মাকসুদুর রহমান মোরাদ জানান, পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে প্রথমে ধাক্কা দেয় আরমান পরিবহনের একটি বাস। সঙ্গে সঙ্গে পিছন থেকে এসপি গ্রীন লাইনের আরেকটি বাস এসে ধাক্কা দিলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের একটি দল দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করে। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী নিউ বলেশ্বর পরিবহনের একটি বাস ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাস ও ট্রাককে সজোরে ধাক্কা দিলে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে উদ্ধার কাজে থাকা এটিএসআই রফিকুলসহ আরও তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উদ্ধার কাজে অংশ নেয় গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট, যার নেতৃত্বে ছিলেন সিনিয়র স্টেশন অফিসার মালেক আলী সরদার। প্রায় দুই ঘণ্টা পর, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সরিয়ে নেওয়ার পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কাফি
সারাদেশ
তৃণমূল ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের কৃতি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান

শরীয়তপুর জেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে কৃতি সংবর্ধনা ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তৃণমূল ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের আয়োজনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিন্দ্য মন্ডল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়েদুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তৃণমূল ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের সভাপতি খোকন মাহমুদ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রাজ্জাক, উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন আসামী, আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ইমরান সরকার, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ আব্দুল্লাহ মামুন সরকার, আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউসার আহমেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আখতারুজ্জামান সম্রাট মাঝি, সংগঠনের সাবেক সভাপতি মোল্লা হানিফ, সাবেক সহ-সভাপতি মুসা সরদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন তাঁতী, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষকবৃন্দ তৃণমূল ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ ও বর্তমান কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের উপবৃত্তি পরীক্ষায় চাঁদপুর ও শরীয়তপুর জেলার মোট ৭৩টি স্কুল ও কলেজ থেকে প্রায় ২,৫০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে মেধার ভিত্তিতে ৬৬ জন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংগঠনের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন সরকার বলেন, ছাত্রকল্যাণ সংগঠনগুলো সত্যিকার অর্থেই নিরলসভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
শহীদ সিরাজ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোতালেব মাঝি বলেন, মেধার জোরে যেখানে যাওয়া যায় পেশি শক্তির জোরে সেখানে যাওয়া যায় না। শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অর্থে মেধাবী হতে হবে এবং পড়াশোনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে।
বিশেষ অতিথি ওসি ওবায়েদুল হক বলেন, ছাত্ররা শক্তি ছাত্ররাই বল—তরুণরাই জাতির কর্ণধার। মানুষকে জীবন গড়তে হলে ডিসিপ্লিনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। শিক্ষার্থীদের উচিত শিক্ষা জীবনে শৃঙ্খলা মেনে চলা এবং মাদকমুক্ত জীবন গড়ে তোলা।
প্রধান অতিথি অনিন্দ্য মন্ডল তাঁর শিক্ষা ও চাকরিজীবনের নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, আমি ইউএনও হওয়ার আগে অনেক চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি অনেক ধৈর্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি। পড়াশোনায় ধৈর্য একটি বড় গুণ। এই সংগঠনের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি।
অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে সভাপতি খোকন মাহমুদ তাঁর সমাপনী বক্তব্যে সকল অতিথি ও শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
কাফি