ব্যাংক
২০২৩ সালে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের নিট লোকসান ৩৬২ কোটি ফ্রাঁ

টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বড় লোকসান গুনেছে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি)। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির নিট লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩৬২ কোটি সুইস ফ্রাঁ (৩৬০ কোটি ডলার)।গতকাল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় ব্যাংকটি।
ব্যাংকের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বিভিন্ন ধাপে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাড়িয়েছে সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক। উচ্চ সুদহারের ফলে আমানতের বিপরীতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করতে হয়েছে অতিরিক্ত অর্থ। এ কারণেই মূলত নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিকে বড় অঙ্কের এই লোকসান গুনতে হয়েছে।
ব্যাংকের দেয়া তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে সরকারি বন্ড, বিল, আমানতসহ স্থানীয় মুদ্রায় সংরক্ষিত দায়ে লোকসান হয়েছে ৮৫০ কোটি সুইস ফ্রাঁ। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর স্বলমেয়াদী আমানতে সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে এই লোকসান গুনতে হয়েছে। অন্যদিকে ওই বছর ব্যাংকের ৭০ হাজার কোটি ফ্রাঁ মূল্যের বৈদেশিক বন্ড ও শেয়ার থেকে মুনাফাও কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। এর প্রধান কারণ ছিল স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কয়েক বছর ধরেই সুদহার নিম্নমুখী রেখেছিল। তবে ২০২২ সালে দেশটি মূল্যস্ফীতির অভিঘাত থেকে অর্থনীতিকে রক্ষা করতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি গ্রহণ করে।ফলে ওই বছরও বড় অংকের লোকসানে পড়ে ব্যাংকটি। তবে সে তুলনায় ২০২৩ সালে লোকসানের আকার ছিল অনেক কম।
এদিকে অব্যাহত লোকসানের কারণে বিনিয়োগকারী এবং কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকারকে লভ্যাংশ দিতে পারছে না এসএনবি। গত বছরও বিনিয়োগকারীরা কোনো লভ্যাংশ পাননি। তবে এই লোকসান নতুন মুদ্রানীতি বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে মনে করছেন ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা। আগামী ২১ মার্চ সুদহার নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও ইংগিত দিয়েছেন তারা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, স্থানীয় মুদ্রায় সংরক্ষিত সম্পদে লোকসানের কারণেই মূলত ব্যাংকটি বার্ষিক নিট লোকসান মুখে পড়েছে। তবে বৈদেশিক রিজার্ভসহ অন্যান্য খাত থেকে মুনাফাও এসেছে।যা এই লোকসানে কিছুটা হলেও ভারসাম্য বজায় রেখেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে গত বছর স্বর্ণের দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এটি সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। দাম বাড়ায় অর্থমূল্যে ব্যাংকটিতে স্বর্ণের মজুদ বেড়েছে ১৭০ কোটি ফ্রাঁ। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির ভল্টে ১ হাজার ৪০ টন স্বর্ণ মজুদ ছিল।
তথ্যমতে, ২০২২ সালে ব্যাংকটি প্রায় ১৩ হাজার কোটি ফ্রাঁ লোকসান গুনেছিল। সে তুলনায় ২০২৩ সালে লোকসানের পরিমাণ অনেক কমিয়ে এনেছে ব্যাংকটি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রোববার পদত্যাগ করছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান থমাস জর্ডান। আগামী সেপ্টেম্বরে এসএনবির চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন ৬১ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ। যদিও তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৭ সালে। থমাস জর্ডানের স্থলাভিষিক্ত কে হচ্ছেন সে ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি।
তবে অব্যাহত লোকসানের কারণে ব্যাংকটির ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়বে না বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। সুইস প্রাইভেট ব্যাংক জে. সাফরা সারাসিন লিমিটেডের অর্থনীতিবিদ কারস্টেন জুনিয়স বলেন, এসএনবির মুদ্রানীতির সাফল্যের দিকে তাকান। লভ্যাংশ না দিতে পারার কারণে এসএনবি রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়বে বলে আমি মনে করি না। মাথায় রাখতে হবে, সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক সাধারণ কোনো কোম্পানি নয়।

ব্যাংক
গ্রুপভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে নেওয়া ঋণের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বেক্সিমকো গ্রুপসহ দেশের বিভিন্ন গ্রুপভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে ও বেনামে নেওয়া ঋণ এবং ঋণখেলাপির তথ্য চেয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব তথ্য গত ১৯ জুনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৮ জুন জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-১ এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেক্সিমকো গ্রুপ, এম আর গ্রুপ, রতনপুর গ্রুপ, কেয়া গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, থার্মেক্স গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, বিবিএস গ্রুপ, আব্দুল মোমেন গ্রুপ, এননটেক্স গ্রুপসহ আরও কিছু গ্রুপভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে ২০০৯ সাল থেকে চলতি সময় পর্যন্ত তাদের এবং তাদের সহযোগী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে কী পরিমাণ ঋণ রয়েছে, কী পরিমাণ খেলাপি রয়েছে এবং কোনো তথ্য গোপন রেখে অন্য নামে বা বেনামে ঋণ নেওয়া হয়ে থাকলে সে সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য ১৯ জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, তালিকাভুক্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শাখার নাম, হিসাব নম্বর, ঋণগ্রহীতার নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম, মালিকানা কাঠামো, মোবাইল নম্বরসহ বিস্তারিত চাওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়ানোর পাশাপাশি বৃহৎ ঋণগ্রহীতা গোষ্ঠীর প্রকৃত দায়-দায়িত্ব চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদ/কাফি
ব্যাংক
পাঁচ দিন বন্ধ থাকবে রূপালী ব্যাংকের ব্যাংকিং কার্যক্রম

ডাটা সেন্টার স্থানান্তরের লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম পাঁচ দিন বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলারে জানানো হয়, ডাটা সেন্টার নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে স্থানান্তরের লক্ষ্যে আগামী ৪ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত রূপালী ব্যাংকের সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম সাময়িকভাবে বিরত থাকবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংক
চলমান ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ পরিশোধ ছাড়া নবায়ন নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক

এখন থেকে চলমান ঋণের অনুমোদিত সীমার অতিরিক্ত অংশ পরিশোধ না করে অন্য কোনো উপায়ে ওই ঋণ নবায়ন না করতে সব তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার (২৫ জুন) এক সার্কুলারের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করেছে।
এ নির্দেশনার মূল লক্ষ্য প্রকৃত পরিশোধ ছাড়াই ঋণ নবায়নের চর্চা বন্ধ করা। এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং দেশের সব ব্যাংকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের অনুমোদিত সীমা অতিক্রম করার পরেও তাদের চলমান ঋণ নিয়মিত নবায়ন করে আসছে।
অনেক সময় ব্যাংকগুলো এই বাড়তি অংশ পরিশোধ না করে আলাদা ঋণ সৃষ্টি করছে। এতে চলমান ঋণের এক টাকাও পরিশোধ না করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ পাচ্ছে গ্রাহক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন’, চলমান ঋণ পরিশোধ না করে নিয়মিত থাকার সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। মূলত ব্যবসায়ী প্রয়োজনে নির্ধারিত সীমার মধ্যে পরিশোধ করবেন, ঋণ নেবেন–-এটা নিয়ম। বছর শেষে পুরো ঋণ সমন্বয় করবেন কিংবা নির্ধারিত সীমার আলোকে পরিশোধ করবেন। তবে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তা না করে বছর শেষে ঋণসীমার অতিরিক্ত অংশটি আলাদা একটি ঋণে রূপান্তর করে পুরোটা নবায়ন করে নিচ্ছেন, কিংবা সীমা বাড়িয়ে নতুন করে অনুমোদন করিয়ে নিচ্ছেন। ফলে কোনো টাকা পরিশোধ করা ছাড়াই ঋণটি নিয়মিত থাকছে।’
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলমান ঋণ বিদ্যমান মেয়াদের মধ্যে নবায়ন করতে হবে। তবে ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ সমন্বয় ছাড়া নবায়ন করা যাবে না। চলমান ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ মূল ঋণ থেকে আলাদা করে নতুন ঋণ সৃষ্টি বা অন্য কোনো ঋণ হিসাবে স্থানান্তর করা যাবে না। সীমাতিরিক্ত অংশ পরিশোধ করতে হবে।
ব্যাংক
এমটিবির পরিচালনা পর্ষদে তপন চৌধুরী, নাসিম মঞ্জুর ও জারিন মাহমুদ

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি তপন চৌধুরী ও সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি) পিএলসির পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া, স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে বোর্ডে যোগ দিয়েছেন জারিন মাহমুদ হোসেন।
সোমবার (২৩ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে এমটিবি।
তপন চৌধুরী আস্ট্রাজ লিমিটেডের প্রতিনিধি হিসেবে বোর্ডে আসছেন। তিনি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসে কর্মজীবন শুরু করে ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিযুক্ত হন। বর্তমানে তিনি স্কয়ার টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এমসিসিআই, বিটিএমএ, বিএপিএলসি ও ওয়াইএমসিএ’র সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ল্যান্ডমার্ক ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান। তিনি এপেক্স ট্যানারি, এপেক্স ফার্মা ও ব্লু ওশান ফুটওয়্যারের পরিচালক এবং এলএফএমইএবির বর্তমান সভাপতি। পেনসিলভানিয়ার ওয়ারটন স্কুল থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
জারিন মাহমুদ হোসেন স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা অংশীদার এবং হারস্টোরি ফাউন্ডেশন ও চল পড়ির প্রতিষ্ঠাতা। নিউইয়র্কে কেপিএমজি এলএলপিতে কর্মরত অবস্থায় সিপিএ সার্টিফিকেশন অর্জন করেন তিনি। স্মিথ কলেজ থেকে বিএ এবং নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে এমপিএ ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি তিনি আইসিএবি’র একজন ফেলো সদস্য।
ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি মনিরুল মাওলা গ্রেফতার

ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মাওলাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রবিবার (২২ জুন) দিনগত রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
রাতে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মুহাম্মদ মনিরুল মাওলার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে। সেই মামলায় রাত সোয়া ১২টার দিকে বসুন্ধরায় তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন৷
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর অফিস ছেড়ে পদত্যাগপত্র ই-মেইল যোগে পাঠান মুহাম্মদ মনিরুল মওলা।
জানা গেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৯২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম, ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিইও ও এমডি মনিরুল মাওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।