জাতীয়
ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে তুরস্কে তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে পৌঁছান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। এসময় প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ইস্তাম্বুলে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নূরে-আলম।
এর আগে শুক্রবার সকালে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটযোগে ইস্তাম্বুলের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
তুরস্ক সফরকালে ২৪ ফেব্রুয়ারি ওআইসির সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের ইসলামিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশনে যোগ দেবেন প্রতিমন্ত্রী। বিশেষ এ অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারত্বের সময় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল সরকারের অপতথ্য এবং শত্রুতা’। এ দিন কাতার ও তুরস্কের তথ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এছাড়া ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘তার্কিশ রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন’ অফিস পরিদর্শনের কথা রয়েছে তার।
তুরস্ক সফর শেষে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ফিরবেন প্রতিমন্ত্রী।

জাতীয়
জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি, যাতে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে ও ক্ষমতার প্রকৃত মালিক– জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বুধবার (১৩ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকেএম) থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণের পর দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
কুয়ালালামপুরে ইউকেএম বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে এক আনন্দমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও নেগেরি সেমবিলান দারুল খুসুস রাজ্যের সুলতান তুংকু মুহরিজ ইবনি আলমারহুম তুংকু মুনাওয়িরর কাছ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির সনদ গ্রহণ করেন ড. ইউনূস। সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আমাকে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণে আমার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। গত বছর বাংলাদেশের বহু তরুণ সাহসিকতার সঙ্গে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। শত শত ছাত্র-যুবক একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে, যেখানে প্রত্যেকে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারবে এবং ভয়, বৈষম্য ও অবিচার থেকে মুক্ত থাকবে।’
নতুন বাংলাদেশ গড়তে তার সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যৎ আশার নতুন অর্থ তৈরি করেছে। আজ আমরা এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি, যেখানে শাসনব্যবস্থা হবে ন্যায়সংগত, অর্থনীতি হবে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রত্যেকে সমান সুযোগ পাবে সফল হওয়ার জন্য। আমাদের সরকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগী রয়েছে।’
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে সংস্কারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট লক্ষ্য বিস্তৃত পরিকল্পনা এবং এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়। একটি শক্তিশালী ও সহনশীল বাংলাদেশ গড়তে আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বেশি বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, ‘তোমরা আগামী দিনের নির্মাতা। তোমাদের ভাবনা, সৃজনশীলতা এবং দায়িত্ববোধই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে– শুধু মালয়েশিয়ার নয়, সমগ্র বিশ্বের। স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে গিয়ে সবসময় মনে রেখো, প্রকৃত সাফল্য শুধু নিজের জন্য অর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং কীভাবে তুমি অন্যদেরও তোমার সঙ্গে উন্নতির পথে নিয়ে যাচ্ছো, সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে সেরা উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারি তা হলো এমন এক পৃথিবী– যেখানে কাউকে পেছনে ফেলে রাখা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘তোমাদের সিদ্ধান্ত, কাজ ও মূল্যবোধই নির্ধারণ করবে আমরা কোথায় যাব। তাই আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, বড় স্বপ্ন দেখো, সাহসীভাবে চিন্তা করো এবং সেই অনুযায়ী কাজ করো। ভয় পেয়ো না– প্রত্যেক ব্যর্থতাই সাফল্যের পথে একটি ধাপ মাত্র।’
পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন প্রকৃত নেতার, প্রয়োজন সমস্যা-সমাধানকারীর– এ কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তোমাদের প্রত্যেকের ক্ষমতা রয়েছে অসাধারণ কিছু করার– মানুষের সেবায় ব্যবসা গড়ে তোলার, জীবন বদলে দেওয়ার মতো নতুন ধারণা সৃষ্টির অথবা এমন নীতি প্রণয়নের যা গোটা একটি সম্প্রদায়কে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আজকের অন্যতম বড় বিপদ হলো– সম্পদ ক্রমশ কয়েকজন মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। এর ফলে বৈষম্য ও অবিচার সৃষ্টি হয়। আমাদের যা দরকার, তা হলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি– যেখানে সম্পদ ন্যায্যভাবে ভাগ হবে এবং প্রত্যেক মানুষ মর্যাদা ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাঁচার সুযোগ পাবে।’
নিজের কর্মময় জীবনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নোবেলজয়ী এ অধ্যাপক বলেন, ‘আমার পথচলায় অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করা থেকে শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালু করা থেকে সামাজিক ব্যবসার প্রচার– একটি বিশ্বাস সবসময় আমাকে দিকনির্দেশনা দিয়েছে, মানুষ প্রতিভা বা স্বপ্নের অভাবে দরিদ্র নয়, তারা দরিদ্র কারণ ব্যবস্থা তাদের ন্যায্য সুযোগ দেয়নি। আমাদের আর্থিক ব্যবস্থা ধনীদের সেবা করার জন্য গড়ে উঠেছে, গরিবদের জন্য নয়। এই সহজ সত্যই আমাকে ভিন্ন কিছু চেষ্টা করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমি এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছি, যেখানে সবচেয়ে দরিদ্র মানুষও ক্ষুদ্রঋণ পেতে পারে, ব্যবসা শুরু করতে পারে এবং নিজের জীবন বদলে দিতে পারে।’
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুই দেশ সবসময়ই দৃঢ় সম্পর্ক ভাগাভাগি করেছে, যা গড়ে উঠেছে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং উন্নতির যৌথ স্বপ্নের ওপর।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া অনেক পথ একসঙ্গে হেঁটেছে। আমরা পরস্পরের প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির পথে সহযোগিতা করেছি। মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে মালয়েশিয়া আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে পাশে থেকেছে। বছরের পর বছর ধরে আমাদের অংশীদারিত্ব বাণিজ্য, শিক্ষা, উদ্ভাবন ও জনগণের মধ্যে সম্পর্কসহ বিস্তৃত হয়েছে নানা ক্ষেত্রে। এটি প্রমাণ করে, আমরা যখন একটি যৌথ উদ্দেশ্যে একসঙ্গে কাজ করি, তখন কত কিছু অর্জন করা সম্ভব।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে, আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চাই। সম্ভাবনাময় অনেক ক্ষেত্র রয়েছে– যেমন সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, হালাল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন। একসঙ্গে আমরা এমন এক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি, যা হবে সমৃদ্ধ, উদ্ভাবনী, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক।’
সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করায় মালয়েশিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমি এটি গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করছি এবং আমাদের দুই মহান জাতির মধ্যে বন্ধন আরও দৃঢ় করার জন্য নতুন করে অঙ্গীকার করছি। আমি পারস্পরিক শিক্ষা ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা করি, যাতে আমরা একসঙ্গে এমন এক বিশ্ব গড়তে পারি, যেখানে প্রত্যেক মানুষ, তার পটভূমি যাই হোক না কেন, নিজের সামর্থ্য বিকশিত করার সুযোগ পাবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জাম্ব্রি আব্দ কাদির ও ইউকেএম ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সুফিয়ান জুসোহ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই দ্রুত উন্নয়ন ঘটছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কে। এ ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেই ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৩ আগস্ট বাংলাদেশে পা রাখার কথা তার।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একসময় একই দেশের অংশ ছিল। কিন্তু, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বিচ্ছেদের পর দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের নেতৃত্ব— বিশেষত ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে থেকেছে এবং ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত রেখেছে।
তবে, গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের মধ্যে এক ধরনের উষ্ণতা ফিরে এসেছে। পারস্পারিক বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় হয়েছে দৃশ্যমান অগ্রগতি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিলেই ঢাকা সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তবে, সেসময় ভারতের সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে তার ওই সফর স্থগিত হয়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের এই উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মঙ্গলবার ডন ডটকম তাকে ২৩ আগস্ট সফর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে ইসহাক দার এক কথায় জবাব দেন— ‘হ্যাঁ’।
দ্য ডন বলছে, বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক সমন্বয় আরও জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করতে তিনি ঢাকা সফর করবেন এবং এ সফরকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া, তার আরও কিছু কর্মসূচি রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে, গত মাসে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পারস্পরিক কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মধ্যে এক বৈঠকে এ অগ্রগতি হয়।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পররাষ্ট্র দপ্তরের পরামর্শ সভায় অংশ নিতে ঢাকা সফর করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালোচ। এছাড়া গত মার্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার যৌথ ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন তারা।
এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ বিরতির পর সরকার-থেকে-সরকার সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয় এবং পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়। আর গত জানুয়ারিতে দুই দেশের সেনাবাহিনী “টেকসই অংশীদারত্ব” বহাল রাখার ওপর গুরুত্ব দেয়, যাতে বাইরের প্রভাব মোকাবিলা করা যায়।
এছাড়া ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে করাচি থেকে চট্টগ্রামে একটি কনটেইনার জাহাজ এসে পৌঁছায়। কয়েক দশকের মধ্যে সেটিই ছিল দুই দেশের মধ্যে সরাসরি প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল।
এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে মিসরের কায়রোতে ডি-৮ উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতীয়
শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ, ঢাকা-রাজশাহী ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) দ্রুত অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে রেল ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ফলে ঢাকা-রাজশাহী ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের রেলগেটে তারা এ ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করে। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিষ্ঠার ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ডিপিপি এখনো অনুমোদন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানালেও সাড়া না পাওয়ায় তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
গত ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বর্জনের মধ্য দিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে কয়েকদিন ধরে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বগুড়ানগরবাড়ী মহাসড়কে অবরোধ, পথ নাটক, শেকল ভাঙার গান এবং প্রতীকী ক্লাস আয়োজন করা হয়।
এরপরও সাড়া না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার হাটিকুমরুল গোলচত্বরে মানববন্ধন ও রোববার মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়, যাতে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকে এবং ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে নবীনবরণ ও সেমিনার করেছে।
উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মনিরুল ইসলাম বলেন, রেলের নিরাপত্তায় উল্লাপাড়া থানা পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ৩৯ মিনিটে, চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী ননস্টপ চিলাহাটি এক্সপ্রেস সকাল ১১টা ২৮ মিনিটে এবং ঢাকাগামী ননস্টপ কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে অবরোধের কারণে ট্রেনের শিডিউলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। আপাতত ঢাকা-রাজশাহীর সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জামতৈল রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি জামতৈল স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এদিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাহিড়ী মোহমপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে।
কাফি
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিলো ইউকেএম

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মালয়েশিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া’ (ইউকেএম) সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে কুয়ালালামপুরে ইউকেএম বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের কাছ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির সনদ নেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অধ্যাপক ইউনূসের অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ইউকেএম বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামের ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রফেসর ইউনূস।
সকালে প্রফেসর ইউনূস অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর তাকে স্বাগত জানান। এসময় লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয় শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদকে।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, নীতিনির্ধারক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ থেকে আগত প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীরা উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে অধ্যাপক ইউনূস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত সোমবার (১১ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে পৌঁছান।
জাতীয়
প্রবাসীদের রেমিটেন্সে অর্থনীতি মজবুত অবস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এক বছরের মধ্যে মজবুত অবস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
আজ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরশাসনের সময় টাকা চুরি করে ব্যাংক খালি করা হয়েছিল। পুরো আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে অর্থনীতি মজবুত অবস্থায় ফিরে এসেছে।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন এ নিয়ে কাজ করছে।
মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়ী ও বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস জানান, মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় ধরনের বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় যারা অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন, তাদের এই জটিলতা নিরসনে সরকার কাজ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা অভিবাসন গমনেচ্ছুদের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে বিদেশে আসার পরামর্শ দেন।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামীম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে অধ্যাপক ইউনূস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল কুয়ালালামপুরে পৌঁছান।