জাতীয়
দ্বৈত কর পরিহারে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডসের চুক্তি

বিদ্যমান দ্বৈত কর আরোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে নেদারলান্ডসের পক্ষে সে দেশের মিনিস্টার ফর ট্যাক্স অ্যান্ড দ্যা ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এমএলএ ভ্যান রিজ এবং বাংলাদেশের পক্ষে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার ও নেদারল্যান্ডসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সোনজা কুইপ।
বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে দ্বৈত কর আরোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তি প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৯৩ সালের ১৩ জুলাই সই হয়। ইতোমধ্যে দ্বৈত কর পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক রীতিনীতি যেমন ওইসিডি মডেল কিংবা ইউএন মডেলেও নানা পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশও স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাজুয়েশন পিরিয়ড অতিক্রম করছে। ইতঃপূর্বে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সই করা দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত চুক্তিগুলোর অসামঞ্জস্যতা দূর করতে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে চুক্তিগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি সংশোধন করে নতুন চুক্তি সম্পাদন করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
অনুষ্ঠান থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে স্বাক্ষরিত নতুন চুক্তিতে ৩৩টি আর্টিকেল রয়েছে। এর মধ্যে করের আওতা বিস্তৃত করতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আর্টিকেলে পরিবর্তন আনা হয়েছে, একই সঙ্গে নতুন নতুন ক্ষেত্র থেকে কর আহরণের জন্য কিছু নতুন আর্টিকেল সংযোজন করা হয়েছে।
নতুন চুক্তিতে শুধু রাষ্ট্র মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে করমুক্ত সুবিধা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। নতুন আর্টিকেল অন্তর্ভুক্ত করার ফলে সার্ভিস তথা সেবার বিপরীতে বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হারে কর আহরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
শেয়ার হস্তান্তর বাবদ অর্জিত মূলধনি মুনাফা বাংলাদেশে করযোগ্য হওয়ার শর্ত নতুন চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সোর্স দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে অর্জিত মূলধনি লাভ থেকে কর আহরণ করা সম্ভব হবে।
বিদ্যমান চুক্তির কোনো আর্টিকেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এমন কোনো আয়ের ক্ষেত্রে করদাতা যে দেশের নিবাসী সে দেশে কর আরোপ করার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে নতুন চুক্তিতে এটি সংশোধন করা হয়েছে। এখন যে দেশে এমন আয় উদ্ভূত হবে, সে দেশে কর আরোপ করার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া, কর দাবি আদায়ে সহযোগিতার নিমিত্তে এই আর্টিকেলটি নতুন সংযোজন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চুক্তি সম্পাদনকারী উভয় রাষ্ট্র রাজস্ব আদায়ে একে অপরকে সহযোগিতা করবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক অত্যন্ত উন্নত। বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসের ১৫টি সহযোগী দেশের মধ্যে অন্যতম। নেদারল্যান্ডস ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের নবম রপ্তানিকারক বৃহত্তর অংশীদারি দেশ যার রপ্তানিমূল্য ২ হাজার মিলিয়ন ইউএস ডলারের অধিক।
বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডসে রপ্তানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে— নিটওয়্যার, ওভেন, গার্মেন্টস, গলদা চিংড়ি, জুতা, বস্ত্র, চামড়াজাত পণ্য, বাইসাইকেল ইত্যাদি।
অপরদিকে বাংলাদেশ ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে নেদারল্যান্ডস থেকে ৩০০ মিলিয়নের অধিক পণ্য আমদানি করেছে, যার মধ্যে ক্যাপিটাল মেশিনারি, শাক-সবজি, তৈরি খাদ্য উপাদান, জীবিত প্রাণি (পশু ও পাখি), খনিজ দ্রব্যাদি, কেমিক্যালস, ঔষধ সামগ্রী, অর্গানিক কেমিক্যালস, প্লাস্টিক, রাবার ইত্যাদি।
বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডসের স্থান চতুর্থ। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশে ২ হাজার ৫৬০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। জ্বালানি, বাণিজ্য, চামড়া খাত, চামড়াজাত পণ্য, সিমেন্ট ইত্যাদি ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জেদ্দা চেম্বার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক

সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে জেদ্দা কনস্যুলেট।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সৌদি আরবে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মিয়া মো. মাইনুল কবিরের সঙ্গে জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে জেদ্দা চেম্বারের ভাইস চেয়ারম্যান রাঈদ ইব্রাহিম আল-মুদাইহিম, ভাইস চেয়ারম্যান ঈমাদ মোহাম্মাদ আল-আবৌদ এবং চেম্বারের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
এছাড়াও উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের খাত ভিত্তিক সম্ভাবনা ও সম্প্রসারণ এবং দুই দেশের চেম্বার অব কমার্স সমূহের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়।
কনসাল জেনারেল আলোচনায় উল্লেখ করেন সৌদি আরবে বাংলাদেশের রপ্তানি উল্লেখ যোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে তার অবস্থান সুদৃঢ় রেখেছে।
তিনি সৌদি বাজারে বাংলাদেশের উচ্চ মানের চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, হিমায়িত মাছ, কৃষি-প্রক্রিয়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও পাটজাত পণ্য, চা এবং হালাল মাংসের মতো বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে পণ্য বহুমুখীকরণের সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া চেম্বার প্রতিনিধিসহ সৌদি ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান মাইনুল কবির এবং দুই দেশের চেম্বারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব করেন।
জেদ্দা চেম্বারের পক্ষ হতে বাংলাদেশ হতে বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দলকে সৌদি আরবে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং দুই দেশের ব্যবসায়ীগণের মধ্যে সেক্টরভিত্তিক যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বি-টু-বি সভা আয়োজনে সহযোগিতা করা হবে মর্মে জানানো হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাত এবং একটি বৃহৎ তরুণ জনশক্তির অভ্যন্তরীণ বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিকে স্বাগত জানিয়ে সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ এবং বিভিন্ন মেগা প্রকল্প ও ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত চাহিদা পূরণে বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা তুলে ধরা হয়।
রেড সিগেট ওয়েটার্মিনাল বাংলাদেশ, সৌদি-বাংলাদেশ শিল্প ও কৃষি বিনিয়োগ কোম্পানি লিমিটেড (এসএবিআইএনসিও) ইত্যাদি প্রকল্পের ন্যায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাতসহ বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালার উল্লেখ করে বাংলাদেশে ইকনমিক জোন-এ সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। পরিশেষে, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দা, সৌদি আরবের পক্ষ হতে উভয় দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য আশ্বাস প্রদান করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি, করে যাব: সেনাপ্রধান

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব। তবে তিনি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এমনকি এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা আলোচনা করা হয়নি।
বুধবার (২১ মে) ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তার বাহিনীর সদস্যদের কাছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো যুক্ত হবে না। কাউকে তা করতেও দেওয়া হবে না। তিনি সব পর্যায়ের সেনাসদস্যকে নিরপেক্ষ থাকার এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ওই অনুষ্ঠানে নির্বাচন ছাড়াও মানবিক করিডর, বন্দর, সংস্কারসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। সেনাপ্রধান জাতীয় নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই হওয়া উচিত বলে জানান।
সেনাপ্রধান বলেন, সার্বিকভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এই পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসনসহ সব সংস্থা প্রত্যাশা অনুসারে পুনর্গঠিত হতে পারছে না। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডরসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এটি ক্রিস্টাল ক্লিয়ার না। বিষয়টি স্পর্শকাতর, ঝুঁকিপূর্ণ ও অসম্ভব।
তিনি বলেন, মানবিক করিডর বিষয়ে সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে এবং তা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হতে হবে। এখানে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে, যা করার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই করতে হবে। যা-ই করা হোক না কেন, পলিটিক্যাল কনসেনসাসের (রাজনৈতিক ঐকমত্য) মাধ্যমে সেটা হতে হবে।
সেনাপ্রধান বলেন, আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তাকে ও সেনাবাহিনীকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।
‘মব ভায়োলেন্স’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা আক্রমণের বিরুদ্ধেও কঠোর বার্তা দেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বুধবারের অফিসার্স অ্যড্রেসে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় বেশি। বিশিষ্টজনদের অনেকেরই ধারণা, সেনাপ্রধান সঠিক কথাই বলেছেন।
সামিরক বিশেষজ্ঞ মে. জে. (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী সংস্কার এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তাগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রাখা সম্পর্কে বলেন, সবাইকে একটি লক্ষ্যে কাজ করা দরকার। তা হচ্ছে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা। নিজ নিজ অবস্থানে থেকে যার যে দায়িত্ব সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যার যে দায়িত্ব তাকে সেই দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। কাউকে অবজ্ঞা করা উচিত না। দেশের অগ্রগতি চাইলে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকে নিয়েই কাজ করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশি ও বিদেশি অনেকে চায় সার্বিক সংকট থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ যেন না হয়। এ ধরনের একটি অপচেষ্টা চলছে। সেই অপচেষ্টা যেন কোনোভাবেই সফল হতে না পারে সেভাবেই সবার কাজ করা দরকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় সেনাপ্রধানের দূরদর্শী ইতিবাচক ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সার্বিক বিষয় চিন্তা করে তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এখনও দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নানা বিপর্যয় মোকাবেলায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনীও প্রশংসা পাচ্ছে। কিন্তু এই সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রেখে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্যোগ অবিবেচনাপ্রসূত। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়নি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব যাদের ওপর ন্যস্ত, তাদের মতামত না নিয়ে মানবিক করিডর বা ত্রাণ সহায়তা দিতে যাওয়ার উদ্যোগ যুক্তিযুক্ত না। এ ক্ষেত্রে সেনাপ্রধান যে কনসার্ন ব্যক্ত করেছেন, তা যথার্থ। রাষ্ট্রের সংস্কারে সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করা যেত। কারণ সশস্ত্র বাহিনীরও সংস্কার প্রয়োজন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নির্বাচন নয়, সংস্কার ও বিচারেও আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ”—রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
শুক্রবার (২৩ মে) রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা এরইমধ্যে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, নির্বাচন হবে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে। আমাদের পক্ষ থেকে এই সময়সীমার একদিন এদিক-সেদিক হওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই এ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানোর অবকাশ নেই।”
ড. ইউনূসের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কিছু দায়িত্বের সঙ্গে সময়গত সম্পর্ক থাকতে পারে। যদি এ বিষয়ে কিছু বলার থাকে, সেটা আপনারা প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই শুনবেন। আমি নির্বাচন কিংবা দায়িত্ব পালনের প্রসঙ্গেও আগেই বলেছি—উনি যা বলছেন, সেটাই আমাদের অবস্থান।”
চাপের প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “সবচেয়ে বড় চাপ হলো পারফর্ম করতে পারছি কি না—এই প্রত্যাশা। এর বাইরের কোনো চাপ আমাদের নেই।”
তিনি আরও বলেন, “ঢাকায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া যাচ্ছে না, রাস্তাঘাট বন্ধ থাকে। কেন এমন হচ্ছে? এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে আলোচনার মাধ্যমে। আমাদের মূল চাপ হচ্ছে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করা।”
তিনি স্পষ্ট করেন, “আমরা যদি দায়িত্ব পালন করতে পারি, তাহলে আমাদের দায়িত্বে থাকা যৌক্তিক। যদি না পারি, তবে আমাদের যার যার জায়গায় ফিরে যাওয়া উচিত। দায়িত্বে থাকা তখন আর প্রাসঙ্গিক থাকবে না।”
‘আপনারা দায়িত্ব পালন করতে পারছেন কি?’— এমন প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বহু প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অনেকদূর এগিয়েছি। সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন এসেছে, রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে, সব রাজনৈতিক দল তাতে অংশ নিচ্ছে। এটাও আমাদের সফলতা। নির্বাচন সময়সীমার মধ্যে হবে—এটাও একটা অগ্রগতি।”
তিনি আরও জানান, “বিচার ট্রাইব্যুনাল আগে একটি ছিল, এখন দুটি হয়েছে। আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। এসব কাজ যেন সুষ্ঠুভাবে এগোয়, তা নিশ্চিত করতে চাই। প্রতিবন্ধকতা ছাড়া এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান বরাবরই ছিল।”
তিনি বলেন, “গতকালের বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আমাদের মূল দায়িত্ব তিনটি—সংস্কার, বিচার, এবং নির্বাচন। শুধু নির্বাচন নয়, আমরা এই তিনটি গুরুতর দায়িত্ব পালনের জন্যই এসেছি।”
রাস্তায় আন্দোলন ও দাবিদাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা দাবি নিয়ে মানুষ রাস্তায় বসছে, ঢাকা শহর অচল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থার সমাধান আমরা করতে পারছি কি না—সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বলেছি, ক্ষমতায় নয়, দায়িত্বে আছি। এই দায়িত্ব তখনই যথাযথভাবে পালন সম্ভব, যদি আমরা সবার সহযোগিতা পাই। প্রত্যাশা আর বাস্তব দায়িত্ব পালনের মধ্যে ফারাক আছে।”
এমএস
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না: বিশেষ সহকারী

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ড. ইউনূসের ‘ক্ষমতা প্রয়োজন নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রাঞ্জিশনের জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে।’
শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন- এমন খবরে বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় তার সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর একদিন পরই প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না বলে জানালেন বিশেষ সহকারী।
স্ট্যাটাসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ক্যাবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে। সরকারকে আরও বেশি ফাংশনাল হতে হবে। উপদেষ্টাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে। দৃশ্যমান অগ্রগতি জনতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না। আমাদের দেখাতে হবে যে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনতার সম্মতিতে ক্ষমতায় এসে প্রফেসর (ড. ইউনূস) সাফল্য দেখিয়েছেন। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মান আছে, এটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, সরকারকে এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে আলোচনায় বসতে হবে, নিয়মিত বসে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত চাইতে হবে। কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়।
সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, পাশাপাশি সেনাবাহিনীও রাজনীতিতে নাক গলাতে পারবে না। আজকের দুনিয়ায় কোনো সভ্য দেশের সেনাবাহিনী রাজনীতি করে না। তাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বক্তব্যে সেনাপ্রধান জুরিশডিকশনাল কারেক্টনেস রক্ষা করতে পারেননি। তবে সেনাবাহিনীকে প্রাপ্য সম্মান দেখাতে হবে, আস্থায় রাখতে হবে। সেনাবাহিনী প্রশ্নে হুট করে কিছু করা যাবে না, হঠকারী কিছু করা যাবে না। তেমনই, ইনক্লুসিভনেসের নাম করে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনও চাওয়া যাবে না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব এবং আস্থার জায়গা- সেটা কেউ ভঙ্গ করবে না।
তিনি বলেন, দরকারি প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন এপ্রিল-মে’র কোনো সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি। তবে এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। এসময়ে সব যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে, করতে হবে জুলাই সনদ। তবে ডিসেম্বর থেকে জুনে দেওয়া রোডম্যাপ মতে নির্বাচনের এক্সাক্ট ডেট ঘোষণার এখতিয়ার শুধুমাত্র স্যারের (ড. ইউনূসের)। স্যারের এখতিয়ার অন্য কেউ হাইজ্যাক করতে পারবে না। স্যারকে যখন আনা হয়েছে, তখন বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে স্যার বলেছেন, আমার কথা শুনতে হবে।
বিশেষ সহকারী আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট’২৫ এ আমরা জাতীয়ভাবে দুই মাস জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির উদযাপন করবো, ইনশাল্লাহ্। এবং আগস্টের মধ্যেই স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচারের প্রথম রায়টি আলোর মুখ দেখতে পাবে বলেও আশা প্রকাশ করি। ইনশাআল্লাহ্ আমরা হারবো না, আমাদের হারানো যাবে না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। প্রফেসর ইউনূস জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না: সেনাবাহিনী

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা এক পোস্টে এ আহ্বান জানায় বাহিনী।
সেনাবাহিনী বলছে, সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরীর অপচেষ্টা চলছে।
গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। সত্যতা যাচাই করুন, সচেতন থাকুন।
এ পোস্টের সঙ্গে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়।