লাইফস্টাইল
ইফতারে মুসলিম দেশে যেসব খাবার প্রচলিত

সিয়াম সাধনার মাস রমজান। এ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাসব্যাপী রোজা রাখেন। পূণ্য অর্জন ও আত্মশুদ্ধির আশায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা পানাহার থেকে বিরত থাকেন। মাগরিবের আজান শুনে মুখে খাবার তুলে রোজা ভাঙ্গেন। রোজা ভাঙ্গার এসময়কে বলা হয় ‘ইফতার’।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের ইফতার আয়োজনে রয়েছে বৈচিত্র্য। যদিও প্রায় সব দেশেই সাধারণত খেজুর বা পানির মতো হালকা কিছু দিয়ে ইফতার শুরু হতে দেখা যায়, কিন্তু দেশে দেশে ইফতার আয়োজনে বাহারি পদের খাবার দেখা যায়।
পাকিস্তান
পাকিস্তানে ইফতার আয়োজনে পানি এবং খেজুর তো থাকেই তবে সেখানে প্রাধান্য পেতে দেখা যায় মাংস ও রুটির মতো সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো। নানা ধরনের কাবাব, তান্দুরি, কাটলেট, টিক্কার উপস্থিতি প্রায় প্রতিদিনের ইফতারেই রেখে থাকেন বড় অংশের পাকিস্তানি।
এসব ভারী খাবারের পাশাপাশি ইফতারের সময় বিভিন্ন ভাজাপোড়া খাবারও খেয়ে থাকেন তারা। যেমন- রোল, নিমকি, মাংস ও সবজি দিয়ে তৈরি করা এক ধরনের বিশেষ সমুচা, বিভিন্ন ধরনের চপ, পাকোড়া ইত্যাদি।
এ ছাড়া নানারকম শরবত, ফল বা ফলের সালাদ, ছোলা-বুট, ফালুদা, জিলাপি, এমনকি বিরিয়ানি দিয়েও তাদের ইফতারের টেবিল সাজানো হয়। তবে পানীয় হিসেবে রুহ আফজার কদর এ দেশে সবচেয়ে বেশি।
ইন্দোনেশিয়া
দেশটির মানুষজন ইফতারে তেল ও মশলা জাতীয় খাবারের পরিবর্তে বিভিন্ন রকম ফল এবং ফলের শরবতকে প্রাধান্য দেয়। এ ছাড়া তাদের ইফতার আয়োজনে নানা রকম মিষ্টি জাতীয় খাবারও থাকে।
ইন্দোনেশিয়ার সংবাদপত্র দ্য জাকার্তা পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুবুর চ্যান্ডিল নামক এক ধরনের মিষ্টান্ন; মিষ্টি আলু দিয়ে তৈরি বিজি সালাক; কলা, মিষ্টি আলু অথবা কুমড়া দিয়ে তৈরি কোলাক; কলা দিয়ে তৈরি এস পিসাং ইজোসহ আরও নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার এসময় ইন্দোনেশিয়ানরা তৈরি করে থাকে।
ভারত
দেশটির একেক রাজ্যের ইফতার আয়োজনে একেক খাবার জনপ্রিয়। যেমন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন বলছে, ভারতের হায়দ্রাবাদের মুসলিমরা ইফতারে হালিম খেতে পছন্দ করেন। আবার কেরালা ও তামিলনাড়ুর মুসলমানরা ইফতার করেন ‘নমবু কাঞ্জি’ নামে এক ধরনের খাবার দিয়ে।
নমবু কাঞ্জি হলো মাংস, সবজি এবং পরিজের সমন্বয়ে তৈরি এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার। তবে সামগ্রিকভাবে দেখলে ভারতেও ইফতারে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খাওয়ার চল আছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের অলিতে-গলিতে ইফতারের আগে আগে নানা ধরনের পাকোড়া, সমুচা, চপ ইত্যাদি বিক্রির ধুম পড়ে যায়।
তবে দিল্লিসহ দেশটির উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ইফতারের শুরুতে পানির সাথে থাকে খেজুর, ছোলা-বুট, হরেক রকম ফল ও ফলের শরবত, দুধ, ডিম, দইয়ের মতো খাবার।
ভারী খাবারের মাঝে থাকে বিভিন্ন ধরনের কাবাব, হালিম, কাটলেট, শর্মা, স্যুপ, বিরিয়ানি ইত্যাদি।
বাংলাদেশ
উপমহাদেশের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের মানুষকেও ইফতারে অনেক ভাজা-পোড়া খাবার খেতে দেখা যায়। এর মধ্যে থাকে- পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, বিভিন্ন ধরনের সবজির পাকোড়া ইত্যাদি। এ ছাড়া ইফতার আয়োজনে আরও থাকে মুড়ি, ছোলা বুট, জিলাপি, হালিমসহ নানা রকমের শরবত ও ফল।
এসব হালকা খাবারের পাশাপাশি অনেক পরিবার ইফতারের সময় হাতে তৈরি নানা রকমের পিঠা-পুলি, তেহারি, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, তন্দুরি চিকেনের মতো ভারী খাবারও খায়।
তবে ফলের মধ্যে খেজুর প্রায় অপরিহার্যই বলা যেতে পারে। এটি ছাড়া বাংলাদেশি মুসলিমদের ইফতার টেবিল একরকম অসম্পূর্ণই বলা যায়। মসজিদগুলোতে যে ইফতার আয়োজন করা হয়, সেখানেও খেজুরের উপস্থিতি থাকে। মূলত, মহানবী (সা.) ইফতারের শুরুতে খেজুর খেতেন বলে বিশ্বব্যাপী এটি এত জনপ্রিয়।
নাইজেরিয়া
নাইজেরিয়ার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ইফতারে শর্করা জাতীয় খাবার ও ফলমূলকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। যেমন জল্লফ রাইস, এটি নাইজেরিয়ানদের অন্যতম প্রধান খাবার। চাল, পেঁয়াজ, টমেটো, মরিচ ইত্যাদির সমন্বয়ে এটি তৈরি করা হয়। এটি তারা সবজি বা মাংসের সাথে খান।
পাশাপাশি মই মই (পুডিং), ইয়াম (এক ধরনের আলু), আকারা (বিন কেক), মাসা (রাইস কেক), ইলুবো ও আমালার (ইয়াম দিয়ে তৈরি এক বিশেষ খাবার) মতো আরও নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবারও তাদের ইফতার তালিকায় থাকে।
মিশর
রমজানে মিশরের মানুষের ইফতার টেবিলে থাকে নানা ধরনের খাবারের সমারোহ। তার মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো ‘আতায়েফ’ ও ‘কুনাফা’। আতায়েফ হলো এক ধরনের প্যানকেক ও কুনাফা এক ধরনের সিরাপ।
এ দুটো খাবার মিশরীয় মুসলমানদের ইফতারের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলা যেতে পারে। তবে দেশটির অনেক পরিবার ইফতারে বাদামি রুটি এবং মটরশুঁটি, টমেটো, বাদাম ও অলিভ অয়েল দিয়ে তৈরি ‘ফুল মেদেমাস’ নামক এক ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করেন।
মিডল ইস্ট আই’র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিশরীয়রা তাদের ইফতারে এপ্রিকটস ফল দিয়ে তৈরি কামার-আল-দিনান্দ আরায়সি এবং দুধ, ভ্যানিলা ও নারিকেল দিয়ে তৈরি সোবিয়া নামক পানীয় পান করেন। এ ছাড়া তাদের খাবার টেবিলে বিভিন্ন ধরনের ফল, ফলের রস, সবজি ইত্যাদিও থাকে।
তুরস্ক
অন্য মুসলিম দেশগুলোর মতো ইফতারের তাদেরও পছন্দের শীর্ষে থাকে খেজুর। সেইসাথে বিভিন্ন ফলমূল, শরবত, হরেক রকম কাবাব তাদের খাদ্য তালিকায় থাকে। তবে রমজানে দেশটির মুসলমানদের সবচেয়ে পছন্দের খাবার হলো রামাজান পিদেসি, যা মূলত এক ধরনের রুটি।
এটি নান রুটির মতো একই পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। প্রথমে ময়দার সাথে দুধ, মাখন, জলপাই দিয়ে খামির তৈরি করা হয়। পরে রুটির ভেতর ডিম ও গরুর মাংসের পুর দিয়ে সেটিকে চুলায় বেক করা হয়।
ইরান
রুটি, স্যুপ, র্যাপ, কাবাবের মতো সুপরিচিত খাবারের পাশাপাশি ইফতারে ইরানের ঘরে ঘরে তৈরি হয় জাফরানের ঘ্রাণযুক্ত এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী পার্শিয়ান হালুয়া। এ ছাড়া জাফরান চাল দিয়ে তৈরি ‘শোলেহ জার্দ’ নামক এক ধরনের পুডিংও ইরানিদের খুব প্রিয়।
পার্শিয়ান নুডুলস, সবজি, পেঁয়াজ, বিন ইত্যাদি দিয়ে তৈরি আশ রাসতেহ নামক ঘন স্যুপ ও হালিমও সেখানে ইফতারের সময় আগ্রহ নিয়ে খাওয়া হয়।
সেইসাথে তাদের ইফতারে আরও থাকে স্যান্ডউইচ, চা, তাবরেজি চিজ, জুলবিয়া (বাংলায় যাকে জিলাপি বলা হয়), বামিয়েহ নামক এক ধরনের মিষ্টান্ন ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, ইরানের অন্যতম প্রধান খাবার হলো খেজুর। তাই, ইফতার টেবিলে এর উপস্থিতি অনেকটাই অপরিহার্য।
আলজেরিয়া
আলজেরিয়ান মুসলিমরা পিজ্জা ‘সোয়ারবা’, সবজি রোল, আলু, সবজি দিয়ে তৈরি দোলমা ইত্যাদি দিয়ে তাদের ইফতার শুরু করেন।
মাগরিবের নামাজের পর তারা ‘সিগার’ নামক এক ধরনের পানীয় পান করেন, যা বাদাম দিয়ে তৈরি। এ ছাড়া তাদের ইফতারের তালিকায় বিভিন্ন স্যুপও থাকে।
সৌদি আরব
আরব নিউজের এক প্রতিবেদন বলছে, সৌদিরা ইফতারের শুরুতে ‘গাহওয়া’ নামক অ্যারাবিক কফি পান করেন এবং সেইসাথে অবশ্যই খেজুর খান। এরপর তারা মাগরিবের নামাজ পড়েন।
নামাজ শেষে তারা ভারী খাবার খান। সৌদি আরবেও অঞ্চলভেদে ইফতারের খাবারে ভিন্নতা রয়েছে। দেশটির পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ তাদের ইফতারে শৌরাইক রুটি ও দুজ্ঞাহ নামক ঐতিহ্যবাহী খবার খান। আবার পূর্বাঞ্চলের লোকেরা ইফতারে সালুনা নামের একটি খাবার খান, যা মাংস ও সবজির স্টু দিয়ে তৈরি।
দেশটির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের মানুষ তাদের রোজা ভাঙ্গেন আসিদাহ, মারগগ, মাফরৌক ও মাতাজিজ নামক ঐতিহ্যবাহী খাবার দিয়ে। এগুলো বাদামি আটা, গরুর মাংস, সবজি, মধু, পেঁয়াজ বা ঘি দিয়ে তৈরি করা হয়।
দেশটির আরেকটি জনপ্রিয় খাবার থারিদ, যা মূলত ভেড়ার মাংস ও সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ জাতীয় খাবার।
ইফতারকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি
বিশ্বজুড়েই ইফতারের আয়োজন মানেই মুসলিমদের কাছে যেন উৎসব। যারা রোজা পালন করেন না তাদের অনেককেও ইফতারের আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
যেমন- শিশুদের জন্য রোজা রাখার বিধান না থাকলেও অনেক পরিবারেই দেখা যায় যে বড়দের পাশাপাশি তরুণরা, এমনকি শিশুরাও ইফতারের খাবার প্রস্তুত করতে এগিয়ে আসে। তবে পরিবারের সাথে ইফতার করার পাশাপাশি অনেক মুসলিম মসজিদে গিয়ে সবার সঙ্গে মিলেমিশে ইফতার করেন। এতে সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মজবুত হয়।
ইফতারের অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর একে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।
ইফতারকে বিশ্বের ‘অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের’ স্বীকৃতি দিতে তুরস্ক, ইরান, উজবেকিস্তান ও আজারবাইজান ইউনেস্কোর কাছে যৌথভাবে আবেদন করেছিল।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লাইফস্টাইল
গভীর রাত পর্যন্ত ফোন ব্যবহার করেন? জেনে নিন কী হয়

রাতের মধ্যে স্ক্রিন টাইম আপনার ঘুমের সময়সূচী এবং মান নষ্ট করতে পারে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম আপনাকে পরের দিন ক্লান্ত, অস্থির এবং খিটখিটে করে তুলতে পারে। গভীর রাতে স্ক্রিন টাইমের অন্যান্য নেতিবাচক দিকের মধ্যে রয়েছে ঘুমাতে অসুবিধা, মেজাজের পরিবর্তন, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, উচ্চ চাপের মাত্রা এবং ওজন বৃদ্ধি।
স্ক্রিন থেকে বেরিয়ে আসা নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদনে বাধা দেয়, ঘুমিয়ে পড়া কঠিন করে তোলে এবং উদ্দীপক কন্টেন্ট মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত ব্যস্ত রাখে। ধীরে ধীরে এটি ক্লান্তি, চাপ এবং এমনকি দীর্ঘমেয়াদী মস্তিষ্কের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ঘুমানোর আগে রিল স্ক্রলিং কীভাবে মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব ফেলে
ঘুমানোর আগে অনলাইনে রিল স্ক্রলিংয়ে ব্যস্ত থাকাকালীন মস্তিষ্ক ক্লান্ত হওয়ার পরিবর্তে সতর্ক অবস্থায় থাকে। এটি ডোপামিন এবং অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে যা শিথিল করা কঠিন করে তুলতে পারে। এর ফলে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা, বিষণ্ণতা, বিলম্বিত ঘুমের সময়সূচী এবং মানসিক ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।
স্ক্রিন থেকে নীল আলো এবং মেলাটোনিন উৎপাদনের মধ্যে যোগসূত্র
ইলেকট্রনিক গ্যাজেট থেকে নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদন এবং ঘুম চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে। মস্তিষ্ক দ্বারা নিঃসৃত ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন নীল আলোর কারণে ব্লক হয়ে যেতে পারে যার ফলে সময়মতো ঘুমিয়ে পড়া কঠিন হয়ে পড়ে। এটি কেবল ঘুমকেই প্রভাবিত করে না বরং অনিদ্রাও সৃষ্টি করতে পারে, ঘন ঘন ঘুম থেকে ওঠা এবং সকালের ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং অনুসারে, নীল আলোর সংস্পর্শে সবুজ আলোর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সময় ধরে মেলাটোনিন দমন করা হয় এবং সার্কাডিয়ান রিদম দ্বিগুণ স্থানান্তরিত হয়।
রাতে ইমোশনাল বা আকর্ষণীয় কন্টেন্ট দেখার প্রভাব
ঘুমানোর আগে উদ্দীপক, তীব্র, নাটকীয় বা ইমোশনাল কন্টেন্ট দেখলে তা স্ট্রেস হরমোনকে ট্রিগার করতে পারে। এর ফলে উদ্বেগ, নার্ভাসনেস, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা, ঘুমের ব্যাঘাত এবং এমনকী দুঃস্বপ্নও দেখা যায়।
রাতের বেলা স্ক্রলিং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় অবদান রাখে?
রাতের বেলা ক্রমাগত নেতিবাচক খবর বা কন্টেন্ট লুপে দেখার অভ্যাস আপনাকে দুঃখিত, চিন্তিত, চাপযুক্ত, বিরক্ত, হতাশ এবং উত্তেজিত করে তুলতে পারে। এই অস্থিরতা ঘুমিয়ে পড়া কঠিন করে তোলে, যার ফলে বিষণ্ণতা বা অনিদ্রা হতে পারে।
এটি স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং মস্তিষ্কের কার্যকলাপের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলে
রাতে অবিরাম সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং আপনার স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং মস্তিষ্কের কার্যকলাপের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ঘুমের মান খারাপ হয়ে যায়। যা মনোযোগ, ধীর প্রতিচ্ছবি ক্রিয়া, ভুলে যাওয়া, প্রেরণার অভাব, বিভ্রান্তি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের শক্তিকে দুর্বল করে দিতে পারে।
ঘুমানোর আগে নিয়মিত রিল স্ক্রোল করার দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি
গভীর রাত পর্যন্ত স্ক্রোল করার দীর্ঘমেয়াদী পরিণতির মধ্যে রয়েছে ঘুমের সমস্যা, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি, স্মৃতিশক্তি দুর্বল, মনোযোগের সময় কমে যাওয়া, হৃদরোগ, বর্ধিত চাপ, উৎপাদনশীলতা হ্রাস, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং স্থূলতা।
আপনার যা করা উচিত
১. ঘুমানোর কমপক্ষে তিন ঘণ্টা আগে স্ক্রিন ব্যবহার করা বাদ দিন।
২. যদি ঘুমিয়ে পড়ার জন্য বিনোদন দরকার হয় তাহলে বই পড়ার চেষ্টা করুন।
৩. প্রশান্তিদায়ক সঙ্গীত শোনাও সহায়ক হতে পারে।
৪. সর্বদা নাইট মোড ব্যবহার করুন এবং উত্তেজক কোনোকিছু দেখা এড়িয়ে চলুন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
দেশে চালু হচ্ছে ‘ভালোবাসা পদক’

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হতে যাচ্ছে ‘ভালোবাসা পদক’। ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন পর্ষদের উদ্যোগে এ পদক দেয়া হবে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সঞ্চালক শফিক রেহমান ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন পর্ষদের অগ্রদূত। তার যায়যায়দিন ও ইস্টিশন কমিউনিকেশন্সের যৌথ আয়োজনে চলতি বছরই এ পদক চালু হতে যাচ্ছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর হোটেল শেরাটনে আয়োজিত হবে সংবাদ সম্মেলন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন শফিক রেহমান এবং তার স্ত্রী তালেয়া রেহমান।
সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন পর্ষদের আহ্বায়ক ও ইস্টিশন কমিউনিকেশনসের সিইও রুদ্র হক।
বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস উদ্যাপনের অন্যতম পথিকৃৎ শফিক রেহমান। তিনিই সর্বপ্রথম ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন শুরু করেন। এবার তার হাত ধরেই ‘ভালোবাসা পদক ২০২৫’ প্রদানের মাধ্যমে ভালোবাসা দিবসের ৩২ বছর উদ্যাপন করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
ডায়াবেটিক রোগীদের রাতের খাবার বাদ দিলে কী হয়?

দৈনন্দিন জীবনের নানা ব্যস্ততায় সবার পক্ষে রুটিন মেনে চলা সম্ভব হয় না। আর এতেই শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। দেশে দিনদিন ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও এই রোগ দানা বাঁধছে।
একে নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকেই নানা উপায় অনুসরণ করে থাকেন। কেউ ভাত খাওয়া ছেড়ে দেন, কেউ আবার আটার সঙ্গে বাজরা মিলিয়ে সেই রুটিও খান। আবার অনেকে ভাবেন, রাতে খাবার না খেলে বুঝি সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আসলেই কি তাই? রাতে খাবার না খাওয়া ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কতটা লাভ বা ক্ষতির? চলুন, জেনে নিই—
রাতের খাবার বাদ দিলে কী হয়
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সময়মতো খাওয়াদাওয়া খুবই জরুরি। রাতের খাবার না খেলে শরীরে সুগারের লেভেল ওঠানামা করবে। একটা সময়ের খাবার মিস করা মানেই সমস্যা। যার ফলে মাথা ঘোরানো ও দুর্বলতা অনুভব হতে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে শরীরে শর্করার মাত্রাও বেড়ে যায়।
টাইপ-২ ডায়াবেটিক রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে অনেক সময়ই বলা হয় উপোসের কথা। এর ফলে শরীরে ইনসুলিন ঠিকঠাক কাজ করে। তার মানে এই ডায়াবেটিক রোগীর জন্যই তা লাভজনক হবে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে খালি পেটে থাকা মানেই শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে।
কী ক্ষতি হতে পারে
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিক রোগীদের কখনোই রাতের খাওয়া বন্ধ করা উচিত নয়। বরং খাবারের সময়টা এগিয়ে আনা উচিত। রাতের খাবার ৮টার দিকে খেয়ে নিলে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলেই জানান চিকিৎসকরা। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর হালকা কিছু হলেও খাওয়া উচিত বলে মনে করা হয়।
সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য কী করবেন
রাতের খাওয়া বাদ কখনো সমাধান নয়। বরং হালকা পুষ্টিকর কোনো খাবার খাওয়া উচিত। ডাল, সবজি, রুটি, সালাদজাতীয় খাবার খেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। মিষ্টি কিংবা অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। শোবার অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে খাওয়া উচিত, যাতে হজমের জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকে।
এ ছাড়া বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিজে থেকে না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া উচিত। এতে নিজের জন্যই ভালো হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
খালি পেটে ব্ল্যাক কফি খেলে কী হয়

আমাদের মধ্যে অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্ল্যাক কফি পান করেন। কিন্তু আপনি জানেন কি, এই অভ্যাস বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে? এমনকি এর ফলে ভবিষ্যতেও নানা জটিল রোগ তৈরি করতে পারে। ব্ল্যাক কফিতে আসক্তি থাকলে আগে থেকেই সতর্ক হোন।
খালি পেটে ব্ল্যাক কফি খেলে কী হয়
অনেকেরই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে।
ঘুমচোখেই তাদের হাতে থাকে কফির কাপ। কফির মিঠে কড়া গন্ধ ঘুম কাটাতেও বেশ কার্যকরী। কেউ ব্ল্যাক কফি খান। কারো আবার দুধ দিয়ে কফি খাওয়ার অভ্যাস।
দুধ, চিনি, সুগার সিরাপ ছাড়া ব্ল্যাক কফি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। কিন্তু তাই বলে খালি পেটে ব্ল্যাক কফি? কী হতে পারে খালি পেটে ব্ল্যাক কফি খেলে—
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন খালি পেটে ব্ল্যাক কফি খেলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যাও হতে পারে। বিশেষ করে যদি কারো আগে থেকেই থাইরয়েডের সমস্যা থাকে, তবে তাদের একেবারেই ব্ল্যাক কফি পান করা উচিত নয়।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ঘুম থেকে ওঠার অন্তত দেড়-দুই ঘণ্টা পর কফি খাওয়া উচিত। সঙ্গে পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয়, যদি কিছু খাবার খাওয়ার পর ব্ল্যাক কফি পান করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে খেলে কী উপকার

আমাদের মধ্যে অনেকেই ঘি খেতে পছন্দ করেন। কেউ গরম ভাত বা গরম খাবারের সঙ্গে আবার কেউ হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করেন। এই ঘি-এর রয়েছে অনেক উপকারিতা। আয়ুর্বেদে, ঘি-কে ‘সোনা’ বলে বিবেচনা করা হয়।
এটি কেবল খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, বরং স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে এক চামচ ঘি মিশিয়ে পান করার অভ্যাস আপনার শরীরের নানাভাবে উপকার করতে পারে।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, হালকা গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে পান করা একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার, যা হজম ব্যবস্থা শক্তিশালী করা থেকে শুরু করে ত্বক ও চুল সুস্থ রাখা পর্যন্ত অনেক উপকারে আসে। এমনকি সর্দি-কাশির সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে এটি। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, হালকা গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে পান করা স্বাস্থ্যের জন্য কী কী উপকারে আসতে পারে—
পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করে
ঘিতে উপস্থিত বিউটিরিক এসিড, হজম প্রক্রিয়ার জন্য খুবই উপকারী। এটি অন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং হজমশক্তি উন্নত করে। হালকা গরম পানির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে পান করলে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ও এসিডিটির মতো পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি অন্ত্র পরিষ্কার করে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ঘি-তে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের বিপাক বৃদ্ধি করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হালকা গরম পানির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খেলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এটি শরীরে শক্তি সরবরাহ করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস রোধ হয়।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
ঘিতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং উজ্জ্বল করে তোলে।
এ ছাড়া এটি চুলকে শক্তিশালী ও ঘন করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে পান করলে ত্বকের রং উন্নত হয় এবং চুল পড়া কমে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক
ঘিতে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি শরীরকে সংক্রমণ ও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি দেয়। হালকা গরম পানির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে পান করলে শরীরে তাপ বজায় থাকে, যা সর্দি-কাশির মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে।
জয়েন্টের ব্যথা থেকে মুক্তি
ঘিতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য জয়েন্টের ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি জয়েন্টগুলোকে নমনীয় করে তোলে এবং শক্তিশালী করে। নিয়মিত ঘি পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে আর্থ্রাইটিস ও অন্যান্য জয়েন্ট সম্পর্কিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
ঘিতে উপস্থিত ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। এটি স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। হালকা গরম পানির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে পান করলে মন শান্ত হয় এবং ঘুমের মান উন্নত হয়।
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে
ঘিতে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর চর্বি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ঘি নারীদের পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা কমায় এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করে।