দেশীয় অর্থনীতির নয়টি প্রধান সূচকের মধ্যে ছয়টিতেই চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে সরকার। সূচক ছয়টি হলো- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত, আমদানির পরিমাণ, দেশীয় ঋণ, রপ্তানি প্রত্যাবাসন, খাদ্য মজুত ও মূল্যস্ফীতি। মূলত বৈশ্বিক ও স্থানীয় প্রতিকূলতাই এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) তাদের ত্রৈমাসিক পর্যালোচনায় এমন অভিমত দিয়েছে। এমসিসিআই বলেছে, সরকার অর্থনৈতিক পতন মোকাবিলায় এরই মধ্যে দ্রুত ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে পরিস্থিতির উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নিয়ে গতকাল সোমবার এ পর্যালোচনা প্রকাশ করে এমসিসিআই। প্রতি তিন মাস পরপর এমন পর্যালোচনা প্রকাশ করে সংগঠনটি।
ত্রৈমাসিক পর্যালোচনায় এমসিসিআই বলেছে, প্রবাসী আয়ের দুর্বল প্রবাহ, রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি, টাকার অবমূল্যায়ন, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি, সরকারি ব্যয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমা, বিনিয়োগ কমা ও বেকারত্ব বৃদ্ধির মতো চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে দেশকে যেতে হয়েছে। তবে সরকারের পদক্ষেপের কারণে রপ্তানি ও আমদানির মতো কিছু জায়গায় তুলনামূলক ভালো ফল এসেছে।
এমসিসিআই বলেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং খাদ্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারকে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।
নতুন প্রতিবেদনে অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ের জন্য কৃষি, শিল্প, সেবা, বিদ্যুৎ, মূল্যস্ফীতি, আমদানি-রপ্তানি, বিনিময় হার, প্রবাসী আয়, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও সাহায্য, রাজস্ব আয়-ব্যয়, লেনদেনের ভারসাম্য, শেয়ারবাজার, বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রভৃতি বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এমসিসিআই বলেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে সময়ে দেশে রপ্তানি আয় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়েছে। যদিও এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সামগ্রিক রপ্তানি আয় ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম ছিল। সর্বশেষ ত্রৈমাসিকে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রবাহ ২৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ডিসেম্বরে ২৭ দশমিক ১৩ বিলিয়ন হয়েছে।
সংগঠনটি বলেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকট ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, যা এখনো কমানো সম্ভব হয়নি।
অর্থসংবাদ/এমআই