ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন খাতে কমিশন প্রথায় বড় পরিবর্তন

যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি বিক্রেতাদের একাধিক মামলার কারণে সম্প্রতি নিষ্পত্তিতে আসতে বাধ্য হয়েছে ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব রিয়েলটরস (এনএআর)। আবাসন খাতকেন্দ্রিক সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা এজেন্টদের কমিশন বাড়িয়ে দিতে অনৈতিকভাবে সাহায্য করে। নতুন এক চুক্তি অনুযায়ী, এখন দেশটির বাড়ি বিক্রির ধরন পাল্টে যাবে। এতে এজেন্ট নিয়োগের বিষয়টি বাড়ি বিক্রেতাদের ওপর নির্ভর করবে। তারা আগের চেয়ে কম কমিশন দিতে পারবেন। চুক্তিটি ফেডারেল আদালতে অনুমোদন পেলে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এনএআর বাড়ি বিক্রেতাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪১ কোটি ৮০ লাখ ডলার দেবে। এর সঙ্গে নিয়ম পরিবর্তনেও সম্মত হয়েছে সংস্থাটি।

এক দশকের পুরনো নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের আশ্রয় নিয়েছিলেন মার্কিন বাড়ি বিক্রেতারা। ওই নিয়ম অনুসারে, আবাসিক সম্পত্তি বিক্রি থেকে এজেন্টদের ৬ শতাংশ কমিশন দেয়া হতো। এ হার অনেক দেশের চেয়ে বেশি। এক হিসাবে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ১০০ ডলার মূল্যের বাড়ির ক্ষেত্রে এজেন্ট ফি পড়ে ২৩ হাজার ডলার।

অভিযোগে বলা হয়, পুরনো নিয়মে বাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে রিয়েলটরের সাহায্য নিতে বাধ্য হন বিক্রেতা। একাধিক পরিষেবায় বিজ্ঞাপন দিতে হয় বিক্রেতাদের। এর জন্য খরচ দিতে বাধ্য হন বাড়ি বিক্রেতারা, যা অ্যান্টিট্রাস্ট আইন লঙ্ঘন করে। অবশ্য একে অভিযোগ হিসেবে স্বীকার করতে নারাজ এনএআর।

নিষ্পত্তির শর্ত অনুসারে, জুলাই থেকে তালিকাভুক্তির পরিষেবাগুলো কমিশনের অংক প্রকাশ করবে না। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ওপর এজেন্ট নিয়োগের বিষয়টি ছেড়ে দেয়া হবে। তবে এনএআরের দেয়া কিছু নিয়ম মানতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ক্লায়েন্ট ও এজেন্টের মধ্যে চুক্তি এবং ফি পরিশোধ।

অর্থনীতিবিদরা ধারণা করছেন, এ পরিবর্তনের ফলে রিয়েল এস্টেট ফি বাবদ দেয়া বার্ষিক খরচের ৩০ শতাংশ বা ১০ হাজার কোটি ডলার সাশ্রয় হবে। নতুন কমিশন কাঠামো সামগ্রিকভাবে হাউজিং খাতকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ এজেন্ট ফি বাবদ হওয়া খরচ সাধারণত সম্পত্তির মূল্যের সঙ্গে যুক্ত থাকে।

অবশ্য কয়েক মাস ধরে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন আবাসন খাতের ব্রোকারেজ শিল্প। এর অন্যতম কারণ মর্টগেজে উচ্চ সুদহারের কারণে এ বাবদ লেনদেন নাটকীয়ভাবে কমেছে। একই সঙ্গে একাধিক মামলার কারণে কমিশন বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়ে। মিসৌরিতে বাড়ি বিক্রেতারা এনএআরের বিরুদ্ধে প্রথমবার বড় ধরনের জয় পান। ক্ষতিপূরণ হিসাবে পান প্রায় ১৮০ কোটি ডলার। এরপর ১৫ মার্চ নিষ্পত্তির ঘোষণা দেয় এনএআর।

এ নিষ্পত্তি ঘোষণার পর পাবলিকলি ট্রেডেড ব্রোকারেজ হাউজগুলোর শেয়ারদরে উল্লেখযোগ্য পতন ঘটে। এর মধ্যে কম্পাসের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, রেডফিনের ৪ দশমিক ৯ ও এনিহয়ার রিয়েল এস্টেটের ৮ দশমিক ৩ শতাংশ পতন ঘটে।

বড় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মধ্যে শুধু বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের হোমসার্ভিসেস নিষ্পত্তিতে আসেনি। যদিও মিসৌরির বিচারে তারাও বাড়ি বিক্রেতাদের ক্ষতির জন্য দায়ী বলে প্রমাণ হয়। বাড়ির মালিকদের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ২০২৩ সালে ৪২০ কোটি ডলার আয় করে হোমসার্ভিসেস। মূলত প্যারেন্ট কোম্পানির সম্পদের মূল্যের কারণে হোমসার্ভিসেসকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন আইনজীবীরা। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি প্রতিষ্ঠানটি।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার