পুঁজিবাজার
আইনের তোয়াক্কা করছে না এমারেল্ড অয়েলের পরিচালকরা, ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার ক্রয়
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয়ের জন্য পূর্ব ঘোষণা বাধ্যতামূলক করেছে। তবে এই আইনের তোয়াক্কা না করেই কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার ক্রয় করেছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা। গোপনে কম দামে শেয়ার ক্রয় করে তা আবার সর্বোচ্চ দামে ধরিয়ে দিয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। এতে বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বিনিয়োগকারীরা। এদিকে এমন কান্ডকে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা বলছে বাজার সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা-চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) ও বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, এমারেল্ড অয়েলের উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা ঘোষণা ছাড়াই কম দামে শেয়ার ক্রয় করে বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৮৮ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত দর বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করে দেয়। এতে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। একপর্যায়ে শেয়ারের দর কমলে প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে থাকা শেয়ার ফের ঘোষণা ছাড়াই ক্রয় করে কোম্পানির একাধিক উদ্যোক্তা ও পরিচালক। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের প্রায় ৬০ শতাংশই উদ্যোক্তা পরিচালকদের নিকট রয়েছে।
এদিকে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দাবি তাদের বড় ঠকানো হয়েছে। তাদের দাবি, ঘোষণা ছাড়া কম দামে শেয়ার ক্রয় করে দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফের কম দামে ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার ক্রয় করে আবারও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর চক্রান্ত চলছে।
সূত্র মতে, গত এক মাসের মধ্যে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার ধারণে বিশাল পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের অংশের শেয়ার ২১ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিশাল পরিমাণে কমেছে। তবে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ারের পরিমাণ বৃদ্ধির পেছনে কোনো তথ্য নেই দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে। কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের কর্মকান্ডে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৩ তারিখে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিলো ৩৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। আর ৩১ জানুয়ারি,২০২৪ তারিখে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ দশমিক ৬১ শতাংশে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বেড়েছে ২১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এছাড়া, ৩১ ডিসেম্বর,২০২৩ তারিখে কোম্পনিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিলো ১২ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিলো ৪৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর গত ৩১ জানুয়ারি,২০২৪ তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৪২ শতাংশে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমেছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমেছে ১৬ দশমিক ০৬ শতাংশ।
এছাড়া, বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশের অর্থ পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীনসহ মোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদের দিয়ে এ লভ্যাংশ অনুমোদনও করিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অথচ লভ্যাংশের সেই অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধই করা হয়নি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ঘোষণা করা লভ্যাংশ বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডদের অনুমোদনের ৩০দিনের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন করতে হয়। এ বিষয়ে ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি বিএসইসির জারি করা আদেশে বলা হয়, অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে লভ্যাংশ জমা করতে হবে। অন্যথায় জরিমানাসহ শাস্তির আওতায় আসবে কোম্পানিটি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নির্দেশনা থাকলেও ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের পরও সেই লভ্যাংশের অর্থ বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে পাঠায়নি খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানিটির লভ্যাংশের এ অর্থ পাঠানোর শেষ সময় ছিল চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি।
এদিকে গত ৩০ জুন,২০২৩ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এমারেল্ড অয়েল কর্তৃপক্ষ ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীনসহ মোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। যার রেকর্ড ডেট ছিলো একই বছরের ২৯ নভেম্বর। আর এজিএম ছিলো ২৭ ডিসেম্বর। কোম্পানিটির এজিএমে পূর্ববতী উদ্যোক্তা ও পরিচালকগণ যাদের শেয়ার ৩০ দশমিক ৪৫ শতাংশ ব্যতীত সকলের জন্য এ লভ্যাংশ অনুমোদিত হয়। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও কোম্পানিটি লভ্যাংশের এ টাকা বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দেয়নি। এ অবস্থায় লভ্যাংশ না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির হস্তক্ষেপ কামনা করছে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা। এছাড়াও কোম্পানিটির শেয়ারদর নিয়ে কারসাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

পুঁজিবাজার
বাজেট পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে: সিএসই

প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে এবং ব্রোকারেজ হাউজসহ বাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর করের বোঝা হ্রাস পাওয়ায় পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
মঙ্গলবার (৩ জুন) গণমাধ্যমে সিএসইর পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেছেন। যা দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘোষিত বাজেটে পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নে তিনটি প্রত্যক্ষ প্রণোদনার প্রস্তাব করা হয়েছে; যেমন: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্পোরেট করের ব্যবধান ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭.৫ শতাংশ করা। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান কর্পোরেট করহার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭.৫ শতাংশ করা এবং পুঁজিবাজারে লেনদেনের ওপর উৎস অগ্রিম কর বিদ্যমান ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০৩ শতাংশ করা। এসব প্রণোদনা ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে এবং ব্রোকারেজ হাউজসহ বাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর করের বোঝা হ্রাস পাওয়ায় পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে সিএসই মনে করে।
সিএসই জানায়, বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা পুঁজিবাজার উন্নয়নে গত ১১ মে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রদত্ত পাঁচটি নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সরাসরি কোন প্রণোদনার প্রস্তাব প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখ না থাকলেও স্মর্তব্য যে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তালিকাভুক্ত কোম্পানি হতে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের অর্জিত ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূলধনি আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত রাখার বিধান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ৫০ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে মূলধনি আয়ের উপর কর ১৫ শতাংশ হ্রাস করেছে।
এছাড়া, সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টের উপর ধার্য বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ফি ৭৫% হাসের নীতিগত সিদ্ধান্ত, এবং গ্রাহক একাউন্টে অর্জিত সুদের ২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ব্যয়ের জন্য ইনভেস্টর্স প্রটেকশন ফান্ডে জমার সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে বড় প্রভাব রাখবে বলে আশা করা যায়।
বাজেটে প্রস্তাবিত পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করা যায়, যেমন: করমুক্ত দানের আওতায় স্থাবর/অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিদ্যমান তালিকায় আপন ভাই ও বোনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদ আয়ে উৎস কর ৫% এর পরিবর্তে ১০% করা হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত সুদ আয় কমে যাওয়ায় শেয়ারে বিনিয়োগে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
অন্যদিকে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন শেয়ার বা তহবিলের স্পনসর, ডিরেক্টর বা প্লেসমেন্ট হোল্ডার হস্তান্তর কার্যক্রম করার পূর্বে উৎস কর ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ (পূর্বে এ হার ছিল ৫%) নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
তবে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত বা অগ্রিম কর্তিত আয় চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বাজেটে বিবেচনা করলে তাতে সরাসরি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কিছুটা উপকৃত হতো। আবাসন খাতের মতো পুঁজিবাজারেও অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে দেখা যেত পুঁজিবাজারে গতি সঞ্চারিত হয় কিনা।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সম্প্রতি “চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (কমোডিটি ডেরিভেটিভ) প্রবিধানমালা, ২০২৫ অনুমোদন দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হিসেবে নিবন্ধন সনদ পাওয়া চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালুর মাধ্যমে ডেরিভেটিভ পন্যের যুগে
প্রবেশ করতে যাচ্ছে যা নিঃসন্দেহে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি অনন্য মাইলফলক। সিএসই আশা করে, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বিকাশে সিএসইকে কর অবকাশ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো প্রশংসার দাবি রাখে। পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেগুলো যথেষ্ট কিনা তা সময়ই বলে দেবে। সিএসই মনে করে পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণ এবং পুঁজিবাজারকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত ও কৌশলগত উদ্যোগ প্রয়োজন।
সার্বিকভাবে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা, বাজেটে উল্লিখিত প্রস্তাবনা, এনবিআর এবং বিএসইসি কর্তৃক গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী এবং দৃঢ় প্রতিশ্রুতির পরিচায়ক প্রতীয়মাণ হওয়ায় সিএসই পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং এনবিআরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে সিএসই।
কাফি
পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকার অত্যন্ত ইতিবাচক ও আন্তরিক: বিএসইসি চেয়ারম্যান

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রশংসনীয়। এছাড়া সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নের বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক ও আন্তরিক বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
পাঠানো বক্তব্যে তিনি বলেন, জুলাই অভূত্থান পেরিয়ে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জাতির ক্রান্তিলগ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সফলতার সাথে গত ২ জুন আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অর্থ বিল অনুমোদন করেছে যা প্রশংসনীয়।
তিনি আরও বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার পাঁচটি দিকনির্দেশনার বিষয়ও গুরুত্ব সহকারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার এই নির্দেশনার মধ্যে পুজিবাজারে বহুজাতিক কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তি এবং নেতৃত্বস্থানীয় দেশীয় ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিষয়েরও উল্লেখ ছিল। এছাড়া উক্ত নির্দেশনায় পুঁজিবাজারের প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য বিদেশী পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে উল্লেখ ছিল। এছাড়াও নির্দেশনায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের ব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে উল্লেখ ছিল। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে, পুঁজিবাজারকে আগামীর অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ভূমিকা পালনে সরকারের নীতি সহায়তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
রাশেদ মাকসুদ বলেন, সরকার পুঁজিবাজারের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এর উন্নয়নের জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যকার করপোরেট করহারের ব্যবধান ৫% হতে ৭.৫%-এ বৃদ্ধি করেছে যার ফলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি করপোরেট করহারে ছাড় পাবেন। এটি দেশী বিদেশী লাভজনক ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহী করবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আরেকটি ইতিবাচক খবর রয়েছে। পুঁজিবাজারে কর্মরত ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনের ওপর ধার্য কর ০.০৫% হতে ০.০৩%-এ হ্রাস করা হয়েছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট এবং লেনদেনের স্বল্প ভলিউম পরিলক্ষিত হচ্ছে; এই কর ছাড়ের ফলে আগামীতে পুঁজিবাজারের লেনদেনের বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে বলে আশা করা যায়।
এছাড়াও পুঁজিবাজারে কর্মরত মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করহার ১০ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে। পূর্বে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ৩৭.৫% হারে কর দিতে হতো। এখন যা ২৭.৫% করা হচ্ছে। এর ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজার উন্নয়নে কাজ করতে উৎসাহ পাবে। পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন মার্চেন্ট ব্যাংক। পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানোয় মার্চেন্ট ব্যাংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে অন্তর্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই সরকারের উদ্যোগের ফলে গত বছরের ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার বিক্রি থেকে অর্জিত মূলধনী মুনাফা (ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স) এর উপর করের হার কমানো হয়েছিল। এসময় অর্জিত মূলধনী মুনাফার উপর সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে অর্ধেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। উপরোক্ত পদক্ষেপসমূহ থেকে স্পষ্ট হয় যে, সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নের বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক ও আন্তরিক।
এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের কল্যাণ ও সুরক্ষার্থে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকউন্টের উপর ধার্যকৃত বার্ষিক মেইনটেন্যান্স ফি ৪৫০ টাকা থেকে প্রায় ৭০% হ্রাস করে ১৫০ টাকা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং সমন্বিত গ্রাহক হিসাব হতে অর্জিত সুদের ২৫% ইনেভেস্টর প্রটেকশন ফান্ডে জমারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সরাসরি উপকৃত হবেন।
বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবি বিবেচনায় এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্জিত ডিভিডেন্ডের উপর ট্যাক্স মওকুফ করা এবং এক লক্ষ টাকার উর্ধ্বে অর্জিত ডিভিডেন্ডের উপর ১৫ শতাংশ ট্যাক্স নির্ধারণ করে উহাকে চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য করার বিষয়টি বাজেটে পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
অর্থসংবাদ/কাফি
পুঁজিবাজার
বিএসইসির যুগ্মপরিচালক হলেন রাজউক পরিচালক মনির হোসেন

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) যুগ্মপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার। তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পরিচালকের (উপসচিব) দায়িত্ব পালন করছেন।
রবিবার (০১ জুন) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়, তিনি আগামী ১৮ জুনের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় আগামী ১৮ জুন অপরাহ্ণ হতে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হবেন ( স্ট্যান্ড রিলিজ)। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এসএম
পুঁজিবাজার
এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এশিয়া ইন্স্যুরেন্স পিএলসি পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২১ জুন দুপুর ২টা ৪৫মিনিটে কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সভায় ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। সভায় বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এছাড়াও, একই সভায় ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মাচ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এসএম
পুঁজিবাজার
মিডল্যান্ড ব্যাংকের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৪ কোম্পানির মধ্যে ২৩৯টি কোম্পানির শেয়ার কমেছে। এদিন দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, মঙ্গলবার (৩ জুন) কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা বা ৯ দশমিক ০৫ শতাংশ কমেছে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে। আর তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর কমেছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- উত্তরা ফাইন্যান্স, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, কেডিএস এক্সেসরিজ, জিলবাংলা সুগার মিলস, শাশা ডেনিমস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ভিএফএস থ্রেড ডায়িং লিমিটেড।
এসএম