অর্থনীতি
নিত্যপণ্যের চড়া দামে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ
রোজার চতুর্থ দিনেও বাজারে কমেনি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উত্তাপ। মাছ-মাংস থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্যেই ক্রেতাদের পকেট কাটছেন ব্যবসায়ীরা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাসখানেক আগেও বেগুন ছিল ৫০-৬০ টাকা, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। একই সময়ে শসার দাম ৪০-৬০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০০-১২০ টাকা, লেবুর হালি ২০-২৩ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। আলুর দামও বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। শসার মতো ১০০ ছুঁয়েছে বরবটি ও পটলের দামও।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে অন্যান্য ধরনের সবজির দাম বাড়তিই রয়ে গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির কারণে সপ্তাহ ব্যবধানে দাম কিছুটা কমেছে। দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পুরোনো দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকালে বাজারে ক্রেতা উপস্থিতি খুব বেশি নেই। বাজারে সবজির দোকানগুলোতে সবজির চড়া দামই চলছে। শসা প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও অন্যান্য সবজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে চললেও বরবটি, পটলের দাম বাড়তি হয়ে ১০০ টাকা ছুঁয়েছে।
এ ছাড়া প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গাজর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ভালো মানের লেবু রমজানের প্রথম দিন ৮০ টাকা হালি বিক্রি হলে আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি।
পাশাপাশি বাজারে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, রমজানের আগে যে করলা প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেটির দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, ঝিঙা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, বাঁধা কপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০, শিম প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, মুরগির দাম কমলেও তারা স্বস্তিতে নেই। কারণ কম ওজনের মুরগি বাজারে তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। কিনতে গেলে বড় মুরগি কিনতে হচ্ছে। ফলে প্রয়োজন না থাকার পরও অনেককে বেশি ওজনের মুরগি কিনতে হচ্ছে। ওজন বেশি হলে দামও বেশি আসে। আর কম ওজনের মুরগি পাওয়া গেলেও স্বাভাবিকের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি।
দেখা গেছে, ২০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি, যা গত সপ্তাহে ২২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল, সোনালি ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩৪০ টাকা দরে। সোনালি হাইব্রিড ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ২৯৫ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ৫০-১ হাজার ১০০ টাকা।
৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ৯০০ টাকা, চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, মাগুর ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৬০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকায়, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার টাকা, মেনি ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, বেলে ৭০০ টাকা এবং কাইকলা বা কাইক্ক্যা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আলু-পেঁয়াজে স্বস্তি, বেড়েছে চাল-মুরগির দাম
সরবরাহ কম ও চাহিদা বাড়ার অজুহাতে বাজারে মুরগির দাম খানিকটা বেড়েছে। কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজ ও নতুন আলুর দাম। অন্যদিকে, দেশে আমনের এই ভরা মৌসুমে চালের দাম বেড়েছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কাপ্তান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দেশে আমনের ভরা মৌসুম হলেও গত দুই সপ্তাহে বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে। এতে খুচরা পর্যায়ে সরু চালের দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে।
বিক্রেতারা আরও বলেন, চলতি বছর বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে আলু-পেঁয়াজের বীজ বুনতে দেরি হওয়ায় পণ্য দুটি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছিল। এখন নতুন পেঁয়াজ ও আলু আসতে শুরু করায় দাম কমেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পুরোনো দেশি পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে নতুন আলুর সরবরাহ বাড়ায় দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে নতুন ও পুরোনো উভয় ধরনের আলু ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সংকট ছিল। ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়। তবুও সংকট কাটেনি।
কারওয়ান বাজারের মুদি বিক্রেতা মো. রোকন বলেন, ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ করছে না। যা পাচ্ছি, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে সবজির বাজারে। প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, প্রতি পিস বাঁধাকপি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি নতুন টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি ১৪০ টাকায়, মুলা প্রতি কেজি ৩০ টাকায়, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, গাজর প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, পেঁয়াজ ফুল প্রতি আঁটি ২০ টাকায়, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া ধরনভেদে প্রতি কেজি শিম ৪০-৮০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকায়, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এখন মাঝারি সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ থেকে থেকে ২৮০ টাকায়। কেজি প্রতি বড় সাইজের চাষের পাঙাশ ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২১০ টাকা, কৈ ২০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিশ্বব্যাংক থেকে ১১৬ কোটি ডলার পেলো বাংলাদেশ
তিনটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ১১৬ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ৯২০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে দেয়া তথ্য মতে বিশ্বব্যাংকের বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরস বাংলাদেশের জন্য এ ঋণ অনুমোদন দেয়।
প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশকে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি, পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবাগুলো উন্নত করন ও সবুজ এবং জলবায়ু-সহনশীল উন্নয়ন।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। সবচেয়ে বড় দূষণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। প্রতিটি সেক্টরে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করা এবং দূষণের দুর্যোগ মোকাবিলা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে। এই নতুন অর্থায়ন বাংলাদেশের জনগণের জন্য স্বাস্থ্য, পানি এবং স্যানিটেশনের মতো প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো উন্নত করবে। এর মাধ্যমে পরিষ্কার, জলবায়ু সহনশীল এবং টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
৫০ কোটি ডলারের ‘সেকেন্ড বাংলাদেশ গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট ক্রেডিট’ এর মাধ্যমে দেশের সবুজ ও জলবায়ু-সহনশীল উন্নয়নে উত্তরণে সহায়তা করার জন্য সংস্কারে সহায়তা করবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংক আরও বলে, এ অর্থায়ন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সবুজ এবং জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক হস্তক্ষেপের জন্য জনসাধারণের পরিকল্পনা এবং অর্থায়ন এবং বাস্তবায়নের উন্নতির জন্য নীতি সংস্কারকে সমর্থন করে এবং মূল খাতে পরিষ্কার এবং সম্পদ-দক্ষ উৎপাদন ও পরিষেবার প্রচার করে।
তবে ঋণের পূর্বশর্ত হিসাবে বলা হয়, পরিকল্পনা কমিশন মধ্য-মেয়াদী বাজেট কাঠামোর সঙ্গে একীভূত মূল খাতের জন্য বহু-বছরের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম নির্দেশিকা নিয়েছে।
ডেল্টা প্ল্যান প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, এ অর্থায়ন বায়ু দূষণ কমাতে, পরিবেশগত প্রয়োগের উন্নতি, কার্বন বাজারে প্রবেশাধিকার প্রসারিত করতে, টেকসই জল ও স্যানিটেশন পরিষেবা উন্নত করতে, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং জলবায়ু-সহনশীল এবং টেকসই পরিবেশকে এগিয়ে নিতে নীতিগুলিকে সমর্থন করে। ডেল্টা প্ল্যান কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য, পরিকল্পনা বিভাগ ডেল্টা মূল্যায়ন ফ্রেমওয়ার্ক নিয়েছে। অর্থায়ন পরিবেশগত এবং সামাজিক বিবেচনাকে অন্তর্ভুক্ত করে টেকসই পাবলিক ক্রয়কে সমর্থন করে। এটি ভবন এবং যন্ত্রপাতিগুলির শক্তি দক্ষতা উন্নত করতে এবং নির্মাণ খাতকে আরও সবুজ হয়ে উঠতে উৎসাহিত করবে।
এছাড়াও ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের ‘স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং জনসংখ্যা সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিষেবায় জনগণের প্রাপ্যতা উন্নত করতে এবং সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। এটি প্রায় ৫১ লাখ মানুষকে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং জনসংখ্যা পরিষেবা দেবে বলে জানানো হয়।
নবজাতকের মৃত্যুহার কমানোর বিষয়ে বলা হয়, এই কর্মসূচি জনস্বাস্থ্য সুবিধায় স্বাভাবিক প্রসব এবং সিজারিয়ান সেকশন ডেলিভারি সব ক্ষেত্রেই জন্মের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে মা ও নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে সাহায্য করবে। এটি নিশ্চিত করবে যে, সবচেয়ে বেশি জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ মহিলারা পৌঁছেছেন। স্ক্রিনিং এবং উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য অবস্থার চিকিৎসার মতো ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যের প্রয়োজনে কার্যকরভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য এই প্রোগ্রামটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের পাশাপাশি, গ্লোবাল ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি ফর উইমেন, চিলড্রেন অ্যান্ড এডলেসেন্টস একটি অনুঘটক ২৫ মিলিয়ন অনুদান প্রদান করছে যাতে শিশু পুষ্টি, কিশোরী স্বাস্থ্য, মানসম্পন্ন মা ও নবজাতকের যত্ন ডেটা ব্যবহার, এবং সমন্বয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ২৮ কোটি ডলারের ‘চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ এর মাধ্যমে চট্টগ্রামের দশ লাখেরও বেশি মানুষকে নতুন এবং পুনর্বাসিত পাইপ যুক্ত নিরাপদ পানি সরবরাহ করবে। প্রায় ২ লাখ নতুন পরিবারের পানির সংযোগ তৈরি এবং নিম্ন-আয়ের সম্প্রদায়ের প্রায় ১ লাখ মানুষকে উন্নত স্যানিটেশন পরিষেবা দেবে প্রকল্পটি। প্রকল্পটি ২০৩৫ সালের মধ্যে এই অঞ্চলের প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষকে পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন পরিষেবা প্রদানের জন্য।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কর ফাঁকি অনুসন্ধানে মাঠে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল
বিগত সরকারের আমলে নানা উপায়ে কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তি ও কোম্পানির এ সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে কর আদায় ও জরিমানা নির্ধারণে জোর দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এবিষয়ে কোন কর অঞ্চল কী করছে তা পর্যবেক্ষণে সারাদেশের সব কর অঞ্চল ও ইউনিট পরদর্শন করবে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল-সিআইসির কর্মকর্তারা। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সংস্থাটির একেকজন যুগ্ম পরিচালক সাত থেকে আটটি করে কর অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। চলতি মাসের ২১ ডিসেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি কর অঞ্চল দুইবার করে পরিদর্শন করবেন এসব কর্মকর্তা।
বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে ঢাকায় ২৫টি, চট্টগ্রামে চারটি, দশটি জেলায় দশটি এবং একটি বৃহৎ করদাতা ইউনিট রয়েছে। এর বাইরে কিছু বিশেষায়িত কর অঞ্চল ও ইউনিট থাকলেও সেগুলোর করদাতাদের রিটার্ন সংশ্লিষ্ট না হওয়ায় সেগুলো এখন পরিদর্শন করা হচ্ছে না।
সব কর অঞ্চলের কমিশনারদের বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়ে পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের তথ্য দিয়ে ও প্রয়োজনীয় সহায়তার অনুরোধ চাওয়া হয় সিআইসির তরফে।
সিআইসির সুপারিশ ও নির্দেশনায় কর ফাঁকির মামলাগুলো নিষ্পত্তি করে কর আদায়, জরিমানা ঠিক করাসহ এ কাজ করার দায়িত্ব একজন যুগ্ম পরিচালককে দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রেমিট্যান্সের ডলারের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ ১২৭ টাকা
ওভারডিউ পেমেন্টের (বকেয়া পরিশোধ) চাপ, ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং এগ্রিগেটর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর নানান কৌশলে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১২৭ টাকায় পৌঁছেছে।
অন্তত ৬টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করতে ব্যাংকগুলোকে ১২৬.৫০-১২৭ টাকা পর্যন্ত দাম দিতে হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই ডলার-টাকার সর্বোচ্চ বিনিময় হার।
এর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২৬ টাকায় পৌঁছেছিল। এতদিন পর্যন্ত সেটিই ছিল ডলারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। এরপর থেকে ডলারের দাম ওঠানামার মধ্যে থাকলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শুরু দিকে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ছিল সর্বোচ্চ ১২১.৮০ টাকা। এমনকি, গত মাসের শেষ সপ্তাহেও রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করতে সর্বোচ্চ ১২২.৫০ টাকা খরচ করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, চলতি ডিসেম্বরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সের ডলারের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। মাত্র ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে ডলারের দাম ৪.৫ টাকা বা ৩.৬৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। যেকোনো দৃষ্টিকোণ থেকেই এ ধরনের দামবৃদ্ধি অস্বাভাবিক। আমাদের বাজারে এখন ডলারের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে, তবে সেটি এতো বেশি নয় যে দামটা এভাবে বেড়ে যাবে জানান তিনি।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বছর শেষ হয়ে আসায় অনেক আমদানি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। তেল, রাসায়নিক সার ও রমজানের পণ্য আমদানির জন্য বেশি ডলার প্রয়োজন। এই কারণে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। অন্যদিকে আগের মতো সব রেমিট্যান্স হাউস থেকে ডলার মিলছে না। কিছু কোম্পানি অন্য ছোট কোম্পানি থেকে ডলার কিনে নিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে বেশি দামে আমাদের ডলার নিতে হয়। ফলে দাম বেড়ে যাচ্ছে। তবে সামনের মাসে দাম আবার কমবে।
ডলার মার্কেট এগ্রিগেটর বলতে মূলত আর্থিক মধ্যস্থতাকারীকে বোঝায়- যে বা যারা ডলারের ক্রেতা এবং বিক্রেতা, উভয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এই মধ্যস্থতাকারীরা প্রায়ই ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে প্রতিযোগিতামূলক বিনিময় হার পেতে একাধিক উৎস থেকে তারল্য সংগ্রহ করে থাকে। এর উদাহরণের মধ্যে রয়েছে— ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, জুম, রেমিটলি, মানিগ্রাম এবং কারেন্সিফেয়ার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ডেপুটি গভর্নরের সঙ্গে ১১ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তাদের অনির্ধারিত এক সভায় এগ্রিগেটর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর এমন দৌরাত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সেখান থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানা গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে এখন ১৯.২০ বিলিয়ন ডলার
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে এক হাজার ৯৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার ডলার (বিপিএম৬); বা ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। এ রিজার্ভ আন্তর্জাতিক হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুসারে।
বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ৪৯৪ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার ডলার।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ১১ নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আমদানি পণ্যের বিল বাবদ ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম৬)। গত দেড় মাসে বৈদেশিক মুদ্রার এই সঞ্চয় বাড়তে বাড়তে আবারও ২০ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই হয়েছে।
রিজার্ভের তিনটি হিসাব সংরক্ষণ করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথমটি হলো বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভ। মোট রিজার্ভের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সহজ শর্তের ঋণ, বিমান ক্রয়ে সোনালী ব্যাংককে দেওয়া ঋণসহ বেশ কয়েকটি তহবিল।
দ্বিতীয়টি হলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত তহবিল বা ঋণের অর্থ বাদ দিয়ে একটি তহবিল।
এর বাইরে রয়েছে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ। বর্তমান যা ১৫ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা নিচে।
দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ রিজার্ভ এখন প্রায় চার মাসের আমদানি মূল্য মেটানোর অবস্থায় রয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে শেষ নাগাদ নিট রিজার্ভ নামে ২৪ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলারে। এ সময় বৈশ্বিক উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার আহরণের ক্ষেত্রটা সংকুচিত হতে থাকে। এ অবস্থায় জ্বালানি ও জরুরি খাদ্যপণ্য আমদানিতে ডলারের চাহিদা বাড়তে থাকে। উল্টোদিকে ডলার বিক্রি করার কারণে কমে যায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এরপর বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার ক্রয়ের মাধ্যমে আবার রিজার্ভ বাড়ায়।
বর্তমান সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগ হচ্ছে প্রতিদিনই। এর ধারাবাহিকতায় ক্রমেই বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।