চিত্র-বিচিত্র
বিশ্বের দ্রুততম ১০ ট্রেন ও গতির পরিমাণ
![বিশ্বের দ্রুততম ১০ ট্রেন ও গতির পরিমাণ বার্জার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/02/বিশ্বের-দ্রুততম-১০-ট্রেন.jpg)
আধুনিক যাতায়াত ব্যবস্থায় দ্রুত গতির ট্রেনগুলো প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সাধারণত যেসব ট্রেন ঘণ্টায় কমপক্ষে ২০০ কিলোমিটার গতিতে চলে সেগুলোকে দ্রুতগতির ট্রেন বলা হয়। ১৯৬৪ সালে জাপানে প্রথম দ্রুত গতির রেল ব্যবস্থা চালু হয়, যা বুলেট ট্রেন নামে পরিচিত। তারপর থেকে অনেক দেশ দ্রুত গতির ট্রেন তৈরি করেছে।
এই র্যাঙ্কিংটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম, সর্বোচ্চ রেকর্ড গতি, সাধারণ দিনে চলাচলের সময় সর্বাধিক গতি ও যুগান্তকারী প্রযুক্তির বিষয় সহ বেশ কয়েকটি মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। খবর র্যাংকরেড, সিএনএন।
চলুন দেখে নেওয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম ১০টি ট্রেন সম্পর্কে।
১. এলজিরো সিরিজ শিনকানসেন
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৬০৩ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বোচ্চ গতি: ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটার
জাপানের এলজিরো সিরিজের দ্রুত গতির ম্যাগলেভ ট্রেনটি বর্তমানে উন্নয়ন ও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। সেন্ট্রাল জাপান রেলওয়ে কোম্পানি ও রেলওয়ে টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি এই ট্রেনে চৌম্বকীয় লেভিটেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
২. টিজিভি পিওএস
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৫৭৫ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার
ফ্রান্সের টিজিভি পিওএস (ট্রেন আ গ্রান্দে ভিতেসে পেন্দুলেয়ার) ট্রেনটিতে যত দ্রুত গতিতে মোড় নেয়, তখনো ভেতরে যাত্রীরা আরামে বসে থাকতে পারেন। এর কারণ, ট্রেনটি মোড় ঘোরানোর সময় পেন্ডুলামের মতো কাঁত হয়ে যায়। এ জন্যই এই ফরাসি ট্রেনের নামে পেন্ডুলামের উল্লেখ রয়েছে।
ট্রেনটি দীর্ঘ সময় ধরে দ্রুত গতিতে চলতে পারে। এ কারণে এটা দূরপাল্লার ভ্রমণের জন্য বিশেষ উপযোগী।
৩. টিজিভি আটলান্টিক
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৫১৫ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার
ফ্রান্সের জাতীয় রেল কোম্পানি চালিত টিজিভি আটলান্টিকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ১৯৯০ সালে। এটি তখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন হিসেবে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল।
৪. সাংহাই ম্যাগলেভ
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৫০১ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৪৩১ কিলোমিটার
জার্মানির কারিগরি সহায়তায় নির্মিত চীনের সাংহাই ম্যাগলেভ বিশ্বের দ্রুততম বাণিজ্যিক ইলেকট্রিক ট্রেন।
এই রেল প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে ১৩০ কোটি ডলার খরচ হয়। তবে এই ট্রেন পরিচালনার খরচ অনেক বেশি। সে অনুযায়ী যাত্রী সংখ্যা কম থাকার সাংহাই ম্যাগলেভ প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
৫. সিআরএইচ৩৮০বি/বিএল হেক্সি
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৪৮৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩৮০ কিলোমিটার
২০১১ থেকে চায়না রেলওয়ে কর্পোরেশন চালিত চীনের আরেকটি দ্রুত গতির ট্রেন সিআরএইচ৩৮০বি/বিএল হেক্সি। ট্রেনটির অ্যারোডাইনামিক আকৃতি এবং বর্ধিত ট্র্যাকশন শক্তি এর কার্যক্ষমতাকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
৬. সিআরএইচ৩৮০এ হেক্সি
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৪৮৬ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার
দ্রুত গতির ট্রেনের জগতে চীনের প্রভাব লক্ষণীয়। সিআরএইচ৩৮০বি/বিএল হেক্সির পরই রয়েছে এর আগের বছর থেকে চালু হওয়া ট্রেন সিআরএইচ৩৮০এ হেক্সি।
পরবর্তীতে ট্রেনটিকে আবারো বিদেশী ডিজাইনের ভিত্তিতে ঢেলে সাজানো হয়।
৭. সিআরএইচ৩৮০ডি
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৪৮৩ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার
সিআরএইচ৩৮০ডি চীনের সিআরএইচ৩৮০ সিরিজের সিরিজের একটি উন্নত সংস্করণ। এই ট্রেনটিও জায়গা করে নিয়েছে সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেনের তালিকায়।
৮. ফুকসিং সিআর৪০০এএফ/বিএফ
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৪২০ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার
২০১৬ সাল থেকে চায়না রেলওয়ে কর্পোরেশন ফুকসিং সিরিজের এএফ ও বিএফ নামে দুই ধরনের ট্রেন পরিচালনা করছে। দ্রুততম, কিন্তু ম্যাগলেভ নয় এমন ট্রেনের মধ্যে এগুলো অন্যতম।
৯. এভিই ক্লাস ১০৩
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৪০৪ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩১০ কিলোমিটার
স্পেনের রেনফে-অপারেডোরা ২০০৬ সাল থেকে এভিই ক্লাস ১০৩ ট্রেনটি পরিচালনা করে আসছে। এভিই’র পূর্ণরূপ ‘আল্টা ভেলোসিদাদ এস্পাওলা’, যার মানে ‘স্প্যানিশ দ্রুত গতি’ এবং এর সংক্ষিপ্ত রূপ এভই’র অর্থ ‘পাখি’। এভিই রেল সিস্টেম ইউরোপের দীর্ঘতম দ্রুত গতির রেল নেটওয়ার্ক। এটি ৩ হাজার ৯৬৬ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে, যা চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম।
১০. সিআরএইচ৩সি
রেকর্ড গতি: ঘণ্টায় ৩৯৪ কিলোমিটার
দৈনন্দিন চলার সময় সর্বাধিক গতি: ঘণ্টায় ৩১০ কিলোমিটার
দ্রুততম ট্রেনের তালিকা জুড়ে চীনের আধিপত্য বেশ স্পষ্ট। এরইমধ্যে এখানে আবার জায়গা করে নিয়েছে দেশটির সিআরএইচ৩সি মডেলের দ্রুত গতির আরেকটি ট্রেন। ২০০৮ থেকে চলমান ট্রেনটি বিশ্বের দ্রুততম বাণিজ্যিক ট্রেনগুলোর মধ্যে একটি।
২০২২ সালের শেষ নাগাদ চীনে ৪২ হাজার কিলোমিটারের দ্রুত গতির রেল নেটওয়ার্ক ছিল। যা বিশ্বের মোট নেটওয়ার্কের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি। দ্রুতগামী ট্রেনের এই প্রতিযোগিতায় চীন তার সকল প্রতিযোগীকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে এই তালিকায় ক্রমাগত নতুন নতুন ট্রেনের নাম যোগ করে যাচ্ছে চীন।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
![](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/02/Logo_OS_250_72.webp)
চিত্র-বিচিত্র
অলিম্পিকের স্বর্ণপদকের দাম কত টাকা?
![অলিম্পিকের স্বর্ণপদকের দাম কত টাকা? বার্জার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/07/olympic-gold-medal1.jpg)
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অলিম্পিকের আসর। শত-সহস্র দিনের পরিশ্রম, কষ্ট এবং নানান ত্যাগ-তিতিক্ষার পর ক্রীড়াবিদদের হাতে আসে অলিম্পিকের সোনার পদক। সাফল্যমণ্ডিত এ পদকের মান কখনোই দাম দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। তবুও জনমনে প্রশ্ন জাগে, অলিম্পিকের স্বর্ণপদকের দাম কত? অলিম্পিকের সোনার পদক কি পুরোটাই খাঁটি সোনার? এর ওজন কত?
নিউইয়র্ক টাইমস ২০২২ সালে একটা প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) বরাতে অবশ্য যা লিখেছিল, তাতে নিতান্তই বৈষয়িক ব্যক্তির বেশ হতাশ হওয়ারই কথা। আইওসি জানিয়েছিল অলিম্পিকের সোনার পদকে সোনার পরিমাণ আসলে মাত্র ৬ গ্রাম। পদকের ওজন ৫৫৬ গ্রাম। এর বেশির ভাগই রুপা—৯২.৫ শতাংশই! এই সোনার পদকের দাম ৮০০ ডলার। ২০২১ সালে টোকিওতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ অলিম্পিকের আসরে একটি সোনার পদকের আর্থিক মূল্য এমনই ছিল। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৪ হাজার টাকার একটু বেশি।
রুপার পদকে অবশ্য পুরোটাই খাঁটি রুপা থাকে। এর ওজন ৫৫০ গ্রাম। দাম ৪৫০ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫৩ হাজার টাকা। ব্রোঞ্জপদকের দাম অবশ্য বাংলাদেশি মুদ্রায় বলতে গেলে নামমাত্রই। এতে ৯৫ শতাংশ তামা এবং ৫ শতাংশ দস্তা থাকে। দাম মাত্র ৫ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫৮৭ টাকা।
আগেই বলা হয়েছে অলিম্পিক সোনার পদকের সঙ্গে বিজয়ীর আবেগ জড়িয়ে থাকে। এর ঐতিহাসিক মূল্যও আছে। ২০২২ সালে ১৮৯৬ অলিম্পিকের একটি সোনার পদক নিলামে বিক্রি হয়েছিল। সেটির দাম উঠেছিল ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যেটি ২১ কোটি ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। আর্থিক প্রয়োজনে বা যেকোনো দাতব্য কাজে অলিম্পিকের সোনা জেতা অ্যাথলেটরা নিজেদের পদক বিক্রি করে থাকেন। ১৯৩৬ বার্লিন অলিম্পিকে অ্যাথলেটিকসে চারটি সোনার পদক জেতা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাথলেট জেসে ওয়েনের একটি সোনার পদক ২০১৩ সালে নিলামে উঠেছিল। সেটির দাম উঠেছিল ১৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকারও বেশি।
একটা সময় পর্যন্ত অলিম্পিকে কিন্তু সোনার পদকে কোনো খাদ থাকত না। ১৯১২ সালের স্টকহোম অলিম্পিক পর্যন্ত সোনার পদক হতো পুরোটাই সোনা দিয়ে তৈরি। মাঝখানে একবার ১৯০৪ সালের সেন্ট লুইস অলিম্পিকে বিজয়ীদের সোনার তৈরি ছোট্ট একটি ট্রফি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খাঁটি সোনার বিষয়টি দিনে দিনে খরচান্ত হয়ে ওঠায় আইওসি সেই পথ থেকে সরে আসে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে এই কিয়ার স্টারমার?
![যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে এই কিয়ার স্টারমার? বার্জার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/07/keir-starmer1.jpg)
যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে বুথ ফেরত জরিপে এমন আভাসই পাওয়া গেছে। খবর বিবিসির। ভোটে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ভরাডুবির তথ্য সামনে আসছে। আর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পথে রয়েছে দেশটির বিরোধী দল লেবার পার্টি।
ভোটের চূড়ান্ত ফল একই হলে যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরবে কনজারভেটিভ পার্টি। বিদায় নেবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এদিকে ভোটের মাঠে লেবার পার্টির এমন সাড়া জাগানো সাফল্যের নায়ক স্যার কিয়ার স্টারমার। ধারণা করা হচ্ছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে লেবার পার্টি সরকার গড়লে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি।
স্টারমারের জন্ম রাজধানী লন্ডনে। ৬১ বছর বয়সী এই ব্যক্তি রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন একজন মানবাধিকার আইনজীবী। তিনি পাবলিক প্রসিকিউশনের ডিরেক্টর এবং ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যার অর্থ স্টারমার ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের সবচেয়ে সিনিয়র প্রসিকিউটর সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন। ২০১৪ সালে তাকে নাইট উপাধি দেওয়া হয়েছিল।
আইনজীবী হিসেবে বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের পর স্টারমার রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সাংসদ হন পঞ্চাশের কোঠায় এসে। তবে রাজনীতি নিয়ে তার বরাবরই আগ্রহ ছিল। যুবা অবস্থায় তিনি ছিলেন উগ্র বামপন্থী।
পরিবারের চার সন্তানের মধ্যে স্টারমার বেড়ে ওঠেন দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের সারে-তে। তাকে শ্রমজীবী শ্রেণির সঙ্গে জীবনের যোগের কথা প্রায়শই বলতে শোনা যায়। তার বাবা একটা কারখানার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক হিসাবে কাজ করতেন এবং মা ছিলেন নার্স।
স্টারমারের পরিবারও কট্টর লেবার পার্টির সমর্থক ছিল। যার প্রতিফলন পাওয়া যায় তার নামে। স্কটিশ খনি শ্রমিক কিয়ের হার্ডির নাম অনুসারে তার নাম রাখা হয়েছিল। তিনি লেবার পার্টির প্রথম নেতা ছিলেন।
বড় হয়ে ওঠার সময় স্টারমারের পারিবারিক জীবন খুব সুখকর ছিল না। দূরত্ব রেখে চলতেন তার বাবা। মা জীবনের দীর্ঘকাল ‘স্টিল’স ডিজিজ’ নামক এক ধরনের অটো-ইমিউন ডিজিজে ভুগেছেন। রোগের কারণে ধীরে ধীরে হাঁটার এবং কথা বলার ক্ষমতা হারান তার মা। একসময় তার পা কেটে বাদ দিতে হয়েছিল।
১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির স্থানীয় যুব শাখায় যোগ দেন স্টারমার। কিছু সময়ের জন্য তিনি উগ্র বামপন্থী একটি পত্রিকার সম্পাদনাও করেছিলেন।
স্টারমার পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি শিক্ষা লাভ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছেন। লিডস ও অক্সফোর্ডে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। ব্যারিস্টার হিসাবে মানবাধিকার নিয়ে কাজও করেছেন। সেই সময় ক্যারিবিয়ান ও আফ্রিকার দেশগুলিতে মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির জন্য তিনি কাজ করেন।
স্টারমার প্রথমবার সংসদে যান ২০১৫ সালে। লন্ডনের হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসের সাংসদ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। কট্টর বাম রাজনীতিবিদ জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে লেবার পার্টি তখন বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে। অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সরকারের কার্যকলাপ নজরে রাখার জন্য স্টারমারকে ‘শ্যাডো হোম সেক্রেটারি’ (ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল।
যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার পরে স্টারমারকে ‘শ্যাডো ব্রেক্সিট মন্ত্রী’ হিসাবে নিয়োগ করা হয়। ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর লেবার পার্টির নেতা হওয়ার সুযোগ পান তিনি।
১৯৩৫ সালের পর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে হেরেছিল লেবার পার্টি। যা জেরেমি করবিনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল। সমর্থকদের চোখে স্টারমার একজন বাস্তববাদী মানুষ। যদিও বহু সমালোচকদের মতে, তিনি খুব একটা চৌকস নন। বরং তিনি অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়া একজন রাজনীতিক।
এদিকে গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানকে সমর্থন করেছিলেন স্টারমার। তার এই সিদ্ধান্ত অনেক ফিলিস্তিনপন্থী ভোটারদের ক্ষুব্ধ করেছিল। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো লেবার পার্টির বহু সাংসদের বিদ্রোহের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাকে।
তবে গাজা ইস্যুতে সম্প্রতি স্টারমারকে সুর বদলাতে দেখা যায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ডাক দিয়েছিলেন “এমন যুদ্ধবিরতির যা স্থায়ী হবে”। জোর দিয়ে বলেছিলেন, “এখন এটাই হওয়া উচিত!”
গত মার্চে ‘ইউগভ’-এর এক জনমত জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের ৫২ শতাংশ মানুষ মনে করেন ইসরায়েল-গাজার বিষয়টা সঠিকভাবে পরিচালনা করছেন না স্টারমার।
এদিকে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম দ্য সান আয়োজিত এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে কনজারভেটিভ সরকারের রুয়ান্ডা অভিবাসী প্রত্যাবাসন প্রকল্পের সমালোচনা করতে গিয়ে স্টারমার বলেন, “বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে যেসব মানুষ আসছেন, তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে না।”
স্টারমারের এমন মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়ে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি সম্প্রদায়। এক্ষেত্রে প্রতিবাদও জানানো হয়।
তুমুল সমালোচনার জেরে সুর নরম করেন স্টারমার বলেন, “আমি আসলে বাংলাদেশকে আলাদাভাবে বোঝাতে চাইনি। আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও আমাদের দেশের প্রতি বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানকে আমি ব্যাপকভাবে মূল্যায়ন করি।”
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
রাসেলস ভাইপার নিয়ে ভয়-উদ্বেগের কী কোন কারণ আছে?
![রাসেলস ভাইপার নিয়ে ভয়-উদ্বেগের কী কোন কারণ আছে? বার্জার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/Russells-Viper1.jpg)
বাংলাদেশের বেশ কিছু জেলায় রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানাভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। অনেকে প্রচার করছেন যে সাপটি কামড় দিলে দ্রুত মানুষের মৃত্যু হয়।
পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে রাসেল’স ভাইপার সাপ মেরে ফেরার প্রচারণাও চালানো হচ্ছে ফেসবুকে। এমন অবস্থায় ফরিদপুরের একজন রাজনীতিবিদ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে রাসেল’স ভাইপার সাপ মারতে পারলে প্রতিটির জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।
অনেকে বলছেন, রাসেল’স ভাইপার খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করে। ফলে সহসা বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এই সাপের আধিক্য মানুষের জন্য হুমকি তৈরি করবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, রাসেলস ভাইপার নিয়ে যে মাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে তা কতটা যৌক্তিক? সাপ গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ প্রজাতির সাপ কামড়ালে তারও চিকিৎসা আছে এবং সময়মত চিকিৎসা নিতে পারলে মৃত্যু ঝুঁকি কমে আসে।
বেসরকারি সংস্থা ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন বলছে রাসেলস ভাইপার মোটেও দেশের সবচেয়ে বিষধর কিংবা প্রাণঘাতী সাপ নয়। বরং দেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ে যত লোক মারা যায় তার অর্ধেকই মারা যায় পাতি কেউটে সাপের কামড়ে। তবে সময়মত চিকিৎসা না নিলে রাসেলস ভাইপারের কামড়েও মৃত্যু হতে পারে।
আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেছেন দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম (সাপ কামড়ালে রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়) আছে এবং সব জায়গায় হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর বা বিষ নিষ্ক্রিয় করতে পারে এমন উপাদানকে অ্যান্টিভেনম বলা হয়। দ্রুত অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দিলে, অ্যান্টিভেনমের অ্যান্টিবডিগুলি বিষকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বেঁচে যায় ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি জেলা রাসেলস ভাইপারের কামড়ে কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকার কাছেই মানিকগঞ্জের কিছু এলাকায় গত তিন মাসে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে অন্তত পাঁচজন মারা গেছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এরপর ভোলাসহ আরও কয়েকটি জেলায় এ ধরণের সাপ ধরে মারার খবর এসেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসেবে ২০২৩ সালে চার লাখ সাপের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাড়ে সাত হাজার মানুষ মারা গেছে যাদের বেশিরভাগই কোবরা ও কেউটে প্রজাতি সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন।
তবে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে ঠিক কতো জন মারা গেছে তার সুনির্দিষ্ট হিসেব পাওয়া যায়নি।
রাসেলস ভাইপার নামের সাপের এই প্রজাতিটি বাংলাদেশ থেকে বহু বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু গত ১০-১২ বছর আগে থেকে আবারো এই সাপের কামড়ের ঘটনায় এগুলোকে আবার দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে একাধিক জেলায় সাপটি দেখা গেছে।
রাসেল’স ভাইপার মারার জন্য ফরিদপুরে যে ব্যক্তি পুরস্কার ঘোষণা করেছেন তার নাম শাহ্ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ। তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক।
মি. আরিফ বলেছেন, সেখানকার মানুষ ভয়ে ক্ষেতে নামছে না ধান কাটার জন্য। “ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়েছে । তাই আমাদের সভায় নেতাকর্মীদের বলেছি যাতে তারা সচেতন হয়। সাপ বিতাড়ন করতে বলেছি। আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা আলোচনা করবো এ নিয়ে কী করা যায়,” বলছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের অশোকা ফেলো বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মোঃ আবু সাইদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহসান সাপ বিষয়ে গবেষক ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে দীর্ঘকাল ধরে সুপরিচিত। তারা দুজন বাংলাদেশের সাপ ও সর্প দংশন প্রতিরোধ ও চিকিৎসা বইটির রচয়িতা।
তারা উভয়ই অবশ্য বলছেন যে রাসেলস ভাইপার নিয়ে যেভাবে আতঙ্কের কথা বলা হচ্ছে সেটি নিতান্তই ভয় থেকে এবং এটি অতিরঞ্জিত।
“অনেকে না জেনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সাপ দেখে সবাই ভয় পায় এবং এর কামড়ে মারা যায় এটাই মনে গেঁথে গেছে। চিকিৎসা নিলে যে ভালো হয় সেটা সবাই জানেনা বলেই আতঙ্ক হয়। খুব দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেই সমাধান অনেকটা এগিয়ে নেয়া যায়,” বলছিলেন অধ্যাপক ফরিদ আহসান।
গবেষক মোঃ আবু সাইদ বলছেন রাসেলস ভাইপার কামড় দিলেই রোগী মারা যায় এটিও সত্য নয়, বরং রোগী সহজে মারা যায় না। ন্যূনতম ৭২ ঘণ্টার আগে সহজে রোগী মারা যায় না। বাংলাদেশে এ সাপের কামড়ের পর ১৫ দিন পর্যন্ত বেঁচে ছিলো এমন তথ্যও আছে।
বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি ডাঃ মোঃ আবুল ফয়েজ সাপের দংশন ও এর চিকিৎসা নিয়ে বই লিখেছেন।
সেখানে তিনিও উল্লেখ করেছেন, গোখরো সাপের দংশনের গড় ৮ ঘণ্টা পর, কেউটে সাপের দংশনের গড় ১৮ ঘণ্টা পর ও চন্দ্রবোড়া সাপের দংশনের গড় ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন পর রোগীর মৃত্যু হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সময়সীমার মধ্যে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা জরুরি।
এই চন্দ্রবোড়া সাপটিই হলো রাসেলস ভাইপার। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায়, বিশেষ করে পদ্মা তীরবর্তী কয়েকটি জেলা ও চরাঞ্চলে এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন বলছে দেশের যে সব সাপের সাবকিউটেনাস মেডিয়ান লিথাল ডোজ জানা (বিষের মাত্রা) তাদের মধ্যে এটা সপ্তম (সামুদ্রিক সাপসহ)। তাই রাসেলস ভাইপার দেশের সবচেয়ে বিষধর বা সবচেয়ে প্রাণঘাতী সাপ নয় ।
মোঃ আবু সাইদ ২০১৯ সালে প্রকাশিত রাসেলস ভাইপার অফ বাংলাদেশ ইটস গ্রুমস অ্যান্ড থ্রেটস অন হিউম্যান বিয়িং শীর্ষক গবেষণার যৌথ গবেষকদের একজন।
তিনি জানান দেশের ২২-২৪ টির মতো জেলার কিছু স্থানে রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতি দেখা গেছে। যদিও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজেরে ভেনম রিসার্চ সেন্টারের হিসেবে এ সাপ আছে ২৭টির মতো জেলার কিছু কিছু জায়গায়।
তার মতে এটি কোবরা কিংবা কেউটের চেয়ে কম প্রাণঘাতী কিন্তু এই সাপের বিষে নানা ধরণের উপাদান বেশি। “ফলে চিকিৎসায় বিলম্ব হলে বহুমাত্রিক জটিলতা তৈরি করে শরীরে।
সেজন্য তখন আর অ্যান্টিভেনম দিয়ে কাজ হয় না। ক্রমান্বয়ে ফুসফুস, কিডনি আক্রান্ত হয়। এক পর্যায়ে অনেক রক্তক্ষরণ হয়, তখন আর রক্ত দিলে শরীরে তা থাকে না”।
অধ্যাপক ফরিদ আহসানের মতে রাসেলস ভাইপার কামড়ালে একশ মিনিটের মধ্যে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারলে ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যায়।
মি. সাইদ বলছেন কোবরা বা কেউটে কামড়ালে টেরও পাওয়া যায় না অনেক সময় কিন্তু রাসেল ভাইপার কামড় দিলে জায়গাটা সাথে সাথে ফুলে যায় এবং সাপটি সাথে সাথেই চলে যায় না।
“সেজন্য কামড় দেয়ার পর সাপটা দেখা যায় বলে রোগী বা অন্যরা নিশ্চিত হতে পারে। একজন চিকিৎসক দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে পারেন। সেটি হলে ঝুঁকিও কমে যায়। এ কারণেও এটি অন্য বিষধর সাপের চেয়ে কম আতঙ্কের,” বলছিলেন তিনি।
অবশ্য ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন বলছে বাংলাদেশে ব্যবহৃত পলিঅ্যান্টিভেনম দিয়ে রাসেলস ভাইপারের বিষের চিকিৎসা হয়।
তাই এন্টিভেনম নেই কথাটা সর্বৈব মিথ্যা। “তবে প্রশিক্ষিত ডাক্তার, অ্যান্টিভেনম সাপ্লাই এবং আইসিইউ এর স্বল্পতা আছে”।
জমি বা ক্ষেতে এই সাপ ছড়িয়ে পড়েছে বলে যে প্রচারণা চলছে সে বিষয়ে তিনি বলেন মানিকগঞ্জসহ কয়েকটি জায়গায় চরাঞ্চলে যেখানে আগে চর ছিলো সেখানে সব পরিষ্কার করে খামার বানানো হয়েছে।
“ফলে সাপের থাকা ও খাবার সংকট তৈরি হয়েছে। আবার কিছু এলাকায় জমিতে এখন একাধিক ফসল হওয়ায় শিয়াল, খাটাশ, বেজি, গুইসাপ আর নেই বললেই চলে”।
“ইকোসিস্টেমটাই নষ্ট হয়ে গেছে আবাস থেকে বিতাড়িত হয়ে তারা এখন কচুরি পানায় ভেসে পদ্মা মেঘনা যমুনায় ভেসে ছড়াচ্ছে। কিন্তু তারপরেও এ নিয়ে আতঙ্কের কোন কারণ ঘটেনি,” বলছিলেন তিনি।
তিনি বলেন মানুষ একটু সাবধান হলেই সাপের কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। রাসেলস ভাইপার তেড়ে এসে কামড়ায় বলে যে প্রচার চলছে সেটিও সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ফরিদ আহসান।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চেনার ৯ উপায়
![কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চেনার ৯ উপায় বার্জার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/05/cow-1.jpg)
কোরবানির ঈদে গত বছর প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। এ বছরে আসন্ন কোরবানি ঈদের জন্য প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ পশু প্রস্তুত আছে। সবাই চান সামর্থ্য অনুযায়ী মোটাতাজা একটি গরু কোরবানি দিতে। অনেক সময় গরু মোটা পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু ‘হৃষ্টপুষ্ট স্বাস্থ্যসম্মত’ গরু পাওয়া যায় না। কারণ, কৃত্রিমভাবে অনেক গরু মোটাতাজা করা হয়। বেশি মুনাফার আশায় স্টেরয়েড ব্যবহার করাসহ নানা উপায় অবলম্বন করে গরু দ্রুত মোটাতাজা করা হয়। সেসব গরুর মাংস স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
কোরবানির পশু সব ধরনের দোষত্রুটিমুক্ত নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর হওয়া চাই। উল্লেখ্য, গরু বা মহিষ বয়স ন্যূনতম দুই বছর হলে সেটি কোরবানির জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। এ ক্ষেত্রে গরুর দাঁত দেখে বয়স যাচাই করে নিতে হয়। গরুর মুখের নিচের পাটিতে যদি দুধদাঁতের পাশাপাশি সামনে কোদালের মতো অন্তত দুটি স্থায়ী দাঁত থাকে, তাহলে বুঝতে হবে গরুটি কোরবানির উপযুক্ত। উটের বয়স পাঁচ বছর; ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক বছরের হওয়া শর্ত।
কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা গরু চেনার ৯ উপায়
এক.
কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। একটু হাঁটলেই হাঁপায়, খুবই ক্লান্ত দেখায়। শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের সময় যদি শব্দ হয়, তাহলে এ ধরনের গরু না কেনাই ভালো।
দুই.
কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর গায়ে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ওই স্থানের মাংস দেবে যাবে এবং দেবে যাওয়া অংশ আবার স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে। এসব গরুর গা ‘পানি নামা’ রোগীর শরীরের মতো ফুলে থাকে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক উপায়ে বা স্বাভাবিকভাবে মোটা করা গবাদিপশুর ক্ষেত্রে দ্রুতই মাংস স্বাভাবিক হয়।
তিন.
কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর রানের মাংস স্বাভাবিক গরুর রানের মাংসের চেয়ে অনেক নরম থাকে। সুস্থ গরুর রানের মাংস শক্ত থাকবে।
চার.
কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর মুখে লালা বা ফেনা থাকে। যেসব গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকে, সে গরু কেনার চেষ্টা করুন। এগুলো কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা পশু নয়।
পাঁচ.
সুস্থ গরু একটু চটপটে থাকে। কিন্তু কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুকে খুব ক্লান্ত ও বিষণ্ন মনে হবে। এসব গরু শরীরে পানি জমার কারণে নড়াচড়া কম করে। এক জায়গায় বসে থাকে। এসব ক্ষেত্রে গরুকে বসা থেকে উঠিয়ে হাঁটিয়ে দেখতে হয়।
ছয়.
গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি নিজ থেকে জিহ্বা দিয়ে খাবার টেনে নিয়ে খেতে থাকে, তবে বোঝা যাবে গরুটি সুস্থ। যদি অসুস্থ হয়, তবে সে খাবার খেতে চায় না।
সাত.
গরুর শরীরে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) চেয়ে বেশি মনে হলে বুঝতে হবে গরুটি অসুস্থ।
আট.
সুস্থ গরুর নাকের ওপরের অংশ ভেজা বা বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকবে। অন্যদিকে অসুস্থ গরুর নাক থাকবে শুকনা।
নয়.
যেসব গরুর চেহারা স্বাভাবিক উষ্কখুষ্ক এবং চামড়ার ওপর দিয়ে হাড় বেরিয়ে থাকে। সেগুলো সুস্থ ও প্রাকৃতিকভাবে মোটা করা গরুর লক্ষণ। বেশি চকচক করা গরু বা ছাগলের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি থাকে।
হরমোন দিয়ে মোটাতাজা করা গরুর মাংস খেলে মানবদেহে এসব হরমোন মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। মানবদেহে প্রতিনিয়ত প্রকৃতিগতভাবে হরমোন তৈরি হচ্ছে। ক্ষতিকর হরমোন পরোক্ষভাবে শরীরে ঢুকলে এই হরমোনগুলো মানবশরীরে নানা রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
চিত্র-বিচিত্র
বাংলাদেশের নতুন পাওয়ারম্যান মোরছালিন আহম্মেদ
![বাংলাদেশের নতুন পাওয়ারম্যান মোরছালিন আহম্মেদ বার্জার](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/powerman1.jpg)
মালয়েশিয়ার পাওয়ারম্যান ইভেন্টে অসাধারণ প্রতিভার প্রদর্শন করেছেন বাংলাদেশের মোরছালিন আহম্মেদ। এই বিশাল ডুয়াথলন ইভেন্টে তিনি ২ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে সম্পন্ন করেছেন। মোরছালিন আহম্মেদ বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিভাবান অ্যাথলিট। তিনি এ পর্যন্ত ১৫টিরও বেশি জাতীয় ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন এবং এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করছেন।
মোরছালিন আহম্মেদের পাশাপাশি আরও চারজন বাংলাদেশি প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতা সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তারা হলেন- রোহমাত উল্লাহ আল জোনাইদ, জাহিদুল ইসলাম, কানিজ ফাতিমা ছন্দা এবং তারেক মোর্তুজা। এ বছরের ইভেন্টে ৪০টিরও বেশি দেশের ৪ হাজারের অধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছিলেন।
মোরছালিন আহম্মেদ বলেন, “বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা গর্বের ব্যাপার, আমি অত্যন্ত আনন্দিত পাওয়ারম্যান মালায়শিয়াতে অংশগ্রহন করতে পেরে। আয়রনম্যান শামসুজ্জামান আরাফাত আমার রোল মডেল, আমি আমার এ জয় তাকে উৎসর্গ করতে চাই। ভবিষ্যতে আমি এ রকম আরো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবো ইনশাআল্লাহ।”
একটিভ প্লাস বাংলাদেশ মোরছালিনের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তাকে সার্বিকভাবে সমর্থন দিয়েছেন। মোরছালিন আহম্মেদের এই অসাধারণ সাফল্য বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের পতাকার একজন প্রতিনিধি। তার এই অর্জন প্রমাণ করে যে কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ়তা এবং সঠিক সমর্থন দিয়ে সবকিছুই সম্ভব। মোরছালিনের এই সাফল্য নতুন সকল অ্যাথলেটদের অনুপ্রেরণা যোগাবে।
উল্লেখ্য যে, পাওয়ারম্যান মালয়েশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডুয়াথলন ইভেন্ট, যেখানে প্রতিযোগীদের দৌড় ও সাইক্লিং দুইটি ইভেন্টেই অংশগ্রহণ করতে হয়। এই ইভেন্টটি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই ইভেন্টটি আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত সম্মানিত এবং বহু প্রতিভাবান অ্যাথলেটদের আকর্ষণ করে।
এমআই