রাজনীতি
বাজার পরিস্থিতি বিশ্বের কোথাও ভালো নেই: কাদের

বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে ৷ সরকার এখানে সক্রিয় আছে। কাজ তো করে যাচ্ছি এক সময় ফল আসবে। কাজে, আন্তরিকতায়, চেষ্টার কোনো কমতি নেই -তাহলে ফল আসবে না কেন? বাজার পরিস্থিতি বিশ্বের কোথাও ভালো নেই বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান ৷
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে সারা বিশ্বে যে টালমাটাল অবস্থা। অন্যরা ভালো নেই, আমরাও ভালো নেই। সবাই একযোগে ভালো থাকার চেষ্টা আন্তর্জাতিকভাবেও চলছে। দেশটা অনেকের চেয়ে ভালো চলছে।
তিনি বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে ৷ সরকার এখানে সক্রিয় আছে। কাজ তো করে যাচ্ছি এক সময় ফল আসবে। কাজে, আন্তরিকতায়, চেষ্টার কোনো কমতি নেই -তাহলে ফল আসবে না কেন? বাজার পরিস্থিতি বিশ্বের কোথাও ভালো নেই। সস্তায়, সুলভে সবকিছু এটা মনে করার কারণ নেই। সারা বিশ্বে বাজার পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা এখন আরাম-আয়েশে ছুটি কাটাচ্ছেন। ক্ষমতা সন্নিকটে এমন আশা যে কর্মীদের দিয়েছিল সারা দেশের সে কর্মীরা হতাশ। বিএনপি নেতারা আন্দোলন করবে সে অবস্থা নেই। বিএনপি এখন আন্দোলন করার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে। ক্ষমতা পরিবর্তন নিয়ে বিএনপি নেতারা এর আগেও অনেক কথা বলেছেন। এখনো মাঝেমধ্যে বলেন। ক্ষমতা এত কাছে! এটাতো দিবাস্বপ্ন। যারা দিবাস্বপ্ন দেখে তাদের দেখাটাই স্বাভাবিক। জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই। জনগণ আন্দোলনে নেই। জনগণ শেখ হাসিনার ওপর খুশি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থাশীল এবং তার সততা, পরিশ্রম, নেতৃত্ব এদেশের মানুষ মেনে নিয়েছে। ৭৫ পরবর্তী শেখ হাসিনার চেয়ে যোগ্য, সৎ, পরিশ্রম ও দক্ষ নেতৃত্বের জন্ম হয়নি। বাংলাদেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার বিকল্প এখনো নেই।
কাফি

রাজনীতি
এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি ছাত্রশিবিরের

গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রায় হামলা চালিয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এরই প্রতিবাদে এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির। বিক্ষোভে ছাত্রশিবির নেতারা এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়। পরবর্তীতে এটি রাজু ভাষ্কর্য ঘুরে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বর পার হয়ে আবার রাজু ভাষ্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, ক্যান্সার যেভাবে মানুষের শরীরে নিরব ঘাতক হিসেবে থাকে, আওয়ামী লীগও এভাবে লুকিয়ে আছে। গত বছরের ষোল জুলাই তারা আবু সাইদ, ওয়াসিম, শান্তদের শহিদ করেছে। এর এক বছরের মাথায় তারা জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করুন। আপনারা আওয়ামী লীগকে উচিত শিক্ষা দিতে না পারলে জনগণ আপনাদের উচিত শিক্ষা দেবে।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেন, আমরা আশা করেছিলাম জুলাইয়ের পরে যে গোষ্ঠী গত ১৬ বছর সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাদের বিতাড়িত করা হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, তারা গোপালগঞ্জে ঘাঁটি গেড়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, জুলাইয়ের এই বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের কোন জায়গা হবে না।
তিনি আরো বলেন, জুলাই রক্তের উপর আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) ক্ষমতায় বসেছেন। আপনারা এখানে ভোগ বিলাসের জন্য বসেননি। আপনারা যদি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করেন, খুনি হাসিনার যেই পরিণতি হয়েছিল তার চাইতে খারাপ পরিণতি আপনাদের হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের শিবির সভাপতি রেজাউল করিম শাকিল বলেন, বাংলাদেশের সমগ্র আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সকল সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ জেলাটিকে (গোপালগঞ্জ) নিজেদের সন্ত্রাসীদের ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে।গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের কোন জেলা নয়। গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে একখন্ড ছোট্ট দিল্লি।
এসময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, অবিলম্বে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো গোপালগঞ্জের যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী এই অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রজনতা নিয়ে মার্চ করতে বাধ্য হব।
ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাইয়ের এক বছর পার হলেও বাংলাদেশ এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। এখনো জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা হচ্ছে। আমরা গোপালগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। একইসাথে, তাদের দ্রুত গ্রেফতারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, আমরা কি হাসবো না কাঁদব মাঝে মাঝে তা খুঁজে পাই না। সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়, গোপালগঞ্জের গুটি কয়েকের লাফালাফি দেখে আমাদের মাঝে মাঝে হাসি পায়। আবার দুঃখ হয়, ইন্টারিম গভর্নমেন্টের এই ব্যর্থতা দেখে। তিনি অভিযোগ করেন, ইন্টেরিম সরকারের প্রত্যেকটা প্রশাসন প্রত্যেকটা ক্যাটাগরিতে চরমতম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ক্যান্টনমেন্ট খ্যাত সকল সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা যারা, গোপালগঞ্জে তারা আশ্রিত ছিল। তারা সবাই মিলে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট এখানেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট কন্ঠে ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, আপনারা যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন আল্লাহর ওয়াস্তে দায়িত্বটা ছেড়ে দেন। বাংলাদেশে অসংখ্য তরুণ-যুবক আছে এই দায়িত্ব পালনের জন্য।
রাজনীতি
শহীদ আবু সাঈদেরা ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের সূচনা ঘটায়: আহমদ আবদুল কাদের

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট অপশক্তি ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই আবু সাঈদসহ ৬ জন ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করলেও শহীদেরা মরেনি। শহীদ আবু সাঈদসহ ৬ শহীদের রক্তের বিনিময়ে সেদিন গণঅভ্যুত্থানের বার্তা অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসে। মূলত শহীদ আবু সাঈদেরা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সূচনা ঘটায়। ৫ আগস্ট জাতি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তিলাভ করে। আমরা মহান আল্লাহর দরবারে সকল শহীদের মাগফিরাত কামনা করছি। আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী যোদ্ধাদের সুস্থতা ও স্বাভাবিক জীবন কামনা করছি।
বুধবার (১৬ জুলাই) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত সকল শহীদের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুলাই শহীদেরা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তা এখনো বিলোপ হয়নি। যেভাবে দেশপ্রেমিক শক্তির সুদৃঢ় ঐক্য সেদিন গড়ে উঠেছিল তা দলীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আজ ধ্বংস হতে চলেছে। অভ্যুত্থানের ১ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত একজন শহীদের খুনের বিচার কার্য সম্পন্ন হয়নি। জুলাই মাস শেষ হতে চললেও জুলাই সনদ ঘোষণা ও মৌলিক সংস্কারে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। পরাজিত শক্তি এখনো ওৎপেতে আছে। জাতিসংঘ সহ পশ্চিমা শক্তি নতুন করে বাংলাদেশের প্রতি কৌতুহলী হয়ে উঠছে। দেশের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের স্বার্থে এগুলো ভালো লক্ষণ নয়। আমরা এসবের অবসান চাই। গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। খেলাফত মজলিস এই লক্ষ্যে কাজ করছে।
এদিন বাদ জুমআ বায়তুল মোকাররম উত্তর চত্বরে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, যুগ্ম-মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শায়খুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হাজী নুর হোসেন, আমীর আলী হাওলাদার, শ্রমিক মজলিস সাধারণ সম্পাদক এইচ. এম এরশাদ, মহানগরী দক্ষিণ সহ-সাধারণ সম্পাদক এইচ. এম হুমায়ুন কবির আযাদ, কাজী আরিফুর রহমান, মাওলানা সরদার নেয়ামত উল্লাহ, সেলিম হোসাইন, মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, শাহাবুদ্দিন, ইসলামী যুব মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মনসুরুল আলম, ছাত্র মজলিস মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন প্রমুখ।
রাজনীতি
এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি গণঅধিকার পরিষদের

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ। সেই সঙ্গে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের পর এনসিপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি বর্ষণ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।
নেতৃদ্বয় বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরও নিষিদ্ধ ঘোষিত এই দলটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। গোপালগঞ্জে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা এবং বিস্ফোরণের ঘটনা এর জ্বলন্ত প্রমাণ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে, তখন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা ও আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রাজনৈতিক পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলছে, যা অনতিবিলম্বে বন্ধ না করলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
নেতৃদ্বয় অবিলম্বে গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজনীতি
এনসিপি নেতৃবৃন্দের ওপর হামলায় ছাত্র জমিয়তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে ফেরার পথে দলটির নেতাকর্মীদের ওপর নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী ছাত্র সংগঠনের (ছাত্রলীগ) নেতাকর্মীদের যৌথ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ।
বুধবার ((১৬ জুলাই) ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী ও সাধারণ সম্পাদক সাদ বিন জাকিরের যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, সমাবেশ শেষে শহরের পৌর পার্কসংলগ্ন এলাকায় এনসিপি নেতৃবৃন্দের গাড়িবহর ঘিরে হামলার চেষ্টা চালানো হয়। বিভিন্ন দিক থেকে গাড়ি আটকে হামলা ও ভয়ভীতির মাধ্যমে পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করা হয়। এ ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, নিষিদ্ধ সংগঠনের অব্যাহত আস্ফালন এবং প্রশাসনের নীরবতা দেশে রাজনৈতিক সহনশীলতার পরিবেশকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।
ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ মনে করে, এই হামলা কেবল এনসিপির ওপর নয়—বরং দেশের রাজনৈতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অধিকার এবং জনগণের নিরাপদ রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ওপর সরাসরি আঘাত।
আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, প্রশাসনের নির্লিপ্ততা এবং বিচার প্রক্রিয়ার বিলম্বই মূলত এই সহিংসতার প্রশ্রয় হয়ে উঠছে। নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর লাগামহীন আস্ফালন, প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং নিরপরাধ মানুষদের নিরাপত্তাহীনতা—এ সবকিছুই গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। পুলিশের দায়িত্ব জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কোনো গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীদের রক্ষাকবচ হয়ে ওঠা নয়।
ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ জোরালোভাবে বলছে—জুলাই-পরবর্তী গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশে এমন ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। আমরা অবিলম্বে এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
রাজনীতি
এনসিপি নেতাদের ওপর হামলাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি চরমোনাই পীরের

গোপালগঞ্জে নাহিদ-সার্জিস-হাসনাতসহ অবরুদ্ধ এনসিপি নেতাদের উদ্ধারে দ্রুত জরুরী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে অবিলম্বে হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধিনে থাকা একটি জেলা। সারা বাংলাদেশ যখন একযোগে স্বৈরাচারী হাসিনাকে উৎখাত করেছে তখন গোপালগঞ্জে হাজার হাজার খুন, গুম ও হাজার কোটি টাকা পাচারকারী শক্তির পক্ষে কেউ প্রকাশ্য অবস্থান নিয়ে দেশপ্রেমিক ছাত্র নেতৃত্বের ওপরে হামলা করবে এবং তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখবে তা মেনে নেয়া যায় না। দ্রুততার সাথে অবরুদ্ধ নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের উদ্ধার করতে জরুরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক সংগঠন এনসিপি জুলাই জুড়ে দেশব্যাপী পদযাত্রা করছে। সর্বত্র তারা জনগনের উষ্ণ অভিনন্দন ও ভালোবাসা পাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে তারা গোপালগঞ্জে গিয়েছে। তাদের সাথে আজকে গোপালগঞ্জে যা হয়েছে তা লজ্জাজনক। একই সাথে প্রশাসনের ব্যর্থতাও বটে। অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ গোপালগঞ্জে আসলে সেখানে পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে এটা তাদের অনুধাবন করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ ছিলো। কিন্তু আজকের ঘটনায় পরিস্কার যে, প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। গোপালগঞ্জের পুলিস সুপারসহ দায়িত্বে নিয়োজিতদের ব্যাপারে তদন্ত করতে হবে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন সহিংসতার সুযোগ করে দিলো কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, কোন কোন মিডিয়া হামলাকারী ফ্যাসিবাদের দোসরদের ‘গ্রামবাসী, এলাকাবাসী’ অভিহিত করেছে। এর পেছনের কারণ সুস্পষ্ট। তারা বিশ্বকে বোঝাতে চায় যে, হাসিনার উৎখাতের আন্দোলন কোন গণঅভ্যুত্থান ছিলো না। গ্রামবাসী এখনো হাসিনার জন্য রাস্তায় নামে। আদতে পুরোটা মিথ্যা বয়ান। যারা এনসিপির ওপরে হামলা করেছে তারা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী। এদেরকে আওয়ামী লীগের পান্ডা হিসেবেই প্রচার করতে হবে। এবং যারা যারা এই হামলার সাথে জড়িত ছিলো তাদেরকে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষ হয়ে এখনো কেউ জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দের ওপরে হামলা করবে তা মেনে নেয়া যায় না।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের বর্ষপুর্তির এই সময়েও স্বৈরাচারের দোসররা যে দুঃসাহস দেখিয়েছে তা সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার বড় একটি দৃষ্টান্ত। পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার এবং এর সাথে জড়িতদের বিচারের ধীরগতির কারণেই এরা আজকে এই সাহস করেছে। তাই বলবো, কেবল ঢাকায় গুটিকয়েকজনকে বিচারের আওতায় আনলে হবে না্ বরং সারা দেশে স্বৈরতন্ত্রের সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনুন। এই ধরণের দুঃসাহস জাতী আর দেখতে চায় না।