ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

সম্পদের সীমাবদ্ধতায় অপরিহার্য না হলে দেশীয় অর্থায়নে প্রকল্প নয়

সম্পদের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় রেখে একান্ত অপরিহার্য এবং উচ্চ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত না হলে দেশীয় অর্থায়নে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না। এমনকি সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব সাধারণভাবে পরিহার করতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি)। এনইসি সভায় এটাসহ মোট ১৫টি নির্দেশনা জারি করেছে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এনইসি সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।

এনইসি সভা জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্পসমূহ আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য নতুনভাবে প্রস্তাব প্রেরণ করতে হবে এবং আরএডিপিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প সংখ্যা সীমিত রাখার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জাতীয় গুরুত্ব বিবেচনায় বিশেষ প্রয়োজনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপি বহির্ভূত অন্য প্রকল্পের প্রস্তাবও প্রেরণ করা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বিশেষ করে দারিদ্র নিরসন, কর্মসংস্থান সৃজন, মানব সম্পদ উন্নয়ন, কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও অবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন, জেন্ডার সংবেদনশীলতা, আয় বৈষম্য হাস, সামাজিক সুরক্ষা, ঝুঁকি সচেতনতা বৃদ্ধি, দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনা বিভাগ থেকে জারিকৃত গ্রিন ক্লাইমেট রেজিলেন্ট ডেভলপমেন্ট গাইডলাইন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বৈশ্বিক তহবিল থেকে অর্থায়ন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। যে সব প্রকল্প প্রতিবেশগত সঙ্কটাপূর্ণ এলাকায় বাস্তবায়ন হবে সেসব প্রকল্পের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা-১৯৯৭ (সংশোধনীসহ) এবং প্রতিবেশগত সঙ্কটাপূর্ণ এলাকা বিধিমালা, ২০১৬ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জন অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন প্রকল্প নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় চিহ্নিত প্রকল্পকে সম্পদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রসমূহ অর্জন অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন প্রকল্প আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করতে হবে। যেসব বিনিয়োগ প্রকল্পের সম্ভাব্য সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে সেসব প্রকল্প নতুন অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

সে ক্ষেত্রে সমীক্ষা প্রতিবেদনের সার-সংক্ষেপ ও সুপারিশ প্রকল্প প্রস্তাবের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সংযুক্ত করতে হবে। বেসরকারি উদ্যোগে বাস্তবায়ন করার সম্ভাবনা রয়েছে এমন প্রকল্প আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব পরিহার করতে হবে। সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু বাস্তবভিত্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণে আবশ্যিকভাবে মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় মন্ত্রণালয় বিভাগের জন্য নির্ধারিত প্রাক্কলন প্রক্ষেপণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

যেসব বিনিয়োগ প্রকল্পে সরকারের অর্থায়নের পাশাপাশি সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের সংস্থান থাকবে সেসব প্রকল্প নতুন অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

নতুন কোনো প্রতিষ্ঠান নির্মাণ বা প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে বিদ্যমান একই প্রকৃতির প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মক্ষমতা, কার্যকারিতা ও ভৌগোলিক অবস্থানসহ সংশ্লিষ্ট সব বিষয়াদি পর্যালোচনাপূর্বক যৌক্তিকতা বিবেচনায় প্রকল্প প্রস্তাব করতে হবে।

গত বছরের ১ মার্চ অনুষ্ঠিত এনইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জিও-এনজিও যৌথ উদ্যোগে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষন সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাব করা যাবে না। এছাড়া জিও-এনজিও যৌথ উদ্যোগে উদ্বুদ্ধকরণ/সচেতনতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। তাছাড়া, অননুমোদিত নতুন প্রকল্প প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

এডিপিতে যেসব অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের প্রকল্প দলিল অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ এর মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের সেক্টর বিভাগে পাওয়া যাবে শুধুমাত্র সেসব প্রকল্প আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে।

যেসব প্রকল্পের প্রকল্প দলিল পরিকল্পনা কমিশনের সেক্টর বিভাগে পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়-বিভাগে ফেরত দেওয়া হয়েছে ওই সব প্রকল্পের প্রকল্প দলিল পরিকল্পনা কমিশনে পাওয়া যায়নি মর্মে বিবেচিত হবে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার