জাতীয়
স্থায়ী হলো দ্রুত বিচার আইন, সংসদে বিল পাস

মেয়াদ বাড়ানোর পরিবর্তে স্থায়ী রূপ নিচ্ছে দ্রুত বিচার আইন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে প্রণীত এ আইনটি স্থায়ী করতে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘আইন–শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন)’ বিল পাস হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
২০০২ সালে প্রথম আইনটি করা হয়েছিল দুই বছরের জন্য। এরপর ৭ দফা এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ ২০১৯ সালে আইনটি সংশোধন করে বাড়ানো হয় মেয়াদ। আগামী ৯ এপ্রিল এই আইনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
এরমধ্যে আইনটির মেয়াদ না বাড়িয়ে তা স্থায়ী করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেদিন মন্ত্রিসভায় বিলের খসড়া অনুমোদনের পর মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিল সংসদে পাস হলো। বিলে আইনটি স্থায়ী করা ছাড়া অন্য কোনো সংশোধনী আনা হয়নি।
বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার যখন আইনটি করেছিল, তখন আপনারা (তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগ) বলেছিলেন এটি নিপীড়নমূলক ও কালো আইন। এই আইনটা রাজনৈতিক কারণ বা সরকার চাইলে যে কোনো কারণে নাগরিককে হয়রানি করতে পারে। সে আইনটা আপনারা রেখেছেন। আমি জানি না কেন রেখেছেন?
চুন্নু বলেন, যখন আপনারা ক্ষমতায় থাকবেন না, স্থায়ীভাবে আইনটা করবেন, অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবেন, তখন উদ্দেশ্য তো ভালো নাও থাকতে পারে। আপনারা কি এটা বলতে চান বিএনপি যে আইনটা এনেছিল তা ভালো ছিল? এটাই আজকে স্বীকার করুন।
তিনি আরও বলেন, র্যাব যখন গঠন করেছিল, আওয়ামী লীগসহ অনেক রাজনৈতিক দল এর বিরোধিতা করেছিল। সে র্যাব এখন টিকে আছে, তারা কাজ করছে। সরকারের কাছে অনুরোধ যদি প্রয়োজন পড়ে এক-দুই বছর আইনের মেয়াদ বাড়ান। কিন্তু আইনটা স্থায়ী করবেন না, করলে ভবিষ্যতে একদিন আপনাদের এমন অবস্থা হবে, সেদিন আপসোস করবেন।
জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আইনটি এনেছিল বিএনপির সময়। ওই সময় আমরা ও আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করেছিলাম। তারপরও আইনটি পাস হয়েছিল। আজকেও পাস হবে। আমার প্রশ্ন হলো যার জন্য গর্ত খুঁড়বেন, নিজেকেই সেই গর্তে পড়তে হয়। আজকে বিএনপি সেই গর্তে পড়েছে। এখন আওয়ামী লীগ আইনটিকে স্থায়ী করতে নিয়ে এসেছে। দিন এক রকম থাকবে না।
এসময় তিনি আইনটিকে স্থায়ী না করে পাঁচ-চারবছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।
সংসদের বিরোধীদলের সমালোচনার জবাবে আইনটি করার সময় বাংলাদেশে অরাজক পরিস্থিতি ছিল বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, সেসময় নানা ধরনের অপরাধ হতো, তাই হয়তো আইনটি তৎকালীন সরকার করেছিল। আমি মনে করি আইনটি করার উদ্দেশ্য ছিল তাৎক্ষণিকভাবে বিচার যেন মানুষ পায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীরা যাতে শাস্তি পায় সেটাই মূল উদ্দেশ্য ছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংসদ সদস্যরা অনেক সময় আমাদের কাছে পাঠান যেন এ আইনের মাধ্যমে বিচার হয়। শুধু সংসদ সদস্য না, অনেকেই আইনটি ব্যবহার করার জন্য আমাদের কাছে সুপারিশ পাঠান। কারণ একটাই যাতে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে অপরাধীরা শাস্তি পায়। সংসদ সদস্যদের কেউ বলেনি আইনটি বাতিল করে দেন। কেউ বলেননি আইনটি যথাযোগ্য নয়। তারা সময় বৃদ্ধি করে দিয়ে আইনটি চালু থাকার কথা বলেছেন। আইনটি একই রকম আছে আমরা কোনো রকম সংশোধন করি নাই। কাউকে ক্ষতি করার জন্য আইনটি হয়নি। কোনো রাজনৈতিক নেতা বলতে পারবেন না এ আইনের মাধ্যমে শাস্তি হয়েছে।
সংশোধনীর আলোচনায় মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন আইনটি ভালো। তাহলে বিএনপি যখন আইনটি করেছিল আপনারা তার বিরোধিতা করেছিলেন কেন? এখন ভালো হয়ে গেল?
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আইনটি কখন আনা হয়েছিল তা মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। শান্তির পরিবেশ তৈরির জন্য আইনটি স্থায়ী করা হচ্ছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টা কাতার যাচ্ছেন সোমবার

‘আর্থনা সামিট-২০২৫’ -এ অংশগ্রহণ করতে চারদিনের সরকারি সফরে আগামীকাল সোমবার কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন বলে বাসসকে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি বলেন, সামিটে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন বলে জানা গেছে।
দেশের ইতিহাসে এ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতারে যাচ্ছেন। এই চার ক্রীড়াবিদ হলেন- ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।
‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’ প্রতিপাদ্যে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠেয় ‘আর্থনা সামিট’-এ কাতারের উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে দেশটির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও অনন্য প্রতিবেশগত বৈচিত্র্যকে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হবে।
এই সামিট একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে যেখানে প্রথাগত জ্ঞান ও আধুনিক উদ্ভাবনের সমন্বয়ের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের নতুন দিক উন্মোচন এবং এক সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।
আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল এই দুই দিনে সামিটে উপস্থাপনা, ইন্টারঅ্যাকটিভ প্যানেল আলোচনা, কর্মশালা ও গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শান্তিরক্ষা মিশনে আরও বেশি ফোর্স নেওয়ার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে পুলিশ ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যসহ আরও বেশি হারে ফোর্স নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে এ অনুরোধ জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জাঁ পিয়ের লাক্রোয়ার। এসময় উপদেষ্টা এ অনুরোধ জানান।
বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান, বর্তমান অবস্থান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, মিশনের যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য অফিসার ও ফোর্সদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং সামর্থ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া নারী পুলিশ অফিসারদের সমন্বয়ে ফিমেল প্লাটুন প্রেরণ, মিশনে বিজিবি ও আনসার সদস্য প্রেরণের সম্ভাব্যতা, দক্ষিণ সুদান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ফরমড পুলিশ ইউনিট (এফপিইউ) প্রেরণ, রোহিঙ্গা সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একসময় শীর্ষ দেশ ছিল। কালের পরিক্রমায় বর্তমানে আমাদের অবস্থান তৃতীয়। নেপাল ও রুয়ান্ডা বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আবারও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রথম স্থান পুনরুদ্ধার করতে চাই। আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বিভিন্ন দেশে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃসীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে বিজিবি সদস্যদের পাঠাতে চাই। তাছাড়া মিশনে প্রশিক্ষিত আনসার সদস্যদের পাঠানোর বিষয়েও ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহযোগিতা আমাদের একান্ত প্রয়োজন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, পুলিশসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রদর্শনের মাধ্যমে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশ শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানে শীর্ষ পদগুলোতে যাতে বাংলাদেশি অফিসাররা আরও অধিক হারে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করছি।
এসময় তিনি সারাবিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রেরণের জন্য আমাদের একটি ফিমেল প্লাটুন প্রস্তুত রয়েছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনের সহযোগিতা প্রয়োজন। যাতে তারা প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দ্রুত শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত হতে পারেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের অনুরোধে সাড়া দিয়ে তাৎক্ষণিক সাফল্যের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো থেকে দক্ষিণ সুদানে দুটি ফরমড পুলিশ ইউনিট মোতায়েন করে। বাংলাদেশের প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স থাকার পরও সেখানে কোনো ফরমড পুলিশ ইউনিট নেই।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যদিও জাতিসংঘ ২০১৪ সাল থেকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে একটি মিশন বজায় রেখেছে, সেখানেও বাংলাদেশের কোনো ফরমড পুলিশ ইউনিট প্রতিনিধিত্ব নেই। উপদেষ্টা এ দুই দেশে বাংলাদেশ থেকে ফরমড পুলিশ ইউনিট নেওয়ার জন্য আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে অনুরোধ করেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনের পাশাপাশি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ শুরু থেকে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের পর রোহিঙ্গা সমস্যা দূরীকরণে আমাদের জনগণের মধ্যে আশা জেগেছে। উপদেষ্টা এসময় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের আরও সময়োপযোগী ও কার্যকরী উদ্যোগ কামনা করেন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, রাজনৈতিক-১ অধিশাখার যুগ্ম সচিব মু. জসীম উদ্দিন খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মন্ত্রণালয়ের নাম হতে পারে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিষ্ঠান ও জনপ্রকৌশল সেবা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি বিভাগ থাকবে। একটির নাম হবে জনপ্রতিষ্ঠান বিভাগ ও জনপ্রকৌশল সেবা বিভাগ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি বিষয়ক হাইকোর্টের রায় স্থগিত

ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি দেওয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে আবেদনটি আগামী ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন রাখা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের করা আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (২০ এপ্রিল) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ। অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। ফলে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা এটা নিয়ে আন্দোল করছেন। এখন যেহেতু রায় স্থগিত হয়ে গেছে তাই আন্দোলনের যৌক্তিকতা থাকে না।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্যাডারবহির্ভূত গেজেটেড ও নন-গেজেটেড কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ এর দুটি সিরিয়াল (২৭ ও ২৮) চ্যালেঞ্জ করে গত বছর ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর মো. আশিক মিয়াসহ কয়েকজন হাইকোর্টে রিট করেন।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১৮ মার্চ হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে রিট আবেদনকারীদের (ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর) জন্য কিছু পদ রাখতে বা সন্নিবেশিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। যদি পদ না থাকে তাহলে যোগ্যতাসাপেক্ষে যে কোনোভাবে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি দিতে বলা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গত ১৫ এপ্রিল লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন।
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল ও নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যে কোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নপদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গ্রাম আদালত বিলুপ্তির সুপারিশ

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন এবং গ্রাম আদালত বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ এ কথা বলেন
তিনি বলেন, উপজেলাতে পূর্ণাঙ্গ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং এডিআর চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে। এটি চালু করা গেলে সাধারণ মানুষ দ্রুত বিচার পাব
তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংস্কার ছাড়া জাতীয় সংসদ কিংবা স্থানীয় সরকার; কোনো নির্বাচনেই ভালো ফল আসবে না।
তিনি বলেন, মাত্র ৪০ দিনের একটি শিডিউলে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করা সম্ভব। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে ২২৫ দিন লাগে। খরচ হয় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। একটি শিডিউলে খরচ নেমে আসবে ৭০০ কোটি টাকায়।
এর আগে, বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।