আন্তর্জাতিক
পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলো চীন

উন্নয়ন মডেলের রূপান্তর, শিল্পের অতি সক্ষমতা রোধ, সম্পত্তি খাতের ঝুঁকি হ্রাস করা ও স্থানীয় সরকারের অপচয় কমাতে কাজ করবে চীনের সরকার। এ লক্ষ্যে চলতি বছরে ৫ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে দেশটি। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনে চীন বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে। মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং।
তিয়েন আনমেন স্কয়ারের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের আইনসভা ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) বার্ষিক সভায় তাঁর প্রথম কর্ম প্রতিবেদন পেশ করার সময় চীনা প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত বছরও চীনের প্রবৃদ্ধি এ রকম ছিল। তবে চলতি বছর এই হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে সরকারি প্রণোদনা বাড়াতে হবে। চীনের অর্থনীতি এখনো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল বলে সরকার কত প্রণোদনা দিচ্ছে, তার ওপর দেশটির প্রবৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে। ঠিক সে কারণে দেশটির স্থানীয় সরকারের ঋণ পাহাড়সম হয়ে উঠেছে।
চীনের কোভিড-উত্তর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম খুব একটা গতি পায়নি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে দেশটির অর্থনীতির গভীর কাঠামোগত ভারসাম্যহীনতা উন্মোচিত হয়েছে। একদিকে দেশটির পারিবারিক ভোগ ব্যয় কমে যাচ্ছে, আরেক দিকে বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ প্রাপ্তির পরিমাণও কমে যাচ্ছে। তাই এখন নতুন উন্নয়ন মডেল প্রণয়নের দাবি উঠেছে।
সারা বিশ্বের অর্থনীতি যেদিকে যাচ্ছে, চীনের অর্থনীতি যাচ্ছে ঠিক তার বিপরীতে। সব বড় অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তি হলেও চীনে উল্টো মূল্যহ্রাস হচ্ছে। চাহিদা কমে যাচ্ছে দেশটিতে। আবাসন ও ঋণসংকটে সামগ্রিকভাবে জর্জরিত হচ্ছে চীনের অর্থনীতি।
এই পরিস্থিতিতে চীন বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবন ও উৎপাদনে চীন আরও বেশি সম্পদ বিনিয়োগ করবে। প্রধানমন্ত্রী লি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উৎপাদনের নতুন খাত তৈরির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে এসব করা হবে।
এ ছাড়া উৎপাদন খাতে বিদেশি বিনিয়োগের সীমা তুলে নেওয়াসহ টেলিকম ও স্বাস্থ্যসেবার মতো খাতে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে। এ ছাড়া উদীয়মান শিল্পের বিকাশে পরিকল্পনা করা হবে বলে রয়টার্সের সংবাদে জানা গেছে।
চীন সরকারের পরিকল্পনা হলো চলতি বছর বাজেট ঘাটতি ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা; গত বছর যা ছিল ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা দীর্ঘ মেয়াদে এক লাখ কোটি ইউয়ান বা ১৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের বন্ড বাজারে ছাড়তে চায়। এটা অবশ্য বাজেটের অন্তর্ভুক্ত নয়।
স্থানীয় সরকারের বিশেষ বন্ড ছাড়ার কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৯০ হাজার কোটি ইউয়ান; ২০২৩ সালে যা ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার। একই সঙ্গে চীন ভোক্তা মূল্যস্ফীতির হার ৩ শতাংশ এবং চলতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে চায়। এর মধ্য দিয়ে তারা বেকারত্বের হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখতে চায়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ইউক্রেনে শান্তি স্থাপনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য

ইউক্রেনের শান্তিরক্ষায় দেশটিতে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এ কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার।
এদিন প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের জরুরি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে ডেইলি টেলিগ্রাফে লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেন, আমরা যদি ভবিষ্যতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আরও আগ্রাসন আটকাতে চাই, তাহলে ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
স্টার্মার আরও বলেন, আমরা ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে প্রস্তুত, প্রয়োজনে সেখানে আমাদের নিজস্ব সেনা মোতায়েন করতেও রাজি আছি। এটি আমি হালকাভাবে বলছি না। ব্রিটিশ সেনাদের ঝুঁকির মধ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্তের গুরুদায়িত্ব আমি গভীরভাবে অনুভব করি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মতে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মানেই ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তবে সাবেক ব্রিটিশ সেনাপ্রধান লর্ড ড্যানাট জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, তারা ইউক্রেনে কোনো সম্ভাব্য শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনা করতে পারবে না। তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তি বজায় রাখতে প্রায় এক লাখ সেনা দরকার হবে, যেখানে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে অন্তত ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করা লাগবে, যা বর্তমানে সম্ভব নয়।
ট্রাম্পের ভূমিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। স্টার্মার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি সম্ভব নয়, কারণ কেবল যুক্তরাষ্ট্রই পুতিনকে প্রতিরোধ করতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সৌদি আরবে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। তবে ইউক্রেন সরকার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনায় তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
ট্রাম্প সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন এবং জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ আলোচনা শুরু করা হবে।
ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও তিনি তার পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেছেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলো যেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র কিনতে পারে, সে ব্যবস্থা করবেন।
স্টার্মার সতর্ক করে বলেছেন, আমরা এমন এক পরিস্থিতি চাই না যেখানে আফগানিস্তানের মতো যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি তালেবানের সঙ্গে আলোচনা করে কাবুল সরকারকে উপেক্ষা করেছিল। আমি নিশ্চিত যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এটি এড়াতে চাইবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভূমিকম্পে কাঁপলো দিল্লি

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো দিল্লি। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৩৬ মিনিটে কেঁপে ওঠে ভারতের রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকা। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে। লোকজন ছুটোছুটি করে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির (এনসিএস) তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল চার। এর উৎপত্তিস্থল দিল্লির মধ্যেই এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার গভীরে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, সাধারণত ৫ বা ১০ কিলোমিটার গভীরতার অগভীর ভূমিকম্পগুলো তুলনামূলক বেশি ক্ষতি করতে পারে।
ভূমিকম্পের পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক বার্তায় জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং সতর্কতার সঙ্গে নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছে।
দিল্লি অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এটি ভারতের ভূমিকম্প সংবেদনশীল ‘জোন ৪’ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিতে পড়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দিল্লিতে একাধিকবার চার বা এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শহরটি প্রায়ই দূরবর্তী ভূমিকম্পের কম্পন অনুভব করে, বিশেষ করে হিমালয়, আফগানিস্তান ও চীন থেকে উৎপন্ন ভূমিকম্পগুলোর প্রভাব সেখানে টের পাওয়া যায়।
সাধারণত ভূগর্ভের ১০০ কিলোমিটার বা তার বেশি গভীরে উৎপন্ন ভূমিকম্প অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। তবে যত দূরে উৎপত্তি হয়, এর শক্তি তত কমে যায় এবং কম্পনের মাত্রা দুর্বল হয়ে যায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশ-ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা বাতিল

বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে বড় ধরনের সহায়তা অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মসূচিও বাতিল করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ভারতের জন্য নির্ধারিত ২১ মিলিয়ন ডলারের কর্মসূচিও বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের ও বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দপ্তর ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) এই ঘোষণা দিয়েছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। এতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন বাজেট কমিয়ে আনার জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং এর আওতায় ভারত-বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের তহবিল বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) রোববার বলেছে, ভারতে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্যে ২১ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রোগ্রাম এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নির্ধারিত ২৯ মিলিয়ন ডলারের কর্মসূচি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সাহায্যে বৃহত্তর কাটছাঁটের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভারতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় উন্নতির লক্ষ্যে নেওয়া মূল উদ্যোগগুলোকে প্রভাবিত করবে।
ইলন মাস্ক অবশ্য বারবারই জোর দিয়ে বলেছেন, বাজেট কাটছাঁট ছাড়া চলতে থাকলে “আমেরিকা দেউলিয়া হয়ে যাবে” এবং এই উদ্যোগটি প্রশাসনের পরিকল্পনা করা বাজেট ওভারহলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে।
ইন্ডিয়া টুডে বলছে, ভারতের জন্য বরাদ্দ করা ২১ মিলিয়ন ডলারের তহবিলটি বিশেষভাবে দেশটির নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছিল। যাইহোক ভারত এখন আর এই তহবিল পাবে না বলে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) ঘোষণা করেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা করার কয়েকদিন পরেই ভারতে সহায়তার বিষয়ে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যদিও বৈঠকের পর দুই নেতা মার্কিন-ভারত সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে যৌথ বিবৃতি বা সংবাদ সম্মেলনে এর উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
আর বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রোগ্রামটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক শাসনকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে গত বছরের আগস্টে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ শাসন করছে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির (ডিওজিই) এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশও প্রভাবিত হবে।
এর মধ্যে মোজাম্বিকের জন্য ১০ মিলিয়ন ডলার, কম্বোডিয়ার জন্য ২.৩ মিলিয়ন ডলার, সার্বিয়ার জন্য ১৪ মিলিয়ন ডলার, মলদোভায় ২২ মিলিয়ন ডলার, নেপালে দুটি উদ্যোগে ৩৯ মিলিয়ন ডলার এবং মালিতে ১৪ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের ওপর প্রভাব পড়বে।
এছাড়া বিশ্বের আরও অনেক দেশ ও অঞ্চলও তহবিল বাতিলের এই তালিকায় রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদদলিত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু

ভারতের নিউ দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া অতিরিক্ত ভিড়ে পদদলিত হয়ে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১১ জন নারী ও চারজন শিশু রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এলএনজেপি হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১০ নারী, তিন শিশু ও দুই পুরুষ এলএনজেপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়া লেডি হার্ডিং হাসপাতালে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রেলওয়ে বিভাগ ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং মৃতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি, গুরুতর আহতদের ২ লাখ ৫০ হাজার রুপি ও সামান্য আহতদের এক লাখ রুপি আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে স্টেশনের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। প্রয়াগরাজগামী দুটি ট্রেন আসতে দেরি হওয়ায় যাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং চারটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন, নিউ দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দিল্লি পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হঠাৎ ভিড় সামলাতে বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে।
তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এটি কোনো আনুষ্ঠানিক পদদলনের ঘটনা নয়, বরং অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে ওঠার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। কিছু যাত্রীকে মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে, অন্যরা তাদের সজাগ করার চেষ্টা করছিলেন।
এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বলেছেন, নিউ দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদদলনের ঘটনায় আমি মর্মাহত। যারা আপনজন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।
প্রতি ১২ বছর পর একবার অনুষ্ঠিত হওয়া মহাকুম্ভের কারণে এ বছর বিশেষ ট্রেনগুলোতে ব্যাপক ভিড় দেখা যাচ্ছে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি এ উৎসব শেষ হবে। এর আগে, ট্রেনে উঠতে না পেরে বিহারের মধুবনী রেলওয়ে স্টেশনে স্বতন্ত্র সেনানী এক্সপ্রেসের জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।
এই বিশৃঙ্খলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আতিশি ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেলেন ৩ ইসরায়েলি

দীর্ঘ ১৬ মাস জিম্মি হিসেবে গাজায় থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন ৩ ইসরায়েলি জিম্মি- সাশা ত্রৌফানভ, সাগুই দেকেল-শেন এবং আয়ার হর্ন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে যাদেরকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে এসেছিল গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস, তাদের মধ্যে এই ৩ জনও ছিলেন।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে সাশা ত্রৌফানভ, সাগুই দেকেল-শেন এবং আয়ার হর্নকে সাদা রঙের গাড়িতে নিয়ে আসে হামাসের সামরিক বিভাগ আল কাসেম ব্রিগেডের একটি দল। সেখানে একটি অস্থায়ী মঞ্চ আগে থেকেই প্রস্তুত করা ছিল, আর সেই মঞ্চকে ঘিরে ছিল শতাধিক ফিলিস্তিনি জনতা।
মঞ্চে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেডক্রসের প্রতিনিধিদের কাছে জিম্মিদের হস্তান্তর সম্পর্কিত নথিতে স্বাক্ষর করেন হামাসের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য। তারপর জিম্মিদের সেই মঞ্চে তোলা হয় এবং উপস্থিত ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার অনুরোধ জানানো হয়। জিম্মিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ হওয়ার পর রেডক্রসের গাড়িতে তাদেরকে রাফা ক্রসিং এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আগে থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিলেন আইডিএফ এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের কর্মকর্তারা। রেড ক্রসের প্রতিনিধিরা কর্মকর্তাদের হাতে জিম্মিদের সোপর্দ করেন। তারপর আইডিএফের গাড়িতে চেপে ইসরায়েলে প্রবেশ করেন তিন জিম্মি।
তিন জিম্মির পরিবারের সদস্যরা উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছিলেন তাদের জন্য। স্বজনদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাতের পর আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আজ শনিবার এই তিন জিম্মির বিনিময়ে ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা রয়েছে ইসরায়েলের। ইসরায়েরের কারা কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সময় দুপুরের মধ্যে এই বন্দিদের রেডক্রস প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করবে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ভূখণ্ডে ঢুকে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যা করে হামাসের যোদ্ধারা, সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায়ে ২৫১ জনকে। হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। টানা ১৫ মাস ধরে চলা সেই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজারেরও বেশি এবং পুরোপুরি ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের ব্যাপক চাপে অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস এবং ইসরায়েল। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে গত ৫ দফায় মোট ১৬ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস, বিনিময়ে ৭৬৬ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।