জাতীয়
সরকার উৎখাত করতে বিএনপি বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়েছিল: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের জয়লাভের পর ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপি বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে আওয়ামী লীগই বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়েছিল। তার এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে ড. হাছান মাহমুদ উল্লিখিত অভিযোগ করেন।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আগরতলা প্রেসক্লাব প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রিজভী সাহেবের এই বক্তব্য টেলিভিশনে শুনেছি, অনলাইনে দেখেছি। এই বক্তব্য আমার কাছে ‘পাগলের প্রলাপ’ মনে হয়েছে।
তিনি বলেন, বিপুল রায় নিয়ে ২০০৮ সালের ৬ জানুয়ারি আমরা (আওয়ামী লীগ) সরকার গঠন করি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৩ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে। বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০টি আসন। এরকম বিপুল রায় পেয়ে সরকার গঠন করার পর এমন জঘন্য ঘটনা কেন ঘটাবে সরকার?
হাছান মাহমুদ বলেন, সেদিন আওয়ামী পরিবারের সদস্যরাই বেশি নিহত হয়েছিলেন। এমনকি তৎকালীন আইজিপির জামাতাও নিহত হন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুপুরের আগে ঘুম থেকে জাগেন না। কিন্তু, সেদিন খালেদা জিয়া কোন কারণে সকালেই ঘুম থেকে উঠে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হলেন? তার গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল। এতে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিএনপি যে সরাসরি যুক্ত, সেটিই প্রমাণিত। অতএব, রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য পাগলের প্রলাপ।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তাদের দুর্নীতি-লুটপাটের কারণে পরপর চারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দুর্নীতির মামলায় সাক্ষ্য দিতে এফবিআই বাংলাদেশে এসেছিল। বিএনপি নেতা মঈন খান হয়ত এসব কথা ভুলে গেছেন।
মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সফল হয়েছে, উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি তাদের সঙ্গে দেখা করেছে সেগুলো নিয়ে আমরা মাথা ঘামাতে চাই না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক যাতে নতুন উচ্চতায় নেওয়া যায়, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আগরতলা প্রেসক্লাবের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন—জয়ন্ত ভট্টাচার্য, সৈয়দ সাজ্জাদ আলী, রমাকান্ত দে, কামাল চৌধুরী, রঞ্জন রায়, অভিষেক দে, সুরজিৎ পাল, মনিষ লোদ, অভিষেক দেববর্মা, প্রণব সরকার, সুপ্রভাত দেবনাথ, দেভাশিস মজুমদার এবং সুমন দেবরায়।
অর্থসংবাদ/এমআই

জাতীয়
পাসপোর্টে ভেরিফিকেশন বাতিলে ৩ মাসে বিস্ময়কর সাফল্য

পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ায় এর সুফল পাওয়া শুরু করেছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। এই সিদ্ধান্তের পর চলতি বছরে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ৯ লাখ ৩২ হাজার ৮৬টি পাসপোর্ট ইস্যু করেছে অধিদফতর। দেশে পাসপোর্টের ইতিহাসে এটি এক যুগান্তকারী সাফল্য।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভোগান্তি কিংবা দালালদের দৌরাত্ম্য কমায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছেন আবেদনকারীরা। পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার দিন (২১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৩৮টি পাসপোর্ট আটকে ছিল। কিন্তু পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ায় এসব আবেদনকারীর কাছে পৌঁছে গেছে।
পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, গত মার্চ মাসে ইস্যু করা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৩টি পাসপোর্ট, এপ্রিল মাসে ৩ লাখ ২২ হাজার ১৩০টি এবং মে মাসে ইস্যু করা হয়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪২৪টি।
অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নূরুল আনোয়ার বলেন, ভেরিফিকেশনের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়ার পর এখন আবেদন করার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছেন প্রত্যাশীরা। মাঝখানে তাদের যে সময় লাগতো, সেটি আর লাগছে না।
পাসপোর্ট অধিদফতরে সম্প্রতি সরেজমিন গেলে কথা হয় অনেক সেবা প্রত্যাশীর সঙ্গে। পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের বিষয়ে তারা বলছেন, যেহেতু একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। সেখানে আবার যাচাই-বাছাইয়ের কারণে ভোগান্তির শিকার হতে হতো। অনেক সময় পুলিশ টাকাও দাবি করতো। টাকা না দিলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা তাদের রিপোর্টও দিতো না। এতে পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা নির্ধারিত সময়ের পাসপোর্ট পেতো না। এখন আর কোনও ঝামেলা নেই। আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য দালালদের কাছেও যেতেন অনেকে। দালালকেও টাকা দিতে হতো। এখন দালাল ছাড়াই সরকারের নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে সবাই পাসপোর্ট করতে পারছেন।
পাসপোর্ট প্রত্যাশী একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কোনো ঝামেলা বা দালাল ছাড়াই ১০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেলাম। এটি সত্যিই স্বপ্নের মতো।
কীভাবে এত দ্রুত পাসপোর্ট পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার সময় লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। আর বাদবাকি সব অটো হয়ে গেছে। একজন গ্রাহক হিসেবে আমি তো ১০-১৫ মিনিট লাইনে দাঁড়াতেই পারি। আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি।
কলামিস্ট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. কুদরাত-ই খুদা বলেন, পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ায় নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফলে যথাসময়ে গ্রাহকের পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে বিলম্ব হতো। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক পাসপোর্ট অফিসকে দোষারোপ করত। কিন্তু এখন পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিসের আওতায় যে কোনো প্রয়োজনে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন পাসপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
পাসপোর্ট নিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী গোলাম তৌসিফ স্বাক্ষরিত পরিপত্র জারি করা হয়। এতে বলা হয়, পুলিশ ভেরিফিকেশন নয়, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের (এনআইডি) ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেবে সরকার।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়া হবে। পাসপোর্ট পুনঃ ইস্যুর ক্ষেত্রে বিদ্যমান পাসপোর্টের সঙ্গে মৌলিক তথ্যের পরিবর্তন হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে। পাসপোর্ট আবেদনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডেটাবেজ বা জন্মনিবন্ধন ডেটাবেজের সঙ্গে যাচাই করা হলে তা বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩ এর ৫ (২) ধারার উদ্দেশে পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষ হয়েছে বলে গণ্য হবে।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৫’ এর উদ্বোধনী বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এখন থেকে পাসপোর্ট পেতে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। পাসপোর্ট আমাদের নাগরিক অধিকার। জন্মসনদ ও এনআইডির মতো পাসপোর্টও এই দেশের নাগরিকদের একটি পরিচয়পত্র। জন্মসনদ ও এনআইডির জন্য আমাদের যেমন পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগেনি, তেমনি পাসপোর্টের জন্যও লাগবে না। এই দেশের নাগরিক হিসেবেই আমরা তা পাবো।’
পরে সরকারের এ সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন আগামীকাল

চারদিনের সফরে আগামীকাল সোমবার (৯ জুন) যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করা হবে তাকে। এছাড়াও দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ার লক্ষ্যে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।
সফরসঙ্গী হিসেবে তার সঙ্গে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
গত বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম বলেন, আসন্ন সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে যে টাকা পাচার করা হয়েছে সেগুলো উদ্ধারের বিষয়েও আলোচনা হবে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বুধবার এক ব্রিফিংয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টা ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।’
এই সফরে অধ্যাপক ইউনুস ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গেও তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। এর বাইরেও বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।
লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তার যে কর্মসূচি উল্লেখ করেছেন, সে অনুযায়ী এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।’
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের গভীরতা রয়েছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দেশটির বৃহত্তম প্রবাসী জনগণের আবাসস্থল।
এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের বিষয়েও উদ্যোগী হবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি জানান, যুক্তরাজ্য সফরের সময় পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সফরে রাজা তৃতীয় চার্লস অধ্যাপক ইউনুসকে সম্মানজনক ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পুরস্কারে ভূষিত করবেন, যা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন এবং সহযোগিতার প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করবে।
জাতীয়
ঈদের ফিরতি যাত্রায় সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ট্রেনের ফিরতি যাত্রায় যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সমাগমপূর্ণ এলাকায় সকলকে মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিশেষত বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ধরনের স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঈদ পরবর্তী (ঈদুল আজহার ফিরতি যাত্রা) ট্রেন যাত্রায় সব যাত্রীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য এবং মাস্ক পরিধান করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়। এরপর থেকে দেশে কয়েক দফায় সংক্রমণ বেড়েছে এবং জনস্বাস্থ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সরকারিভাবে মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, এবং জনসমাগম এড়ানোসহ স্বাস্থ্যবিধি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সময়ের সাথে সাথে সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় এসব বিধিনিষেধ অনেকাংশে শিথিল করা হয়।
সম্প্রতি দেশে আবারও কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা গেছে। এরপরই আবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।
জাতীয়
চামড়া পাচার-পুশ ইন ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি

সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি কোরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার (৭ জুন) বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.শরীফুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি কোরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। এছাড়া সীমান্ত দিয়ে ‘পুশ ইন’ প্রতিরোধেও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের দিনেও বিজিবি সদস্যরা ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা জোরদার করে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছে বলে জানানো হয়।
জাতীয়
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি

ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পশু কোরবানি চলছে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ঈদের দিন ও পরবর্তী দুই দিন অর্থাৎ ১২ জিলহজ পর্যন্ত কোরবানি করার সুযোগ রয়েছে।
ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী সুযোগ থাকায় এবং ঈদের দিন কসাই না পাওয়ায় অনেকেই আজ কোরবানি দিচ্ছেন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঈদের দিনের কোরবানির পশুর বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে।
রাজধানীর বাসিন্দারা কোরবানি অব্যাহত রাখলে সোমবার (৯ জুন) পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য অপসারণের কাজ করবেন। এতে রাজধানীর বাসিন্দারা তাদের সুবিধামতো সময়ে কোরবানি দিতে পারছেন।
রোববার (৮ জুন) সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার অল্প পর থেকেই কোরবানির প্রস্তুতি নেন অনেকে। ঈদের আগেই পশু কিনে রেখে আজ তারা কোরবানি দিচ্ছেন।
রামপুরার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, ঢাকার বেশিরভাগ মানুষ ঈদের দিন কোরবানি দেন। এতে কসাইদের অনেক ব্যস্ততা থাকে। দেখা দেয় কসাই সংকট। তাই আমরা আগে থেকেই ঠিক করেছি দ্বিতীয় দিনে কোরবানি করবো।
তিনি বলেন, আজ খুব নিরিবিলি পরিবেশে কোরবানি দিতে পারছি। ফজরের নামাজের পরে হুজুর এসে গরু জবাই দিয়ে গেছেন। কসাইরা মাংস বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আশা করছি সকল ১০টার মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারবো।
মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, ঈদের দিন কোরবানি দিলে যা হবে ঈদের পরের দিন কোরবানি দিলেও তাই হবে। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী তিনদিন কোরবানি দেওয়া যায়। আর কোরবানি দেওয়া প্রধান উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই কোরবানি দিচ্ছি, এখন কবুল করার মালিক তিনি নিজেই।
রামপুরার আর এক বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছা ছিল ঈদের দিনই গরু কোরবানি দেবো। কিন্তু কসাই না পাওয়ায় আজ কোরবানি দিচ্ছি। শুধু আমরা না, অনেকেই কসাই সংকটে আজ কোরবানি দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ঈদের দিন কোরবানি দিতে পারিনি, তা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। তবে অন্যদের কোরবানি দেওয়া দেখে বাচ্চাদের মন একটু খারাপ হয়েছিল। এখন ওরা আবার হাসি খুশি। বাচ্চাদের খুশিই তো আমাদের খুশি। আর কোরবানি দেওয়া হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। কার দোয়া, কার কোরবানি কবুল হবে আল্লাহ ছাড়া কেউ কেউ জানে না।
খিলগাঁওয়ে বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, ঈদের দিন এবং পরের দুদিন পশু কোরবানি দেওয়া যায়। কোরবানি দেওয়া জন্য এই তিনদিনই সমান। কোনদিন সওয়াব বেশি কম হওয়ায় সুযোগ নেই। গতকাল যারা কোরবানি দিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য ছিলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, আজ আমরা যারা কোরবানি দিচ্ছি তাদের উদ্দেশ্যও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
তিনি বলেন, কোরবানির মাংস তিনভাগ করতে হয়। আমরা ধর্মীয় বিধান মেনে মাংস তিনভাগ করে, যার যা অংশ বুঝিয়ে দেবো। এখন কবুল করার মালিক আল্লাহ।
মো. হাসান আরও বলেন, আমাদের গরুর মাংস বানানোর কাজ যে কসাই করছে, গত বছরও এই কসাই দিয়ে কাজ করিয়েছিলাম। এদের কাজ ভালো। গতকাল ওরা অনেক ব্যস্ততা ছিলেন। বিকেলে আমাদের কাজ করতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি বিকেলে না করে আজ করতে। আল্লাহর রহমতে এখন নিরিবিলি পরিবেশে কোরবানি দিতে পারছি।
এদিকে, ঈদের দিনের কোরবানির বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। আজ ও আগামীকাল সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণ কাজ চলমান থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে, ঈদের দিন ৭৫টি ওয়ার্ডে এক লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি পশু কোরবানি করা হয়। কোরবানি শেষ করার পর নাগরিক পর্যায় থেকে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করে প্রতিটি ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে স্থানান্তর করা হয়।
পরবর্তীতে ডাম ট্রাকের মাধ্যমে মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে চূড়ান্তভাবে ডাম্প করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩০ হাজার টন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রায় ১২ হাজার টন বর্জ্য মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে ডাম্পিং করা হয়েছে।
কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ হাজারের অধিক জনবল মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছে। ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ৪৪টি কম্পেক্টর, ৩৯টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার, ১৬টি পে-লোডারসহ বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট ২০৭৯টি যানবাহন নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়া নগরবাসীর মধ্যে প্রায় ৪৫ টন ব্লিচিং পাউডার, ৫ লিটার ধারণক্ষমতার ২০৭টি স্যাভলনের গ্যালন এবং এক লাখ ৪০ হাজার বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে জানান, উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ৭ হাজার ৮০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে ডাম্পিং করা হয়েছে। যা কোরবানি উপলক্ষে উৎপন্ন হওয়া বর্জ্যের ৮৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, আগামী দুইদিনও বর্জ্য অপসারণের কাজ চলমান থাকবে। ঢাকাবাসী তাদের সুবিধা মতো সময়ে কোরবানি দেবেন। সকাল, বিকেল, রাত সব সময় আমাদের পরিষ্কার কার্যক্রম চলবে।
সন্ধ্যার মধ্যে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ৮৫ শতাংশ বর্জ্য অপসারণের কথা জানালেও পর রাতে জানানো হয়, রাত সাড়ে নয়টার মধ্যে সব বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।